সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বাচ্চাদের কাজ

দ্যা টরেন্টো স্টার খবরের কাগজ বলে: “বাচ্চারা ঘরে টুকটাক কাজ করলে আজকের ব্যস্ত বাবামায়েরা কিছুটা আরাম পান।” সঠিক শাসন (ইংরেজি) বইয়ের লেখিকা জেন নেলসন বলেন যে ঘরের কাজ করাই “বাচ্চাদের প্রথম কাজ হবে তা নয়” কিন্তু এই কাজগুলো বাচ্চাদের মধ্যে “আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান বোধ গড়ে তোলে।” চাইল্ড পত্রিকায় ছাপানো একটা সমীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে দুই-তিন বছরের বাচ্চারা ঘরের কিছু টুকটাক কাজ করতে পারে, যেমন তারা খেলার পর খেলনাগুলো গুছিয়ে রাখতে পারে ও ময়লা জামাকাপড় ঝুড়িতে রাখতে পারে। তিন থেকে পাঁচ বছরের বাচ্চারা খাওয়ার আগে টেবিল সাজাতে, এঁটো থালাবাসন বেসিনে নিয়ে রাখতে ও তাদের খেলার জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে। ৫ থেকে ৯ বছরের বাচ্চারা তাদের নিজেদের বিছানা করতে পারে, বাগানের পাতা কুড়াতে ও আগাছা তুলতে পারে আর ৯ থেকে ১২ বছরের বাচ্চারা থালাবাসন ধোয়ামোছা করতে, ময়লা ফেলতে, বাগানের ঘাস কাটতে ও ঘরদোর পরিষ্কার করতে পারে। তবে নেলসন এর সঙ্গে আরেকটু বলেন যে “কতটুকু সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে তা আগে থেকে বলে দিলে আরও ভাল হয়।”

বাচ্চারা এবং ঘুম

প্যারেন্টস্‌ পত্রিকা বলে: ‘স্কুলে যায় এমন বাচ্চারা কতক্ষণ জেগে থাকবে বাবামায়েরা শুধু সেটাই ঠিক করে দেবেন না, শুতে যাওয়ার আগে তারা কী কী করবে তা-ও ঠিক করে দেবেন। টিভি দেখা, কমপিউটার ও ভিডিও গেম খেলা এবং ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করা বাচ্চাদের উত্তেজিত করে আর এর ফলে তাদের মন স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি সময় কাজ করে। আর স্কুলের পর অনেক বেশি সময় খেলাধূলা করলে তারা ঠিক সময়ে তাদের হোমওয়ার্ক শেষ করতে পারে না।’ গবেষণা দেখায় যে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তা বাচ্চাদের ওপর বড়দের চেয়ে আলাদা প্রভাব ফেলে। যেমন, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে বড়রা ঝিমায় ও চুপচাপ থাকে কিন্তু বাচ্চারা আরও বেশি চঞ্চল হয় এবং দুষ্টুমি করে। আর এর ফলে স্কুলে বাচ্চারা ঠিক মতো মন দিতে পারে না, যা শেখানো হয় তা মনে রাখতে পারে না এবং অঙ্কের ফল মেলাতে পারে না। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন যে বাচ্চারা কখন ঘুমাতে যাবে বাবামায়েদের তা ঠিক করে দিতে হবে এবং একেবারে ক্লান্ত হয়ে গেলে নয় বরং তার আগেই বিছানায় পাঠাতে হবে।

উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রছাত্রী

আগে জাপানে, ছেলেমেয়েরা কথা শোনে না এইরকম কথা বলতে গেলে শোনাই যেত না। কিন্তু এখন জাপানের সব স্কুল শিক্ষকরাই বলেন যে দিন দিন ক্লাশে নিয়মশৃঙ্খলা বজায় রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছে কারণ ছাত্রছাত্রীরা খুবই চঞ্চল এবং উচ্ছৃঙ্খল। টোকিও সরকার ৯, ১১ ও ১৪ বছরের ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞেস করেছিল যে অন্য লোকেদের তারা কোন্‌ চোখে দেখে। দ্যা ডেইলি ইয়োমিয়ুরি খবরের কাগজের হিসেব মতো ৬৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী বলেছিল যে তারা তাদের বন্ধুদের ওপর, ৬০ শতাংশ তাদের বাবামায়েদের আর ৫০ শতাংশ তাদের শিক্ষকদের ওপর বিরক্ত। চল্লিশ শতাংশ ছাত্রছাত্রী বলেছিল যে তারা তাদের রাগকে সামলাতে পারে না। আর প্রত্যেক ৫ জনের মধ্যে ১ জন বলে যে তারা জিনিসপত্র ভাঙচুর করে তাদের রাগ দেখায়।

