সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ছত্রাক বন্ধু ও শত্রু!

ছত্রাক বন্ধু ও শত্রু!

ছত্রাক বন্ধু ও শত্রু!

সুইডেনের সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক

কিছু ছত্রাক জীবন বাঁচায়; আবার কিছু মৃত্যু ঘটায়। কিছু পনির ও ওয়াইনের স্বাদ বৃদ্ধি করে; আবার কিছু খাদ্যকে বিষাক্ত করে তোলে। কিছু গাছের গুঁড়িতে জন্মায়; আবার কিছু বাথরুম ও বইয়ের পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে পড়ে। সত্যি বলতে কী, ছত্রাক সর্বত্রই রয়েছে—এমনকি এই বাক্যটা পড়ার সময়ও আপনার নাকের মধ্যে দিয়ে রেণু ঢুকে যেতে পারে।

আপনার যদি সন্দেহ থাকে যে, আমাদের চারিদিকে আদৌ ছত্রাক রয়েছে কি না, তা হলে এক স্লাইস পাউরুটি বাইরে রেখে দিন, এমনকি ফ্রিজেও রাখতে পারেন। খুব শীঘ্রই দেখবেন এটার ওপর সাদা তুলতুলে এক স্তর হয়েছে আর সেটাই হচ্ছে ছত্রাক!

ছত্রাক কী?

ছত্রাক রাজ্যে মিলডিউ, মাশরুম, গাছের ছত্রাক এবং ইস্টসহ ১,০০,০০০রেরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। মাত্র ১০০টার মতো ছত্রাক মানুষ ও পশুর মধ্যে রোগের সৃষ্টি করে। অন্য প্রকারের ছত্রাক খাদ্যশৃঙ্খলে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে—মৃত জৈব পদার্থের পচন ঘটায় ও এর মাধ্যমে অপরিহার্য পদার্থগুলোর এমনভাবে পুনরাবর্তন ঘটায়, যাতে গাছপালা সেগুলোকে ব্যবহার করতে পারে। এ ছাড়া, আরও কিছু প্রকারের ছত্রাক উদ্ভিদের সঙ্গে মিথোজীবীয় সম্পর্ক স্থাপন করে, উদ্ভিদকে মাটি থেকে পুষ্টি শুঁষে নিতে সাহায্য করে। আর কিছু কিছু হচ্ছে পরজীবী।

ছত্রাকের জীবন শুরু হয় আনুবীক্ষণিক রেণু হিসেবে, যা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। রেণু যদি এক উপযুক্ত খাদ্যে এসে পড়ে, যেটাতে অন্যান্য বিষয়সহ উপযুক্ত তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার স্তর রয়েছে, তা হলে সেই রেণু সেখানে অঙ্কুরিত হতে পারবে এবং সুতোর মতো কোষ গঠন করবে, যেগুলোকে বলা হয় অণুসূত্র (হাইফা)। অণুসূত্রগুলো যখন শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট হয়ে পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে একত্রে অবস্থান করে, তখন সেই জট পাকানো তুলতুলে বস্তুটাকে মাইসিলিয়াম বলা হয়, যেটা হল ছত্রাকের দৃশ্যমান রূপ। ছত্রাককে দেখতে হয়তো ময়লা বা দাগের মতোও লাগতে পারে, যেমন বাথরুমের টাইলসের মাঝখানে লাগানো সিমেন্টে তা জন্মাতে দেখা যায়।

ছত্রাক খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে থাকে। সাধারণ রুটি ছত্রাক, রাইজোপাস স্টোলোনিফার এর ওপর ছিটে ফোঁটা কালো দাগগুলো হচ্ছে রেণুস্থলী বা স্পোরানজিয়া। কেবল একটা দাগে ৫০,০০০রেরও বেশি রেণু থাকে, যেগুলোর প্রত্যেকটা মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে কোটি কোটি নতুন রেণু উৎপন্ন করতে পারে! আর উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ছত্রাক যেমন বনে গাছের কোনো গুঁড়িতে জন্মায়, তেমনই বইয়ে, বুট জুতোয় বা ওয়ালপেপারে জন্মাতে পারে।

