সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

ভারতের জনসংখ্যা একশ কোটি ছাড়িয়ে গেছে

রাষ্ট্রসংঘের জনসংখ্যা বিভাগ বলে যে ১৯৯৯ সালের আগস্ট মাসে ভারতের জনসংখ্যা একশ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। অথচ মাত্র ৫০ বছর আগেও ভারতের জনসংখ্যা ছিল ত্রিশ কোটির কিছু বেশি। ভারতের জনসংখ্যা যদি প্রতি বছর শতকরা ১.৬ হারে বাড়তে থাকে, তাহলে আগামী চল্লিশ বছরের মধ্যে এই দেশ পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ চিনকেও ছাড়িয়ে যাবে। দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস বলে, “ইতিমধ্যেই ভারত ও চিনে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ লোক বাস করে।” পঞ্চাশ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতের গড় আয়ু ৩৯ বছর থেকে বেড়ে ৬৩ বছর হয়েছে।

জিভের যত্ন

প্রিন্স জর্জ সিটিজেন খবরের কাগজ বলে যে জিভের পেছনে ব্যাকটেরিয়া থাকলে তা সালফার গ্যাস তৈরি করে আর এই জন্য মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। ওই রিপোর্ট আরও বলে, “শুষ্ক, অক্সিজেন শূন্য জায়গায় ব্যাকটেরিয়া বেশি করে জন্মায় আর সেইজন্যই এগুলো আমাদের মুখের এমন জায়গায় খাঁজে খাঁজে থাকে যেখান দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় হাওয়া যাওয়া আসা করে না।” দাঁত ব্রাশ করলে ও সূতা দিয়ে পরিষ্কার করলে হয়তো উপকার পাওয়া যাবে কিন্তু এভাবে পরিষ্কার করার ফলে মাত্র ২৫ ভাগ ব্যাকটেরিয়া দূর হয়। ডেন্টিস্ট আ্যলেন গ্রোভ মনে করেন যে ইউরোপের লোকেদের মতো স্ক্র্যাপার দিয়ে পরিষ্কার করলেই “সবচেয়ে ভালভাবে দুর্গন্ধ রোধ করা যায়।” সিটিজেন পত্রিকা বলে, প্লাস্টিকের স্ক্র্যাপার “টুথব্রাশের চেয়ে ভাল, এতে জিভ বেশ পরিষ্কার হয় ও গোলাপি দেখায়।”

“শরীরের সবচেয়ে জরুরি উপাদান”

টরেন্টো স্টার খবরের কাগজ বলে, “শরীরের সবচেয়ে জরুরি উপাদান হল জল, কারণ শরীরে জলের ভাগই বেশি।” “এমনকি শরীরে শতকরা ২০ ভাগ জলের ঘাটতি হলেও মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।” জল শুধু আমাদের শরীরের তাপমাত্রাকেই ঠিক রাখে না কিন্তু “রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গে পরিপোষক বয়ে নিয়ে যায় এবং বর্জ্য পদার্থগুলোকে বের করে দেয়। এছাড়াও এটা মলাশয় ও গ্রন্থিগুলোকে পিচ্ছিল করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না।” একজন বড় মানুষের দিনে দুই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া দরকার। কফি, জুস বা মদ খেলে আরও বেশি করে জল খাওয়া দরকার কারণ সেগুলো শরীরে জলের ঘাটতি করে। একজন ডায়েটিশিয়ান বলেন, শুধু তেষ্টা পেলেই যে আপনার মনে পড়বে আপনাকে জল খেতে হবে তা নয় কারণ তেষ্টা পাওয়ার আগেই আপনার শরীরে জলের ঘাটতি শুরু হয়ে যায়। ওই খবরের কাগজ আরও বলে, “দিনের মধ্যে এক ঘন্টা পর পর এক গ্লাস করে জল খেলে শরীরে জলের চাহিদা পূরণ হতে পারে।”

ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া

দশ থেকে চোদ্দ বছরের মধ্যে মেয়েরা গড়ে ২৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয় আর তাদের ১৮-২২ কিলো ওজন বাড়ে। আর ছেলেরা ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় এবং ২২-২৭ কিলো ওজন বাড়ে। তাই এই বয়সে ছেলেমেয়েরা তাদের ওজন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় ও কীভাবে ওজন কমাবে সেই চেষ্টা করতে থাকে। ডায়েটিশিয়ান লিন রবলিন দ্যা টরেন্টো স্টার পত্রিকায় লেখেন, “কিন্তু ডায়েট করা ও খাবার কম খাওয়া ঠিক নয় আর তা করলে শরীরের ক্ষতি হয়।” রবলিন আরও বলেন যে ডায়েট করলে শরীরে পুষ্টির অভাব হতে পারে। এছাড়া ডায়েট করলে “খাবারে অরুচি এসে যায় এবং খাদ্য ভীতি দেখা দিতে পারে।” তিনি বলেন যে কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের শরীরের গড়ন নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই তবে তাদের “ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে হবে আর তাদের খেলাধূলো, দৌড়ঝাঁপ করা ও হাসিখুশি থাকা দরকার।”

