সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মোটরগাড়ি দুর্ঘটনা আপনি কি নিরাপদ?

মোটরগাড়ি দুর্ঘটনা আপনি কি নিরাপদ?

মোটরগাড়ি দুর্ঘটনা আপনি কি নিরাপদ?

“গাড়ি চালানোর ব্যাপারে আমার রেকর্ড খুব ভাল, তাই মোটরগাড়ি দুর্ঘটনা নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই।” “কেবল অল্পবয়সী ও বেপরোয়া চালকরাই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।” অনেকে মনে করে যে, তাদের কখনও মোটরগাড়ি দুর্ঘটনা হবে না। আপনিও কি তাই মনে করেন? আপনি কি মনে করেন যে, আপনি কখনও মোটরগাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন না?

পরিসংখ্যান দেখায় যে, আপনি যদি কোন উন্নত দেশে বাস করেন, তা হলে খুব সম্ভবত আপনার জীবনে অন্তত একবার হলেও যানবাহনজনিত দুর্ঘটনা ঘটবে। অনেকের ক্ষেত্রে এইরকম দুর্ঘটনা মৃত্যুর দিকে নিয়ে গেছে। সারা পৃথিবীতে, এখন প্রতি বছর পাঁচ লক্ষেরও বেশি যানবাহন সংক্রান্ত মৃত্যুজনক দুর্ঘটনা ঘটে। বিগত বছরগুলোতে যারা নিহত হয়েছে তারা সম্ভবত ভেবেছিল, তাদের প্রতি কখনও এমনটা ঘটবে না। নিজের বেলায় এই ঝুঁকিকে কমানোর জন্য আপনি কী করতে পারেন? প্রতিরোধই হল এর চাবিকাঠি। তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব ও বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে যে-দুর্ঘটনাগুলো ঘটে, সেগুলো কীভাবে আপনি প্রতিরোধ করতে পারেন, তা বিবেচনা করুন।

তন্দ্রাচ্ছন্ন চালক

কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলে, একজন তন্দ্রাচ্ছন্ন চালক, একজন মাতাল চালকের মতোই বিপদজনক হতে পারেন। রিপোর্টগুলো দেখায় যে, তন্দ্রাচ্ছন্নতার কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফ্লিট মেইনটিনেন্স আ্যন্ড সেফটি রিপোর্ট সম্প্রতি বলেছে যে, নরওয়েতে এক বছরে প্রতি ১২ জন চালকের মধ্যে ১ জন মোটরগাড়ি চালক গাড়ি চালানোর সময় ঘুমিয়ে পড়েন। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের দ্যা স্টার খবরের কাগজ অনুসারে, ওই দেশে যানবাহন সংক্রান্ত সমস্ত সংঘর্ষের এক তৃতীয়াংশের মূল কারণ হচ্ছে চালকদের ক্লান্তি। অন্যান্য দেশের রিপোর্টগুলো প্রকাশ করে যে, ক্লান্তভাব সব জায়গার চালকদের প্রভাবিত করছে। কেন এত তন্দ্রাচ্ছন্ন চালক?

আজকের কর্মব্যস্ত জীবনধারা এই সমস্যার জন্য দায়ী। নিউজউইক পত্রিকা সম্প্রতি রিপোর্ট করেছিল যে, আমেরিকাবাসীরা হয়তো “এই শতাব্দীর শুরুতে যতক্ষণ ঘুমাত, এখন প্রতি রাতে তার চেয়ে এক বা দেড় ঘন্টা কম ঘুমায়—আর এই সমস্যাটা দিন-দিন আরও খারাপের দিকে যাবে।” কেন? ওই পত্রিকা ঘুম বিশেষজ্ঞ টেরি ইয়াং এর কথাগুলো উদ্ধৃত করে বলে: “লোকেরা ঘুমকে এক সামগ্রী হিসেবে দেখেছে, যেটাকে তারা কিছুটা কাটছাট করতে পারবে। কেউ যদি খুব কম ঘুমিয়েও সুস্থসবল থাকে, তা হলে তাকে কঠোর পরিশ্রমী ব্যক্তি হিসেবে শনাক্ত করা হয়।”