ছত্রাকগুলো কীভাবে “খায়”? পশুপাখি বা মানুষ, প্রথমে খাবার খায় ও পরে তাদের সেই খাবার পরিপাকের মাধ্যমে গ্রহণ করে কিন্তু তাদের বৈসাদৃশ্যে ছত্রাকগুলো প্রায়ই এর উলটো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে থাকে। যখন জৈব অণুগুলো খুবই বড় হয় অথবা ছত্রাকগুলোর পক্ষে সেগুলোকে খাওয়া জটিল হয়ে যায়, তখন তারা ধীরে ধীরে পরিপাকের জারক রস ক্ষরণ করে, যা অণুগুলোকে আরও সরল এককে ভেঙে ফেলে আর এরপর তারা সেগুলোকে শুষে নেয়। এ ছাড়া, যেহেতু ছত্রাকগুলো খাদ্যের খোঁজে ঘুরে বেড়াতে পারে না, তাই তাদেরকে তাদের খাদ্যের মধ্যেই বসবাস করতে হয়।

ছত্রাক মাইকোটক্সিন নামে বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করতে পারে, যেগুলো হয়তো মানুষ ও পশুপাখি উভয়ের মধ্যে প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। শ্বাসপ্রশ্বাস, আহার বা চর্মের স্পর্শে একজন ব্যক্তি ছত্রাকের সংস্পর্শে আসতে পারেন। কিন্তু ছত্রাক যে সবসময় ক্ষতিকর, তা নয় কারণ ছত্রাকের খুবই উপকারজনক কিছু গুণ রয়েছে।

ছত্রাকের বন্ধুসুলভ দিক

১৯২৮ সালে বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ফ্লেমিং হঠাৎ করে সবুজ ছত্রাকের জীবাণুনাশক ক্ষমতা লক্ষ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে পেনেসিলিয়াম নোটেটাম নামে পরিচিত এই ছত্রাক ব্যাকটিরিয়ার জন্য মারাত্মক কিন্তু মানুষ ও পশুপাখির জন্য উপকারজনক বলে প্রমাণিত হয়। এই উদ্ভাবনের ফলে পেনিসিলিন আবিষ্কৃত হয়েছিল, যেটাকে “আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার সবচেয়ে বেশি জীবনরক্ষাকারী একমাত্র বস্তু” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তাদের কাজের জন্য ফ্লেমিং ও তার সহগবেষক হাওয়ার্ড ফ্লোরি এবং আর্নস্ট চেইন, ১৯৪৫ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিল। সেই সময় থেকে বেশ কয়েকটা চিকিৎসাজাতীয় পদার্থ ছত্রাক থেকে পাওয়া গিয়েছে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে রক্ত জমাট-বাঁধার চিকিৎসা, মাইগ্রেনজাতীয় মাথাব্যথার এবং পারকিনসন্স রোগের (নার্ভের রোগবিশেষ) ওষুধ।

এ ছাড়া, ছত্রাক খাদ্যের স্বাদবৃদ্ধিতেও এক আশীর্বাদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, পনিরের কথাই ধরুন। আপনি কি জানেন যে, ব্রি, কেমেমবার, ডেনিশ ব্লু, গরগনজোলা, রোকফোর্ট এবং স্টিলটন এই বিভিন্ন জাতীয় পনির তাদের বিশেষ ধরনের স্বাদ পেনেসিলিয়াম ছত্রাকের নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতি থেকে পেয়েছে? একইভাবে, সালামি, সয়াসস এবং বিয়ার তৈরিতেও নির্দিষ্ট ধরনের ছত্রাক ব্যবহার করা হয়।

