সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

টবে লাগানো গাছপালার মূল্য

“হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী আরও বেশি নম্বর পাবে, যদি টবে লাগানো গাছপালাকে তাদের স্কুলের আশেপাশে ছড়িয়েছিটিয়ে রাখা হয়,” লন্ডনের দ্যা টাইমস-এ প্রকাশিত গবেষকরা বলে। রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেরিক ক্লেমেন্স ক্রুম লক্ষ করেছেন যে, অতিরিক্ত গাদাগাদি ও বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা না থাকার জন্য ক্লাসরুমগুলোতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা সুপারিশকৃত পরিমাণের চেয়ে ৫০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে আর তা বাচ্চাদের মনোযোগ নষ্ট করছে ও তাদের উন্নতিকে ব্যাহত করছে। এই অবস্থাকে অস্বাস্থ্যকর ক্লাসরুম লক্ষণসমূহ (সিক ক্লাসরুম সিনড্রম) হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন যে, ক্লাসরুমগুলোতে ছেলেমেয়েদের পরিমাণের গড় ঘনত্ব অফিস ভবনে কর্মীদের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি যেখানে “অস্বাস্থ্যকর ভবন লক্ষণসমূহ” (“সিক বিল্ডিং সিনড্রম”) কর্মী ও তাদের কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে জানা যায়। রুমের বায়ুর গুণগত মানকে উন্নত করার জন্য কোন ধরনের গাছ ব্যবহার করা যেতে পারে? যুক্তরাষ্ট্রের একটা গবেষণা বলেছিল যে, স্পাইডার প্ল্যান্ট হল সবচেয়ে বেশি কার্যকারী। ড্রাগন গাছ, আইভি, রবার গাছ, পিস্‌ লিলি এবং ইয়ুক্কা বায়ু দূষণ দূর করতে খুবই কার্যকারী। ঘরে রাখা গাছপালা কার্বন ডাইঅক্সাইডকে অক্সিজেনে পরিণত করে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেয়। (g০৩ ৬/০৮)

“কথা বলা” গাছপালা

জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা লেসার দ্বারা চালিত মাইক্রোফোনগুলো তৈরি করেছে, যেগুলো গাছপালার কথা “শুনতে” পারে। মাইক্রোফোনগুলো ইথিলিন গ্যাস দ্বারা উৎপন্ন শব্দ তরঙ্গকে গ্রহণ করে, যে-গ্যাস গাছগুলো যখন চাপের মধ্যে থাকে তখন নির্গত হয়। বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. ফ্রাংক কুইনিমান বলেন: “একটা গাছ যত বেশি চাপের মধ্যে থাকে, আমরা তত জোরে আমাদের মাইক্রোফোনে সংকেত পাই।” যন্ত্রে ইঙ্গিত করা উপাত্তগুলো অনুসারে, একবার একটা পুষ্ট শশা “বলতে গেলে চিৎকার করছিল।” “ভালভাবে পরীক্ষা করা দেখিয়েছিল যে, এতে ছাতা ধরেছে অথচ উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছিল না।” আসলে, ছাতাগুলো দৃশ্যত দাগে পরিণত হতে আট থেকে নয় দিন সময় নেয় আর একমাত্র এর পরই কৃষকরা এই সমস্যাটি নির্ণয় করতে পারে। “গাছপালার কথা চুপিচুপি শোনার দ্বারা,” লন্ডনের দ্যা টাইমস বলে, “কীটপতঙ্গ ও রোগ নির্ণয়ের প্রাথমিক সংকেত ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এ ছাড়া, ফলমূল ও শাকসবজিগুলোর চাপের মাত্রা জানা, সেগুলোকে ভালভাবে জমিয়ে রাখার ও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর ক্ষেত্রে সাহায্যকারী হতে পারে।” (g০৩ ৫/০৮)

