সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যে-অল্পবয়স্করা নির্ভয়ে তাদের বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলে

যে-অল্পবয়স্করা নির্ভয়ে তাদের বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলে

যে-অল্পবয়স্করা নির্ভয়ে তাদের বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলে

যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে অনেক অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়ে রয়েছে। তারা ঈশ্বরকে ভালবাসে এবং বাইবেলে দেওয়া তাঁর মান অনুযায়ী জীবনযাপন করার প্রচেষ্টা করে। এই অল্পবয়স্করা তাদের বিশ্বাসের জন্য গর্বিত আর তারা স্কুলে এই বিষয়ে অন্যদের কাছে নির্দ্বিধায় কথা বলে। কিছু উদাহরণ বিবেচনা করুন।

হলি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ত, তখন তাকে এবং তার সহপাঠীদের এই প্রশ্নের ওপর একটা প্রবন্ধ লিখতে দেওয়া হয়েছিল যে, “কীভাবে তুমি দৌরাত্ম্য না করে সন্ত্রাসবাদ সমস্যাটার সমাধান করবে?” হলি ভবিষ্যতের জন্য তার বাইবেলভিত্তিক আশা সম্বন্ধে লিখতে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছিল। সে ব্যাখ্যা করেছিল যে, ইতিহাস জুড়ে মানুষ “এক জন অন্যের উপরে তাহার অমঙ্গলার্থে কর্ত্তৃত্ব করে।” (উপদেশক ৮:৯) এরপর সে মানবজাতির জন্য একমাত্র প্রকৃত আশার—ঈশ্বরের রাজ্যের—বিষয়ে উল্লেখ করেছিল। “যেহেতু যিশু হলেন সেই রাজ্যের মনোনীত রাজা,” সে লিখেছিল, “তাই সন্ত্রাসবাদসহ সব ধরনের সমস্যাকে নির্মূল করা হবে।” হলি বিশদভাবে বর্ণনা করেছিল যে, কীভাবে যিশু সেই বিষয়টা সম্পন্ন করবেন, যা কোনো মনুষ্য শাসক করতে পারে না। “পৃথিবীতে থাকাকালীন,” সে লিখেছিল, “যিশু দেখিয়েছিলেন যে, তিনি কী ধরনের শাসক হবেন। তিনি ছিলেন প্রেমময় এবং তিনি লোকেদের জন্য চিন্তা করতেন। বিভিন্ন অসুস্থতাকে সুস্থ করার এবং মৃতদের পুনরুত্থিত করার মাধ্যমে তিনি তাঁর ক্ষমতা প্রদর্শন করেছিলেন। কোনো মনুষ্য সরকার সেই ব্যক্তিদের জীবন ফিরিয়ে দিতে সমর্থ নয়, যারা মারা গিয়েছে। কিন্তু ঈশ্বরের রাজ্য করবে।” হলি এই বিবৃতি দিয়ে তার প্রবন্ধ শেষ করেছিল, “সমাধান ঈশ্বরের কাছে, মানুষের কাছে নয়।”

রিপোর্টের শেষে শিক্ষিকা লিখেছিলেন: “অপূর্ব! জোরালো প্রবন্ধ হলি। খুব ভেবেচিন্তে সুন্দরভাবে লেখা হয়েছে।” এ ছাড়া, হলি যে-শাস্ত্রীয় তথ্য জুগিয়েছিল, সেগুলো দ্বারাও শিক্ষিকা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এই বিষয়টা হলিকে তার শিক্ষিকার সঙ্গে যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক আলোচনা এবং শিক্ষা কার্যক্রম, ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয় সম্বন্ধে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছিল। তার শিক্ষিকা সেই পাঠ্যপুস্তকটি সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন, যা পরিচর্যা বিদ্যালয়ে ব্যবহৃত হয়।

