সোনার চিরন্তন আবেদন
সোনার চিরন্তন আবেদন
অস্ট্রেলিয়ার সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক
অস্ট্রেলিয়ার গহীন জঙ্গলের একেবারে ভিতরে, একজন খনিজসন্ধানী এক শুকনো নদীগর্ভের ওপর দিয়ে ক্লান্তভাবে পা টেনে টেনে হেঁটে যান। মধ্যাহ্নের উত্তপ্ত সূর্য তার পিঠে এসে লাগলে পিঠ যেন পুড়ে যায়। তার ময়লা ধুলোবালিপূর্ণ শার্ট ঘামে একেবারে ভিজে গিয়েছে। কিন্তু দমে না গিয়ে তিনি একটা লম্বা ধাতব দণ্ড আঁকড়ে ধরেন, যেটা খাবারের প্লেটের সমান একটা যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তিনি অত্যাধুনিক ধাতু নির্ণয়ক যন্ত্রটা মাটিতে এদিক সেদিক ঘোরান। এর চৌম্বক ক্ষেত্র পাথুরে মাটির ভিতরে এক মিটার পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত হয়। তার কানে লাগানো হেডফোন ধাতু নির্ণয়ক যন্ত্রটা থেকে এক সংকেত পায় এবং একটানা, উচ্চ শব্দ প্রেরণ করে।
হঠাৎ তার হৃৎস্পন্দন দ্রুততর হয়, যখন উচ্চ মাত্রার শব্দ ক্রমান্বয়ে কমে টিক আওয়াজ দেয়—এক নিশ্চিত চিহ্ন যে, তার যন্ত্র মাটির নীচে শায়িত ধাতুর ওপর আছে। তিনি হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন এবং সেই জায়গা খুঁড়তে শুরু করেন। শীঘ্রই তার ছোট্ট গাঁইতি দিয়ে শক্ত ভূমিকে খুঁড়তে শুরু করেন। সেখানে যে-বস্তুটি রয়েছে তা সম্ভবত মরচে-ধরা একটা পেরেকও হতে পারে। হতে পারে একটা পুরোনো মুদ্রা। কিন্তু, গর্তটা যত গভীর হতে থাকে, তিনি অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকেন যে, সেখানে অল্প হলেও সোনা রয়েছে কি না।
ক্রমবর্ধমান স্বর্ণ-অভিযান
সোনা আবিষ্কারের পদ্ধতিগুলো হয়তো পরিবর্তিত হয়েছে কিন্তু ইতিহাস জুড়ে মানবজাতি উৎসুকভাবে এই চকচকে হলুদ ধাতুর অন্বেষণ করছে। বিশ্ব স্বর্ণ পরিষদ অনুসারে, বস্তুতপক্ষে বিগত ৬,০০০ বছর ধরে খনি থেকে ১,২৫,০০০ টনেরও বেশি সোনা উত্তোলন করা হয়েছে। * মিশর, ওফীর এবং দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন সভ্যতাগুলো যদিও তাদের সোনার ধনসম্পদের জন্য বিখ্যাত ছিল কিন্তু এযাবৎ যত সোনা উত্তোলন করা হয়েছে, সেগুলোর ৯০ শতাংশেরও বেশি বিগত ১৫০ বছরে খনন করে বের করা হয়েছে।—১ রাজাবলি ৯:২৮.
সোনা খননের কাজে ১৮৪৮ সালে লক্ষণীয় বৃদ্ধি ঘটেছিল, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার আ্যমেরিকান রিভারে অবস্থিত সাটারস্ মিলে সোনা পাওয়া গিয়েছিল। সেই আবিষ্কারই স্বর্ণ-অভিযানের সূত্রপাত করেছিল—আশাবাদী খনিজসন্ধানীদের জনতা হঠাৎ করে কোনো এলাকায় নেমে এসেছিল। সেখানে আসা সমস্ত ব্যক্তি ক্যালিফোর্নিয়ার মাটিতে শায়িত তাদের ভবিষ্যৎ সাফল্য খুঁজে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। অনেকে ব্যর্থ হয়েছিল কিন্তু কেউ কেউ লক্ষণীয়ভাবে সফল হয়েছিল। এই মূল্যবান খনিজের অসাধারণ গুরুত্ব এই বিষয়টা বিবেচনা করার দ্বারা পরিমাপ করা যেতে পারে যে, রোমীয় সাম্রাজ্যের পুরো সময়কাল জুড়ে বিশ্বব্যাপী অনুমানকৃত দশ টন সোনা উত্তোলন করা হয়েছিল। শুধু ১৮৫১ সালেই, কেবলমাত্র ক্যালিফোর্নিয়ার স্বর্ণখনি থেকে ৭৭ টন সোনা উৎপাদন করা হয়েছিল।
সেই একই সময়ে পৃথিবীর অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার নতুন অঞ্চলগুলোতে সোনা আবিষ্কৃত হয়েছিল।