পোপের স্মৃতিচিহ্নের বিক্রি কমে যাচ্ছে

বছরের পর বছর ধরে “[পোল্যান্ডে] ধর্মীয় বস্তুগুলোর বিক্রি এক নিশ্চিত আয়ের নিশ্চয়তা দিত,” নিউজউইক এর পোলিশ সংস্করণ রিপোর্ট করে। কিন্তু, সম্প্রতি পবিত্র প্রতিমাগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে “এক সংকট” লক্ষ করা গেছে। ২০০২ সালে পোল্যান্ডে পোপের পরিদর্শনের ব্যাপক প্রচার হলেও, পরম্পরাগত ধর্মীয় বস্তুগুলোর যেমন, মালা ও চিত্রগুলোর চাহিদা খুব কম। পোপের ছবি সহ “লক্ষ লক্ষ প্লাস্টার অফ প্যারিস ও ধাতু দিয়ে তৈরি মানুষের আবক্ষ মূর্তি, মাদুর, চিত্র ও ক্ষুদ্র প্রস্তরমূর্তি দিয়ে বাজার ভরতি ছিল” সেই পত্রিকা বলে, তবে “খরিদ্দাররা বেশ খুঁতখুঁতে হয়ে গেছে।” কিন্তু, একটা নকশা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেটা হল একটা প্লাস্টিকের কার্ড যেটার এক দিকে “পবিত্র ছবিগুলো” রয়েছে এবং অন্যদিকে “প্লাস্টিকে দ্রবীভূত সোনালী রোজারি মালা।” এই “রোজারি কার্ডগুলো” হল “পোপের সর্বাধুনিক ও সবচেয়ে জনপ্রিয়” স্মৃতিচিহ্ন, পোলিশ সাপ্তাহিক ওয়প্রস্ট বলে। (g০৩ ৫/২২)

গর্ভবতী মহিলাদের সকালের বমিভাবকে সহজতর করা

“অনুমান করা হয় যে, ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গর্ভবতী মহিলা সকালে বমি করার সমস্যায় ভোগে,” অস্ট্রেলিয়ার সান-হেরাল্ড খবরের কাগজ বলে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নতুন গর্ভবতী হওয়া এই মহিলাদের বমিভাব হয় ও প্রায়ই বমিও হয়। এই অবস্থার কারণ হিসেবে যেটা সন্দেহ করা হয় তা হল, গর্ভাবস্থায় প্রোজেসটেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত আ্যসিড উৎপন্ন করতে পারে। এ ছাড়া, “গন্ধের প্রতি সহজে প্রতিক্রিয়াশীল হওয়াও গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে বমিভাব ও সেইসঙ্গে চাপ ও ক্লান্তি আনতে পারে।” গর্ভবতী মহিলাদের বমিভাব দূর করার যদিও কোনো সর্বজনীন চিকিৎসা নেই কিন্তু খবরের কাগজটি গরম জায়গাগুলো এড়িয়ে চলতে প্রস্তাব দেয় কারণ গরমের জন্য বমিভাব লাগতে পারে, দুপুরবেলা শুয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে ও লেবু কেটে তা শুঁকতে সুপারিশ করে। “বিছানা থেকে ওঠার আগে শুধু মচমচে বিস্কুট বা শুকনো সিরিয়াল খাওয়ার চেষ্টা করুন। বিছানা থেকে সবসময় আস্তে আস্তে নামুন,” খবরের কাগজ বলে চলে। “প্রোটিনসমৃদ্ধ জলখাবার বার বার খান।” খবরের কাগজ বলে যে, “গর্ভবতী মহিলাদের সকালের বমিভাবের একটা ভাল দিক রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণা ইঙ্গিত করে যে, যে-মায়েরা এই সমস্যাটায় ভোগে, তাদের খুব কমই গর্ভপাত ঘটে।” (g০৩ ৪/২২)

