সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“এক নৃশংস অপরাধ”

“এক নৃশংস অপরাধ”

“এক নৃশংস অপরাধ”

মারিয়া * ১৪ বছর বয়সে একজন শিশু পতিতা হয়েছিলেন। তিনি তার মায়ের পীড়াপীড়িতে এই জঘন্য জীবনধারা গ্রহণ করেছিলেন, যিনি তাকে বলেছিলেন যে তিনি সুন্দরী আর তাই পুরুষরা তাকে খুব পছন্দ করবে। এ ছাড়া, তিনি অনেক টাকাও রোজগার করতে পারবেন। সন্ধ্যা হলেই মারিয়ার মা তাকে একটা মোটেলে নিয়ে যেতেন, যেখানে পুরুষদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হতো। পাওনা টাকা নেওয়ার জন্য মা কাছেপিঠেই থাকতেন। প্রতি রাতে মারিয়া তিন বা চার জন পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলন করতেন।

মারিয়ার বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয়, ১৩ বছর বয়সী কারিনাও পতিতাবৃত্তি গ্রহণে বাধ্য হয়েছিলেন। তার এলাকায় আখকল কর্মীদের অন্যান্য পরিবারগুলোর মতো কারিনার পরিবারও তাদের সীমিত আয়ে অর্থের জোগান দিতে কারিনার দেহ বিক্রি করে দিয়েছিল। আরেকটা এলাকায়, এস্টেলা একেবারে অল্প বয়সে এমনকি পড়ালেখা কিছু না শিখেই স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দেন ও রাস্তায় রাস্তায় পতিতা হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। আর ডেইজির বয়স ছিল প্রায় ছয় বছর, যখন তিনি তারই এক দাদার দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হন—তার জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক অজাচারমূলক কাজের মধ্যে এটা সবচেয়ে প্রথম ঘটনা। তিনি ১৪ বছর বয়সে একজন পতিতা হন।

পৃথিবীর অনেক জায়গায়, শিশু পতিতাবৃত্তির সমস্যা হল এক আশঙ্কাজনক বাস্তবতা। এর পরিণতি বেদনাদায়ক। প্রায়ই, শিশু পতিতারা, অনিয়মিত বা পূর্ণ-সময়ের যাই হোক না কেন, অপরাধ ও মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে অনেকে এই শোচনীয় জীবন থেকে মুক্তির সামান্য বা কোনো আশাই নেই দেখে বিষণ্ণ ও নিজেকে মূল্যহীন বলে মনে করে।

প্রভাবশালী ব্যক্তিরা শিশু পতিতাবৃত্তির ধ্বংসাত্মক প্রভাবগুলো স্বীকার করে। ব্রাজিলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, ফারন্যানডু এনরিক কারডোসু উপযুক্তভাবেই বলেছিলেন: “শিশু পতিতাবৃত্তি এক নৃশংস অপরাধ।” ব্রাজিলের খবরের কাগজ শিশু পতিতাবৃত্তি সম্বন্ধে এই গাম্ভীর্যপূর্ণ মন্তব্য প্রকাশ করেছিল: “যে-দেশগুলোতে এইধরনের অভ্যাসগুলো সাধারণ, সহনীয়, গ্রহণযোগ্য আর এমনকি এটা [টাকাপয়সা] এনে দেয় বলে অত্যন্ত কাঙ্ক্ষিত, সেখানেও প্রতিদিন এটা প্রচুর ক্ষতিসাধন করছে। যত অর্থনৈতিক মুনাফাই এটা নিয়ে আসুক না কেন, এইধরনের অভ্যাসের কারণে যে-সামাজিক ধ্বংস সাধিত হয় সেইজন্য স্বাভাবিকভাবেই এটা ব্যক্তি ও পরিবারের দ্বারা বাতিল হয়ে যায়।”

কিন্তু, যারা শিশু পতিতাবৃত্তি বন্ধ করতে চায় তাদের মহৎ উদ্দেশ্য সত্ত্বেও, এই সমস্যাটা দিন-দিন কেবল বেড়েই চলেছে। কোন বিষয়টা এই ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে পরিচালিত করেছে? কেন অনেকে এইধরনের অপরাধমূলক কাজকে সহ্য করে বা এমনকি প্রশ্রয় দেয়? (g০৩ ২/০৮)

[পাদটীকা]

^ এই ধারাবাহিক প্রচ্ছদ প্রবন্ধগুলোতে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“শিশু পতিতাবৃত্তি এক নৃশংস অপরাধ।”—ব্রাজিলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, ফারন্যানডু এনরিক কারডোসু

[৪ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“সব ধরনের যৌন শোষণ মানব মর্যাদার ক্ষেত্রে অসংগত আর তাই যৌন শোষণের শিকার হয়েছে এমন ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ, বর্ণ, জাতি বা শ্রেণীগত মর্যাদা যাই হোক না কেন, তা মৌলিক মানবাধিকারগুলো লঙ্ঘন করে।”—ইউনেসকো সোর্সেস