বিশ্ব নিরীক্ষা
বিশ্ব নিরীক্ষা
মৌমাছিরা হাতিদের নিবারণ করে
কেনিয়াতে হাতিদের সংখ্যা বেড়ে চলছে কিন্তু এটা বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করেছে। শিকারের উদ্দেশ্যে ঘুরেবেড়ানো হাতিরা গাছপালা ও শস্য নষ্ট করে ফেলে এবং প্রতি দুসপ্তাহে গড়ে একজন ব্যক্তিকে হাতিরা পদদলিত করে মেরে ফেলে। কিন্তু, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী ফ্রিট্স ভলরাট এক সম্ভাব্য নিবারকের আবিষ্কার করেছেন। হাতিরা যখন কোনো মৌচাককে বিরক্ত করে, তিনি বলেন, তখন “তারা তাতে শান্ত থাকে না। তারা দৌঁড়ায় এবং মৌমাছিরা তাদের অনেক দূর পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে যায়।” মৌমাছিরা হাতিদের স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে হুল ফোঁটায়, যেমন চোখের আশেপাশে, কানের পিছনে, শুঁড়ের নিচে ও পেটে। ভলরাট আফ্রিকার মৌমাছি ভরা ও খালি মৌচাকগুলোকে জঙ্গলের এক অঞ্চলে বেড়ে ওঠা এমন কয়েকটা গাছে লাগিয়ে দিয়েছিলেন, যেখানে হাতিরা নিয়মিত আসত। নিউ সায়েনটিস্ট জানায় যে, হাতিগুলো মৌমাছি ভরা মৌচাকযুক্ত সমস্ত গাছ এবং এক তৃতীয়াংশ খালি মৌচাকযুক্ত গাছগুলো এড়িয়ে চলেছিল। কিন্তু এরা মৌচাক না থাকা এমন ১০টার মধ্যে ৯টা গাছকে আক্রমণ করেছিল। এ ছাড়া, ভলরাট এটাও দেখেছিলেন যে হাতিরা এমনকি রেগে যাওয়া মৌমাছিদের আওয়াজও এড়িয়ে চলে, এমনকি যখন তা কোনো লাউডস্পীকারে বাজানো হয়। (g০৩ ৭/০৮)
ভারতে ডায়াবিটিস বৃদ্ধি পাচ্ছে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমান করে যে, সারা বিশ্বে ১৭ কোটিরও বেশি লোকের ডায়াবিটিস রয়েছে। ডেকান হেরাল্ড খবরের কাগজ জানায় যে, ভারত হল সেই দেশ যেখানে ডায়াবিটিসে ভুগছে এমন লোকেদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি—৩ কোটি ২০ লক্ষ—এবং এই সংখ্যা ২০০৫ সালের মধ্যে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ পেরিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ডায়াবিটিসের ওপর শ্রীলঙ্কাতে অনুষ্ঠিত এশিয়ার এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা খাদ্যতালিকা ও জীবনযাপনের পরিবর্তনগুলোকে এই দ্রুত বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং সেইসঙ্গে রয়েছে চাপ, বংশানুগতির কারণগুলো, জন্মের সময় কম ওজন থাকা এবং নবজাতদের অতিরিক্ত খাওয়ানো। সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতে ডায়াবিটিস রোগের চিকিৎসার খরচ সবচেয়ে কম। তা সত্ত্বেও, ডায়াবিটিস সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো ও মৃত্যুর হার খুব বেশি যেটার কারণ হল কিছু ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব ও রোগনির্ণয় পরীক্ষায় বিলম্বতা, দুটোই। ভারতের প্রধান শহরগুলোতে করা এক গবেষণা থেকে জানা যায় যে, প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে শতকরা ১২ জন ডায়াবিটিসে ভোগে এবং শতকরা ১৪ জন সঠিকভাবে শর্করার বিপাক করতে পারে না, যা প্রায়ই ডায়াবিটিস হওয়ার আগে ঘটে থাকে। (g০৩ ৭/২২)
দুই প্রকারের স্নায়ু?