ভারতে প্রচারমাধ্যমের বৃদ্ধি

ন্যাশনাল রিডারশিপ স্টাডিস কাউন্সিল এর দ্বারা পরিচালিত একটা সমীক্ষা অনুসারে, তিন বছরে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ভারতে খবরের কাগজের পাঠকদের সংখ্যা ১৩ কোটি ১০ লক্ষ থেকে বেড়ে ১৫ কোটি ৫ লক্ষে গিয়ে পৌঁছেছে। যখন খবরের কাগজ, পত্রিকা এবং অন্যান্য সাময়িক পত্রিকাগুলোর পাঠক গোষ্ঠীকে সংযুক্ত করা হয়, তখন দেশের ছাপানো প্রকাশনার মোট পাঠকের সংখ্যা হল ১৮ কোটি। কিন্তু, ভারতের ১০০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার মধ্যে ৬৫ শতাংশেরও বেশি লোকেরা শিক্ষিত হওয়ায় পাঠকগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির আরও অনেক সুযোগ রয়েছে। টেলিভিশনের দর্শকদের সংখ্যা ৩৮ কোটি ৩৬ লক্ষ, যেখানে রেডিওর শ্রোতাদের সংখ্যা ৬৮ কোটি ৬ লক্ষ। ১৯৯৯ সালে ১৪ লক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তুলনায় এখন সংখ্যা ৬০ লক্ষেরও বেশি। ভারতের অর্ধেকের বেশি ঘরগুলোতে এখন টেলিভিশনের ক্যাবল ও স্যাটেলাইট গ্রাহক রয়েছে, যা গত তিন বছরে ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি। (g০৩ ৫/০৮)

রোজারির নবীকরণ

“প্রায় ৫০০ বছর ধরে ধর্মপ্রাণ রোমান ক্যাথলিকরা রোজারি মালা জপে, যা হল প্রভুর প্রার্থনা ও দূতের বন্দনার এক মুখস্থ প্রার্থনার পুনরাবৃত্তি করা, যেটা যিশু ও তাঁর মায়ের জীবনের ১৫টি মূল ঘটনা বা ‘রহস্যগুলো’ নিয়ে ধ্যান করতে উদ্দীপিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে,” নিউজউইক রিপোর্ট করে। “গত [অক্টোবর মাসে] পোপ জন পল দ্বিতীয়, রোজারি মালায় চতুর্থ আবর্তন যোগ করে একটা প্রেরিতীয় চিঠি প্রকাশ করেন,” যেটার ভিত্তি যিশুর পরিচর্যা, যা তাঁর বাপ্তিস্ম থেকে শুরু করে শেষ ভোজ পর্যন্ত। “পোপের লক্ষ্য হল তার ‘প্রিয়’ প্রার্থনার প্রতি আগ্রহকে পুনরুজ্জীবিত করা, যেটার জনপ্রিয়তা ভ্যাটিকান পরিষদ ২য় এর সময় থেকে হ্রাস পেয়েছিল,” পত্রিকাটি আরও বলে। “পোপের পদক্ষেপের মূল প্রভাব হল শুধুমাত্র ক্যাথলিকদের করা এই রীতিতে মরিয়ম, যে-চরিত্রটি রোজারির সঙ্গে খুব বেশি সম্পর্কযুক্ত সেটার তুলনায় খ্রিস্টের প্রতি আরও জোর দেওয়া।” আশা করা হচ্ছে যে, এটা এক সময় ক্যাথলিকদের মধ্যে ধ্যান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করবে, পোপ বলেছিলেন, “যখন খ্রিস্টধর্ম প্রাচ্যের ধর্মগুলোর ধ্যানশীল প্রথাগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।” (g০৩ ৬/০৮)