সিগারেট শিশুদের জন্য ক্ষতিকর

লন্ডনের গার্ডিয়ান খবরের কাগজ বলে যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লুএইচও) হিসেব অনুযায়ী, সিগারেটের ধোঁয়ার কারণে বিশ্বের অর্ধেক শিশুদের জীবনই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সিগারেটের ধোঁয়ার জন্য হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, শিশুমৃত্যু, কানের অসুখ এবং ক্যানসার হয়। গবেষণা আরও দেখায় যে ধূমপায়ী বাবামার বাচ্চারা পড়াশোনায় মনোযোগী হয় না আর অভদ্র হয়। বাবামা দুজনেই যদি সিগারেট খান, তাহলে তাদের ছেলেমেয়েদের রোগ ভোগের সম্ভাবনা প্রায় ৭০ ভাগ আর পরিবারে একজন ধূমপান করলে, রোগের সম্ভাবনা থাকে ৩০ ভাগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাবামাদেরকে পরামর্শ দেওয়ার কথা বলে যাতে তারা বুঝতে পারেন যে তারা যদি সিগারেট খান, তাহলে তা পরিবারের জন্য কীধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে আর স্কুল ও অন্যান্য জায়গায় যেখানে অনেক ছেলেমেয়েরা এক জায়গায় হয় সেইরকম জায়গাগুলোতে সিগারেট খাওয়াকে নিষিদ্ধ করার কথা বলে।

ভ্রমণব্যাবসার জয়

দি ইউনেসকো কুরিয়ার রিপোর্ট করে যে বিশ্ব ভ্রমণব্যাবসা সংস্থার (ডব্লুটিও) হিসেব মতো “আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সংখ্যা এখন ষাট কোটি পঁচিশ লাখ কিন্তু ২০২০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে একশ কোটি ষাট লাখ।” এই পর্যটকরা দুহাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে আর যদি তাই হয়, তাহলে “ভ্রমণব্যাবসাই বিশ্বের এক নম্বর ব্যাবসা হয়ে দাঁড়াবে।” আজ পর্যন্ত ইউরোপই লোকেদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। ফ্রান্সে লোকেরা সবচেয়ে বেশি গিয়েছে। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সে প্রায় সাত কোটি পর্যটক গিয়েছিল। কিন্তু, ২০২০ সালের মধ্যে চিন প্রথম স্থান দখল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু শুধুমাত্র ধনী লোকেরাই বিশ্বভ্রমণ করতে পারেন। ১৯৯৬ সালে বিশ্বের মাত্র ৩.৫ শতাংশ লোক বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু ডব্লুটিও বলে যে ২০২০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে ৭ শতাংশে পৌঁছবে।

র্‌যাটল সাপের প্রতিশোধ

নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা বলে যে “আমেরিকার বিষাক্ত র্‌যাটল সাপগুলো মারা যাবার পরেও লোকেদের ছোবল মারতে পারে আর এই অদ্ভুত প্রতিশোধ নেওয়া এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠছে।” আমেরিকার আরিজোনাতে র্‌যাটল সাপের কামড়ে আহত ৩৪ জনের ১১ মাস ধরে চিকিৎসা চলছে। সরীসৃপ নিয়ে গবেষণা করেন এমন দুজন ডাক্তার বলেন যে এই রোগীদের মধ্যে ৫ জন বলেছে সাপগুলোকে মেরে ফেলার পরই সেগুলো তাদের কামড়েছিল। একজন লোক একটা সাপকে গুলি করে তার মাথাটা শরীর থেকে আলাদা করে দিয়েছিলেন আর সাপটা পুরোপুরি মরে গেলে তবেই তিনি মাথাটা হাতে নিয়েছিলেন। কিন্তু এটা হঠাৎ করে তার দুহাতেই ছোবল মারে। ওই পত্রিকা আরও বলে, আগের গবেষণাগুলো দেখিয়েছে যে কেবল মাথা দিয়েই এই র্‌যাটল সাপগুলো “মরার পরে এক ঘন্টা পর্যন্ত এর সামনের যে কোন কিছুকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে।” সরীসৃপ নিয়ে গবেষণা করেন এমন ব্যক্তিরা মনে করেন যে এটা “আপনা আপনিই হয়, এটা সাপের নাক ও কানের মাঝখানের ইনফ্রারেড ইন্দ্রিয়ের কারণে হয় যা শরীরের উষ্ণতাকে চিনতে পারে।” ড. জেফ্রে সাশার্ড সাবধান করে দেন যে সাপের মাথাকেও “একটা ছোট সাপ” বলেই মনে করা উচিত। তিনি বলেছিলেন, “আপনি যদি সত্যি সত্যি সাপকে ধরতে চান, তাহলে আমি বলব যে আপনি সঙ্গে একটা বড় লাঠি নিয়ে নিন।”