ওয়াইনের ক্ষেত্রেও একই বিষয় সত্য। যখন সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট গোত্রের আঙুরের চাষ করা হয় এবং প্রতিটা গুচ্ছে যখন উপযুক্ত পরিমাণ ছত্রাক তৈরি হয়ে থাকে, তখন সেগুলোকে সুস্বাদু মিষ্টি ওয়াইন বানাতে ব্যবহার করা যেতে পারে। বোট্রাইটিস সিনেরিয়া ছত্রাক আঙুরের শর্করাকে ঘনীভূত করে এর স্বাদ বাড়ায়। ওয়াইন তৈরির ভাণ্ডারে, স্বাদ ও গন্ধ বিকশিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকার সময় ক্ল্যাডোসপোরিয়াম সেল্যার ছত্রাক এর স্বাদ আরও বৃদ্ধি বাড়ায়। হাঙ্গারির আঙুর কৃষকদের একটা প্রবাদকে এভাবে শব্দান্তর করা যায়: ‘এক উন্নত ছত্রাক, ভাল ওয়াইন তৈরি করে।’

ছত্রাক যখন শত্রু হয়ে ওঠে

কিছু ছত্রাকের ক্ষতিকর বৈশিষ্ট্যগুলোরও এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সা.কা.পূ. ষষ্ঠ শতাব্দীতে অশূরীয়রা তাদের শত্রুদের কুয়োগুলোকে বিষাক্ত করার জন্য ক্ল্যাভিসেপস্‌ পারপুরিয়া ছত্রাক ব্যবহার করেছিল, যেটা ছিল প্রাচীনকালের জৈব যুদ্ধের এক অস্ত্র। মধ্যযুগে এই একই ছত্রাক, যা মাঝেমধ্যে রাই শস্যের ওপর জন্মে থাকে, তা অনেক লোকের ক্ষেত্রে মৃগীরোগের, জ্বালা করার, ঘায়ে পচন ধরার এবং চিত্তবিভ্রম হওয়ার কারণ হয়েছে। বর্তমানে এই রোগটা আর্গোটিজম নামে পরিচিত, তবে এই রোগটাকে সেন্ট আ্যন্থনিস ফায়ার নাম দেওয়া হয়েছিল কারণ অনেক রোগী অলৌকিকভাবে সুস্থ হওয়ার আশায় ফ্রান্সের সেন্ট আ্যন্থনির সমাধিমন্দিরে তীর্থযাত্রা করেছিল।

পরিচিত, সবচেয়ে শক্তিশালী কারসিনোজেনিক (ক্যান্সার সৃষ্টিকারী) পদার্থের নাম হচ্ছে আ্যফ্ল্যাটক্সিন—যে-বিষাক্ত পদার্থকে ছত্রাক তৈরি করে। এশিয়ার একটা দেশে, আ্যফ্ল্যাটক্সিনের জন্য এক বছরে ২০,০০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই মারাত্মক পদার্থটা আধুনিক জৈব অস্ত্রগুলোতে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।

কিন্তু, রোজকার জীবনে সাধারণ ছত্রাকের সংস্পর্শে আসার লক্ষণগুলো যদিও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকিস্বরূপ নয়, তবে বিরক্তিকর। “অধিকাংশ ছত্রাক, এমনকি যদি আপনি সেগুলোর ঘ্রাণও নেন, তবুও সেগুলো ক্ষতিকর নয়,” ইউসি বার্কলি ওয়েলনেস লেটার বলে। সাধারণত সেই লোকেরাই প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া দেখায়, যাদের ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা যেমন হাঁপানি; এলার্জি, রাসায়নিক পদার্থের স্পর্শকাতরতা অথবা দুর্বল রোগ সংক্রমণ ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে; আর সেই খামারকর্মীরা প্রতিক্রিয়া দেখায়, যাদের হয়তো প্রচুর পরিমাণে ছত্রাকের সংস্পর্শে আসতে হয়। এ ছাড়া, শিশু ও বয়স্করাও হয়তো ছত্রাকের সংস্পর্শে আসার প্রভাবগুলোর প্রতি স্পর্শকাতর হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ অনুযায়ী, ছত্রাক নিম্নলিখিত লক্ষণগুলোর কারণ হতে পারে: ‘শ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা, যেমন সোঁ সোঁ শব্দ করে নিঃশ্বাস নেওয়া, শ্বাসকষ্ট এবং দম বন্ধ হয়ে যাওয়া ভাব; নাক ও সাইনাসের সমস্যা; চোখের যন্ত্রণা (চোখ জ্বালা করা, চোখ দিয়ে জল পড়া ও চোখ লাল হয়ে যাওয়া); শুকনো, খুসখুসে কাশি; নাক বা গলার যন্ত্রণা; চামড়ায় লাল লাল ফুসকুড়ি বা চুলকানি হওয়া।’

