সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মধু—এক মিষ্টি আরোগ্যকারী

মধু—এক মিষ্টি আরোগ্যকারী

মধু—এক মিষ্টি আরোগ্যকারী

চিকিৎসাবিদ্যার কিছু গবেষক মধুর পচননিবারক ও প্রদাহনিবারক গুণ দেখে অবাক হয়ে গেছেন। কানাডার দ্যা গ্লোব আ্যন্ড মেইল খবরের কাগজ বলে: “যে-কৃত্রিম আ্যন্টিবায়োটিক, আ্যন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুগুলোর ওপর কার্যকারী হয় না, তার বিপরীতে মধু সংক্রামিত ক্ষতের অন্তত কিছু জীবাণুকে প্রতিরোধ করতে পারে।”

মধুর মধ্যে কোন্‌ উপাদানগুলো রয়েছে, যা এটাকে আরোগ্যকারী করে তুলতে পারে? এর উত্তরের সঙ্গে শ্রমিক মৌমাছিরা জড়িত, যেগুলো ফুলে ফুলে ঘুরে সুধা সংগ্রহ করে। মৌমাছির লালার মধ্যে গ্লুকোজ-অক্সিডেজ নামে এক প্রধান এনজাইম রয়েছে, যা সুধার মধ্যে গ্লুকোজকে ভেঙে আলাদা করে। এই বিভাজনের ফলে উপজাত পদার্থ হিসেবে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নির্গত হয়, যা ক্ষত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কোন ক্ষতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড দেওয়া হলে এর প্রভাব অল্পক্ষণ স্থায়ী হয়; কিন্তু মধুর কার্যকারিতা ভিন্ন। গ্লোব খবরের কাগজ বলে, “কোন ক্ষতে মধু দেওয়া হলে তা শরীরের তরল পদার্থের সঙ্গে মিশে আরও পাতলা হয়ে যায় এবং মধুর প্রাকৃতিক অম্লত্বকে কমিয়ে দেয়।” অম্লত্বের পরিমাণ কমে যাওয়া এই অবস্থায় এনজাইম কাজ করতে শুরু করে। মধুতে যে-চিনি বা শর্করা থাকে এর বিশ্লেষণ খুব ধীরে হয় এবং অপরিবর্তনীয় থাকে। এই প্রক্রিয়ায় খুব ধীরে ধীরে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নির্গত হয়, যা এতে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট, তবে তা আশেপাশের সুস্থ কোষগুলোর কোন ক্ষতি করে না।

গ্লোব অনুসারে, মধুর এমন অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। “মধুর এক পাতলা স্তর আর্দ্র অবস্থার তৈরি করে, যা ত্বককে রক্ষা করে এবং ক্ষতের ওপর এক শক্ত আবরণ তৈরিতে বাধা দেয়। মধু রক্তের নতুন কৈশিক কলার বৃদ্ধি ও গঠনকে উদ্দীপিত করে এবং কোষগুলোকে নতুন ত্বক তৈরি করতে সাহায্য করে।” সেইসঙ্গে মধুতে আ্যন্টি-অক্সিডেন্ট যে-পদার্থগুলো রয়েছে, তা প্রদাহনিবারক হিসেবে কাজ করে, যা “পচন রোধ করে, রক্তের প্রবাহকে বাড়ায় এবং ক্ষত থেকে ‘তরল বের হওয়াকে’ রোধ করে।”

কিন্তু ওই রিপোর্টটা সাবধান করে দেয় যে, “মধু সকলের জন্য ভাল নয়।” হিসেব করে দেখা গেছে যে, মধুর মধ্যে শতকরা ৫ ভাগ পর্যন্ত বিষক্রিয়ার জীবাণু থাকে। হেলথ্‌ কানাডার বাটুলিজম রেফারেন্স সার্ভিস ও সেইসঙ্গে শিশুদের বিভাগ, এক বছরের নিচে বয়স এমন শিশুদেরকে মধু দিতে বারণ করে কারণ “ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে শিশুদেরকে রক্ষা করার জন্য তাদের অন্ত্রে এখনও পর্যাপ্ত ক্ষুদ্র অঙ্গগুলো তৈরি হয়নি।” (g০২ ৩/৮)