জার্মানির বিজ্ঞানসংক্রান্ত পত্রিকা বিল্ট ডের ভিসেনশাফ্ট রিপোর্ট করে যে, ভালবাসা ও কোমলতা অনুভব করার জন্য মানুষকে এক বিশেষ ধরনের স্নায়ুতন্ত্র প্রদান করা হয়েছে। সুইডেনের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছে যে, যদিও একজন মহিলা তার প্রধান স্পর্শেন্দ্রিয় গ্রাহক কোষগুলোর অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছিলেন, তবুও তিনি এক মনোরম অনুভূতি বোধ করেছিলেন, যখন রং লাগানোর এক নরম তুলিকে আলতোভাবে তার ওপর বুলানো হয়েছিল। তারা জানতে পেরেছিল যে, এই মনোরম অনুভূতি ত্বকে থাকা এক দ্বিতীয় স্নায়ুতন্ত্রের দ্বারা উদ্দীপিত হয়েছিল, যেটাতে ট্যাকটিইল সি ফাইবার নামে ধীরগতি সঞ্চারণ তন্ত্তুগুলো রয়েছে। এই তন্ত্রটি শুধুমাত্র এক কোমল স্পর্শের প্রতি সাড়া দেয় এবং মস্তিষ্কের সেই ক্ষেত্রগুলোকে সক্রিয় করে যেগুলো আবেগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কেন মানুষের দুই ভিন্ন প্রকারের স্নায়ু থাকতে পারে সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন বলে: “ধীরগতি সঞ্চারণ তন্ত্তুগুলো জীবনের শুরুর মুহূর্ত থেকেই কাজ করতে শুরু করে, সম্ভবত এমনকি মায়ের গর্ভ থেকেই আর অন্যদিকে দ্রুতগতি সঞ্চারণ তন্ত্তুগুলো জন্মের পরে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। নবজাত শিশুরা স্পর্শ কী সেই অনুভূতি বোঝার আগেই হয়তো বাবা অথবা মায়ের স্পর্শে ভালবাসা অনুভব করতে পারে।” (g০৩ ৭/২২)
মশা থেকে রক্ষা
“সম্পূর্ণ গ্রহে ২,৫০০-রও বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে,” মেহিকো ডেসকোনোসি ডো পত্রিকা বলে। যদিও পুরুষ ও স্ত্রী উভয়ই মধু খায় কিন্তু একমাত্র স্ত্রী মশাই কামড়ায়। এর ফলে তারা মানুষের দেহে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস ছড়ায়। কীভাবে আপনি মশা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন? একটি রিপোর্ট নিচে উল্লেখিত পরামর্শগুলো জানায়: (১) সন্ধ্যায় ও রাতে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন, যখন মশাগুলো খুব সক্রিয় থাকে। (২) সম্ভবত, মশা তাড়ানোর রাসায়নিক পদার্থে ডোবানো অথবা স্প্রে করা মশারি ব্যবহার করুন। (৩) লম্বা হাতের ঢিলেঢালা জামা ও প্যান্ট পরুন আর দরকার হলে পুরো মাথা ঢাকার জন্য জালি দেওয়া টুপি পরুন। (৪) ত্বকের উন্মুক্ত জায়গাগুলোতে মশা তাড়ানোর ক্রিম লাগান। (৫) প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন B১ ট্যাবলেট খান। এটা কিছুজনের ঘামকে মশাদের কাছে দুর্গন্ধযুক্ত করে। (৬) জলা জায়গাগুলোতে জরুরি এক সুরক্ষা হিসেবে আপনার ত্বকে কাদা মাখান। যদি মশা কামড় দেয়, তা হলে চুলকাবেন না কারণ রক্তক্ষরণের দ্বারা ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে। এর পরিবর্তে ক্যালামাইন লোশন লাগান। (g০৩ ৮/০৮)