সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

শিশুদের প্রতি শোষণ শীঘ্রই শেষ হবে!

শিশুদের প্রতি শোষণ শীঘ্রই শেষ হবে!

শিশুদের প্রতি শোষণ শীঘ্রই শেষ হবে!

“মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণায় রাষ্ট্রসংঘ ঘোষণা করেছে যে, শৈশব হল বিশেষ যত্ন ও সহযোগিতা প্রদানের এক সময়,” শিশুদের অধিকার সম্বন্ধীয় অধিবেশনের ভূমিকায় বলা হয়। পরিবারের গুরুত্ব সম্বন্ধে এটা আরও বলে: “শিশুর ব্যক্তিত্বের পূর্ণ ও সমন্বয়পূর্ণ বিকাশের জন্য তার এক পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা দরকার, এমন এক পারিপার্শ্বিক অবস্থা, যেখানে সুখ, ভালবাসা এবং বোঝাপড়া রয়েছে।” কিন্তু, এই আদর্শে পৌঁছানো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সন্তানদের জন্য আরও ভাল এক জগৎ সম্বন্ধে শুধু কথা বলাই যথেষ্ট নয়। নৈতিক অধঃপতন দিনের পর দিন কেবল বেড়ে চলেছে এবং অনেকে এই পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক বলে মনে করে। আইন বলবৎ করেও ব্যাপক নীতিভ্রষ্টতা এবং লোভকে দমন করা যায় না। এমনকি বাবামায়েরাও, তাদের সন্তানদের প্রতি ভালবাসা দেখানোর বা তাদের সুরক্ষা করার পরিবর্তে প্রায়ই প্রশ্রয়ী হয়ে থাকে। তা হলে, শিশু পতিতাবৃত্তি শেষ করার জন্য আমাদের কোন আশা রয়েছে?

যদিও এই কলুষিত ব্যবস্থা সমস্ত শিশুদের এক প্রেমপূর্ণ গৃহ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু আমাদের সৃষ্টিকর্তা শীঘ্রই শিশু পতিতাবৃত্তি সহ সব ধরনের বিকৃত কাজ এবং বাছবিচারহীন যৌনসম্ভোগকে দূর করে দেবেন। শীঘ্রই, জগৎকে অবাক করে দিয়ে যিহোবা ঈশ্বর তাঁর রাজ্যের মাধ্যমে মানুষের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করবেন। কলুষতাকে উসকে দেয় এমন ব্যক্তিরা এবং শোষণকারীরা ঐশিক বিচার এড়াতে পারবে না। একমাত্র যে-লোকেরা তাদের সহ মানবদের ভালবাসে তারাই ঈশ্বরের নতুন জগতে বাস করার জন্য রক্ষা পাবে। “সরলগণ দেশে [“পৃথিবীতে,” NW] বাস করিবে, সিদ্ধেরা তথায় অবশিষ্ট থাকিবে। কিন্তু দুষ্টগণ দেশ [“পৃথিবী,” NW] হইতে উচ্ছিন্ন হইবে, বিশ্বাসঘাতকেরা তথা হইতে উন্মূলিত হইবে।”—হিতোপদেশ ২:২১, ২২.

শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়েই যখন কোনোরকম অপমান বা যৌন নিপীড়ন ছাড়া বেঁচে থাকবে, তখন তারা যে-স্বস্তি পাবে তা একটু কল্পনা করুন! শোষণ ও দৌরাত্ম্যের কারণে আসা মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি অতীতের বিষয় হবে। পূর্বে যৌন শোষণের শিকার হয়েছে এমন ব্যক্তিরা অতীতের দুঃসহ স্মৃতি বা মানসিক আঘাত ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারবে। “পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না, আর মনে পড়িবে না।”—যিশাইয় ৬৫:১৭.

এরপর, কোনো শিশুই অত্যাচার বা যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার জন্য জন্ম নেবে না। সুখ, ভালবাসা এবং বোঝাপড়া শুধুমাত্র এক স্বপ্নই হবে না। ঈশ্বরের নতুন জগতের অধিবাসীদের সম্বন্ধে যিশাইয় ১১:৯ পদ ঘোষণা করে: “সে সকল . . . হিংসা কিম্বা বিনাশ করিবে না।”

