সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনার চোখ যা দেখে তার চেয়েও কি আপনি বেশি কিছু দেখেন?

আপনার চোখ যা দেখে তার চেয়েও কি আপনি বেশি কিছু দেখেন?

আপনার চোখ যা দেখে তার চেয়েও কি আপনি বেশি কিছু দেখেন?

রাস্তার মোড় ঘোরার সময় গাড়ি চালকেরা সাধারণত অন্য পাশ থেকে আসা গাড়ি দেখতে পান না। কিন্তু, রাস্তার মোড়ে মোড়ে থাকা আয়নায় তারা এগিয়ে আসা গাড়ি দেখতে পান আর এর ফলে দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। একইভাবে মানুষ অদৃশ্য সৃষ্টিকর্তাকে দেখতে পায় না। এমন কোন উপায় কি আছে যার মাধ্যমে জানা যায় যে তিনি সত্যিই আছেন?

আমরা যাঁকে দেখতে পাই না তাঁর অস্তিত্ব কীভাবে বুঝতে পারি সেই সম্বন্ধে প্রথম শতাব্দীর একজন লেখক বলেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “[ঈশ্বরের] অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্য্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে, এ জন্য তাহাদের উত্তর দিবার পথ নাই।”—রোমীয় ১:২০.

এই বিষয়টা নিয়ে একটু ভাবুন। আমাদের চারপাশে এমন অনেক কিছু আছে, যা বানানোর ক্ষমতা মানুষের নেই। এগুলোতে যে বুদ্ধিমত্তা প্রকাশ পায় তা কি আপনি দেখেন? এগুলো কি আপনাকে “বুদ্ধির চোখ” দিয়ে দেখতে সাহায্য করে যে মানুষের চেয়ে মহান একজন আছেন? আসুন আমরা কয়েকটা উদাহরণ দেখি।—ইফিষীয় ১:১৮, কিং জেমস্‌ ভারসন।

সৃষ্টি থেকে শেখা

অন্ধকার রাতে তারা ভরা আকাশের অপূর্ব উজ্জ্বল দীপ্তি দেখে কি আপনি অবাক হন না ও একজন মহান সৃষ্টিকর্তা যে আছেন তার প্রমাণ পান না? তারা ভরা আকাশ দেখে প্রাচীন কালের একজন ব্যক্তি অবাক হয়ে বলেছিলেন: “আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের গৌরব বর্ণনা করে, বিতান তাঁহার হস্তকৃত কর্ম্ম জ্ঞাপন করে।” তিনি মনে মনে চিন্তা করেছিলেন: “আমি তোমার অঙ্গুলি-নির্ম্মিত আকাশমণ্ডল, তোমার স্থাপিত চন্দ্র ও তারকামালা নিরীক্ষণ করি, [বলি], মর্ত্ত্য কি যে, তুমি তাহাকে স্মরণ কর? মনুষ্য-সন্তান বা কি যে, তাহার তত্ত্বাবধান কর?”—গীতসংহিতা ৮:৩, ৪; ১৯:১.

সৃষ্টি দেখে অবাক হওয়া সাধারণ ব্যাপার কারণ মানুষ এগুলো বানাতে পারে না। বিখ্যাত কবিতার একটা লাইন বলে: “একমাত্র ঈশ্বরই গাছ বানাতে পারেন।” কিন্তু, গাছের চেয়ে একটা শিশুর জন্ম আরও বিস্ময়কর কারণ বাবামার কোনরকম নির্দেশনা ছাড়াই এটা হয়ে থাকে। যখন বাবার শুক্রাণু মায়ের একটা ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হয় তখন একটা কোষ উৎপন্ন হয় আর সঙ্গে সঙ্গে এই নতুন কোষের ডিএনএ-তে একটা শিশুর জন্মের সমস্ত পরিকল্পনা লেখা হয়ে যায়। কথিত আছে যে ডিএনএ-র মধ্যে যত তথ্য রয়েছে তা ‘যদি লেখা হয়, তাহলে ৬০০ পৃষ্ঠার এক হাজারটা বই লেখা যাবে।’

এটা কেবল শুরু। প্রথম কোষ বিভাজিত হয়ে দুটো হয়, তারপর চারটে, আটটা আর এভাবে বেড়েই চলে। ২৭০ দিন পরে একটা শিশু যখন জন্ম নেয় তখন তার শরীরে ২০০ রকমেরও বেশি কোটি কোটি সজীব কোষ থাকে। আর ভেবে দেখুন যে প্রথম কোষে অন্য সমস্ত ধরনের কোষ একেবারে ঠিক ঠিক সময়ে উৎপন্ন করার তথ্য থাকে! এটা কি আপনাকে আমাদের সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা করতে উৎসাহ দেয় না? গীতরচক কীভাবে প্রশংসা করেছিলেন তা দেখুন। তিনি লিখেছিলেন: “তুমিই আমার মর্ম্ম রচনা করিয়াছ; তুমি মাতৃগর্ব্ভে আমাকে বুনিয়াছিলে। আমি তোমার স্তব করিব, কেননা আমি ভয়াবহরূপে ও আশ্চর্য্যরূপে নির্ম্মিত।”—গীতসংহিতা ১৩৯:১৩-১৬.

