সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

মাছের চামড়ার তৈরি জুতো

লিমার খবরের কাগজ এল কোমারশিও বলে, পেরুর আন্দিজ পর্বতমালায় একটা নতুন শিল্প হল, একধরনের মাছের চামড়া দিয়ে জুতো তৈরি করা। হ্যাচারি অর্থাৎ মাছের উৎপাদন স্থান বা মাছের খামার থেকে মাছের চামড়াগুলো নিয়ে সেগুলোকে পরিষ্কার করে প্রাকৃতিক প্রলেপ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। পরে সেগুলোতে তেল মাখানো হয় এবং প্রাকৃতিক উপাদান যেমন হলুদ, কোখনিল বা আখিয়োট নামক তরল রঞ্জক পদার্থে রঞ্জিত করা হয়। এই প্রক্রিয়া মাছের চামড়ায় হীরের আকৃতির আকর্ষণীয় যে-নকশা রয়েছে, সেটাকে নষ্ট করে না এবং “টাকার ব্যাগ, ঘড়ির ব্যাল্ট বা সেলুলার ফোনের আবরণ” হিসেবে তৈরি করা যায়। শিল্পসংক্রান্ত ইঞ্জিনিয়ার বারবারা লেয়ন যিনি এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দেন, তিনি বলেন: “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল যে, এতে কোন কৃত্রিম প্রলেপ যেমন ক্রোমিয়াম কখনোই ব্যবহার করা হয় না। এটা নষ্ট হওয়াকে রোধ করে এবং মাছের চামড়াকে পুরোপুরিভাবে প্রাকৃতিক বস্তু করে তোলে।”(g০২ ৩/৮)

হাসি—আজও সর্বোত্তম ওষুধ!

লন্ডনের দি ইনডিপেনডেন্ট খবরের কাগজ রিপোর্ট করে, “চার সপ্তায় রোজ একবার করে হাসির খোরাক পেলে তা হতাশ হওয়ার লক্ষণগুলোকে অনেকটা কমিয়ে দেয় বলে দেখা গেছে।” “যে-রোগীদেরকে রোজ ৩০ মিনিট করে হাস্যরসিকদের আরোগ্যমূলক টেপ শুনতে বলা হয়েছিল, তারা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন এবং অন্যদের বেলায় দেখা গেছে যে, তাদের মধ্যে এই লক্ষণগুলোর তীব্রতা শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে।” যুক্তরাষ্ট্রে ১০০টারও বেশি গবেষণা দেখায় যে, মজার কথায় হাসা উপকারজনক হতে পারে। হতাশায় ভুগছেন শুধু তারাই নয় কিন্তু যাদের এলার্জি, উচ্চ রক্তচাপ, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনকি ক্যানসার, বাতের ব্যথা অর্থাৎ রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস রয়েছে তারাও উপকার পেয়েছেন। হাসি যে স্বাস্থ্যকর, তা অনেক দিন ধরেই জানা গেছে কিন্তু ঠিক কীভাবে সেটা স্পষ্ট নয়। তবে সাইকোথেরাপিস্ট ডা. এড ডাংকেলব্ল কিছু বিষয় সতর্ক করে দিয়ে উপদেশ দেন: অপমানজনক ও ব্যাঙ্গাত্মক হাসি-ঠাট্টা এড়িয়ে চলুন এবং অতিরিক্ত ভাঁড়ামি না করার ব্যাপারে সাবধান হোন। তা না হলে রোগী হয়তো ভাবতে পারে যে, তার সমস্যাটাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে না।(g০২ ৩/৮)

ধোঁয়াশা হার্ট আ্যটাকের ঝুঁকিকে বাড়ায়

কানাডার খবরের কাগজ ন্যাশনাল পোস্ট বলে, “গরমের সময় কানাডার অনেক শহরে ছেয়ে থাকা ধোঁয়া ও কুয়াশার মিশ্রণ অর্থাৎ ঘন ধোঁয়াশা দুঘন্টার মধ্যে হার্ট আ্যটাকের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দিতে পারে।” ধোঁয়াশার মধ্যে অতি ক্ষুদ্র, অদৃশ্য দূষক রয়েছে যা মূলত গাড়ি, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও আগুন জ্বালানোর জায়গা থেকে নির্গত হয়। ওই খবরের কাগজ বলে, “যে-রোগীদের ইতিমধ্যেই হার্ট আ্যটাক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেমন যারা ডায়াবিটিসে ভুগছে, যাদের হৃদরোগ আছে কিংবা যারা বয়স্ক, তাদের চরম বায়ুদূষকের শিকার হওয়ার দুঘন্টার মধ্যেই হার্ট আ্যটাকের ঝুঁকি প্রায় ৪৮ শতাংশ বেড়ে গেছে। “২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই ঝুঁকি ৬২ শতাংশ বেড়ে যায়।” হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুরি মিটলম্যান পরামর্শ দেন যে, ধোঁয়াশা সম্বন্ধে যখন সতর্কবাণী দেওয়া হয়, তখন ‘ঘরের ভিতরে থাকার চেষ্টা করুন, ভাল হবে যদি এয়ারকন্ডিশন চালু থাকে। এই দূষকগুলো এতই ক্ষুদ্র যে সেগুলো বাতাসের সঙ্গে ঘরের মধ্যে ঢুকে যায় আর এয়ারকন্ডিশন চালু থাকলে এগুলোকে তা নিষ্কাশিত করে দেয়।’(g০২ ৩/৮)

বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকা

কানাডার ন্যাশনাল পোস্ট খবরের কাগজ বলে, “যে-বাবামারা বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকে, তাদের পৃথক হওয়ার দ্বিগুণ সম্ভাবনা রয়েছে।” স্ট্যাটিসটিকস্‌ কানাডা-র দ্বারা করা একটা গবেষণার সহকারী লেখিকা হ্যাদার জুবি বলেছিলেন, গবেষকরা আশা করেছিলেন যে, সন্তানই হবে বাবামার একে অপরের প্রতি অঙ্গীকারের এক চিহ্ন। তিনি বলেছিলেন, ‘কিন্তু যে-দম্পতিরা বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকতে চায়, তাদের মধ্যে পৃথক হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও বেশি।’ গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন যে, বিয়ে না করেই থাকতে শুরু করেছেন এমন প্রায় ২৫.৪ শতাংশ লোক পৃথক হয়ে গেছেন আর বিয়ে করে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন এমন প্রায় ১৩.৬ শতাংশ ব্যক্তি পৃথক হয়েছেন। জুবি বলেন, ‘যে-লোকেরা বিয়ে না করেই একসঙ্গে থাকে, তাদের সম্পর্ক কম স্থায়ী হয় কারণ যে-লোকেরা বিয়ে না করে [থাকার] জন্য তৈরি, তারা সম্ভবত বিয়ের অঙ্গীকারকে ততটা মূল্যবান বলে মনে করে না।’ (g০২ ৩/৮)

মৌচাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা বলে, ‘আফ্রিকার মৌমাছিরা অপ্রত্যাশিত অতিথিদের রোধ করার জন্য এক উদ্ভট কিন্তু অত্যন্ত কার্যকারী পন্থা উদ্ভাবন করেছে। তারা তাদের মৌচাকের কারাকক্ষে এদেরকে আটকে রাখে। শাস্তিদানের এই পদ্ধতি পরজীবী জীবাণুগুলোকে আটকে রাখে এবং দরকার হলে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা পতঙ্গগুলোকে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেয়।’ গবেষকরা “দক্ষিণ আফ্রিকায় মৌমাছিরা কীভাবে মৌচাকের ছোট গুবরেপোকা ইথিনা টুমিডার হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করে সেই বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, যে-পোকাগুলোর আকার মৌমাছির আকারের অর্ধেক।” প্যাটার নইমান নামে একজন গবেষক গুবরেপোকাকে “ট্যাংকের মতো” দেখতে বলে বর্ণনা করেন। তাই, মৌমাছিদের একমাত্র সুরক্ষা হল গুবরেপোকাদেরকে বন্দি করে ফেলা। নইমান বলেন, “কিছু মৌমাছি যখন কারাকক্ষ তৈরিতে ব্যস্ত, তখন অন্যগুলো সবসময় পাহারা দিতে থাকে, যাতে গুবরেপোকা বের হয়ে যেতে না পারে।” মৌমাছিরা গাছের রজন সংগ্রহ করে এবং চার দিন পর্যন্ত নির্মাণ কাজ চলে। ইউরোপীয় মৌমাছি যাদের মধ্যে উত্তর আমেরিকার মৌমাছিও রয়েছে, সেগুলোর স্বভাব এইরকম নয়। তাই, প্রায় পাঁচ বছর আগে যখন হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রে গুবরেপোকা দেখা যায়, যেটা একটা মৌচাককে আক্রমণ করে, তখন সেই মৌচাক “মূলত নষ্ট হয়ে যায়।” (g০২ ২/২২)