ভারতের “নীরব সংকট”

দ্যা টাইমস্‌ অফ ইন্ডিয়া বলে: “গত কয়েক বছরে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবায় অনেক উন্নতি হওয়ার পরও, অপুষ্টি ভারতে এক ‘নীরব সংকট’ হয়ে রয়ে গেছে।” অপুষ্টির জন্য ভারতে স্বাস্থ্যসেবা খাতে এবং উৎপাদন কমে যাওয়ায় মোট ২৩,০০,০০,০০০রও বেশি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। এই রিপোর্ট অনুসারে, চার বছরের নিচে ৫০ শতাংশ ভারতীয় শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে, ৩০ শতাংশ নবজাত শিশুদের “ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম” এবং ৬০ শতাংশ মহিলা রক্তশূন্যতায় ভুগছে। বিশ্ব ব্যাংকের সমাজ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞা মীরা চ্যাটার্জি বলেন যে “অপুষ্টি শুধু একজন ব্যক্তি ও একটা পরিবারেরই ক্ষতি করে না, সেইসঙ্গে শিক্ষা খাতে যে বিনিয়োগ করা হয় তার থেকে লাভের পরিমাণকে অনেক কমিয়ে দেয় এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এক বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।”

আদর্শ পরিবহণ?

পেডিক্যাবকে ত্রিচক্রযান বা সাইকেল রিক্সাও বলা হয় আর এগুলো অনেক বছর ধরে ভারতে চলছে। কিন্তু আউটলুক পত্রিকা বলে যে এত বছর ধরে এগুলো একটুও বদলায়নি, সেই “ভারী কাঠের কাঠামো, লোহার বড় চাকা, বেঢপ আকারের ঢালু আসন এবং কোন গিয়ার নেই।” কিছুদিন আগে, সাইকেল রিক্সা উঠিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে কারণ এতে বয়স্ক, রোগা চালকদের শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু, এখন ভারতে বায়ু দূষণের মাত্রা এত বেড়ে গেছে যে সাইকেল রিক্সা নিয়ে লোকেরা নতুন করে ভাবতে বাধ্য হয়েছে। দিল্লীর একটা ফার্ম নতুন ডিজাইনের রিক্সা বানিয়েছে। এর কাঠামো অনেক হালকা এবং মসৃণ, যা বাতাসের চাপকে কমায়, এতে গিয়ার দেওয়া হয়েছে আর এর ফলে চালকদের প্যাডেল করার সময় কষ্ট অনেকখানি কমবে, চালকদের কথা মাথায় রেখে সঠিক মাপের আসন দেওয়া হয়েছে, এমন হাতলদণ্ড দেওয়া হয়েছে যা কবজির ওপর চাপকে কমাবে, যাত্রীদের জন্য বড় ও আরামদায়ক আসনও দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের পরিচালক, টি ভিনেট বলেন যে “আজকের সমাজব্যবস্থার সঙ্গে এটা মানানসই কারণ মানবাধিকার ও দূষণ মুক্ত পরিবেশই হল আজকের সমাজের স্লোগান।” আউটলুক বলে: “সামান্য রিক্সাই হয়তো ২১ শতকের আদর্শ পরিবহণ হয়ে যাবে।”

মাউন্ট এভারেস্ট এখন আরও উঁচু

কিছুদিন আগে রয়টার বলে: ‘পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চূড়া মাউন্ট এভারেস্টকে আগে বিজ্ঞানীরা যতটুকু উঁচু ভেবেছিলেন এখন তার চেয়ে আরও উঁচু। অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট সিস্টেম ব্যবহার করে পর্বত আরোহীরা এভারেস্ট মেপে দেখেন যে এটা ৮,৮৫০ মিটার অর্থাৎ প্রায় ৮.৯ কিলোমিটার উঁচু . . . কিন্তু ১৯৫৪ সালে যখন মাপা হয়েছিল তখন এর উচ্চতা ছিল ৮,৮৪৮ মিটার। তার মানে দেখা গেছে যে আগের চেয়ে এখন এটা দুই মিটার বেশি উঁচু।’ নতুন এই মাপটা হল তুষারে ঢাকা চূড়ার মাপ। তুষারের নিচে চাপা পড়া পাহাড়ের আসল চূড়া যে কতখানি উঁচু তা এখনও জানা যায়নি। দ্যা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি, এভারেস্টের মানচিত্র বানানোর জন্য নতুন করে মাপ নিচ্ছে। এই পাহাড় দিনে দিনে শুধু আরও উঁচুই হচ্ছে না, সেইসঙ্গে সম্পূর্ণ হিমালয় পাহাড়ের সারি উত্তরপূর্ব দিক বরাবর চিনের দিকে বছরে ১.৫ থেকে ৬ মিলিমিটার করে প্রসারিতও হচ্ছে।