সত্যিই, এটা কত আনন্দের বিষয়ই না হবে যখন দরিদ্রতা, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অসুখী পরিবার এবং নৈতিক কলুষতা আর থাকবে না! শান্তি, ধার্মিকতা এবং নিরাপত্তা রাজত্ব করবে। “আমার প্রজাগণ শান্তির আশ্রমে, নিঃশঙ্কতার আবাসে ও নিশ্চিন্ততার বিশ্রাম-স্থানে বাস করিবে।”—যিশাইয় ৩২:১৮. (g০৩ ২/০৮)

[৯ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

বাবামার যত্ন পারিবারিক ভাঙন রোধ করতে পারে

● “আমার বাবামা আমাকে স্কুলে শিক্ষাগ্রহণের বছরগুলোর সদ্ব্যবহার করতে এবং একটা বৃত্তি শেখার জন্য উৎসাহিত করেছে। তারা আমার ওপর তাদের পছন্দ-অপছন্দ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেনি কিন্তু তারা আমাকে সেই স্কুল বেছে নিতে সাহায্য করেছিল, যেখানে আমি প্রয়োজনীয় শিক্ষা লাভ করতে পারি।”—টাইস।

● “আমার বোন ও আমি যখন কেনাকাটা করতে যেতাম, তখন আমাদের মা-ও সঙ্গে যেতেন। আমাদের সস্তায় জিনিস কিনতে সাহায্য করা ছাড়াও, তিনি আমাদের জমকালো বা অমার্জিত পোশাক কেনা এড়িয়ে চলতে সাহায্য করতেন।”—বিয়াংকা।

● “আমরা যখন কোনো পার্টিতে যেতাম, তখন আমার বাবামা সবসময় জিজ্ঞেস করত যে, সেখানে কারা আসবে, কোন ধরনের গানবাজনা হবে এবং কখন পার্টি শুরু ও শেষ হবে। বেশির ভাগ পার্টিতে আমরা পরিবারগতভাবে যেতাম।”—প্রিসিলা।

● “আমার শৈশব থেকে কৈশোর পর্যন্ত আমার বাবামা ও আমার মধ্যে সবসময় চমৎকার ভাববিনিময় হতো। আমার এক সহপাঠিনী তা লক্ষ করেছিল এবং আমাকে বলেছিল: ‘তুমি এত স্বচ্ছন্দে যেকোনো বিষয় নিয়ে তোমার বাবামার সঙ্গে কথা বলতে পার, তা দেখে আমার হিংসে হয়। আমি এমনকি আমার মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি না আর প্রায়ই যা জানতে চাই তা আমি অন্যদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করি।’”—সামারা।

● “আমি এক হাসিখুশি কিশোরী ছিলাম। আমি কারও মধ্যে খারাপ কিছুই দেখতে পেতাম না আর সবসময় হাসতাম। আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে সহজ বোধ করতাম এবং তাদের সঙ্গে মজার বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে ভালবাসতাম। আমার বাবামা বুঝতে পেরেছিল যে, এটা ছিল আমার ব্যক্তিত্বের একটা দিক আর তারা আমার ব্যক্তিত্ব পালটানোর চেষ্টা করেনি। কিন্তু তারা সদয়ভাবে আমাকে বুঝতে সাহায্য করেছিল যে, বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় আমার সর্তক ও শিষ্ট হওয়া উচিত।”—টাইস।

● “বেশির ভাগ যুবক-যুবতীদের মতো আমিও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছিলাম। আমার বাবা বিয়ের উদ্দেশ্যে মেলামেশা করার জন্য একটা নির্দিষ্ট বয়স নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। আমি তাতে অসন্তুষ্ট হইনি। বরং, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমার বাবামা আমার সম্বন্ধে চিন্তা করত এবং আমাকে ভবিষ্যতের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিল।”—বিয়াংকা।

● “বিশেষ করে আমার বাবামায়ের উদাহরণের জন্য আমি বিয়েকে অত্যন্ত আনন্দপূর্ণ এক বিষয় হিসেবে দেখেছিলাম। তাদের মধ্যে সবসময় ভাল সম্পর্ক ছিল এবং তারা সবসময় উত্তম ভাববিনিময় করত। আমার মনে আছে যে, আমি যখন ডেটিং করছিলাম, তখন আমার মা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কেমন আচরণ করতে হয় সেই ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং তা কীভাবে আমার বিয়েতে প্রভাব ফেলবে, তা ব্যাখ্যা করেছিলেন।”—প্রিসিলা।

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

ঈশ্বরের নতুন জগতে কোনো শিশুই কখনও খারাপ ব্যবহারের শিকার হবে না