সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈগলের চোখ

ঈগলের চোখ

ঈগলের চোখ

স্পেনের সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক

স্পেনবাসিরা একজন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তিকে ঈগলের দৃষ্টি রয়েছে (বিসটে ডি আগিলা) বলে বর্ণনা করে। জার্মানরাও প্রায়ই এভাবে বলে থাকে (আডলেওউজি)। উপযুক্ত কারণেই বহু শতাব্দী ধরে ঈগলের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিকে প্রবাদ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিন হাজার বছরেরও আগে লেখা ইয়োবের পুস্তক ঈগল সম্বন্ধে বলে: “তাহার চক্ষু দূর হইতে তাহা নিরীক্ষণ করে।”—ইয়োব ৩৯:২৭, ২৯.

একটা ঈগল আসলে কত দূর পর্যন্ত দেখতে পায়? দ্যা গিনিজ বুক অফ এনিমেল রেকর্ডস্‌ ব্যাখ্যা করে, “উপযুক্ত পরিস্থিতিতে একটা সুবর্ণ ঈগল (একুইলা ক্রাইসেইটোস) ২ কিলোমিটারেরও বেশি দূর থেকে একটা খরগোশের সামান্য স্থান পরিবর্তনকেও দেখতে পারে।” অন্যান্যরা হিসেব করে দেখেছে যে, ঈগল এর চেয়েও দূরে দেখতে পারে!

কোন বিষয়টা ঈগলকে এইধরনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়েছে? প্রথমত, সুবর্ণ ঈগলের দুটো বড় চোখ রয়েছে, যেগুলো এর মাথার বেশির ভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে। ব্রিটিশ পাখিগুলোর বই (ইংরেজি) বলে যে, সুবর্ণ ঈগলের ক্ষেত্রে তার চোখগুলো “আসলে খুব বড় কিন্তু এতটা ভারি নয় যে সেটাকে উড়তে বাধা দেবে।”

এ ছাড়া, আমাদের চোখে যতগুলো আলো গ্রাহক কোষ রয়েছে সেটার চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ বেশি ঈগলের চোখে রয়েছে—প্রতি বর্গ মিলিমিটারে আমাদের চোখে ২,০০,০০০ মোচকাকার কোষের (cones) তুলনায় ঈগলের প্রায় ১০,০০,০০০ মোচকাকার কোষ রয়েছে। প্রায় প্রতিটা গ্রাহক একটা স্নায়ুকোষের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। এর ফলে ঈগলের দৃষ্টিনাড়ী, যা চোখ থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত বার্তা বয়ে নিয়ে আসে, সেটাতে মানুষের চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক তন্তু রয়েছে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, এই প্রাণীগুলোর রং সম্বন্ধে সূক্ষ্ম বোধশক্তি রয়েছে! অবশেষে, অন্যান্য পাখিদের মতো শিকারি পাখিগুলোরও শক্তিশালী লেন্স লাগানো চোখ রয়েছে, যা এক পলকের মধ্যে এক ইঞ্চি দূরের বস্তু থেকে দৃষ্টি সরিয়ে অনেক দূরের বস্তুর ওপর নজর দিতে পারে। এই ক্ষেত্রেও তাদের চোখগুলো আমাদের চাইতে শ্রেষ্ঠ।

দিনের উজ্জ্বল আলোয় ঈগলের দৃষ্টি উৎকৃষ্ট কিন্তু রাতে প্যাঁচার সুবিধা হয়। রাতের এই শিকারি পাখিগুলোর চোখে প্রচুর আলোক সংবেদনশীল রড কোষ এবং বিরাট লেন্সের এক অংশ রয়েছে। এর ফলে, এরা রাতের বেলা আমাদের চাইতে ১০০ গুণ বেশি ভাল দেখতে পারে। কিন্তু কদাচিৎ ঘুটঘুটে অন্ধকারে, প্যাঁচাকে তার শিকার খুঁজে পাওয়ার জন্য অবশ্যই তার তীক্ষ্ণ শ্রবণশক্তির ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে হয়।

এই পাখিগুলোকে এইধরনের গুণগুলো কে দিয়েছেন? ঈশ্বর ইয়োবকে জিজ্ঞেস করেছিলেন: “তোমারই আজ্ঞাতে কি ঈগল ঊদ্ধের্ব উঠে?” অবশ্য কোনো মানুষই এই চমৎকার সৃষ্টির জন্য কৃতিত্ব দাবি করতে পারে না। ইয়োব নিজেই নম্রভাবে স্বীকার করেছিলেন: “আমি জানি, তুমি [যিহোবা] সকলই করিতে পার।” (ইয়োব ৩৯:২৭; ৪২:১, ২) ঈগলের চোখ হল আমাদের সৃষ্টিকর্তার প্রজ্ঞা সম্বন্ধে আরেকটা প্রমাণ। (g০২ ১২/২২)

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

সুবর্ণ ঈগল

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

তুষার প্যাঁচা