সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পুলিশ বাহিনী কেন তাদের প্রয়োজন রয়েছে?

পুলিশ বাহিনী কেন তাদের প্রয়োজন রয়েছে?

পুলিশ বাহিনী কেন তাদের প্রয়োজন রয়েছে?

পুলিশদের ছাড়া জীবন কেমন হবে? ১৯৯৭ সালে কী হয়েছিল যখন ব্রাজিলের রেসিফা শহরে ১৮,০০০ পুলিশ অফিসার ধর্মঘট করেছিল আর সেই শহরের দশ লক্ষেরও বেশি অধিবাসী পুলিশ ছাড়াই ছিল?

“সমুদ্রতীরবর্তী এই প্রধান শহরে ব্যস্ত পাঁচ দিনে দৈনিক খুনের হার তিনগুণ বেড়ে গিয়েছে,” দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট রিপোর্ট করেছিল। “আটটা ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে। গুন্ডাপাণ্ডারা শপিং মলের মধ্যে লুটপাট করেছে এবং অভিজাত এলাকাগুলোতে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাণ্ডব ঘটিয়েছে। এ ছাড়া, কেউই রাস্তার আইন মেনে চলছে না। . . . অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় এত এত মৃত্যু ঘটছে যে, মর্গে জায়গা কুলোচ্ছে না আর সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতালে লোকেদের নিয়ে আসা যেন শেষই হচ্ছে না, সেখানে গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাহত ব্যক্তিদের হলরুমের মেঝেতে শুইয়ে রাখা হচ্ছে।” রিপোর্ট বলা হয় যে, আইন সচিব এই বলে রিপোর্ট করেছিলেন: “এখানে এইভাবে আইন অমান্য করার ঘটনা এই প্রথম।”

আমরা যেখানেই বাস করি না কেন, সভ্যতার বাহ্যিক চেহারার ঠিক উলটো দিকেই মন্দতা রয়েছে। আমাদের পুলিশের সুরক্ষার প্রয়োজন। অবশ্য, আমরা অনেকেই কিছু পুলিশ অফিসারের পাশবিকতা, দুর্নীতি, উদাসীনতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সম্বন্ধে শুনেছি। এইধরনের ঘটনা কোথাও বেশি কোথাও কম ঘটে থাকে। কিন্তু, পুলিশ বাহিনী না থাকলে আমাদের কী হতো? এটা কি সত্যি নয় যে, পুলিশরা প্রায়ই মূল্যবান সেবা দিয়ে থাকে? সচেতন থাক! পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞেস করেছিল যে, কেন তারা এই পেশা বেছে নিয়েছে।

সমাজসেবার কাজ

“আমি লোকেদের সাহায্য করতে পেরে আনন্দ পাই,” একজন ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার ইভান বলেন। “বিভিন্ন ধরনের কাজ দেখে আমি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। সাধারণত বোঝা যায় না যে, পুলিশ বাহিনী শতকরা মাত্র ২০ থেকে ৩০ ভাগ অপরাধসংক্রান্ত কাজ মোকাবিলা করে থাকে। এই বিভাগের বেশির ভাগই সমাজসেবার কাজ। প্রতিদিন নিয়মিত টহল দেওয়ার সময় আমি একাধারে আকস্মিক মৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, অপরাধ এবং পথহারা একজন বয়স্ক ব্যক্তি যার সাহায্যের প্রয়োজন, তার প্রতি মনোযোগ দিতে পারি। কোন হারিয়ে যাওয়া শিশুকে ঘরে পৌঁছে দেওয়া বা অপরাধের শিকার কোন ব্যক্তিকে তার মানসিক আঘাতের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করা বিশেষভাবে পরিতৃপ্তিদায়ক হতে পারে।”

স্টিভেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার। তিনি বলেন: “লোকেরা যখন সত্যিই সাহায্য পাওয়ার আশায় আপনার কাছে আসে, তখন একজন পুলিশ অফিসার হিসেবে সর্বোত্তমভাবে সাহায্য করার সামর্থ্য এবং সময় আপনার রয়েছে। এই বিষয়টাই আমাকে এই চাকরির প্রতি আকৃষ্ট করেছে। আমি লোকেদের সাহায্য করার জন্য তাদের পাশে থাকতে এবং তাদের ভার বহন করতে চেয়েছিলাম। আমি মনে করি যে, অন্তত কিছুটা হলেও আমি অপরাধ থেকে লোকেদের রক্ষা করতে পেরেছি। আমি পাঁচ বছরে ১,০০০রেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করেছি। কিন্তু, হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খুঁজে বের করা, পথ হারিয়ে ফেলা আ্যলজেইমার রোগীদের সাহায্য করা এবং চুরি হয়ে যাওয়া যানবাহন খুঁজে বের করা, এই সমস্ত কিছু প্রচুর পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে। এ ছাড়া, অপরাধীকে সন্দেহ করে ধাওয়া করা ও তাকে ধরা সত্যিই রোমাঞ্চকর।”

“জরুরি পরিস্থিতিতে রয়েছে এমন লোকেদের আমি সাহায্য করতে চাই,” বলিভিয়ার একজন পুলিশ অফিসার, রোবার্টো বলেন। “ছেলেবেলা থেকে আমি পুলিশদের শ্রদ্ধা করি কারণ তারা লোকেদের বিপদ থেকে রক্ষা করে। এই পেশার প্রথম দিকে আমার কাজ ছিল শহরের কেন্দ্রস্থল, যেখানে সরকারি অফিসগুলো ছিল সেখানে পায়ে হেঁটে টহল দেওয়া। আমরা প্রায় প্রতিদিনই রাজনৈতিক বিক্ষোভগুলো মোকাবিলা করতাম। আমার কাজ ছিল পরিস্থিতিকে হিংসাত্মক হতে বাধা দেওয়া। আমি লক্ষ করেছি যে, আমি যদি দলের নেতাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে ও যুক্তি দেখিয়ে কথা বলি, তা হলে সহজে দাঙ্গা এড়াতে পারি, যেগুলো হয়তো অনেক লোককে আহত হওয়ার কারণ হতে পারে। তা সত্যিই পরিতৃপ্তিদায়ক।”

পুলিশদের কাজের পরিধি ব্যাপক। কিছু কিছু দেশে তারা গাছে আটকে পড়া একটা বিড়ালকে উদ্ধার করা থেকে শুরু করে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে লোকেদের বাঁচানো এবং ব্যাংক ডাকাতি, সবই মোকাবিলা করে। তা সত্ত্বেও, আধুনিক দিনের পুলিশ বাহিনী যখন থেকে শুরু হয়েছে সেই সময় থেকেই তারা আশা ও ভয় উভয় বিষয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। কেন, তা পরের প্রবন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।(g০২ ৭/৮)

[২, ৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

২ ও ৩ পৃষ্ঠায়: চিনের চ্যাংদুতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে; গ্রিক দাঙ্গা পুলিশ; দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ অফিসাররা

[সৌজন্যে]

Linda Enger/Index Stock Photography

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

২০০১ সালের জুলাই মাসে ব্রাজিলের সালভেডরে পুলিশ ধর্মঘটের সময় দোকান লুট করা হয়েছিল

[সৌজন্যে]

Manu Dias/Agência A Tarde

[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

স্টিভেন, যুক্তরাষ্ট্র

[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

রোবার্টো, বলিভিয়া