সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

আপনার বাচ্চাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তুলুন

মেক্সিকান খবরের কাগজ রিফর্মা-য় যেমন রিপোর্ট করা হয়েছে, “লক্ষ করা গেছে যে, পড়ুয়া ব্যক্তিদের বাচ্চারা তাদের বাবামার উদাহরণ অনুসরণ করে,” স্নায়ুভাষাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ বিয়াট্রিস গনসালেস অরটিনিয়ো বলেন। যেহেতু বাচ্চাদের শেখার ক্ষমতা প্রচুর, তাই এমনকি তারা স্বরবর্ণগুলো চিনতে পারার আগেই তাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তোলার জন্য উৎসাহিত করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, তাদের সামনে গল্প পড়া যেতে পারে, যা তাদের কল্পনাশক্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। বাচ্চাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তোলার জন্য সেই খবরের কাগজ এই পরামর্শগুলো দেয়: “একসঙ্গে বসুন . . . পৃষ্ঠাগুলো নিজের মতো করে তাদের উলটাতে দিন, যখন চায় তাদের বলতে দিন এবং প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে দিন। . . . গল্পে আবির্ভূত বস্তু ও চরিত্রগুলো সম্বন্ধে বলার জন্য তাদের বলুন। তাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিন। . . . বইয়ের বিষয়বস্তুকে বাচ্চাদের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করুন।”

হাতি ও লঙ্কা

আফ্রিকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগারের হাতিরা দীর্ঘদিন ধরেই সংরক্ষণকারী ও কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেড়া, আগুন এবং ড্রামের শব্দ, সবকিছুই হাতিগুলোকে বনের সীমার মধ্যে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এধার ওধার ঘুরে বেড়ানো হাতিগুলো সবসময়ই ফসল নষ্ট করেছে ও এমনকি লোকেদের পায়ে মাড়িয়ে মেরে ফেলেছে। তবে শেষ পর্যন্ত ভয় পাওয়ানোর মতো কিছু আবিষ্কার করা গিয়েছে আর তা হচ্ছে লঙ্কা গাছ। দক্ষিণ আফ্রিকার খবরের কাগজ দ্যা উইটনেস রিপোর্ট করে যে, বনের সীমানার ধারে ধারে লাগানো এই গাছগুলোর জন্য হাতিরা বিরক্ত হয়ে পিছিয়ে যায়, কারণ তারা এই “গাছের গন্ধকে তীব্রভাবে অপছন্দ করে।” স্বস্তিপ্রাপ্ত বনরক্ষকদের এখন আর “বনের মধ্যে হাতিদের ঠেলে ঢুকাতে” হয় না এবং স্থানীয় কৃষকদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কমে গিয়েছে। এ ছাড়া, লঙ্কা লাভজনক আয়ের উৎস হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

বয়স্করা বোঝা নয়

“বয়স্ক জনসংখ্যার ভরণপোষণ করতে যে-খরচ জড়িত, শুধুমাত্র সেগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার পরিবর্তে, বয়স্ক লোকেরা কোনো বেতন ছাড়াই যে-উপকারজনক অবদান রাখে ও অর্থ বাঁচিয়ে দেয়, সেটা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ,” অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউট অভ ফ্যামিলি স্টাডিজ এর দ্বারা প্রকাশিত একটা রিপোর্ট বলে। “বয়স্ক লোকেরা কোনো বেতন ছাড়াই এমন অনেক কাজ করে থাকে, যা কাউকে বেতন দিয়েও করানো অনেক কঠিন হবে।” গবেষণা প্রকাশ করেছিল যে, “কোনোরকম বেতন ছাড়া, স্বেচ্ছামূলক কাজ করার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সী ব্যক্তিরা প্রতি বছর [সমাজকে] প্রায় ৩,৯০০ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার [২,৭০০ কোটি মার্কিন ডলার] দিয়ে থাকে।” এই ধরনের স্বেচ্ছামূলক কাজগুলোর অন্তর্ভুক্ত বাচ্চাদের যত্ন নেওয়া এবং অসুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের সেবাযত্ন করা ও সেইসঙ্গে গৃহস্থালী কাজকর্ম করা। সেই লেখক উল্লেখ করেন যে, বেতন ছাড়া এই ধরনের কাজ “এক সামাজিক ‘আঠা’ হিসেবে কাজ করতে পারে, যা সমাজকে একতাবদ্ধ রাখতে সাহায্য করে।” এর মূল্য কেবলমাত্র টাকা দিয়ে পরিমাপ করা যায় না।

লক্ষণীয় হারে এইডসের বৃদ্ধি

২০০৩ সালে পঞ্চাশ লক্ষ লোক এইডস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল, “দুই দশক আগে এই মহামারীর প্রকোপ শুরু হওয়ার সময় থেকে যেকোনো বছরের মধ্যে এই সংখ্যাই হচ্ছে সর্বোচ্চ,” দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্ট করে। “উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এইচআইভি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এক ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, এইডস ভাইরাস বৃদ্ধিরত সংখ্যক লোকেদের সংক্রামিত করে চলেছে এবং প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ লোকের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।” রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য দলগুলোর দ্বারা আয়োজিত ইউএনএইডস নামে এক এইডস কার্যক্রমের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৩০ লক্ষ লোক এইডসের কারণে মারা যায় এবং ১৯৮১ সালে সর্বপ্রথম এই রোগ ধরা পড়ার সময় থেকে ২ কোটিরও বেশি লোক এটার কারণে মারা গিয়েছে। ইউএন সংস্থা অনুমান করে যে, বর্তমানে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ লোক এইচআইভি-র দ্বারা আক্রান্ত। আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে কিছু অংশ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, যেখানে ২ কোটি ৫০ লক্ষ এইডস রোগী রয়েছে আর এরপর দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ৬৫ লক্ষ লোক এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত। “বিশ্বব্যাপী, সমস্ত নতুন এইচআইভি রোগীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই হচ্ছে যুবক-যুবতী, যারা ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী,” সেই খবরের কাগজ বলে।

