সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

জীবনের প্রতি সম্মান দেখান।

জীবনের প্রতি সম্মান দেখান।

জীবনের প্রতি সম্মান দেখানো কেন গুরুত্বপূর্ণ?

কেউ যখন এমন কিছু করে, যেটা তার নিজের অথবা অন্যের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে, তখন তা দেখায় যে, সে নিজের আর সেইসঙ্গে অন্যের জীবনের ব্যাপারে চিন্তা করে না।

  • ধূমপান করলে যে শুধু ক্যান্সার হয়, তা-ই নয়, কিন্তু এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, তা ক্যান্সারের সঙ্গে আর লড়াই করতে পারে না। প্রতি বছর ফুসফুস ক্যান্সারে অনেক লোক মারা যায়। এমনটা বলা হয়, এদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ লোক হয় নিজেরা ধূমপান করত অথবা তাদের আশেপাশে থাকা লোকেরা ধূমপান করত।

  • প্রতি বছর স্কুল-সহ বিভিন্ন জায়গায় বন্দুক হামলার কারণে অনেকেই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটা রিপোর্ট বলে, “গবেষণা দেখায় যে, যেসব বাচ্চারা স্কুলে বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যায়, তাদের শরীরে কোনো আঘাত না লাগলেও, তাদের মনে যে-আঘাত লাগে, সেটা তারা বহু বছর ধরে বয়ে বেড়ায়।”

  • যখন কেউ মদ খেয়ে কিংবা ড্রাগ নিয়ে গাড়ি চালায়, তখন প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আর এমনকী ফুটপাথ দিয়ে চলা ব্যক্তিদের জীবনও এর ফলে ঝুঁকির মুখে পড়ে। যারা জীবনের প্রতি সম্মান দেখায় না, তাদের কারণে নির্দোষ লোকদের কষ্ট পেতে হয়।

আপনি কী করতে পারেন?

নিজের শরীরের যত্ন নিন। আপনার কি অনেক বছর ধরে ধূমপান, ভেপিং, অতিরিক্ত মদ খাওয়া কিংবা ড্রাগস নেওয়ার অভ্যাস রয়েছে? চিন্তা করবেন না, আপনি তা ছাড়তে পারবেন। মনে রাখবেন, এই ধরনের অভ্যাস শুধু আপনারই নয়, কিন্তু আপনার আশেপাশে থাকা লোকদের, বিশেষভাবে আপনার পরিবারের সদস্যদেরও ক্ষতি করে।

“এসো আমরা দেহ ও মনের সমস্ত অশুচিতা থেকে নিজেদের শুচি করি।”—২ করিন্থীয় ৭:১.

নিজের ও অন্যদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকুন। আপনার বাড়ি ভালো অবস্থায় রাখুন আর প্রয়োজনীয় মেরামত করুন, যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আপনার যদি কোনো মোটর সাইকেল কিংবা গাড়ি থাকে, তা হলে সেটার যত্ন নিন এবং সাবধানে চালান। অন্যদের চাপে পড়ে এমন কিছু করবেন না, যেটার ফলে আপনার অথবা অন্য কারো গুরুতর আঘাত লাগতে পারে কিংবা কারো মৃত্যু হতে পারে।

“তুমি যদি একটা নতুন বাড়ি বানাও, তা হলে তুমি ছাদের উপর অবশ্যই নীচু প্রাচীর দেবে। নাহলে, কেউ যদি তোমার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে যায়, তা হলে তার রক্তপাতের দোষ তোমার পরিবারের উপর আসবে।”—দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৮, NW. a

অন্যদের প্রতি সদয় হোন। জীবনের প্রতি সম্মান দেখানোর মানে হল, আমাদের সকলের প্রতি সদয় হতে হবে, তা তারা যেকোনো দেশ বা জাতিরই হোক না কেন। আমরা ধনী-গরিব, কম শিক্ষিত-বেশি শিক্ষিত, সকলের প্রতি সম্মান দেখাব। কেন তা গুরুত্বপূর্ণ? কারণ পৃথিবীতে ঘটে চলা বেশিরভাগ দৌরাত্ম্য ও যুদ্ধের কারণ হল ঘৃণা এবং পক্ষপাতিত্বের মনোভাব।

“তোমাদের মধ্য থেকে সমস্ত ধরনের চরম তিক্ত মনোভাব, রাগ, ক্রোধ, চিৎকার-চেঁচামেচি এবং নিন্দামূলক কথা আর সেইসঙ্গে অন্যান্য সমস্ত ধরনের মন্দ বিষয় দূর করো। বরং একে অন্যের প্রতি সদয় হও।”—ইফিষীয় ৪:৩১, ৩২.

আমাদের প্রচেষ্টা

আমরা যিহোবার সাক্ষিরা অন্যদের এক উত্তম ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে উৎসাহিত করি। আমাদের কাছ থেকে বাইবেল শিখে এবং আমাদের সভাগুলোতে এসে অনেক লোক সিগারেট, মদ ও ড্রাগের মতো বিভিন্ন আসক্তি ও ক্ষতিকর অভ্যাস কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।

আমাদের নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে আমরা নিরাপত্তার নিয়ম মেনে চলি। আমাদের সভা করার জায়গাগুলো এবং সংগঠনের অন্যান্য বিল্ডিং নির্মাণ করার কাজে অনেক স্বেচ্ছাসেবক সাহায্য করে থাকে। এই কাজ করার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাতে তারা সাবধানতার সঙ্গে তা করে এবং কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। এ ছাড়া, আমাদের বিল্ডিংগুলো স্থানীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী ঠিকঠাক আছে কি না, তা দেখার জন্য নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

বিপর্যয়ের সময়ে আমরা ত্রাণ কাজে সাহায্য করি। ২০২২ সালে সারা পৃথিবীতে ঘটা বড়ো বড়ো বিপর্যয়ের মধ্যে প্রায় ২০০টার জন্য আমরা ত্রাণসামগ্রী পাঠাই। এই খাতে আমরা প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ ডলার ব্যয় করি।

২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকার কিছু দেশে এবং ২০১৮ সালে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইবোলা ভাইরাস মহামারির আকার ধারণ করে। সেই সময়ে আমরা সেখানকার লোকদের জানাই যে, কীভাবে এই ভয়াবহ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। “বাধ্যতা জীবন রক্ষা করে,” এই বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য সংগঠন কিছু ভাইকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠায়। আমরা আমাদের উপাসনা স্থানের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করি আর তাদের কাছে ভালোভাবে ব্যাখ্যা করি, কেন হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া, এই রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আরও কী কী করতে হবে, সেটাও তাদের বুঝিয়ে বলা হয়।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ, সিয়েরা লিওনে রেডিওতে একটা ঘোষণা করা হয়। সেই ঘোষণায় যিহোবার সাক্ষিদের প্রশংসা করা হয় কারণ তারা ইবোলা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য শুধু তাদের নিজেদের লোকদেরই নয় বরং অন্যদেরও সাহায্য করেছিল।

২০১৪ সালে লাইবেরিয়ায় ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময় কিংডম হলের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়

a প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যের বাড়িগুলোর ছাদ সমতল হত আর সেখানে দৈনন্দিন অনেক কাজ করা হত। তাই, সেখানকার লোকদের এই নিয়ম দেওয়া হয়েছিল, যাতে তাদের পরিবার এবং অন্যদের জীবন সুরক্ষিত থাকে।