সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

বিশ্ব নিরীক্ষা

“দুরন্ত” ছেলেমেয়ে শোধরাতে পারে

“প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া অনেক দুরন্ত ছেলেমেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুধরেছে,” দ্যা সিডনি মর্নিং হেরাল্ড জানায়। “তারা ভদ্র কিশোর-কিশোরীতে পরিণত হতে পারে।” অস্ট্রেলিয়ার পারিবারিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত একটা গবেষণা ১৭৮ জন ছেলেমেয়ের উন্নতির ওপর নজর রেখেছিল, যারা ১১ বা ১২ বছর বয়সে “প্রচণ্ড আগ্রাসী, অসহযোগিতাপূর্ণ, ইন্দ্রিয়দমনের অভাব, কাজের প্রতি অমনোযোগ, অতিরিক্ত চঞ্চল এবং অস্থির বা বদমেজাজের” মতো বৈশিষ্ট্যগুলোর তিনটে বা এর চেয়েও বেশি বৈশিষ্ট্য দেখিয়েছিল। ছয় বছর পর, এই কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ১০০ জন ‘এমন কিশোর-কিশোরীদের মতো’ ব্যবহার করতে শুরু করেছিল ‘যাদেরকে প্রায় ভদ্র নিয়ন্ত্রিত কিশোর-কিশোরীদের দলে ফেলা যেতে পারে।’ কী তাদের শোধরাতে সাহায্য করেছিল? “যে-ছেলেমেয়েরা সুখী কিশোর-কিশোরীতে পরিণত হয়েছিল, তারা সম্ভবত সমাজবিরোধী বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কম মেলামেশা করেছিল [এবং] খুব সম্ভবত বাবামাদের ভাল তত্ত্বাবধান পেয়েছিল,” রিপোর্টটা জানায়।

তামাক পুরো শরীরের জন্যই ক্ষতিকর

“ধূমপায়ীরা শুধুমাত্র তাদের ফুসফুস এবং ধমনীগুলোকেই ঝুঁকির মুখে ফেলছে না: তারা দেহের সমস্ত কলার ক্ষতি করছে,” নিউ সায়েন্টিস্ট রিপোর্ট করে। যুক্তরাষ্ট্রের শল্যচিকিৎসক প্রধান রিচার্ড এইচ. কার্মোনার দ্বারা প্রকাশিত একটা রিপোর্ট সেই রোগগুলোর তালিকা দেয়, যেগুলো তামাক সেবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যেমন নিউমোনিয়া, লিউকিমিয়া, চোখে ছানি পড়া, মাঢ়ীর রোগ এবং বৃক্কের (কিডনি), গর্ভাশয়ের সংকীর্ণ অংশের, পাকস্থলীর ও অগ্নাশয়ের ক্যান্সার। “কয়েক দশক ধরে আমরা জেনে এসেছি যে, ধূমপান আপনার জন্য ক্ষতিকর কিন্তু এই রিপোর্ট দেখায় যে, আমরা যতটা জানি এটা তার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর,” কার্মোনা বলেন। “সিগারেটের ধোঁয়া থেকে নির্গত বিষাক্ত পদার্থ রক্তে মিশে গিয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।” যারা মনে করে যে, অল্প টার ও নিকোটিনযুক্ত সিগারেট পান করে তারা ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে পারে তাদের জন্য কার্মোন আরও বলেন: “নিরাপদ সিগারেট বলে কিছু নেই।” তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, ধূমপায়ী ব্যক্তিরা সাধারণত অধূমপায়ী ব্যক্তিদের চেয়ে ১৩ থেকে ১৪ বছর আগে মারা যায়। “ধূমপান জীবনের প্রতিটা পর্যায়ে শরীরের প্রায় প্রতিটা অঙ্গেই রোগের সৃষ্টি করে,” কার্মোন বলেছিলেন যেমন দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় রিপোর্ট করা হয়েছে।