এডোয়ার্ড হারগ্রেভজ্, যিনি ক্যালিফোর্নিয়া স্বর্ণখনিতে মূল্যবান অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের ছোট্ট শহর ব্যাথার্স্টের কাছে প্রবাহিত একটা ক্ষুদ্র নদীতে সোনা খুঁজে পেয়েছিলেন। ১৮৫১ সালে, ভিক্টোরিয়া রাজ্যের ব্যালেরেট এবং বেনডিগোতেও বিশাল খনি আবিষ্কার করা হয়েছিল। আবিষ্কারের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বর্ণ-অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছিল। যারা এসেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ পেশাদার খনিশ্রমিক ছিল। তবে অনেকে ছিল খামারকর্মী বা অফিসকর্মী, যারা আগে কখনো খনিশ্রমিকদের গাঁইতি ব্যবহার করেনি। স্বর্ণ-অভিযানের এক শহরের দৃশ্যের বর্ণনা করে সেই সময়কার একটা স্থানীয় খবরের কাগজ ঘোষণা করেছিল: “ব্যাথার্স্ট আবারও পাগল হয়ে গিয়েছে। সোনার সংক্রামক জ্বরের প্রলাপ আবারও তীব্রতর রূপ নিয়ে ফিরে এসেছে। পুরুষরা একত্রিত হয়, একে অন্যের দিকে বোকার মতো তাকিয়ে থাকে, আজেবাজে কথাবার্তা বলে এবং আগামীতে কী ঘটবে তা নিয়ে ভাবে।”পরবর্তী সময়ে কী ঘটেছিল? জনসংখ্যার আকস্মিক বৃদ্ধি হয়েছিল। ১৮৫১ সালের পর দশ বছরের মধ্যে, অস্ট্রেলিয়ায়
বসবাসকারী লোকেদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল, যেহেতু আশাবাদী খনিজসন্ধানীরা পৃথিবীর প্রতিটা কোণ থেকে সেই দেশে চলে এসেছিল। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে বিভিন্ন পরিমাণে সোনা আবিষ্কৃত হয়েছিল। একটা অভিযান মন্থর হয়ে পড়লে অন্যটা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কেবলমাত্র ১৮৫৬ সালে অস্ট্রেলীয় খনিজসন্ধানীরা ৯৫ টন সোনা খনন করেছিল। এরপর, ১৮৯৩ সালে খনিশ্রমিকরা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কালগুরলি-বোল্ডারের কাছে মাটি থেকে সোনা খনন করতে শুরু করেছিল। সেই সময় থেকে ১,৩০০ টনের বেশি সোনা এমন অঞ্চল থেকে উত্তোলন করা হয়েছে, যেটাকে বর্ণনা করা হয়েছে “বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী ২.৫ বর্গ কিলোমিটার সোনা বহনকারী মাটি।” সেই অঞ্চল এখনও সোনা উৎপাদন করে যাচ্ছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে গভীর ওপেনকাট স্বর্ণখনির জন্য গর্বিত—প্রায় দুই কিলোমিটার প্রশস্ত, তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৪০০ মিটার গভীর এক মনুষ্যনির্মিত গিরিখাত!আজকে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম সোনা উৎপাদনকারী অঞ্চল। এই শিল্প ৬০,০০০ লোককে চাকরি দিয়েছে এবং বছরে প্রায় ৩০০ টন সোনা উৎপন্ন বা পাঁচশো কোটি (অস্ট্রেলীয়) ডলার আয় করে। যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বর্ণখনির দেশ। তবে, একশো বছরেরও বেশি আগে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোনা উৎপাদনকারী দেশ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এযাবৎ খনন করা সমস্ত সোনার প্রায় ৪০ শতাংশ সেই দেশ থেকে এসেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ২,০০০ টনের বেশি সোনা উত্তোলন করা হয়। এই সমস্ত মূল্যবান ধাতু দিয়ে কী হয়?
