বিশ্ব নিরীক্ষা
বিশ্ব নিরীক্ষা
“টেলিমাদার্স” আরও ভাল খাবার জোগায়
স্পেনের ম্যাদ্রিদে ব্যস্ত অবিবাহিত যুবক-যুবতীরা, যারা সুস্বাদু খাবার খেতে ভালবাসে কিন্তু যাদের হয়তো সময় নেই অথবা রান্না করার ইচ্ছা নেই তারা এক অসাধারণ সমাধান খুঁজে পেয়েছে। স্পেনের খবরের কাগজ এল পেইস বলে, তারা ইন্টারনেটের সাহায্যে একজন “টেলিমাদার” ভাড়া করে। সপ্তাহে দুদিন ট্যাক্সি করে তাদের দত্তক মা তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর, ঘরের তৈরি খাবার পাঠিয়ে দেয়, যাতে সেটা বেশ কয়েকদিন খেতে পারা যায়। খাবারের মধ্যে রয়েছে মাছ, পাস্তা, শাকসবজি, শুঁটি, মাংস, ফলমূল ও দুধের তৈরি খাবার। “টেলিমাদার” প্রত্যেক নতুন দত্তক “ছেলে”-র সঙ্গে টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখে, যাতে তার ফ্রিজের অবস্থা, তার পছন্দ ও তার প্রয়োজনগুলো সম্বন্ধে অবগত থাকে। প্রতিদিন চার জন অথবা তারও বেশি ব্যক্তিদের জন্য অফিসে খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোর জন্যও একটা খাদ্যতালিকা থাকে। (g০৩ ১/২২)
“মিথ্যা বলা মস্তিষ্কের জন্য কঠিন কাজ”
ইউনিভারসিটি অফ পেনসিলভানিয়া-র গবেষকরা দেখেছে যে, সত্য বলতে মস্তিষ্ককে যতখানি কাজ করতে হয়, মিথ্যা বলার জন্য তার চেয়ে বেশি করতে হয়। ডাক্তার ড্যানিয়েল লাংল্যাবেন, এক ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমেজিং (এফএমআরআই) মেশিন ব্যবহার করে এই প্রক্রিয়াকে পরীক্ষা করছিলেন এটা দেখাতে যে, মিথ্যা বলার সময় একজন ব্যক্তির মস্তিষ্কের কোন অংশগুলো সক্রিয় থাকে। কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হলে আমাদের মস্তিষ্কের প্রথমে সেটাকে পরীক্ষা করার দরকার হয়। তারপর “একজন মিথ্যুক সহজাতভাবেই [একটা] ভুল উত্তর গড়ার বা বলার আগে প্রথমে সঠিক উত্তরটা সম্বন্ধে চিন্তা করে থাকে” মেক্সিকো সিটির দ্যা নিউজ রিপোর্ট করে। “মস্তিষ্কে এমনি এমনি আপনি কোনো উত্তর পাবেন না,” লাংল্যাবেন বলেন। “সত্য বলার প্রক্রিয়া থেকে মিথ্যা বলার প্রক্রিয়া আরও বেশি জটিল, যার ফলে স্নায়ুকোষ বেশি কাজ করে।” স্নায়ুকোষের কাজের এই বৃদ্ধি এফএমআরআই মেশিনে একটা জ্বলন্ত বাল্বের মতো দেখায়। খবরের কাগজ বলে, “এমনকি মিথ্যা কথায় পারদর্শী ব্যক্তির মস্তিষ্কের জন্যও মিথ্যা বলা হল কঠিন কাজ।”(g০৩ ২/২২)
ভারতে বিশ্বের ২৫ শতাংশ অন্ধ ব্যক্তি রয়েছে
ভারতের ডেকান হেরাল্ড বলে “ভারত ১ কোটি ২০ লক্ষ অন্ধ ব্যক্তি থাকার জন্য পরিচিত, যা বিশ্বের মোট অন্ধ ব্যক্তিদের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ।” সমগ্র ভারত জুড়ে ৪০টা শহরের কলেজ ও স্কুলগুলো থেকে নেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইয়ুথ ভিশন ইন্ডিয়া, ২০০২ এর একটা রিপোর্ট এও জানায় যে, “৫০ শতাংশেরও বেশি কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের যাদের দৃষ্টিশক্তি ভাল করার প্রয়োজন রয়েছে, তারা এমনকি এই বিষয়ে অবগত নয়।” গবেষণা অনুযায়ী, দেশে অধিকাংশ চোখের অসুখ আলোক বিবর্তনের ত্রুটি ও চোখে ছানি পড়ার কারণে হয়ে থাকে এবং এগুলো সুস্থ করা যায়। খবরের কাগজের প্রবন্ধ উল্লেখ করে “জ্ঞানের অভাব” এবং “চোখের যত্ন নেওয়ার জন্য অল্পসংখ্যক চিকিৎসক” হল ভারতের সমস্যার প্রধান কারণ। এটা আরও বলে: “ভারতে মাত্র ৫০০০ জন চোখের ডাক্তার রয়েছে, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরামর্শ অনুযায়ী ৪০,০০০ জন থাকা দরকার।” (g০৩ ১/০৮)