বিভিন্ন প্রাণী দূষণকে নির্ধারণ করে

প্রাণীবিজ্ঞানী স্টিভ হপকিন দাবি করেন যে, বায়ু ও ভূমির দূষণ পরিমাপের জন্য কেঁচো এক আদর্শ প্রাণী। প্রচুর পরিমাণে ও সস্তায় পাওয়া যায় বলে এই ক্ষুদ্র প্রাণীটা অত্যাধুনিক কৃত্রিম যন্ত্রের চেয়েও ভাল কাজ করে। জলের গুণগত মান নির্ধারণ করতে সাধারণ ঝিনুক ব্যবহার করা হয়। বালতির আকারের মাসেলমনিটর অর্থাৎ ঝিনুক বিশিষ্ট নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, যেটার মধ্যে আটটা জীবন্ত ঝিনুক রাখা হয়, তা ইতিমধ্যেই রাইন ও ড্যানিউব নদীর দূষণ পরিমাপে কার্যকারী প্রমাণিত হয়েছে। এই যন্ত্রের নির্মাতা কিস্‌ ক্র্যামার বলেছিলেন, “হঠাৎ করে যদি দূষিত করে এমন কিছু দ্রব্য জমে ওঠে, তখন ঝিনুকগুলো তা খুঁজে বের করে।” ঝিনুকগুলো এদের খোলস বন্ধ করে বিভিন্নরকমের রাসায়নিক সংক্রামক পদার্থের স্পর্শে সাড়া দেয় আর এই সংকেত মাসেলমনিটরে পাওয়া যায়। স্পেনের এল পায়িস খবরের কাগজ বলে, এই মনিটরগুলোর একটা প্রধান সুবিধা হল সজীব বস্তুর ওপর দূষণ কতটা প্রভাব ফেলে, তা এগুলো পরিমাপ করে।(g০২ ২/২২)

বাইবেল অনুবাদের নতুন রেকর্ড

ব্রিটেনের বাইবেল সোসাইটি রিপোর্ট করে, ‘এখন মোট ২,২৬১টা ভাষায় আংশিক বা পুরো বাইবেল পাওয়া যাচ্ছে, যে সংখ্যা গত এক বছরের চেয়ে ২৮টা বেশি। পুরো [বাইবেল] বর্তমানে ৩৮৩টা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত এক বছরের চেয়ে ১৩টা ভাষায় বেশি।’ ইব্রীয় বা গ্রিক শাস্ত্রের যে-কোন একটা পুরো খণ্ড যা নতুন ও পুরাতন নিয়ম নামেও পরিচিত, তা এখন ৯৮৭টা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে।(g০২ ২/২২)

জেনেশুনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আবার নিশ্চিত করা হয়

১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম আদেশ দেওয়ার দশ বছর পর ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বারবার বলে যে, কোন রোগী সমস্ত কিছু জেনেশুনে তার সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আগে পর্যন্ত তাকে রক্ত দেওয়া যাবে না। ২০০১ সালের ২৫শে জানুয়ারি এই আদেশ দেওয়া হয় এবং গাসেতা আফেশিয়াল দেলা র্‌যাপুবলিকা ইতালিয়ানা (অফিশিয়াল গেজেট অফ দি ইটালিয়ান রিপাবলিক)-এ ছাপা হয়, যা বলে: “কাউকে রক্ত বা রক্তের অন্য কোন উপাদান এবং/অথবা রক্ত দিয়ে তৈরি কোন বস্তু প্রয়োগ করা ঝুঁকির বাইরে নয়, তাই কাউকে এইরকম পদ্ধতি প্রয়োগ করার আগে তিনি তাতে রাজি আছেন কি না বা অসম্মত কি না, তা অবশ্যই লিখিতভাবে জানা উচিত।”(g০২ ৩/২২)

ইন্টারনেটে কবর পরিদর্শনের ব্যবস্থা

দ্যা জাপান টাইমস রিপোর্ট করে যে, সাইবারস্পেসে একটা ইন্টারনেট কমপিউটারে তৈরি কবর পরিদর্শন করা সম্ভব করেছে। ইন্টারনেটে মৃত ব্যক্তির প্রতি তার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়রা সম্মানের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারেন। কমপিউটারে মৃত ব্যক্তির সমাধিফলক ও সেইসঙ্গে তার ছবি ও সংক্ষেপে আত্মজীবনী দেখা যায়। এর সঙ্গে একটু জায়গা রাখা আছে যাতে পরিদর্শকরা বার্তা দিতে পারেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পরিদর্শকদের কথা বিবেচনা করে মাউসে ক্লিকের মাধ্যমে কবরে ফল, ফুল, আগরবাতি এবং মদ্যজাতীয় পানীয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন-লাইন মেমোরিয়াল সার্ভিসের প্রেসিডেন্ট, তাদাশি ওয়াতানাবে বলেন, “কেউ কেউ বলেন যে, যারা প্রায়ই কবরে যেতে পারেন না, যেমন যারা বিদেশে থাকেন সেই লোকেদের জন্য এটা খুবই ভাল এক ধারণা।”(g০২ ৩/২২)