এটা বলা হয়ে থাকে যে, একজন লোকের প্রতি রাতে গড়ে সাড়ে ছয় ঘন্টা থেকে নয় ঘন্টা ঘুমানো দরকার। এর থেকে বঞ্চিত হলে, লোকেদের মধ্যে এমন একটা অভ্যাস গড়ে ওঠে, যেটাকে “ঘুম ঋণ” (স্লিপ ডেট্‌) বলে। এএএ ফাউন্ডেশন ফর ট্রাফিক সেফটি দ্বারা প্রকাশিত একটা রিপোর্ট বলে: “স্বাভাবিক কাজের দিনগুলোতে প্রতি রাতে প্রয়োজনের চেয়ে এমনকি ৩০ বা ৪০ মিনিট করে কম ঘুমালে সপ্তাহ শেষে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা ঘুম ঋণ হতে পারে, দিনের বেলা ঘুমঘুম ভাবের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির জন্য এটাই যথেষ্ট।”

মাঝেমধ্যে আপনার হয়তো রাতে ভাল ঘুম না-ও হতে পারে। অনিদ্রা, রাত জেগে অসুস্থ বাচ্চার দেখাশোনা করা বা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে এমন অন্যান্য বিষয়গুলো আপনার ঘুম কেড়ে নিতে পারে। পরদিন গাড়ি চালানোর সময় আপনি হয়তো দেখবেন যে, আপনার কেমন ঘুমঘুম লাগছে। যদি তা-ই হয়, তা হলে আপনার কী করা উচিত?

ঘুমঘুম ভাব দূর করার জনপ্রিয় পদ্ধতিগুলো যেমন চা-কফি খাওয়া, জানালা খুলে দেওয়া, চুইংগাম চিবানো বা মশলাযুক্ত কোন খাবার খেয়েও হয়তো আপনি সেই ভাব দূর করতে পারবেন না। এই তথাকথিত পদ্ধতিগুলো একটাও প্রকৃত সমস্যার সমাধান জোগায় না। আপনার যা দরকার, তা হল ঘুম। তাই, একটু ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন? দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস পরামর্শ দিয়েছিল: “সতেজ হওয়ার জন্য দিনের বেলা ৩০ মিনিটের বেশি ঘুমানো উচিত নয়; আধ ঘন্টার বেশি ঘুমালে শরীর একটু একটু করে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হতে পারে, যার থেকে জেগে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে।” একটু ঘুমিয়ে নেওয়া হয়তো আপনার গন্তব্য স্থানে পৌঁছানোকে দেরি করাতে পারে কিন্তু এটা আপনার আয়ু বাড়াতে পারে।

আপনার জীবনধারাই আপনাকে এক তন্দ্রাচ্ছন্ন চালক হয়ে উঠতে পরিচালিত করতে পারে। আপনি কি ইন্টারনেটের পিছনে প্রচুর সময় দেন বা অনেক রাত জেগে টেলিভিশন দেখেন? আপনি কি সেইধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে যান, যেগুলো বেশ অনেক রাত পর্যন্ত চলে? আপনার ঘুম কেড়ে নেয় এমন অভ্যাসগুলোকে প্রশ্রয় দেবেন না। জ্ঞানী রাজা শলোমন একবার এমনকি ‘এক মুঠো বিশ্রামের’ গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।—উপদেশক ৪:৬, NW.