বিদ্যুতের অসাধারণ উৎস

সায়েন্সেস এট্‌ আ্যভেনির পত্রিকা বলে, নিউ ক্যালেডোনিয়ার ওভিয়া দ্বীপে পেট্রোলিয়াম নেই কিন্তু এখানকার লোকেরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করে। ফ্রেঞ্চ ইঞ্জিনিয়ার আ্যলেন লিনার্ড ১৮ বছর চেষ্টা করে নারকেল তেলের সাহায্যে ইঞ্জিন চালাতে সক্ষম হয়েছেন। ওই ইঞ্জিন দিয়ে জেনারেটর চলে আর জেনারেটর দিয়ে সাগরের লবণাক্ত জল থেকে মেশিনের সাহায্যে লবণকে আলাদা করা হয় ফলে দ্বীপের ২৩৫টা পরিবার খাবার জল পেতে পারে। লিনার্ড বলেন যে তার ১৬৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন এবং ডিজেল ইঞ্জিনে বিদ্যুতের পরিমাণ এবং জ্বালানি খরচ একই।

▪ এদিকে ভারতের গুজরাটে কেলালি গ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য বলদদের কাজে লাগানো হচ্ছে। নয়া দিল্লির ডাউন-টু-আর্থ পত্রিকা বলে যে একজন বিজ্ঞানী ও তার ভাইঝি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার জন্য নতুন পন্থা বের করেছেন। গিয়ারবক্সের সঙ্গে যুক্ত একটা দণ্ডকে চারটে বলদ ঘোরায় ফলে ছোট জেনারেটর চালু হয়। আর ব্যাটারির সাহায্যে জেনারেটর দিয়ে জলের পাম্প ও ধান, গমের কল চলে। ডাউন-টু-আর্থ পত্রিকা বলে যে এভাবে উৎপন্ন প্রতি একক বিদ্যুতের খরচ পড়ে মাত্র দশ সেন্ট কিন্তু উইন্ডমিলের সাহায্যে উৎপন্ন বিদ্যুতের খরচ পড়ে এক ডলার আর ব্যাটারির মাধ্যমে খরচ পড়ে ২৪ ডলার। কিন্তু, গ্রামের লোকেদের যেহেতু বছরে তিন মাস ক্ষেতের কাজের জন্য বলদ লাগে, তাই যখন বলদ থাকবে না তখন কীভাবে বিদ্যুৎ জমা করে রাখা যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা সেই উপায় খুঁজছেন।

শরীর ঠিক রাখার জন্য হাঁটা ভাল

টরেন্টোর দ্যা গ্লোব আ্যন্ড মেইল বলে, ওজন কমানো ও মানসিক চাপ থেকে স্বস্তি দেওয়া ছাড়াও হাঁটা “রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হার্ট আ্যটাকের ঝুঁকি কমায়।” শরীরকে ভাল রাখার জন্য রোজ সময় করে হাঁটা দরকার। কিন্তু কতটা সময়? “কানাডাস ফিজিক্যাল আ্যক্টিভিটি গাইড টু হেলদি আ্যক্টিভ লিভিং বলে, আপনি যদি ধীরে ধীরে হাঁটেন, তাহলে দিনে আপনাকে কমপক্ষে এক ঘন্টা হাঁটতে হবে। তবে দশ মিনিট পর পর হয়তো আপনি একটু বিশ্রাম নিয়ে নিতে পারেন।” দিনে আধ ঘন্টা থেকে একঘন্টা হাঁটলে বা কুড়ি মিনিট থেকে আধ ঘন্টা সাইকেল চালালে কিংবা জগিং করলে শরীর ভাল থাকে। গ্লোব আরও বলে যে হাঁটার সময় হালকা ওজনের জুতো যেগুলোতে হাওয়া ঢোকে এবং নরম সোল ও পরে আরাম পাওয়া যায় সেরকম জুতো পরে নিন।

মায়ের দুধ কি ওজন কমায়?

গবেষকরা মায়ের দুধ খাওয়ানোর আরেকটা উপকার আবিষ্কার করেছেন: মায়ের দুধ খেলে বাচ্চা পরে অতিরিক্ত মোটা হয়ে যায় না। জার্মানি ফোকাস পত্রিকায় যেমন বলা হয়েছে যে মিউনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পাঁচ-ছয় বছর বয়সী ৯,৩৫৭ জন ছেলেমেয়ের ওজন দেখেছিলেন এবং শিশু থাকতে তারা কী খেয়েছিল তা জিজ্ঞেস করেছিলেন। ওই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, যে বাচ্চারা তিন থেকে পাঁচ মাস মায়ের দুধ খেয়েছিল তাদের ওজন সেই বাচ্চাদের চেয়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ কম যারা মায়ের দুধ একেবারেই খায়নি। আসলে যে বাচ্চা যত বেশি সময় ধরে মায়ের দুধ খায়, সেই বাচ্চার মোটা হওয়ার সম্ভাবনা তত কম থাকে। একজন গবেষক বলেন যে মায়ের দুধে সেই উপাদানগুলো রয়েছে, যা বাচ্চাকে তার খাবার হজম করতে সাহায্য করে।