তালিকা তৈরি করুন ও তা মেনে চলুন
পদক্ষেপ ৫
তালিকা তৈরি করুন ও তা মেনে চলুন
কেন এই পদক্ষেপ নেবেন? বিভিন্ন তালিকা হল প্রাপ্তবয়স্কদের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কাজ, উপাসনা আর এমনকি বিনোদনের ক্ষেত্রেও সাধারণত একটা নির্দিষ্ট তালিকা মেনে চলা হয়। বাবামারা যদি তাদের সন্তানদেরকে তাদের সময় সংগঠিতভাবে ভাগ করে নিতে ও একটা তালিকা ঠিকভাবে মেনে চলতে শিক্ষা না দেয়, তা হলে তারা তাদেরকে অক্ষম করে তোলে। অন্যদিকে, “বিভিন্ন গবেষণা দেখায় যে, নিয়মনীতি ও ব্যবস্থা থাকলে তা একটা সন্তানকে নিরাপদ ও নিশ্চিত বোধ করতে পরিচালিত করে এবং সংযমী ও স্বাবলম্বী হতে শিক্ষা দেয়,” মনোবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ড. লরেন্স স্টাইনবার্গ বলেন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা: জীবন কর্মব্যস্ততায় পূর্ণ। অনেক বাবামা দীর্ঘসময় ধরে কাজ করেন, তাই নিয়মিতভাবে তাদের সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তাদের হাতে হয়তো খুব বেশি সময় থাকে না। তালিকা তৈরি করার ও তা মেনে চলার জন্য আত্মশাসন এবং দৃঢ়সংকল্পের প্রয়োজন, যাতে সেই তালিকা মেনে চলার ব্যাপারে একজন সন্তানের প্রাথমিক বিরোধিতা কাটিয়ে ওঠা যায়।
সমাধান: ‘সকলই শিষ্ট ও সুনিয়মিতরূপে করিবার’ বিষয়ে বাইবেলের পরামর্শের নীতি কাজে লাগান। (১ করিন্থীয় ১৪:৪০) উদাহরণস্বরূপ, সন্তানরা খুব ছোট থাকতেই অনেক বাবামা বিজ্ঞতার সঙ্গে ঘুমাতে যাওয়ার একটা নির্দিষ্ট ও নিয়মিত সময় ঠিক করে দেয়। কিন্তু, ঘুমাতে যাওয়ার সময়কে আনন্দদায়ক করে তোলা উচিত। টাটিয়ানা, যিনি গ্রিসে বাস করেন এবং ছোট দুই মেয়ের মা, তিনি বলেন: “সন্তানরা যখন বিছানায় থাকে, তখন আমি তাদের আদর করি ও বলি যে, তারা যখন স্কুলে ছিল, তখন আমি কী কী করেছি। এরপর আমি তাদের জিজ্ঞেস করি যে, সেই দিনে তারা যা যা করেছে সেগুলোর কিছু আমাকে বলতে চায় কি না। তখন তারা স্বচ্ছন্দ বোধ করে। প্রায়ই তারা আমার কাছে মন খুলে কথা বলে।”
টাটিয়ানার স্বামী কসটাস তাদের মেয়েদের সামনে গল্পের বই পড়েন। “তারা সেই গল্প সম্বন্ধে মন্তব্য করে,” তিনি বলেন, “আর প্রায়ই সেই আলোচনা তাদের ব্যক্তিগত চিন্তার বিষয়গুলোর দিকে পরিচালিত হয়। এটা কখনোই হতো না, যদি আমি শুধু জানতে চাইতাম যে, কোন বিষয়টা তাদেরকে উদ্বিগ্ন করে, তা যেন তারা আমার কাছে বলে।” অবশ্য, সন্তানরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি হয়তো তাদের ঘুমাতে যাওয়ার সময়কে উপযুক্তভাবে রদবদল করতে চাইবেন। কিন্তু, আপনি যদি তালিকা বজায় রাখেন, তা হলে আপনার সন্তানরা সম্ভবত এই সময়টাতে সবসময় আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাইবে।
অধিকন্তু, পরিবারগুলো দিনে অন্তত একবার একসঙ্গে খাবার খাওয়াকে বিজ্ঞতার সঙ্গে অভ্যাসে পরিণত করবে। এই অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য খাবারের সময়টা হয়তো একটু নমনীয় হওয়া প্রয়োজন। “মাঝে মাঝে আমি কাজ থেকে একটু দেরি করে বাড়িতে ফিরি,” দুই মেয়ের বাবা চার্লস বলেন। “আমার স্ত্রী হয়তো মেয়েদেরকে কিছু হালকা খাবার দিয়ে থাকে, যাতে তারা অনেক ক্ষুধা নিয়ে বসে না থাকে, তবে সে সবসময় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা পরিবারগতভাবে একত্রে খাবার খেতে পারি। আমরা আমাদের দিনের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা করি, বাইবেলের পদ নিয়ে পুনরালোচনা করি, সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলি এবং একসঙ্গে হাসিখুশি সময় কাটাই। এই তালিকা যে আমার পরিবারের সুখের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা যথেষ্ট জোর দিয়ে বলার ভাষা আমার নেই।”
এই পদক্ষেপ আয়ত্ত করার জন্য, বস্তুগত ধনসম্পদের পিছনে ছোটাকে আপনার পারিবারিক তালিকার ক্ষেত্রে বাধা হতে দেবেন না। ‘যাহা যাহা ভিন্ন প্রকার [“বেশি গুরুত্বপূর্ণ,” NW], তাহা পরীক্ষা করিয়া চিনিতে পারিবার’ বিষয়ে বাইবেলের পরামর্শ কাজে লাগান।—ফিলিপীয় ১:১০.
বাবামারা তাদের সন্তানদের সঙ্গে ভাববিনিময়কে উন্নত করার জন্য আর কী করতে পারে? (g ৮/০৭)
[৭ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
“সকলই শিষ্ট ও সুনিয়মিতরূপে করা হউক।” —১ করিন্থীয় ১৪:৪০