ছত্রাক ও ঘরবাড়িগুলো

কিছু কিছু দেশে ছত্রাক পরিষ্কার করার জন্য স্কুল ছুটি দেওয়া অথবা লোকেদের ঘর বা অফিসগুলো খালি করে দেওয়ার বিষয়ে শুনতে পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ২০০২ সালের প্রথম দিকে, সুইডেনের স্টকহোমে সম্প্রতি উদ্বোধিত আধুনিক শিল্পকলার জাদুঘরকে ছত্রাকের জন্য বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। সেই জাদুঘরের ছত্রাক পরিষ্কার করার জন্য খরচ পড়েছিল প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মার্কিন ডলার! সম্প্রতি, এই সমস্যাটা কেন এত বেশি দেখা যাচ্ছে?

এর উত্তরের সঙ্গে দুটো প্রধান কারণ জড়িত: নির্মাণ সামগ্রী ও নকশা। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে সেই জিনিসগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলোতে সহজেই ছত্রাক জন্মায়। একটা উদাহরণ হচ্ছে ড্রাইওয়াল (চুন-সুরকি ছাড়া নির্মিত দেওয়াল) বা জিপসাম বোর্ড, যেটা কাগজের কয়েকটা স্তরকে জিপসাম প্লাস্টারের লেপ লাগিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। ভিতরের কাগজের স্তরগুলোতে স্যাঁতসেঁতে ভাব সৃষ্টি হয়। তাই, এই কাগজগুলো যদি দীর্ঘ সময় ধরে ভেজা থাকে, তা হলে ছত্রাকের রেণুগুলো অঙ্কুরিত ও বৃদ্ধি পেতে পারে আর এগুলো ড্রাইওয়ালের কাগজ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে।

ঘরবাড়িগুলোর কাঠামোগত নকশাও পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭০ এর দশকের আগে, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের ঘরবাড়িগুলোতে তাপমাত্রা ও বায়ুপ্রবাহ ধরে রাখার তেমন একটা ব্যবস্থা ছিল না ও ঘরবাড়িগুলো খোলামেলা ছিল, যেমন পরবর্তী সময়ের ঘরবাড়িগুলোতে ঠিক এর উলটোটা দেখতে পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস করার জন্য ঘরবাড়িগুলোর নকশায় কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল। যেমন, ভিতরের হওয়া যাতে বাইরে না যায় আর বাইরের হাওয়া যাতে ভিতরে না আসে, সেরকম ব্যবস্থা করে এগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। তাই যখন জল ঢোকে, তখন দীর্ঘ সময় ধরে সেগুলো ভিজে থাকার সম্ভাবনা থাকে ও যার ফলে সহজেই ছত্রাক জন্মায়। এই সমস্যার কি কোনো সমাধান আছে?