ইনুইট বাইবেল সম্পূর্ণ হয়েছে
কানাডার বাইবেল সোসাইটি কানাডার ইনুইট লোকেদের জন্য ইনুক্টিটুট ভাষায় সম্পূর্ণ বাইবেল অনুবাদ করার ২৩ বছরের কাজ সম্পাদন করেছে। অনুবাদ করা খুব কঠিন ছিল। “ভেড়া, উট, গাধা ও তাল জাতীয় গাছগুলো থাকা সংস্কৃতির বিষয়গুলোকে সীল, সিন্ধুঘোটক ও অল্প কিছু গাছপালার সঙ্গে পরিচিত, এমন এক সংস্কৃতির ভাষায় অনুবাদ করা কঠিন ছিল,” কানাডার বাইবেল সোসাইটির শাস্ত্র অনুবাদের পরিচালক হোর্ট উইন্স বলেন। “উদাহরণ হিসেবে, বাইবেলে তাল জাতীয় গাছগুলোর জন্য অনেক শব্দ রয়েছে। কিন্তু, [কানাডার একেবারে উত্তরের অঞ্চল] নুনাভুটে কোনো গাছপালা না থাকায় তাল জাতীয় গাছগুলোর বর্ণনা দেওয়া বেশ কঠিন ছিল।” কানাডার প্রায় ২৮,০০০ লোকের মাতৃভাষা হচ্ছে ইনুক্টিটুট। ন্যাশনাল পোস্ট অনুয়ায়ী, “এখন বাইবেল ২,২৮৫টারও বেশি ভাষায় পাওয়া যায়।” (g০৩ ১/০৮)
গির্জাগুলোকে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা
“মার্ক টুয়েন যখন ১৮৮১ সালে মনট্রিলে এসেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন যে ‘একটা ইট ছুঁড়লেই আপনি কোনো না কোনো গির্জার জানালা ভেঙে ফেলবেন।’ বর্তমানে আপনি হয়তো গির্জার জায়গায় অবস্থিত আ্যপার্টমেন্টের জানালা ভাঙতে পারেন,” মনট্রিলের খবরের কাগজ গ্যাজেট বলে। যদিও সেই শহরে এখনও ৬০০টা উপাসনার জায়গা রয়েছে কিন্তু খবরের কাগজ বলে যে প্রায় ১০০টা, যেগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই ক্যাথলিক গির্জা সেগুলোকে আগামী দশ বছরের মধ্যে বিক্রি করে ফেলা হবে। “মনট্রিলের আর্চ বিশপের এলাকা অনুযায়ী, ১৯৬০ সাল থেকে ২৫টার মতো ক্যাথলিক গির্জা-পল্লী বন্ধ হয়ে গেছে।” কানাডায় ক্যাথলিক জনসংখ্যা ১৮৭১ সালে প্রায় ১৫ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৭১ সালে প্রায় ১ কোটি হয়েছে; অথচ “গির্জায় উপস্থিতি বিশেষ করে কুইবেকে একেবারে কমে গেছে” গ্যাজেট বলে। বারনার ফরটেন, যিনি মনট্রিলের আর্চ বিশপের এলাকার জন্য যাজকদের বন্দোবস্ত করার দায়িত্বে আছেন তিনি খবরের কাগজকে বলেছিলেন যে, সেই এলাকার গির্জাগুলোতে উপস্থিতি ১৯৭০ সালে ৭৫ শতাংশ থেকে কমে গিয়ে বর্তমানে প্রায় ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। (g০৩ ২/২২)
রক্ত নেওয়া ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে
যুক্তরাস্ট্রের ফুড আ্যন্ড ড্রাগ এডমিনিসট্রেশন এর একটা পত্রিকা এফডিএ কনজিউমার বলে, “যে-লোকেরা রক্তজাত বস্তু, বিশেষ করে রক্তরস যুক্ত উপাদান গ্রহণ করে, তাদের রক্ত নেওয়ার সঙ্গে জড়িত তীব্র ফুসফুসের রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।” এই অবস্থা যদি ধরা না পড়ে ও সঠিক চিকিৎসা না হয়, তা হলে মৃত্যু ঘটতে পারে। এটা হতে পারে যখন রক্তদাতার রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা প্রতিরক্ষিকাগুলো গ্রাহকের শ্বেত রক্তকণিকার সঙ্গে প্রতিক্রিয়াশীল হয়, যার ফলে ফুসফুসের কলায় পরিবর্তন নিয়ে আসে, যা তরল পদার্থকে ভিতরে ঢোকার সুযোগ করে দেয়। অধিকাংশ দাতা, যারা এই প্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী তারা হল দুটোর বেশি বাচ্চা রয়েছে এমন মহিলারা অথবা সেই দাতারা যারা অনেকবার রক্ত দিয়েছে।” উপসর্গগুলোর “অন্তর্ভুক্ত হল জ্বর, হাঁপানি ও রক্তচাপ কমে যাওয়া। এক্স-রেতে প্রায়ই দেখা যায় যে, [রক্ত নেওয়া] গ্রাহকের ফুসফুস একেবারে সাদা।” (g০৩ ৩/০৮)
গাছপালা শহরের দূষণকে কমিয়ে দেয়
লন্ডনের দ্যা সানডে টাইমস্ রিপোর্ট করে, “প্রথমবারের মতো বিশেষজ্ঞরা এটা পরিমাপ করতে পেরেছে যে, কীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা দূষণকে কমাতে পারে।” পশ্চিম মিডল্যান্ডস অঞ্চলে করা তিন বছরের গবেষণায় ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা প্রায় ৩২,০০০ গাছপালার কাছাকাছি কিছু মাটির নমুনা পরীক্ষা করেছিল, এটা দেখার জন্য যে, কোন প্রজাতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর কণিকাগুলো শুষে নেয়। এ ছাড়া, বিজ্ঞানীরা বায়ুমণ্ডল ও ওজোন স্তরগুলোতে থাকা কণিকাগুলোকেও পরিমাপ করেছে। আ্যশ, লারচ্ ও স্কটস্ পাইন এই তালিকার শুরুতে রয়েছে; ওক, উইলো ও পোপলার ততটা কার্যকারী নয়। এই গবেষণা দেখায় যে, “বায়ুমণ্ডলের দূষণ রোধ করার জন্য বৃক্ষহীন তৃণভূমি থেকে গাছপালা তিনগুণ বেশি কার্যকারী।” বাস্তবিকই, একটা কমপিউটার গ্রাফ দেখায় যে, পশ্চিম মিডল্যান্ডসের মাত্র অর্ধেক খালি জায়গায় যদি গাছপালা লাগানো যায়, তা হলে কণিকাগুলোর কারণে সৃষ্ট বায়ু দূষণকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যাবে। (g০৩ ৩/২২)
ধর্ম এবং যুদ্ধ
“বর্তমানে সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত ও সবচেয়ে বিপদজনক বিতর্ক . . . ধর্মকে ঘিরে রয়েছে,” ইউএসএ টুডে খবরের কাগজ বলে। এ ছাড়া, এগুলোকে সমাধান করা খুবই কঠিন। “কূটনীতির বিশেষ হাতিয়ারকে—উদাহরণ হিসেবে, সমঝোতা করতে চাওয়া এবং অতীতের অভিযোগগুলোকে ক্ষমা করে দেওয়া—কাজে লাগানো বেশ কঠিন হতে পারে, যখন প্রতিদ্বন্দ্বীরা দাবি করে যে ঈশ্বর তাদের পক্ষে আছেন,” খবরের কাগজ আরও বলে। “এটা আরও সত্য যখন ধর্ম দ্বন্দ্বকে শুরু করার চাইতে সমর্থন পাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।” ধর্মীয় মতভেদ এমনকি সাময়িক যুদ্ধবিরতি স্থাপন করাকেও কঠিন করে তোলে। এর উদাহরণ হল, সাম্প্রতিক কালে কসোভোর যুদ্ধ। ইস্টারের সময় যুদ্ধবিরতি করার বিষয় বিবেচনা করা হলেও তা বলবৎ করা যায়নি কারণ ক্যাথলিক ও অর্থোডক্সদের ইস্টার পালন করার তারিখগুলো আলাদা ছিল। ইউএসএ টুডে বলে, “শেষ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতিই হয়নি।” (g০৩ ৩/২২)