দু-নম্বরি বিয়ে

দক্ষিণ আফ্রিকার ৩,০০০রেরও বেশি মহিলাকে ঠকিয়ে “বিয়ে” দেওয়া হয়েছে, জোহান্সবার্গের খবরের কাগজ সোয়িটান রিপোর্ট করে। একটা দু-নম্বরি কাজে এইরকম ঘটনা ঘটে, কয়েক জন মহিলা চাকরির চুক্তিপত্রে সই করছে মনে করে প্রকৃতপক্ষে বিয়ের সার্টিফিকেটে সই করে। সেই সার্টিফিকেট বিদেশি ‘বরকে’ সেই দেশে স্থায়ী বসবাসকারী হওয়ার যোগ্য করে তোলে। “নববধূ” হয়তো এই ঠকামি সম্বন্ধে তখনই টের পান, যখন তিনি হারানো শনাক্তিকরণ দলিল পরিবর্তন করার আবেদন করেন এবং জানতে পারেন যে, তার পদবি পালটে দেওয়া হয়েছে অথবা যখন তিনি তার সত্যিকারের বিয়ের দিনে তার বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে যান এবং জানতে পারেন যে, তার নাম ইতিমধ্যেই বিবাহিত হিসেবে তালিকাবদ্ধ রয়েছে! এই ‘বিয়েকে’ বাতিল করা খুবই জটিল হতে পারে। তবুও, প্রায় ২,০০০ জন মহিলা তাদের অজ্ঞাতসারে হওয়া বিয়েকে সফলতার সঙ্গে বাতিল করতে পেরেছে। এই ধরনের দু-নম্বরি বিয়েকে রোধ করতে এক নতুন আইন কার্যকর করা হয়েছে, যেটার জন্য বিদেশি স্বামী বা স্ত্রীকে স্থায়ী বসবাসকারী হওয়ার অনুমতির আবেদন করতে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

অবসর সময়ে পড়া, ভাল নম্বর এনে দেয়

মেক্সিকো সিটির মিলেনিও খবরের কাগজ রিপোর্ট করে যে, “পড়ার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করা, বাবামায়ের শিক্ষা, ক্লাসে দেওয়া নোটের সাহায্য নেওয়া বা কম্পিউটার ব্যবহারের” চেয়ে অবসর সময়ে আনন্দের জন্য পড়া আরও ভাল নম্বর পেতে সাহায্য করে। হাইস্কুলের হাজার হাজার ভর্তি পরীক্ষাগুলোর ওপর করা একটা গবেষণা ইঙ্গিত করে যে, যেসমস্ত ছাত্র-ছাত্রী তাদের স্কুলের পড়া এবং অবসর সময়ে পড়া উভয়ের জন্য সময় দেয়, তারা খুব সম্ভবত স্কুলে উন্নতি করে। ছাত্র-ছাত্রীরা যেসমস্ত বই বাছাই করে, সেগুলো যে শুধুমাত্র স্কুলের পাঠ্যবইই হতে হবে এমন নয় কিন্তু সেগুলো আনন্দের জন্য পড়ার বইও হতে পারে, যেমন আত্মজীবনীমূলক বই, কবিতার বই এবং বিজ্ঞান সংক্রান্ত বই। সেই রিপোর্ট উল্লেখ করে যে, অন্যদিকে যেসমস্ত ছাত্র-ছাত্রী পড়ার চেয়ে দিনে প্রচুর সময় টিভি দেখে কাটায় তারা কম নম্বর পায়।

ভুটান তামাক বিক্রি নিষেধ করেছে

ভারত ও চিনের মধ্যে হিমালয়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত ভুটান রাজ্য তামাকের তৈরি সব ধরনের বস্তু বিক্রি নিষেধ করেছে। বিদেশি কূটনৈতিক বা পর্যটক অথবা বেসরকারি সংস্থাগুলোতে কর্মরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাটা প্রযোজ্য নয়। এইরকম মনে করা হয়ে থাকে যে, এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে ভুটানই হচ্ছে প্রথম দেশ। সর্বসাধারণের স্থানগুলোতেও ধূমপান করা নিষেধ করা হয়েছে। “ভুটানকে এক ধূমপান মুক্ত দেশ তৈরি করতে এই নিষেধাজ্ঞা সরকারের প্রচেষ্টারই অংশ,” বিবিসি নিউজ বলে।