অভিজ্ঞ অথচ বয়স্ক

প্রায়ই দেখা যায় যে, বয়স্ক চালকরা রাস্তার সম্বন্ধে বেশি অভিজ্ঞ। এ ছাড়া, তারা খুব কমই ঝুঁকি নেয় এবং নিজেদের সীমাবদ্ধতা জানে। কিন্তু, বয়স্ক চালকরা যানবাহন দুর্ঘটনার বিপদ থেকে মুক্ত নয়। বস্তুতপক্ষে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এইধরনের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি ও ভ্রমণ (ইংরেজি) পত্রিকা বলেছিল: “মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯ ভাগ লোকেদের বয়স ৭০ বছর কিন্তু এই ব্যক্তিদের যানবাহন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরিমাণ শতকরা ১৩ ভাগ।” দুঃখের বিষয় যে, বয়স্ক চালকদের সঙ্গে জড়িত দুর্ঘটনার সংখ্যা দিন-দিন বেড়ে চলেছে।

মার্টলের কথা লক্ষ করুন, যার বয়স এখন ৮০ বছর। * তিনি ৬০ বছরেরও বেশি আগে গাড়ি চালানো শুরু করেছিলেন এবং কখনও দুর্ঘটনায় পড়েননি। কিন্তু, আর সকলের মতো তিনিও বার্ধক্যের প্রভাব বুঝতে পারছেন—যে-প্রভাবগুলো হয়তো তাকে দুর্ঘটনার শিকার করতে পারে। কিছুদিন আগে তিনি সচেতন থাক!-কে বলেছেন: “বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে [গাড়ি চালানো সহ] জীবনের সমস্ত কিছুই এক চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে।”

মোটরগাড়ি দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়ানোর জন্য মার্টল কী করেছেন? তিনি বলেন, “বয়সের ক্ষতিপূরণ দিতে আমাকে অনেক রদবদল করতে হয়েছে।” উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি গাড়ি চালানো কমিয়ে দিয়েছেন, বিশেষ করে রাতের বেলা। এই সামান্য পরিবর্তন তাকে গাড়ি চালানো বন্ধ না করেই নিরাপদ রেকর্ড বজায় রাখতে সাহায্য করছে।

স্বীকার করা যত কঠিনই হোক না কেন, বয়সের ভার প্রত্যেককে প্রভাবিত করে। (উপদেশক ১২:১-৭) স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়, আমরা ধীর প্রতিক্রিয়া দেখাই এবং আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায় আর এই সমস্ত কিছু নিরাপদ গাড়ি চালানোকে কঠিন করে তোলে। কিন্তু, কেবল বার্ধক্যই একজন চালককে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে অযোগ্য করে তোলে না। যে-বিষয়টা জরুরি তা হল, চালকের দক্ষতা। আমাদের শারীরিক ক্ষমতায় পরিবর্তনের বিষয়টা স্বীকার করা এবং তালিকায় যথাযথ রদবদল গাড়ি চালানোর দক্ষতায় উন্নতি করতে সাহায্য করে।

আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না কিন্তু আপনার দৃষ্টিশক্তি পরিবর্তিত হচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার দৃষ্টিক্ষেত্র কমে আসে এবং রেটিনার আরও বেশি আলোর দরকার হয়। বয়স্ক ও অভিজ্ঞ চালক (ইংরেজি) পুস্তিকা বলে: “৬০ বছর বয়স্ক একজন চালকের, কিশোর বয়সী লোকেদের চেয়ে তিন গুণ বেশি আলোর প্রয়োজন হয় এবং আলো থেকে অন্ধকারে গেলে, পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তার দ্বিগুণ সময় লাগে।” আমাদের চোখের এই পরিবর্তনগুলো রাতে গাড়ি চালানোকে কঠিন করে তুলতে পারে।

