সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রায় অবিনশ্বর ওয়াটার বেয়ার

প্রায় অবিনশ্বর ওয়াটার বেয়ার

প্রায় অবিনশ্বর ওয়াটার বেয়ার

জাপানের সচেতন থাক! লেখক কর্তৃক

◼ সারা পৃথিবীর প্রায় সব ধরনের জলজ আবাসে—শেওলা, বরফ, নদনদী, হট স্প্রিং, হ্রদ, মহাসাগর এবং সম্ভবত আপনার বাড়ির পিছনের উঠানে—খুঁজুন, তা হলে আপনি হয়তো অপ্রত্যাশিতভাবে একটা ওয়াটার বেয়ার পেয়ে যেতে পারেন, যেটা সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীগুলোর মধ্যে একটা। একটা ওয়াটার বেয়ার এত ক্ষুদ্র যে, বলতে গেলে এটা চোখে দেখাই যায় না আর এর সুরক্ষামূলক কিউটিকল (চামড়ার বাইরের স্তর) আবৃত ক্ষুদ্র, চার খণ্ডে খণ্ডিত দেহে আটটা পা রয়েছে, যেগুলোর প্রত্যেকটাতে সমপরিমাণ নখ আছে।

ওয়াটার বেয়ার টার্ডিগ্রেড পর্বভুক্ত প্রাণী, যেটার অর্থ হল “শ্লথগতিসম্পন্ন।” জানা মতে, এর শত শত প্রজাতি রয়েছে এবং একেকটা স্ত্রী ওয়াটার বেয়ার একবারে ১টা থেকে ৩০টা পর্যন্ত ডিম পাড়ে। কেবলমাত্র কয়েক মুঠো ভেজা বালি অথবা মাটিতে হাজার হাজার সংখ্যায় এই ক্ষুদ্র প্রাণী পাওয়া যেতে পারে। বিশেষভাবে ছাদের শেওলা আবৃত জায়গা এগুলো খুঁজে পাওয়ার আদর্শ স্থান।

ওয়াটার বেয়ার সবচেয়ে চরম পরিবেশের মধ্যেও টিকে থাকতে পারে। “পরীক্ষণীয় কিছু প্রাণীকে আট দিনের জন্য একটা বায়ুশূন্য স্থানে রাখা হয়েছিল, এরপর তিন দিনের জন্য ঘরের তাপমাত্রায় হিলিয়াম গ্যাসের মধ্যে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল আর তারপর কয়েক ঘন্টার জন্য -২৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (-৪৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় রেখে দেওয়ার পর যখন আবারও ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন সেগুলো জীবন ফিরে পেয়েছিল,” এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা বলে। এগুলো শত শত গুণ বেশি মাত্রার এক্স-রে বিচ্ছুরণের মধ্যেও টিকে থাকতে পারে, যা একজন মানুষকে মেরে ফেলবে। আর তত্ত্বগতভাবে বলতে গেলে, এগুলো হয়তো এমনকি মহাশূন্যের বায়ুশূন্য স্থানেও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে সক্ষম!

মৃতপ্রায় পর্যায়ে চলে যাওয়ার মতো ক্ষমতাটা হচ্ছে এদের রহস্য, যে-সময়টাতে এদের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক মাত্রার ০.০১ শতাংশের চেয়েও কম ধীরগতিতে হয়—যা আসলে নির্ণয় করার অসাধ্য! এই পর্যায়ে যাওয়ার জন্য এগুলো এদের পাগুলোকে দেহের ভিতরে গুটিয়ে নেয়, এক বিশেষ ধরনের শর্করা দিয়ে হারিয়ে যাওয়া জলের স্থান পূর্ণ করে এবং দেহকে কুঁকড়ে একটা ছোট মোম আবৃত বলের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখে, যেটাকে টুন বলা হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় আর্দ্রতা ফিরে আসলে সেগুলো কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েক ঘন্টার মধ্যে আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। একবার, ১০০ বছরের জন্য নিষ্ক্রিয় পর্যায়ে থাকা কিছু ওয়াটার বেয়ার সফলভাবে জীবন ফিরে পেয়েছিল!

হ্যাঁ, এই ক্ষুদ্র “সরীসৃপ” নিজস্ব নিঃশব্দ অথচ বিস্ময়কর উপায়ে যিহোবার প্রশংসা করে থাকে।—গীতসংহিতা ১৪৮:১০, ১৩. (g ৩/০৭)

[৩০ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

© Diane Nelson/Visuals Unlimited