ঘুম সমস্যার সমাধান করতে আমাদের সাহায্য করে

“অনেক লোক লক্ষ করেছে যে, রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে যে-সমস্যার সমাধান করা যায়নি সকালে সেটার সমাধান করা খুব সহজ বলে মনে হয়, যেন মস্তিষ্ক নীরবে সারারাত সেটার সমাধানের চেষ্টা করছিল,” লন্ডনের দ্যা টাইমস্‌ রিপোর্ট করে। জার্মানির বিজ্ঞানীরা বলে যে, এটা যে সত্যি তার প্রমাণ তারা এখন আবিষ্কার করেছে এবং নেচার নামে এক পত্রিকায় তাদের তদন্তের ফলাফলগুলো ছাপিয়েছে। তারা ৬৬ জন স্বেচ্ছাসেবীকে একটা অঙ্ক কষতে দুটো নিয়ম শিখিয়েছিল কিন্তু তৃতীয় নিয়মটা সম্বন্ধে জানায়নি যা আরও সংক্ষিপ্ত উপায়ে সঠিক উত্তরটা পেতে সাহায্য করে। এরপর স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে কয়েক জনকে ঘুমাতে দেওয়া হয়েছিল এবং অন্যদের সারারাত বা দিন জাগিয়ে রাখা হয়েছিল। “ঘুম চমৎকার ফলাফল এনেছিল,” লন্ডনের দ্যা ডেইলি টেলিগ্রাফ একই অধ্যয়নের ওপর মন্তব্য জানিয়ে রিপোর্ট করে। ‘যারা জেগে ছিল তাদের চেয়ে’ যারা ঘুমিয়েছিল তাদের মধ্যে ‘দ্বিগুণ লোক খুব সম্ভবত তৃতীয় নিয়মটা খুঁজে বের করে।’ এই ফলাফলের কারণ যে-দলটা ঘুমিয়েছিল তারা বিশ্রাম পেয়েছিল ও সতেজ বোধ করেছিল বলে যে নয়, তা নিশ্চিত করতে বিজ্ঞানীরা এক দ্বিতীয় পরীক্ষা নিয়েছিল। দুটো দলকে ঘুম থেকে ওঠার পর সকালে অথবা সারাদিন জেগে থাকার পর রাতে অঙ্ক কষতে দেওয়া হয়েছিল। এবার দুটো দল যা সম্পাদন করেছিল সেটার মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না যা দেখায় যে, “ফলাফলের কারণ সতেজ মস্তিষ্ক নয় কিন্তু এমন এক মস্তিষ্ক যা ঘুমানোর সময়ে নিজেকে পুনর্বিন্যাস করেছে,” দ্যা টাইমস্‌ জানায়। “তাই” গবেষক ড. উলরিখ ভাগনের উপসংহার করেন, “ঘুম এক সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে।”

অস্ত্র ভেঙে খেলার মাঠের সরঞ্জাম গড়া

ব্রাজিলে এক অভিযান চালু হয়েছিল যেটার উদ্দেশ্য ছিল সেই দেশের জনগণের অধিকারে থাকা অস্ত্রগুলোর সংখ্যা কমানো। স্বেচ্ছায় জমা দেওয়া প্রত্যেকটা অস্ত্রের ক্ষতিপূরণ বাবদ খরচ হয়েছিল ৩০ মার্কিন ডলার থেকে ১০০ মার্কিন ডলার। ফোলিয়া অনলাইন-এ যেমন রিপোর্ট করা হয়েছিল, ২০০৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশ থেকে ২,০০,০০০রও বেশি অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। সাও পাওলো রাজ্য থেকে সংগৃহীত অস্ত্রগুলোকে ভেঙে ফেলা, চেপে পাতলা করা, গলানো হয়েছিল আর এরপর খেলার মাঠের সরঞ্জামে পরিণত করা হয়েছিল যেগুলোকে শহরের একটা পার্কে স্থাপন করা হয়েছিল। এই পার্কে এখন একটা সীসো, দোলনা এবং একটা স্লাইড রয়েছে, যেগুলোর সমস্তই গলানো অস্ত্রগুলোর পদার্থ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বিচারমন্ত্রী মারসিউ টুমাস বাসটস বলেছিলেন: “নিরস্ত্রীকরণ অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটা হল শান্তির এক সংস্কৃতির সূত্রপাত করা।”