হেনরির বয়স ৭২ এবং তার গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গাড়ি চালানোর ভাল রেকর্ড আছে। বছর পেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি লক্ষ করতে শুরু করেন যে, রাতের বেলা সামনের দিক থেকে আসা গাড়ির চোখ ধাঁধানো আলো গাড়ি চালানোকে রীতিমতো কঠিন করে তোলে। চোখ পরীক্ষা করানোর পর, তিনি জানতে পারেন যে তার নতুন চশমা লাগবে, যা রাতের বেলার চোখ ধাঁধানো আলো কমানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। “এরপর রাতের বেলা গাড়ি চালানো আর কঠিন বলে মনে হয় না,” হেনরি বলেন। তার এই ছোট্ট রদবদল গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে এক বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু, অন্যান্যদের জন্য যেমন মার্টলের মতো ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সমাধান হল, রাতের বেলা গাড়ি চালানো একেবারেই ছেড়ে দেওয়া।

এ ছাড়া, বার্ধক্য ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময়কেও প্রভাবিত করতে পারে। বয়স্ক ব্যক্তিরা যুবকদের চেয়ে আরও বেশি জ্ঞানী ও বিবেচক হতে পারে। কিন্তু, একজন ব্যক্তির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য বুঝতে ও প্রতিক্রিয়া দেখাতে আরও বেশি সময়ের দরকার হয়। এই বিষয়টা গাড়ি চালানোকে আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তোলে, যেহেতু যানবাহন ও রাস্তার অবস্থা প্রতিনিয়ত পালটে যাচ্ছে। যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এই পরিবর্তনগুলো মূল্যায়ন করা দরকার।

গাড়ি ও যাত্রা পত্রিকাটি রিপোর্ট করে যে, “বয়স্ক চালকদের মধ্যে মৃত্যুজনক দুর্ঘটনার সবচেয়ে সাধারণ কারণটা হল যে, বয়স্ক চালকরা যানবাহন নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রে তাড়াতাড়ি চোখ বুলিয়ে সম্পূর্ণ তথ্য কোনরকমে পড়ে নিয়েছিল।” কেন? ওই একই রিপোর্ট আরও বলে: “সমস্যাটা . . . এমন পরিস্থিতিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে মনে হয়, যেখানে একজন বয়স্ক চালককে চৌরাস্তায় তার গাড়ি নেওয়ার আগে বাম ও ডান দিকের বিভিন্ন পরিবর্তিত তথ্যকে আয়ত্ত করতে হবে।”

ধীর প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে আপনি কী করতে পারেন? চৌরাস্তার নিকটবর্তী হলে সাবধান হোন। এগিয়ে যাওয়ার আগে আশপাশের গাড়িগুলো দুবার করে দেখে নেওয়ার অভ্যাস করুন। মোড় ঘোরার সময় বিশেষভাবে সাবধান হোন। চৌরাস্তায় মোড় ঘোরা মারাত্মক হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনাকে সামনের দিক থেকে আসা যানবাহনকে অতিক্রম করতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে চৌরাস্তায় শতকরা ৪০ ভাগ মৃত্যুজনিত দুর্ঘটনায় চালকদের বয়স ৭৫ বছরের বেশি, যা বাঁদিকে মোড় ঘোরার সময় হয়েছে। দি এএএ ফাউন্ডেশন ফর ট্রাফিক সেফটি সেই দেশের চালকদের পরামর্শ দেয়: “বাঁদিকে মোড় ঘোরা এড়ানোর জন্য আপনারা মাঝে মাঝে তিনবার ডান দিকে মোড় নিতে পারেন।” আপনি হয়তো যেখানে বাস করেন সেখানকার পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সেই নীতিকে কাজে লাগাতে পারেন। আগে থেকে একটু পরিকল্পনা করে নিলে আপনি হয়তো বিপদজনক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ চৌরাস্তাগুলোতে দুর্ঘটনা এড়াতে পারবেন।

