সাবধানবাণীতে কান দিন!
সাবধানবাণীতে কান দিন!
গুম্গুম্! এমন বিকট শব্দ করেই ১৯৯১ সালের ৩রা জুন, জাপানের ফুগেন পর্বতের আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণ ঘটে আর তার থেকে ধোঁয়া ও ছাই বের হতে থাকে। এরপর জ্বলন্ত লাভা নিচের দিকে নামতে থাকে। এই অগ্ন্যুৎপাতে ৪৩ জন ব্যক্তি মারা যায়। অনেকে কোনরকমে প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদের শরীর আগুনে ঝলসে যায়। কেউ কেউ “একটু জল, একটু জল” বলে কাতরাতে থাকে। তাদেরকে সাহায্য করার জন্য দমকল কর্মী এবং পুলিশেরা ছুটে যান।
এই দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে ফুগেন পর্বতের চূড়ায় যখন লাভার গম্বুজ দেখা গিয়েছিল তখনই কর্তৃপক্ষ এবং এলাকার লোকেরা বিপদ সম্বন্ধে বুঝতে পেরেছিল। তাই দুর্ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ আগেই ওই এলাকা থেকে লোকেদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। পুলিশ, অগ্ন্যুৎপাতের ঠিক আগের দিন সাংবাদিকদের সেই এলাকায় যেতে মানা করেছিলেন। কিন্তু তারপরও, সেই ভয়াবহ দুপুরে ৪৩ জন লোক বিপদজনক এলাকায় গিয়েছিল ও মারা পড়েছিল।
কিন্তু, কেন এই লোকেরা ওই বিপদজনক এলাকায় গিয়েছিল অথবা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে থেকেছিল? কয়েকজন কৃষক যারা তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিল, তারা তাদের জিনিসপত্র এবং জমিজমা দেখতে গিয়েছিল। তিনজন আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ তাদের কৌতূহল মেটানোর জন্য যতদূর সম্ভব আগ্নেয়গিরির কাছে গিয়েছিলেন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং আলোকচিত্রী অগ্ন্যুৎপাত সম্বন্ধে সবচেয়ে আগে ও নতুন কিছু তথ্য দেওয়ার জন্য সাহস দেখিয়ে বিপদ-সীমা পার হয়েছিলেন। সাংবাদিকেরা যে তিনটে গাড়িতে করে এসেছিলেন তার চালকেরাও সেখানে ছিলেন। পুলিশ এবং দমকল কর্মীর কিছু স্বেচ্ছাসেবকেরাও সেখানে কাজ করছিলেন। ওই বিপদজনক এলাকায় যাওয়ার জন্য প্রত্যেকেরই তাদের নিজস্ব কোন না কোন কারণ ছিল কিন্তু তাদের কেউই এর করুণ পরিণাম থেকে বাঁচতে পারেননি, তারা সবাই মারা গিয়েছিলেন।
আপনিও কি বিপদজনক এলাকায় রয়েছেন?
আমরা সবাই হয়তো জীবন্ত আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বাস করি না। কিন্তু, পুরো পৃথিবীতেই যদি অন্য ধরনের কোন বিপদ ছড়িয়ে থাকে, তাহলে এই অবস্থায় পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষই কি এক বিপদজনক এলাকায় বাস করছে না? ভবিষ্যদ্বাণীতে ভরা একটা নির্ভরযোগ্য বই সারা পৃথিবীতে আসতে চলেছে এমন এক বিপদ সম্বন্ধে আমাদের সাবধান করে আর এই বইয়ের বেশির ভাগ ভবিষ্যদ্বাণীই পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এটা বলে: “সূর্য্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না, আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে ও মথি ২৪:২৯, ৩০) এখানে বলা হয়েছে যে আকাশে ঘটা এই ভয়ংকর ঘটনাগুলো সারা ‘পৃথিবীর সমস্ত গোষ্ঠীকে’ প্রভাবিত করে। অন্য কথায় বলা যায়, ভবিষ্যদ্বাণী করা এই বিপর্যয় আমাদের প্রত্যেকের ওপর প্রভাব ফেলবে।
আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে . . . পৃথিবীর সমুদয় গোষ্ঠী বিলাপ করিবে।” (নির্ভরযোগ্য ভবিষ্যদ্বাণীর এই বই হল বাইবেল। আগ্রহের বিষয় যে, এই ভবিষ্যদ্বাণী যেখানে লেখা আছে তার আশেপাশের পদগুলো দেখে বোঝা যায় যে কীভাবে একের পর এক বিপর্যয় শুরু হবে আর সারা পৃথিবীর ওপর তা কেমন প্রভাব ফেলবে। লাভার গম্বুজ এবং আগ্নেয়গিরির অন্যান্য চিহ্নগুলো দেখে যেমন সিমাবারা শহরের কর্তৃপক্ষ বিপদজনক এলাকাকে চিনতে পেরেছিল, ঠিক তেমনই বাইবেল আমাদের বিপদকে চিনিয়ে দেয় ও সাবধান হতে বলে যাতে নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য আমরা এখনই তৈরি হতে পারি। ফুগেন পর্বতের দুঃখজনক ঘটনা থেকে আমরা একটা বিষয় শিখতে পারি আর সামনে যে বিপদ আসতে চলেছে তা কতটা ভয়াবহ সেটা বুঝতে পারি।
[২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
COVER: Yomiuri/Orion Press/Sipa Press
[৩ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
Yomiuri/Orion Press/Sipa Press