সম্পদ ও সৌন্দর্যের মিশ্রণ
কিছু পরিমাণ সোনা এখনও মুদ্রা তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার দ্যা পার্থ মিন্ট এখন এই ধরনের মুদ্রা তৈরিতে বিশ্বের প্রধান উৎপাদনকারী। এই মুদ্রাগুলো সাধারণভাবে বন্টন করা হয় না কিন্তু সংগ্রহকারীদের দ্বারা সংগৃহীত হয়ে থাকে। এ
ছাড়া, এযাবৎ উত্তোলিত সমস্ত সোনার মধ্যে প্রায় এক চতুর্থাংশকে সোনার ধাতুপিণ্ডে—স্পর্শনীয় সম্পদের কঠিন টুকরোতে—পরিণত করা হয়েছে এবং ব্যাঙ্কের ভাণ্ডারে মজুত রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাঙ্কের ভাণ্ডারে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনার খণ্ড রয়েছে।বর্তমানে, প্রতি বছর উত্তোলিত প্রায় ৮০ শতাংশ সোনা—প্রায় ১,৬০০ টন—দিয়ে অলংকার তৈরি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাঙ্কে হয়তো সবচেয়ে বেশি সোনা রয়েছে কিন্তু হিসেবের মধ্যে অলংকারকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে ভারতের আওতায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণ সোনা রয়েছে। মূল্যবান ও সুন্দর হওয়া ছাড়াও, এই নরম ধাতুর মধ্যে সেই ধর্মগুলো রয়েছে, যেগুলো এটাকে বিভিন্নভাবে অনেক প্রকারের কাজে ব্যবহার করতে সমর্থ করে।
প্রাচীন ধাতুর আধুনিক প্রয়োগ
প্রাচীন মিশরের ফরৌণরা সম্ভবত শনাক্ত করেছিল যে, সোনা ক্ষয়-প্রতিরোধী ধাতু আর তাই তারা এটিকে মৃত ব্যক্তির মুখের ছাঁচ তৈরি করার জন্য ব্যবহার করেছিল। সোনার স্থায়িত্বের সত্যতা সম্বন্ধে বলা যায়, প্রত্নতত্ত্ববিদরা যখন ফরৌণ তুতাংখামেনের মৃত্যুর হাজার হাজার বছর পর তার কবর খনন করেছিল, তখন সোনা দিয়ে তৈরি মৃত যুবক রাজার মুখের ছাঁচ অমলিন অবস্থায় পেয়েছিল এবং তখনও চকচকে হলুদ রং অক্ষুণ্ণ ছিল।
সোনার চাকচিক্য অক্ষুণ্ণ রয়েছে কারণ জল ও বায়ু—যা লোহার মতো অন্যান্য ধাতুর ধ্বংসসাধনকারী—এটার ক্ষতি করে না। ক্ষয়প্রতিরোধী ও সেইসঙ্গে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা এটাকে বৈদ্যুতিক যন্ত্রে ব্যবহারের জন্য আদর্শ করে তোলে। প্রতি বছর প্রায় ২০০ টন সোনা টেলিভিশন, ভিসিআর, সেল ফোন এবং প্রায় পাঁচ কোটি কম্পিউটার উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া, উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন কমপ্যাক্ট ডিস্কগুলোতে এর নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করার জন্য টেকসই সোনার পাতলা স্তর রয়েছে।
সোনার পাতলা ফিল্মগুলো কিছু অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। আলোর সঙ্গে ধাতুর পারস্পরিক বিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করুন। অতি পাতলা পাতে প্রক্রিয়াজাত করা হলে সোনা আলোকভেদ্য হয়ে ওঠে। যখন অতিরিক্ত মাত্রায় পাতলা থাকে, তখন এটা এর মধ্যে দিয়ে সবুজ আলোক তরঙ্গকে প্রবাহিত করে কিন্তু অবলোহিত আলো প্রতিফলিত করে। সোনার প্রলেপ দেওয়া জানালাগুলো আলো প্রবেশ করতে দেয় কিন্তু তাপ প্রতিফলিত করে। তাই, আধুনিক বিমানের নিম্নভাগের জানালাগুলো সোনার প্রলেপ দেওয়া, যেমনটা অনেক নতুন নতুন অফিস বিল্ডিংগুলোতে রয়েছে। এ ছাড়া, আলোক অভেদ্য সোনার ফয়েল মহাশূন্য যানের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন অংশগুলোর চারপাশে মোড়ানো থাকে, যা তাদেরকে কার্যকারীভাবে তীব্র তেজষ্ক্রিয়া ও তাপ থেকে রক্ষা করে।
এ ছাড়া, সোনা প্রচুর মাত্রায় ব্যাকটিরিয়া প্রতিরোধী। তাই, দন্তচিকিৎসকরা নষ্ট বা ক্ষয়প্রাপ্ত দাঁত ঠিক করার বা প্রতিস্থাপিত করার জন্য সোনা ব্যবহার করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শল্যচিকিৎসার ক্ষেত্রে সোনা এক আদর্শ বস্তু হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে যেমন স্টেন্ট স্থাপনে—ছোট ছোট তারের টিউব, যা দেহের ভিতরে ক্ষতিগ্রস্ত শিরা বা ধমনীকে শক্তিশালী করার জন্য স্থাপন করা হয়।
সোনার বিচিত্র ব্যবহার, মূল্য এবং সৌন্দর্যের বিষয় বিবেচনা করে খনিজসন্ধানীরা নিঃসন্দেহে এই আকর্ষণীয় ধাতু খোঁজা অব্যাহত রাখবে।
[পাদটীকা]
^ সোনার ঘনত্ব এত বেশি যে, প্রতি পার্শ্বে মাত্র ৩৭ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটা ঘনক্ষেত্রাকৃতি সোনার খণ্ডের ওজন প্রায় এক টন হবে।
[২৫ পৃষ্ঠার বাক্স]
সোনা কোথায় পাওয়া যায়?