বিবেচনা করার মতো এক সিদ্ধান্ত

আপনার গাড়ি চালানোর ক্ষমতা কীরকম, তা মূল্যায়ন করতে কী আপনাকে সাহায্য করতে পারে? আপনি হয়তো একজন সম্মানিত বন্ধু বা পরিবারের সদস্যকে আপনার সঙ্গে গাড়িতে চড়তে ও আপনার দক্ষতাকে মূল্যায়ন করতে বলতে পারেন। এরপর তারা যে-মন্তব্যই করুন না কেন, তা মন দিয়ে শুনুন। এ ছাড়া, আপনি হয়তো নিরাপদ গাড়ি চালানোর পদ্ধতির প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। অনেক ড্রাইভিং সংগঠন মূলত বয়স্ক লোকেদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। দুটো বা আরও বেশি দুর্ঘটনায় পড়া একটা সংকেত হতে পারে যে, আপনার গাড়ি চালানোর দক্ষতা আগের মতো এখন আর ততটা ভাল নেই।

সত্যি বলতে কী, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গাড়ি চালানো বন্ধ করাই হয়তো আপনার জন্য সবচেয়ে মঙ্গলজনক হতে পারে। এটা এক বেদনাদায়ক সিদ্ধান্ত হতে পারে। মার্টল যার কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি জানেন যে শীঘ্রই তাকে গাড়ি চালানো থেকে অবসর নিতে হবে। সেই দিন যতই এগিয়ে আসছে, তিনি আগের চেয়ে আরও বেশি করে অন্যদের সঙ্গে গাড়িতে চড়ছেন। অন্য কাউকে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দিয়ে তিনি কেমন বোধ করেন? “গাড়ি চালানোর চাপ থেকে মুক্ত হয়ে গাড়িতে চড়া সত্যি উপভোগ্য,” তিনি বলেন।

বিষয়টা মন দিয়ে বিবেচনা করার পর আপনিও হয়তো একইরকম মনে করতে পারেন। কেনাকাটা করা, টুকিটাকি কাজ করার জন্য এদিক-সেদিক যাওয়া ও নির্ধারিত কোন কাজে বেরনো এবং সভায় কোন বন্ধুকে নিয়ে যাওয়া আনন্দদায়ক হতে পারে। হয়তো আপনার বন্ধু আপনার গাড়িতে করে আপনাকে নিয়ে যেতে পারে। একা একা কোথাও যাওয়ার চেয়ে সেভাবে যাওয়া আরও অনেক বেশি নিরাপদ ও উপভোগ্য হতে পারে। যেখানে সম্ভব জনসাধারণের যানবাহন ব্যবহার করা আরেকটা ব্যবহারিক উপায় হতে পারে। মনে রাখবেন যে, আপনার যোগ্যতা আপনার চালানোর ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে না। আপনার সুন্দর গুণগুলোই আপনাকে আপনার পরিবার ও বন্ধুদের এবং ঈশ্বরের কাছে সত্যিই মূল্যবান করতে পারে।—হিতোপদেশ ১২:২; রোমীয় ১৪:১৮.

আপনি যুবক বা বৃদ্ধ, দক্ষ বা নতুন যেধরনের চালকই হোন না কেন, মোটরগাড়ি দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকে মুক্ত নন। গাড়ি চালানোর সঙ্গে সঙ্গে যে-গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আসে সেটা মনে রাখুন। কোনরকম সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য আগে থেকে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করুন। তা করে, আপনি ভবিষ্যতে যে আরও অনেক যাত্রা আছে, তা থেকে নিজেকে ও অন্যকে রক্ষা করতে পারবেন।(g০২ ৮/২২)

[পাদটীকা]

^ এই প্রবন্ধে নামগুলো পালটে দেওয়া হয়েছে।

[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]

নিশ্চিত হয়ে নিন যে, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের দ্বারা আপনার শরীর “জ্বালানি” পেয়েছে

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

একটু ঘুম হয়তো কিছুটা দেরি করাতে পারে কিন্তু এটা আপনার জীবনকে রক্ষা করতে পারে

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

বয়স্ক চালকরা বেশি অভিজ্ঞ কিন্তু তারা বিশেষ ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সম্মুখীন হয়

[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

একজন সঙ্গীকে নিয়ে যাত্রা করার মধ্যে উপকার রয়েছে