বাবা-মেয়েদের সম্পর্ক

কানাডার গ্লোব আ্যন্ড মেইল খবরের কাগজ বলে, কিছুদিন আগে হেল্‌থ কানাডা পত্রিকা ২,৫০০ জন কিশোরকিশোরীর ওপর সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পেরেছে যে বাবারা তাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে, বিশেষ করে মেয়েদের সঙ্গে কথাবার্তা প্রায় বলেনই না। যেখানে ৫১ শতাংশ ছেলে তাদের বাবার সঙ্গে সহজে কথাবার্তা বলতে পারে, সেখানে ১৫-১৬ বছরের মাত্র ৩৩ শতাংশ মেয়ে “তাদের সমস্যা নিয়ে বাবার সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলে থাকে।” কিন্তু, ওই রিপোর্ট বলে যে “মেয়েরা বাবাকে অনেক সম্মান করে এবং বাবার কাছ থেকে তাদের সাহায্যের দরকার আছে।” কুইনস্‌ ইউনিভারসিটির অধ্যাপক আ্যলেন কিং বলেন, “ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলাকে বাবারা খুবই শক্ত কাজ বলে মনে করেন আর বিশেষ করে ছেলেমেয়েরা যখন কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখে তখন তো তা আরও বেশি মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।” সেই সময়ে অনেক বাবারা যৌনতা এবং ক্ষতিকর আচরণ নিয়ে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কোন কথাই বলেন না। কিন্তু যত মুশকিল বলেই মনে হোক না কেন, তিনি বাবাদেরকে তাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন কারণ অনেক মায়েরা ছেলেমেয়েদেরকে এখন আর বেশি সময় দিতে পারেন না।

বিশাল দেহের সুমো কুস্তিগিররা

জাপানের ক্রীড়াবিদদের চিকিৎসকরা বলেন যে সুমো কুস্তিগিররা সারা পৃথিবীতে তাদের বিশাল দেহের জন্য পরিচিত কিন্তু দিন দিন তাদের দেহ এত ভারী হয়ে যাচ্ছে যে তাদের পা আর তাদের দেহের ভার বইতে পারছে না। নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা বলে যে গত পাঁচ বছরে দুটো প্রথম সারির সুমো কুস্তিগিরদের ব্যথা পাওয়ার হার দ্বিগুণ বেড়ে গেছে আর এই কারণে এক দল চিকিৎসক ৫০ জন কুস্তিগিরের শরীরের চর্বির তুলনায় পায়ের শক্তি কতখানি তা পরীক্ষা করেন। ওই রিপোর্ট বলে, “প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের পায়ে তাদের বিশাল দেহের ভার বওয়ার মতো শক্তি নেই।” ১৯৭৪ সালে প্রথম সারির সুমো কুস্তিগিরদের গড় ওজন ছিল ১২৬ কিলো কিন্তু ১৯৯৯ সালে তা বেড়ে ১৫৬ কিলোতে দাঁড়ায়। এই বিষয়ে সুমো কুস্তির ধারাভাষ্যকারিণী ডরিন সিমোন্ডস্‌ বলেন, “এর কারণ হল জাপানিরা আগের চেয়ে লম্বা হয়েছে।” কিন্তু ওজন বেশি হলেই যে তারা ভাল লড়তে পারবেন এমন কোন কথা নেই। সিমোন্ডস্‌ আরও বলেন, ‘একজন আদর্শ সুমো কুস্তির আকার নাশপতির মতো। তাদের ছোট পা, বিশাল ঊরু এবং ওক গাছের মতো মজবুত পায়ের গুল থাকে।’

বাচ্চারাও ধুমপান করে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কিছুদিন আগের একটা রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ইউনিভারসিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে ওয়েলনেস লেটার বলে, ‘পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক বাচ্চার সঙ্গেই একজন করে ধুমপায়ী থাকে। এইরকম বাচ্চাদের সংখ্যা ৭০ কোটিরও বেশি।’ এই সংখ্যা থেকে বলা হয় যে আগামী ২০ বছরে প্রাপ্তবয়স্ক ধুমপায়ীদের সংখ্যা ১৬০ কোটিতে গিয়ে পৌঁছাবে এবং আরও বেশি বাচ্চারা পরোক্ষভাবে ধুমপান করবে। আর এর ফলে এই বাচ্চাদের কানের ইনফেকশন ও শ্বাসকষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।