ছত্রাকের সমস্যা সমাধানের বা অন্ততপক্ষে কমানোর সবচেয়ে কার্যকারী উপায় হচ্ছে, ঘরবাড়িগুলোর ভিতরের সমস্তকিছুকে পরিষ্কার ও শুকনো রাখা এবং আর্দ্রতা কমিয়ে রাখা। যদি কোথাও স্যাঁতসেঁতেভাব দেখাও যায়, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গাটাকে শুকনো করুন এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা মেরামতের ব্যবস্থা করুন, যাতে জল আবার সেখানে জমতে না পারে। উদাহরণস্বরূপ, ছাদ ও নালাগুলোকে পরিষ্কার ও ভাল অবস্থায় রাখুন। আর নিশ্চিত হোন যে, ঘরবাড়িগুলোর সামনের জায়গায় কিছুটা যেন ঢালু থাকে, যাতে জল আশেপাশে জমতে না পারে। আপনার বাড়িতে যদি এয়ারকন্ডিশনার থাকে, তা হলে সেটার জল পড়ার পাত্রগুলো পরিষ্কার রাখুন এবং জল যাওয়ার পাইপগুলোকে ময়লামুক্ত রাখুন।

“আর্দ্রতাকে নিয়ন্ত্রণ রাখাই হচ্ছে ছত্রাক নিয়ন্ত্রণের মূল চাবি,” একটা উৎস বলে। সাধারণ পদক্ষেপগুলো নেওয়া আপনাকে ও আপনার পরিবারকে ছত্রাকের সংস্পর্শে আসার অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা লাভ করা থেকে বাঁচাতে পারে। কিছু কিছু দিক দিয়ে ছত্রাক অনেকটা আগুনের মতো। এটা ক্ষতি করতে পারে কিন্তু সেইসঙ্গে এটা অনেক উপকারও করে। বেশির ভাগই নির্ভর করে আমরা এটাকে কীভাবে ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ করি, তার ওপর। অবশ্য, ছত্রাক সম্বন্ধে আমাদের এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। কিন্তু, ঈশ্বরের বিস্ময়কর সৃষ্টিগুলো সম্বন্ধে জ্ঞানই একমাত্র আমাদের উপকার করতে পারে। (g১/০৬)

[১২, ১৩ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

বাইবেলের সময়ে ছত্রাক

বাইবেলে ‘গৃহে’ অর্থাৎ স্বয়ং দালানের মধ্যেই ‘কুষ্ঠরোগের কলঙ্কের’ বিষয় উল্লেখ করা আছে। (লেবীয় পুস্তক ১৪:৩৪-৪৮) এ ছাড়া, “সংহারক কুষ্ঠ” হিসেবে উল্লেখিত বিষয়টা কোনো ধরনের ছত্রাক ছিল বলে ইঙ্গিত করে কিন্তু এই ছত্রাকের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। যা-ই হোক না কেন, ঈশ্বরের ব্যবস্থা গৃহস্বামীদের নির্দেশনা দিয়েছিল, যাতে তারা সংক্রামিত পাথরগুলোকে উৎপাটন করে, ঘরের ভিতরের চারিদিক ঘষে তুলে ফেলে এবং সন্দেহজনক সমস্ত বিষয় নগরের বাইরে “অশুচি স্থানে” ফেলে দেয়। সেই কলঙ্ক বা রোগ যদি আবার দেখা দিত, তা হলে পুরো ঘরকেই অশুচি বলে ঘোষণা করা হতো, সেই ঘর ভেঙে ফেলা হতো এবং সমস্তই ফেলে দেওয়া হতো। যিহোবার পুঙ্খানুপুঙ্খ নির্দেশনা তাঁর লোকেদের ও তাদের শারীরিক মঙ্গলের প্রতি যিহোবার গভীর প্রেমকে প্রতিফলিত করেছিল।

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]

ছত্রাক থেকে উদ্ভূত ওষুধগুলো অনেকের জীবন বাঁচিয়েছে

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

ড্রাইওয়াল এবং ভাইনিল স্যাঁতসেঁতেভাব সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে সহজেই ছত্রাক জন্মায়