সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি

পর্নোগ্রাফি

পর্নোগ্রাফি

বাইবেল কি পর্নোগ্রাফিকে নিন্দা করে?

“যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে, সে তখনই মনে মনে তাহার সহিত ব্যভিচার করিল।”—মথি ৫:২৮.

যে-কারণে এটা গুরুত্বপূর্ণ

আজকে পর্নোগ্রাফি বা অশ্লীল বিষয়গুলো আগের চেয়ে আরও বেশি জনপ্রিয় ও প্রাপ্তিসাধ্য হয়ে উঠেছে। আপনি যদি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে এবং এক সুখী জীবন যাপন করতে চান, তাহলে আপনার জানা উচিত যে, ঈশ্বর পর্নোগ্রাফি সম্বন্ধে কেমন বোধ করেন।

বাইবেল যা বলে

বাইবেল নির্দিষ্টভাবে পর্নোগ্রাফির বিষয়ে কিছু উল্লেখ করে না। তবুও, পর্নোগ্রাফির ব্যবহার বাইবেলের অনেক নীতির সঙ্গে সরাসরি সংঘাত সৃষ্টি করে।

উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল সুনির্দিষ্টভাবে বলে যে, যখন একজন বিবাহিত পুরুষ এমন “কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে” বা করেই চলেন, যিনি তার বিবাহিত স্ত্রী নন এবং তার সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের আকাঙ্ক্ষা করেন, তখন তা পারদারিকতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। বাইবেলের এই পদের নীতিটি বিবাহিত অথবা অবিবাহিত এমন সকলের প্রতি প্রযোজ্য, যিনি যৌন অনৈতিকতায় জড়িত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পর্নোগ্রাফির প্রতি “দৃষ্টিপাত করে” বা করেই চলেন। এই ধরনের আচরণকে ঈশ্বর ঘৃণা করেন।

পর্নোগ্রাফি কি তখনও খারাপ যখন তা যৌন অনৈতিক কাজের দিকে নিয়ে যায় না?

“অতএব তোমরা . . . আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর, যথা, বেশ্যাগমন, অশুচিতা, মোহ, কু-অভিলাষ, এবং লোভ।”—কলসীয় ৩:৫.

লোকেরা যা বলে

পর্নোগ্রাফি দেখা এবং বাস্তবে আপত্তিকর যৌন আচরণমূলক কাজে লিপ্ত হওয়ার মধ্যে আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে কিছু কিছু গবেষক সন্দেহ প্রকাশ করে। তা সত্ত্বেও, পর্নোগ্রাফির ব্যবহার করা কি অন্যায়?

বাইবেল যা বলে

বাইবেল ‘শ্লেষোক্তিকে, [‘নোংরা রসিকতাকে,’ ইজি-টু-রিড ভারসন]’ নিন্দনীয় বা অনৈতিক হিসেবে ব্যাখ্যা করে। (ইফিষীয় ৫:৩, ৪) তাহলে পর্নোগ্রাফি এর চেয়ে কোন অংশে কম আপত্তিকর হতে পারে? আজকে বলতে গেলে পর্নোগ্রাফির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে পারদারিকতা, সমকামিতা এবং অন্যান্য ধরনের ব্যভিচারের বাস্তব কাজের ভিডিও রেকর্ডিং। তাই নিশ্চিতভাবেই, কামুক দৃষ্টিতে এই ধরনের যৌন অনৈতিক কাজগুলো দেখা, ঈশ্বরের কাছে নোংরা কথাবার্তার চেয়েও বেশি ঘৃণ্য।

পর্নোগ্রাফির দ্বারা উদ্দীপিত হয়ে, সেই কল্পনা অনুযায়ী কাজ করে ফেলার প্রবণতা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েই গিয়েছে। কিন্তু বাইবেল স্পষ্টভাবে এই ধারণাকে সমর্থন করে যে, পর্নোগ্রাফির ব্যবহার আধ্যাত্মিকভাবে ধ্বংসাত্মক এবং ঈশ্বরের কাছে খুবই ঘৃণ্য বিষয়। বাইবেল আমাদের এই পরামর্শ দেয়: “অতএব তোমরা . . . আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর, যথা, বেশ্যাগমন, অশুচিতা [এবং] মোহ।” (কলসীয় ৩:৫) যারা পর্নোগ্রাফির ব্যবহার করে তারা এটার ঠিক বিপরীতটাই করে, এই ধরনের আকাঙ্ক্ষাগুলো মৃত্যুসাৎ করার পরিবর্তে তারা সেগুলো পুষে রাখে এবং জাগিয়ে তোলে।

কী আপনাকে পর্নোগ্রাফির ব্যবহার এড়িয়ে চলতে সাহায্য করতে পারে?

“উত্তমের চেষ্টা কর, মন্দের নয়, . . . মন্দকে ঘৃণা কর ও উত্তমকে ভালবাস।” —আমোষ ৫:১৪, ১৫.

বাইবেল যা বলে

বাইবেল এমন লোকেদের সম্বন্ধে বলে যারা বাছবিচারহীন ভাবে যৌনসম্পর্ক করত, মাতাল ছিল এবং চুরি করত কিন্তু পরে তারা তাদের এইরকম ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে পেরেছে। (১ করিন্থীয় ৬:৯-১১) কীভাবে? ঈশ্বরের বাক্য থেকে তারা যে-প্রজ্ঞা খুঁজে পেয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে তারা যা মন্দ তা ঘৃণা করতে শিখেছে।

এই ক্ষতিকর অভ্যাসের ভয়ানক পরিণতি সম্বন্ধে গভীরভাবে চিন্তা করার দ্বারা পর্নোগ্রাফির প্রতি ঘৃণা গড়ে তোলা সম্ভব। উটাহ্‌ স্টেট ইউনিভার্সিটি-র দ্বারা প্রকাশিত একটা সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলে, যারা পর্নোগ্রাফি ব্যবহার করে, তাদের মধ্যে কিছু জন “হতাশায় ভোগে, অন্যদের থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখে, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারে না” এবং অন্যান্য খারাপ পরিণতি ভোগ করে। সবচেয়ে বড়ো কথা হল, যেমনটা আগে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যেহেতু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে পর্নোগ্রাফির ব্যবহার ঘৃণ্য বিষয়, তাই এটা আরও বেশি ক্ষতি করে থাকে। এটা মানুষকে তাদের সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।

বাইবেল আমাদেরকে যা ভালো তা ভালোবাসতে শিখতে সাহায্য করতে পারে। আমরা যত বেশি বাইবেল পড়ব, তত বেশি এর নৈতিক মানগুলোর প্রতি আমাদের ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। সেই ভালোবাসা আমাদের পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে এবং গীতরচকের মতো উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে, যিনি লিখেছিলেন: “আমি কোন জঘন্য পদার্থ চক্ষের সম্মুখে রাখিব না।”—গীতসংহিতা ১০১:৩. (g১৩-E ০৩)