সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

সুগন্ধি যুগে যুগে

সুগন্ধি যুগে যুগে

সুগন্ধি যুগে যুগে

মেক্সিকোর সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক

সুগন্ধির এক প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। আগে মনে করা হতো যে, ধর্মীয় পর্বগুলোতে ধূপ জ্বালানোর জন্য আঠা ও রজন আগুনে পুড়িয়ে সুগন্ধি তৈরি শুরু হয়েছিল। সুগন্ধি সম্বন্ধে একটা প্রাচীন নথি মিশর থেকে আসে। ফরৌণ টুটাংকামেনের কবর খোলা হলে ৩,০০০টারও বেশি সুগন্ধির পাত্র পাওয়া যায়, যেগুলোর কয়েকটাতে তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও, কিছুটা সুবাস সংরক্ষিত ছিল!

সাধারণ কাল পূর্ব ১৫০০ সালে ‘উত্তম উত্তম সুগন্ধি দ্রব্যের’ মধ্যে ঈশ্বরের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী অভিষেকার্থ পবিত্র তেল-ও ছিল, যা ইস্রায়েলীয় যাজকরা ব্যবহার করতেন। (যাত্রাপুস্তক ৩০:২৩-৩৩) ইব্রীয়রা প্রসাধন এবং ওষুধ ও সেইসঙ্গে মৃতদেহকে কবর দেওয়ার জন্য তৈরি করার সময় সুবাস যুক্ত মলমগুলো ব্যবহার করত আর কোন সন্দেহ নেই যে, সেগুলো পচন ও দুর্গন্ধ নিবারক হিসেবে কাজ করত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কয়েকজন স্ত্রীলোক কবরে যীশুর দেহে দেওয়ার জন্য মশলা ও সুগন্ধি তেল নিয়ে এসেছিলেন। (লূক ২৩:৫৬; ২৪:১) ইস্রায়েলীয় ঘরে অতিথির পায়ে সুগন্ধি তেল মাখানো ছিল আতিথেয়তা দেখানোর একটা উপায়।—লূক ৭:৩৭-৪৬.

প্রথম শতাব্দীতে রোমে বছরে ২,৮০০ টন কুন্দুরু (ফ্র্যাংকিনসেন্স) এবং ৫৫০ টন গন্ধরস ব্যবহার করা হতো বলে জানা যায়। এইরকম সুবাসিত দ্রব্যগুলো শিশু যীশুর জন্য উপহার হিসেবে আনা হয়েছিল। (মথি ২:১, ১১) কথিত আছে যে, সা.কা. ৫৪ সালে রোমীয় সম্রাট নিরো একটা অনুষ্ঠানে ১,০০,০০০ মার্কিন ডলার সমমূল্যের সুগন্ধি ছড়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। তার খাবার ঘরে গুপ্ত পাইপগুলো অতিথিদের ওপর কুয়াশার মতো সুগন্ধি জল ছিটিয়ে দিত। সা.কা. সপ্তম শতাব্দীর পর থেকে চাইনিজরা সুগন্ধযুক্ত পাউডার ভরা ব্যাগ ও সুবাসিত দ্রব্য ব্যবহার করত। মধ্যযুগে, ইসলামি সংস্কৃতিতেও সুগন্ধি বিশেষ করে গোলাপের সুবাস ব্যবহার করা হতো।

সপ্তদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সে সুগন্ধি শিল্প এত সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠেছিল যে, পঞ্চদশ লুইয়ের দরবারকে সুগন্ধি দরবার বলা হতো। কেবল ত্বকেই নয় কিন্তু কাপড়, দস্তানায়, ফ্যান ও আসবাবপত্রেও সুগন্ধি দেওয়া হতো।

অষ্টাদশ শতাব্দীতে কোলন উদ্ভাবন করা হয় এবং এটা স্নানের জলে, মদে, চিনি খাওয়ার পর মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো এবং ইঞ্জেকশনের তরল তৈরিতে ও ব্যথা উপশমের জন্য প্রলেপ দিতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। উনবিংশ শতাব্দীতে সিনথেটিক সুবাস উদ্ভাবন করা হয়েছিল। তাই, প্রথমে আবিষ্কৃত যে-সুগন্ধিগুলো ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী ছিল না, সেগুলোকে বাজারজাত করা হয়। বর্তমানে সুগন্ধি শিল্প কোটি কোটি ডলারের ব্যাবসা করে চলেছে। * (g০২ ২/৮)

[পাদটীকা]

^ ২০০০ সালের ৮ই আগস্ট সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকায় সুগন্ধির স্পর্শকাতরতার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]

মিশর, সা.কা.পূ. চতুর্দশ শতাব্দীতে টুটাংকামেনের কবর থেকে একটা সুগন্ধির পাত্র

[সৌজন্যে]

Werner Forman/Egyptian Museum, Cairo, Egypt/Art Resource, NY

[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]

গ্রিস, সা.কা.পূ. ৫ম শতাব্দী

[সৌজন্যে]

Musée du Louvre, Paris

[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]

ফ্রান্স, সা.কা. অষ্টাদশ শতাব্দী

[সৌজন্যে]

Avec lʹaimable autorisation du Musée de la Parfumerie Fragonard, Paris

[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]

আধুনিক সুগন্ধির বোতল