জেসিকাও স্কুলের প্রবন্ধগুলো লেখার সময় তার বিশ্বাস সম্বন্ধে কথা বলতে সমর্থ হয়েছিল। “আমার বিশ্বাস সম্বন্ধে আমি তিনটে প্রবন্ধ লিখতে সমর্থ হয়েছিলাম,” সে বলে। “একটা ছিল যিহোবার সাক্ষি এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অধিকার সম্বন্ধে। শিক্ষিকা সেটাকে লাইব্রেরিতে প্রদর্শন করেছিলেন, যাতে যাদের ইচ্ছা হয়, তারা তা পড়তে পারে। অতি সম্প্রতি আমি আমার বাপ্তিস্ম এবং সেই দিন আমার কাছে কত গুরুত্বপূর্ণ, সেই বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেছিলাম। ছাত্রছাত্রীরা মোটামুটিভাবে লেখা তাদের প্রবন্ধগুলো পালাক্রমে একে অন্যকে পড়তে দিয়েছিল, তাই আমারটা পড়ার সুযোগ আমার সহপাঠীদের হয়েছিল। একটা মেয়ে বলেছিল: ‘খুব সুন্দর লেখা। যিহোবার একজন সাক্ষি হওয়ায় যে-দায়িত্বগুলো আসে, সেই সম্বন্ধে জানা অত্যন্ত উপকারী। তোমার বাপ্তিস্মের জন্য তোমাকে অভিনন্দন জানাই!’ আরেকজন মেয়ে বলেছিল: ‘তোমার গল্পটা খুবই অসাধারণ! আমি আনন্দিত যে, তোমার বিশ্বাস এত দৃঢ়!’ একটা ছেলে শুধু এই কথাগুলো লিখেছিল: ‘তুমি যুক্তিবাদী। তোমাকে অভিনন্দন জানাই।’”

মেলিসার বয়স যখন ১১ বছর, তখন নির্ভয়ে তার বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলার এক অদ্বিতীয় সুযোগ তার হয়েছিল। “স্কুলের নার্স আমার বিজ্ঞান ক্লাসে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্বন্ধে বলতে এসেছিলেন। আলোচনায় রক্তগ্রহণের বিষয়টা এসেছিল। ক্লাসের পরে আমি আমার বিজ্ঞান শিক্ষককে রক্ত সম্পর্কিত আমাদের ভিডিওগুলোর একটার বিষয়ে বলেছিলাম। পরের দিন আমি সেটা স্কুলে নিয়ে এসেছিলাম আর আমার শিক্ষক সেটা ঘরে নিয়ে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখেছিলেন। পরের দিন তিনি স্কুলে ভিডিওটা নিয়ে এসেছিলেন এবং আমার ক্লাসসহ দুটো ক্লাসে তা দেখিয়েছিলেন। এরপর তিনি যিহোবার সাক্ষিদের সম্বন্ধে ভাল মন্তব্য করে ক্লাসের সবাইকে বলেছিলেন যে, সাক্ষিরা যদি প্রচেষ্টা না করত, তা হলে রক্তগ্রহণের বিকল্প পদ্ধতিগুলো সহজেই প্রাপ্তিসাধ্য হতো না। ভিডিওটা আমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘স্কুলের লাইব্রেরির জন্য কীভাবে আমি এর একটা কপি পেতে পারি?’ আমি তাকে এটার একটা কপি দিয়েছিলাম। তিনি এতে ভীষণ আনন্দিত হয়েছিলেন আর আমিও হয়েছিলাম!”

যিহোবার অনেক অল্পবয়স্ক সাক্ষির মধ্যে হলি, জেসিকা এবং মেলিসাও রয়েছে, যারা তাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করার বিষয়ে বাইবেলের উপদেশ অনুসরণ করে। (উপদেশক ১২:১) তুমিও কি তা-ই করছ? যদি করে থাকো, তা হলে তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো যে, তুমি যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করছ।—হিতোপদেশ ২৭:১১; ইব্রীয় ৬:১০.

অল্পবয়স্করা, তোমরা যখন সহপাঠী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে তোমাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে বলো, তখন তা যিহোবা ঈশ্বর এবং তাঁর উদ্দেশ্যগুলো সম্বন্ধে জোরালো সাক্ষ্য দেয়। সেইসঙ্গে এটা তোমাদের বিশ্বাসকেও শক্তিশালী করে আর এটা ঈশ্বরের দাসদের একজন হওয়ার বিশেষ সুযোগের কারণে তোমাদের মধ্যে এক গঠনমূলক গর্ব গড়ে তোলে। (যিরমিয় ৯:২৪) স্কুলে সাক্ষ্য দেওয়া এক সুরক্ষা হিসেবেও কাজ করে। জেসিকা এটাকে এভাবে বর্ণনা করে: “আমার বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলার একটা উপকার হল যে, ছাত্রছাত্রীরা আমাকে সেই বিষয়গুলো করার জন্য চাপ দেয় না, যেগুলো বাইবেলের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।” (g০৪ ৯/৮)

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

হলি

[১৪, ১৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

জেসিকা

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

মেলিসা