বিয়ে ভাঙার সংস্থাগুলো

জাপানে কিছু অসুখী বিবাহিত লোক তাদের বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য সংস্থাগুলোকে টাকা দিচ্ছে, টোকিওর আইএইচটি আসাহি শিমবুন খবরের কাগজের একটা রিপোর্ট বলে। একজন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে ছাড়তে চান কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদের কোনো ভিত্তি না থাকে, তা হলে তিনি ‘দম্পতি-বিচ্ছেদের’ সংস্থাকে একজন সুদর্শন পুরুষ পাঠানোর জন্য টাকা দেন, যিনি সেই খরিদ্দারের স্ত্রীর সঙ্গে “আকস্মিকভাবে” সাক্ষাৎ করবেন ও তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের জন্য রাজি হয়ে যান। তার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ভাড়া করা প্রেমিক দৃশ্যপট থেকে উধাও হয়ে যান। একজন স্ত্রী যখন তার স্বামীকে ছাড়তে চান, তখন সেই স্বামীর সঙ্গে ব্যভিচার করতে প্রলোভিত করার জন্য সেই সংস্থা একজন আকর্ষণীয়া যুবতীকে পাঠায়। ২৪ বছর বয়সী একজন যুবতীর কথা অনুযায়ী, যে-পুরুষদের কাছেই সে যায় “প্রায় কেউই কখনও না বলে না। আমি বলতে পারি যে, আমি প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ [বার] সফল হয়েছি।” একটা সংস্থার প্রেসিডেন্ট, যারা ৫ বারের মধ্যে ৩ বার ব্যর্থ হয়েছে, সেই কর্মীদের চাকরি থেকে বহিষ্কার করেছে, সেই খবরের কাগজ বলে। “তাদেরকে সফল হতেই হবে,” তিনি বলেছিলেন। “এটা হল একটা ব্যাবসা।” (g০৩ ৬/২২)

রাস্তার ছেলেমেয়েরা—কেন?

“ঘরোয়া যুদ্ধ হল প্রধান কারণ যেজন্য শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা ঘর ছেড়ে চলে যায় ও রাস্তায় গিয়ে থাকে,” ব্রাজিলের খবরের কাগজ ও এস্টাডো ডি এস. পাওলো বলে। সম্প্রতি, রিও ডি জেনারিওর ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন আ্যন্ড আ্যডোলেসেন্টস্‌-এ আশ্রিত ১,০০০টা রাস্তার ছেলেমেয়ের ওপর করা একটা সমীক্ষা প্রকাশ করেছিল যে, ৩৯ শতাংশ শিশু খারাপ ব্যবহারের শিকার হয়েছিল বা ঘরোয়া সংঘর্ষ দেখেছিল। সমাজবিজ্ঞানী লেনি শ্মিট্‌স্‌ বলেন, “এই ছেলেমেয়েরা মর্যাদা খোঁজে এবং এই মোহের মধ্যে থাকে যে, তারা তা রাস্তাগুলোতে খুঁজে পাবে।” গবেষণা প্রকাশ করেছিল যে, ৩৪ শতাংশ ছেলেমেয়ে কম বেতনের অস্থায়ী কাজগুলো বা ভিক্ষা করার জন্য রাস্তায় থাকে, যাদের ১০ শতাংশ মাদকদ্রব্যের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার কারণে ভিক্ষা করেছে এবং ১৪ শতাংশ শুধু বলেছিল যে, তারা এই কাজ করতে চায় বলেই করছে। গবেষকদের কথা অনুসারে, শেষের যে-কারণটি অন্যান্য কারণগুলোকে ঢেকে দেয়, তা হল ঘরে যৌন নিপীড়নের শিকার। প্রায় ৭১ শতাংশ ছেলেমেয়ে রাস্তায় অন্যান্য ছেলেমেয়েদের সঙ্গে থেকে “তাদের নিজস্ব পরিবারতন্ত্র” গঠন করেছিল, “রাস্তার অন্যান্য ছেলেমেয়েদের ভাই, কাকা, বাবা অথবা মা হিসেবে বিবেচনা করেছিল,” শ্মিট্‌স্‌ বলেছিলেন। (g০৩ ৬/২২)