◼ শিলাখণ্ড: সমস্ত প্রকার আগ্নেয় শিলায় সামান্য পরিমাণে সোনা থাকে। পৃথিবীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকার শিলায় এত পরিমাণে ঘনীভূত সোনা রয়েছে যে বিভিন্ন কোম্পানি আকরিক থেকে ধাতু উত্তোলন, চূর্ণ ও রাসায়নিকভাবে নিষ্কাশন করতে পারে। প্রতি টন শিলার উচ্চ মানসম্পন্ন আকরিকে প্রায় ৩০ গ্রাম করে সোনা থাকে।
◼ ধাতুশিরা: বিরল ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে, খনিজ দ্রব্যগুলোর বিভিন্ন স্তরের মধ্যে লেগে থাকা পাত বা শিরায় সোনা পাওয়া যায়।
◼ নদী: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সোনা বহনকারী ধাতুশিরা সূর্য, বৃষ্টি এবং বাতাসের সংস্পর্শে ভেঙে যায়, লেগে থাকা সোনা মুক্ত হয়, যা এরপর খাঁড়ি ও ছোট নদীতে ক্ষুদ্র কণা বা পাতলা টুকরোর আকারে জমা হয়।
◼ ভূপৃষ্ঠ: গুচ্ছাকারে সজ্জিত অদ্ভুত আকারের সোনা পৃথিবীর তলদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। এই গুচ্ছগুলো মাঝে মাঝে প্রকাণ্ড আকারের হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় এযাবৎ প্রাপ্ত সবচেয়ে বড় সোনার পিণ্ডকে দ্যা ওয়েলকাম স্ট্রেনজার বলা হয়েছিল আর এটার ওজন ছিল প্রায় ৭০ কিলোগ্রাম! এটা ১৮৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে আবিষ্কৃত হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া হচ্ছে বড় বড় পিণ্ডাকার সোনার কেন্দ্রস্থল, এযাবৎ আবিষ্কৃত ২৫টা সর্ববৃহৎ পিণ্ডের মধ্যে ২৩টাই সেখানে পাওয়া গিয়েছে। আজকে সোনার পিণ্ডগুলো, যেগুলো দিয়াশলাইয়ের কাঠির মাথার মতো ছোট হতে পারে, সেগুলো রত্নের গুণগত মানসম্পন্ন হিরের চেয়েও বিরল।
[২৭ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]
একটা ধাতু নির্ণয়ক যন্ত্র কীভাবে কাজ করে?
ধাতু নির্ণয়ক যন্ত্রের মূল উপাদান সাধারণত তার দিয়ে তৈরি দুটো কয়েল। একটা কয়েলের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, যা এক চৌম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন করে। ধাতু নির্ণয়ক যদি কোনো ধাতব বস্তু যেমন সোনার পিণ্ডের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে, তা হলে এটা সেই বস্তুর ওপর এক দুর্বল চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। ধাতু নির্ণয়ক যন্ত্রের দ্বিতীয় কয়েলটা এই দুর্বল ক্ষেত্রকে নির্ণয় করে এবং আলো, মাপার যন্ত্র বা আওয়াজের দ্বারা চালককে সংকেত পাঠায়।
[২৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
১৮০০ সালের মাঝামাঝিতে সোনার সন্ধান বৃদ্ধি পায়:
১. সাটারস্ মিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া
২. বেনডিগো ক্রিক, অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া
৩. গোল্ডেন পয়েন্ট, অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের ব্যালেরেট
[সৌজন্যে]
১: Library of Congress; ২: Gold Museum, Ballarat; ৩: La Trobe Picture Collection, State Library of Victoria
[২৬ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
সোনার আধুনিক প্রয়োগ
উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন কমপ্যাক্ট ডিস্কে সোনার এক পাতলা প্রলেপ থাকে
সোনার ফয়েল মহাকাশযানে ব্যবহৃত হয়
মাইক্রোচিপে সোনা ব্যবহৃত হয়
গোল্ড-প্লেটেড তারগুলোর বিদ্যুৎ প্রবাহিত করার এক উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে
[সৌজন্যে]
NASA photo
Carita Stubbe
Courtesy Tanaka Denshi Kogyo
[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
বিশ্বের সবচেয়ে গভীর ওপেনকাট স্বর্ণখনি রয়েছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কালগুরলি-বোল্ডারে
[সৌজন্যে]
Courtesy Newmont Mining Corporation
[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
Brasil Gemas, Ouro Preto, MG