গাছের উচ্চতার সীমা

“রেডউড গাছ হচ্ছে পৃথিবীতে সবচেয়ে লম্বা সজীব বস্তু, কিন্তু সেগুলোর লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে বৃদ্ধির এক সীমা রয়েছে, যা সম্ভবত যত আদর্শ পরিবেশই থাকুক না কেন, সেটাকে ছাড়িয়ো যাবে না,” লাস ভেগাস রিভিউ-জার্নাল খবরের কাগজ বলে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা গাছ (১১০ মিটার, প্রায় একটা ৩০ তলা ভবনের উচ্চতার সমান) এবং প্রায় এইরকম লম্বা আরও চারটে গাছ নিয়ে গবেষণা ইঙ্গিত করে যে, কোনো রেডউড গাছের সর্বোচ্চ উচ্চতা প্রায় ১৩০ মিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। পাতা থেকে আর্দ্রতা যখন বাষ্পীভূত হয়, তখন শিকড় থেকে জল টেনে আনতে এবং গাছের একেবারে আগায় পৌঁছাতে হয়, যা অভিকর্ষের বিপরীতে কাজ করে। গবেষণাকারীরা অনুমান করে যে, এই কাজ করতে সর্বোচ্চ ২৪ দিন লাগতে পারে। জাইলেম বাহিকা নামে অভিহিত টিউবের মধ্যে দিয়ে যখন জল তোলা হয়, তখন চাপ বৃদ্ধি পায়, যতক্ষণ না এটা অনেক বড় হয়ে যায় এবং এর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যা গাছের উচ্চতাকে সীমিত করে দেয়। নথিভুক্ত সবচেয়ে লম্বা গাছ ডাগলাস ফির প্রায় ১২৬ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছায়।

পান্ডা ও তাদের বাঁশ

“চিন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রতীক বিশাল পান্ডা ততটা বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী নয়, যতখানি এটাকে মনে করা হয়েছিল,” লন্ডনের দ্যা ডেইলি টেলিগ্রাফ বলে। ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফান্ড ফর নেচার এবং চিনের সরকার দ্বারা চার বছরের গবেষণা জানিয়েছে যে, বন-জঙ্গলে বসবাসরত পূর্বে অনুমানকৃত ১,০০০ থেকে ১,১০০টা পান্ডার পরিবর্তে সেখানে ১,৫৯০টারও বেশি পান্ডা রয়েছে। যে-এলাকাগুলোতে অনুসন্ধান করতে হবে সেগুলোকে ভাগ করার জন্য স্যাটেলাইট পজিশনিং সিস্টেমসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সঠিক সংখ্যাটা জানা গিয়েছিল। যদিও ফলাফল সংরক্ষণকারীদের জন্য সুসংবাদ কিন্তু ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজের ওয়ার্ল্ড কনসারভেশন মনিটরিং সেন্টার সাবধান করে দেয় যে, বাঁশ যা হচ্ছে বিশাল পান্ডার খাদ্যের প্রধান উৎস, তা বনভূমি নিধনের দ্বারা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে যে-কারণে দ্রুত বনভূমি নিধনের দ্বারা বাঁশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা হল, “বাঁশ গাছের প্রতিটা প্রজাতিতে প্রতি ২০ থেকে ১০০ বছর পর পর ফুল আসে ও এরপর মারা যায়,” টেলিগ্রাফ রিপোর্ট করে।

দ্রুতগতির জিহ্বাবিশিষ্ট গিরগিটি

একটা গিরগিটি কীভাবে এর শিকারকে ধরার জন্য এতখানি দ্রুতগতিতে এর জিহ্বাকে সামনের দিকে বার করতে পারে? “রহস্যটা হচ্ছে এক স্প্রিংয়ের মতো প্রক্রিয়া, যা গুলতির ইলাস্টিকের মতো নির্গত হওয়ার আগে শক্তিকে সঞ্চয় করে,” নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা বলে। বিজ্ঞানীরা জানত যে, একটা গিরগিটির জিহ্বায় আবদ্ধ কলা রয়েছে, যা এক ‘ত্বরক পেশীর’ দ্বারা পরিবেষ্টিত। ধীর গতির ভিডিও ফুটেজের সাহায্যে, ডাচ গবেষকরা আবিষ্কার করেছে যে, এর জিহ্বা আঘাত করার মাত্র ২০০ মিলিসেকেন্ড আগে “একটা গিরগিটি আন্তঃজিহ্বা সংক্রান্ত আবদ্ধ কলায় স্প্রিংয়ের মতো শক্তি সঞ্চয় করার জন্য ত্বরক পেশিকে ব্যবহার করে, একটা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের বিভাগগুলোর মতো একটাকে অন্যটার সঙ্গে আবদ্ধ করে। গিরগিটিগুলো যখন আঘাত করে, তখন সংরক্ষিত শক্তি মাত্র ২০ মিলিসেকেন্ডের মধ্যে নির্গত হতে পারে, যা জিহ্বাকে সামনের দিকে ত্বরান্বিত করে” যাতে এটা এর শিকারকে আটকে ফেলতে পারে।