যারা এই “বিস্ময়কর বিষয়গুলো” নিয়ে গবেষণা করেছেন তারা অবাক না হয়ে পারেননি। শিকাগো আ্যন্ড ইলিনয়স্‌ স্টেট মেডিক্যাল সোসাইটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ড. জেমস এইচ. হাটন বলেছিলেন যে, তিনি কোষের ‘অলৌকিক ক্ষমতা’ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ পুরনো কোষগুলো ‘নতুন উৎপাদিত কোষগুলোর মধ্যে সেই সমস্ত তথ্য সরবরাহ করতে পারে, যা জিন ও ক্রোমোজোমগুলো পুনরুৎপাদন করতে চায়। আমাদের গবেষণাকারী বিজ্ঞানীরা যে এই বিষয়গুলো জানতে পেরেছেন এটা সত্যিই অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার। কিন্তু, নিশ্চয়ই কোন ঐশ্বরিক বুদ্ধি এই বিষয়গুলো পরিকল্পনা করেছে।’

ড. হাটন আরও বলেছিলেন: “অন্তঃক্ষরণ বিদ্যা আমার প্রধান বিষয় নয়, তবুও অন্তঃক্ষরণ গ্রন্থিগুলোর কাজ এবং অনিয়ম নিয়ে গবেষণা এই বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করে যে এই অতি জরুরি গঠনবিন্যাসগুলোর বিস্ময়কর জটিলতা ও কাজের পেছনে এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা রয়েছে।” তিনি এই বলে তার কথা শেষ করেছিলেন: “এই বিস্ময়কর বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করে আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছি যে, অসীম ক্ষমতা ও জ্ঞানের অধিকারী কোন শক্তি এই মহাবিশ্বের নকশা বানিয়েছে, এটাকে গতিশীল করেছে ও এটাকে চালাচ্ছে।”

এই কথাগুলো বলার পর ড. হাটন জিজ্ঞেস করেছিলেন: “যে ঈশ্বর প্রত্যেকটা চড়ুই পাখির দিকে খেয়াল রাখেন তিনি কি একজন ব্যক্তি?” এর উত্তর তিনি নিজেই দিয়েছিলেন: “এই বিষয়ে আমার কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। আর আমি এও বিশ্বাস করি না যে তিনি আমার রোজকার জীবনের ছোটখাটো কাজগুলোর দিকে খেয়াল রাখেন।”

“বিস্ময়কর বিষয়গুলো” সৃষ্টিতে বুদ্ধি খাটানো হয়েছে বলে স্বীকার করলেও মানুষের জন্য চিন্তা করেন এমন একজন ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে কেন অনেকেই সন্দেহ পোষণ করে?

ঈশ্বর কি সত্যিই আমাদের জন্য চিন্তা করেন?

অনেকেই যুক্তি দেখায় যে যদি একজন ঈশ্বর থাকতেনই, তাহলে মানুষকে এত দুঃখকষ্ট ভোগ করতে হতো না। বেশির ভাগ লোকই এই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করে, “আমার দরকারের সময় ঈশ্বর কোথায় ছিলেন?” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিরা লাখ লাখ লোকেদের হত্যা করেছিল আর তাদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া একজন লোক নাৎসিদের অত্যাচার দেখে এত কষ্ট পেয়েছিলেন যে তিনি বলেছিলেন: “আমার মন এতটাই বিষিয়ে উঠেছে যে, তা আপনার মনকেও বিষিয়ে তুলতে পারে।”

এর থেকে বোঝা যায়, অনেকেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছেন। প্রাচীন কালের একজন ব্যক্তি যার কথা আগে বলা হয়েছে তিনি বলেছিলেন, একজন সৃষ্টিকর্তা যে আছেন তার প্রমাণ আমরা তখনই পাই যখন আমরা সৃষ্টির বিস্ময়কর নিয়ম ও নকশা ভাল করে খেয়াল করি। তিনি যদি এমন একজন ঈশ্বর হয়ে থাকেন যিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন, তাহলে কীভাবে তিনি এত দুঃখকষ্ট ঘটার অনুমতি দিতে পারেন? আমরা যদি ঈশ্বরকে বুঝতে চাই ও তাঁকে সঠিকভাবে উপাসনা করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই এই জরুরি প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পেতে হবে। কিন্তু কোথায় আমরা সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে পারি?

ঈশ্বর কি প্রকৃতই আমাদের জন্য চিন্তা করেন? ব্রোশারের একটা কপি নেওয়ার জন্য আমরা আপনাকে আমন্ত্রণ জানাই। এই সচেতন থাক! পত্রিকার ৩২ পৃষ্ঠা থেকে আপনি জানতে পারেন যে কীভাবে আপনি তা চেয়ে পাঠাতে পারেন। আমরা মনে করি, এই ব্রোশারের “ঈশ্বর কেন দুঃখকষ্ট ভোগের অনুমতি দিয়েছেন” এবং “বিদ্রোহের পরিণতি কী হয়?” অংশগুলো মন দিয়ে পড়লে আপনি সন্তোষজনক উত্তর পাবেন।

[১০ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আপনি কি এগুলো দেখে একজন সৃষ্টিকর্তা যে আছেন তার প্রমাণ পান?