সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রেম কোন বাধাই মানে না

প্রেম কোন বাধাই মানে না

প্রেম কোন বাধাই মানে না

স্পে নে র স চে ত ন থা ক! সং বা দ দা তা ক র্তৃ ক

মনে করুন, আপনি একজন সাথি খুঁজছেন। কিন্তু, মুশকিলের কথা হল যে আপনি চোখে ভাল দেখতে পান না শুধু কাছের জিনিসই আপনার নজরে আসে। আর পছন্দসই পাত্রী শুধু রাতের অন্ধকারেই বাইরে বেরোয়, তাহলে এখন আপনি কী করবেন? বেচারা রাজা মথের অবস্থা ঠিক এইরকমই। কিন্তু, কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য এই চমৎকার পোকা মুশকিল আসান করে ফেলে।

গরমকালে আমাদের এই ভাবী পাত্র এক মোটা শুঁয়োপাকা হয়ে পেটুকের মতো সারা দিন শুধু যা পায় তাই খেয়ে বেড়ায়। আর বসন্ত কালের মধ্যে সে শুঁয়াপোকা থেকে বদলে গিয়ে চমৎকার মথ হয়ে যায়। গ্রীষ্মের সময় সে এত বেশি খাবার খেয়ে নেয় যে সারা জীবন তাকে আর খেতে হয় না। আর এই পোকা শুধু দুমাস বেঁচে থাকে।

খাবারের সমস্যা মিটে যাওয়ার পর রাজা মথ এখন তার সাথি খোঁজার দিকে মন দেয়। একটা বিশেষ অঙ্গের সাহায্যে এই পোকা তাও খুব সহজেই করে নেয়, তা না হলে চাঁদের আলোয় মেয়ে খোঁজা তার জন্য বোধ হয় খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতোই কঠিন হতো।

এই পোকার ছোট মাথার ওপর ছোট্ট দুটো শুঁড় থাকে। এই ছোট্ট শুঁড় এত ভাল গন্ধ চিনতে পারে যে পৃথিবীর আর কিছুর সঙ্গে তার তুলনা হয় না। মেয়ে মথ ফেরমোন নামে একধরনের “সুবাস” ছাড়ে আর তার একটু আভাসেই তা চিনে নিতে পুরুষ মথের একেবারেই দেরি হয় না।

এই মথদের মধ্যে মেয়ে মথ খুবই কম আর তাদের গায়ের ফেরমোন নামের গন্ধ এক সংকেতের মতো কাজ করে। পুরুষ মথের শুঁড় গন্ধ চেনায় এতই পটু যে ১১ কিলোমিটার দূর থেকেও তারা মেয়ে মথের গন্ধ পায়। এভাবেই সমস্ত বাধা দূর হয়ে যায় এবং পুরুষ মথ তার সাথি খুঁজে পায়। পোকামাকড়ের জগতের প্রেমিক প্রেমিকার মিলনেও অন্ধকার বাধা হয় না কারণ প্রেম কোন বাধাই মানে না।

ঈশ্বরের সৃষ্টি, এইরকমই অবাক করে দেওয়ার মতো তথ্য ও তুলনাহীন শিল্পে ভরে আছে। গীতরচক লিখেছিলেন: “হে সদাপ্রভু, তোমার নির্ম্মিত বস্তু কেমন বহুবিধ! তুমি প্রজ্ঞা দ্বারা তাহা নির্ম্মাণ করিয়াছ।”—গীতসংহিতা ১০৪:২৪.

[[১২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

© A. R. Pittaway