সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“লোকেরা যদি এটা বুঝত!”

“লোকেরা যদি এটা বুঝত!”

“লোকেরা যদি এটা বুঝত!”

হাইস্কুল পাশ করার পর অনেক যুবক-যুবতী যখন বস্তুগত লক্ষ্যগুলো স্থাপন করে, সেই জায়গায় ডেভিডের লক্ষ্য ছিল ভিন্ন। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, সে ও তার এক বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস থেকে ডোমিনিকান রিপাবলিকে চলে গিয়েছিল। * ডেভি—যে-নামে তার বন্ধুরা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে ডাকত—স্প্যানিশ ভাষা শেখার ও যিহোবার সাক্ষিদের নাভাস মণ্ডলীর সঙ্গে তাদের বাইবেল শিক্ষার কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মণ্ডলী তাকে আপন করে নিয়েছিল। “ডেভিকে যা যা করতে বলা হতো, সবই সে করত,” সেই মণ্ডলীর একমাত্র প্রাচীন খোয়ান বলেন। “সে অন্যদের জন্য সবসময় নিজেকে বিলিয়ে দিত আর ভাইবোনেরা তাকে ভালবাসত।”

ডেভি তার কার্যভারকে ভালবাসত। “আমি এখানে আমার জীবন পুরোপুরিভাবে উপভোগ করছি,” যুক্তরাষ্ট্রের এক বন্ধুকে সে লিখেছিল। “পরিচর্যা খুবই সতেজতাদায়ক! আমরা প্রত্যেক দরজায় প্রায় ২০ মিনিট ধরে কথা বলি কারণ লোকেরা আমাদের সমস্ত কথা শুনতে চায়। আমি ইতিমধ্যে ছয়টি বাইবেল অধ্যয়ন করছি কিন্তু এখনও আমাদের আরও সাহায্য লাগবে। আমাদের ৩০ জন রাজ্য প্রকাশকের মণ্ডলীর একটা সভাতে ১০৩ জন ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছিল!”

দুঃখের বিষয় যে, ২০০৪ সালের ২৪শে এপ্রিল একটা দুর্ঘটনায় ডেভি এবং সেই একই মণ্ডলীর আরেকজন যুবক মারা যায়। তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত, ডেভি প্রচুর উদ্যম সহকারে তার কাজ করে গিয়েছিল আর সে তার দেশের অন্যান্য যুবক-যুবতীকে তার সঙ্গে যোগ দিতে উৎসাহ দিয়েছিল। “এটা তোমার দৃষ্টিভঙ্গিকে পালটে দেবে,” একজন যুবতী সাক্ষিকে সে বলেছিল।

বস্তুগত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পালটানোর অভিজ্ঞতা স্বয়ং ডেভির হয়েছিল। “একবার বাড়িতে ঘুরতে আসার সময়,” তার বাবা মনে করে বলেন, “ডেভিকে স্কি করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সে খোঁজ নিয়ে জেনেছিল যে, এতে কত খরচ পড়বে। তাকে যখন খরচের পরিমাণ জানানো হয়েছিল, তখন ডেভি বলেছিল যে, স্কি করার জন্য এত পয়সা খরচ করার বিষয় সে ভাবতেই পারে না, কারণ সেই একই খরচে সে ডোমিনিকান রিপাবলিকে কয়েক মাস থাকতে পারে!”

ডেভির উদ্যোগ অন্যদের প্রভাবিত করেছিল। “ডেভি যা কিছু করছিল ও সে কত খুশি ছিল, সেই বিষয়ে আমি যখন শুনেছিলাম,” তার দেশের একজন যুবতী বলেছিল, “এটা আমাকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছিল যে, আমিও এই ধরনের কাজ সম্পাদন করতে পারি। ডেভির মৃত্যু আমাকে ভাবতে পরিচালিত করেছে যে, আমি যদি মারা যাই, তা হলে লোকেরা আমার সম্বন্ধে কী বলবে এবং তাদের জীবনের ওপর আমি কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারব কি না।”

যিহোবার সাক্ষি হিসেবে, ডেভির বাবামা ও ভাইবোনদের পুরোপুরি আস্থা রয়েছে যে, ঈশ্বর ডেভিকে ধার্মিকতার আসন্ন নতুন জগতে পুনরুত্থিত করবেন। (যোহন ৫:২৮, ২৯; প্রকাশিত বাক্য ২১:১-৪) বর্তমানে, তারা এই বিষয়টা জেনে সান্ত্বনা লাভ করে যে, ডেভি তার জীবনকে যথাসম্ভব সর্বোত্তম উপায়ে—তার সৃষ্টিকর্তার সেবায়—ব্যবহার করেছে। (উপদেশক ১২:১) যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে সেবা করার জন্য তার সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে, ডেভি একবার বলেছিল: “আমি আশা করি যে, প্রত্যেক যুবক-যুবতী এইরকম কিছু করবে এবং আমার মতো তাদেরও একই অনুভূতি হবে। সর্বান্তকরণে যিহোবাকে সেবা করার চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। লোকেরা যদি এটা বুঝত!”

[পাদটীকা]

^ ডেভিডের মতো, অনেক যিহোবার সাক্ষি স্বেচ্ছায় এমন এক জায়গায় চলে গিয়েছে, যেখানে রাজ্যের প্রচারকদের অধিক প্রয়োজন রয়েছে, এমনকি কেউ কেউ ঈশ্বরের বাক্যের সত্য অন্যদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটা বিদেশি ভাষা পর্যন্ত শিখেছে। এই ধরনের ৪০০রও বেশি স্বেচ্ছাসেবক এখন ডোমিনিকান রিপাবলিকে সেবা করছে।