সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

তাইওয়ানের ধানক্ষেতে সুখবর প্রচার করা

তাইওয়ানের ধানক্ষেতে সুখবর প্রচার করা

আমরা বিশ্বাসের লোক

তাইওয়ানের ধানক্ষেতে সুখবর প্রচার করা

 তাইওয়ানে খুব ভাল বৃষ্টি হয় আর তাই চাষীরা বছরে দুবার ধান লাগাতে পারে। কিন্তু কখনও কখনও এমনও হয় যে বৃষ্টি একেবারেই হল না আর ফলে সব বীজ মরে গেল। কিন্তু এমন অবস্থায় কি চাষীরা হাল ছেড়ে দিয়ে বসে? কক্ষনই নয়। কারণ তারা জানে যে এটাই ধৈর্য ধরে ঠাণ্ডামাথায় কাজ করার সময়। তারা আবার নতুন করে বীজ বোনে। এইবার যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে মাঠে যেন সোনা ফলে। কখনও কখনও প্রচার কাজেও এইরকমই ধৈর্য ধরে ঠাণ্ডামাথায় কাজ করতে হয়।

প্রচার কাজে ধৈর্য ধরে ঠাণ্ডামাথায় কাজ করা

যিহোবার সাক্ষিরা বেশ কয়েক বছর ধরে তাইওয়ানের সেইসব জায়গায় সত্যের বীজ বুনছেন ও ফসল কাটছেন যে জায়গাগুলোর জন্য একসময় মনে হতো যেন সেখানে কেউই সত্য শিখবে না। উদাহরণ হিসেবে মিয়ালি জেলার কথাই ধরুন। এখানে সাক্ষিরা কখনও কখনও প্রচার করতেন কিন্তু তেমন কোন সাড়া পাওয়া যেত না। সেইজন্য ১৯৭৩ সালে পুরো সময় প্রচার করেন এমন এক স্বামী-স্ত্রীকে এখানে পাঠানো হয়েছিল। প্রথম দিকে বেশ কিছু লোকেরা একটু উৎসাহ দেখিয়েছিল। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই সেই উৎসাহ নিভে যায়। তাই পুরো সময়ের প্রচারক এই স্বামী-স্ত্রীকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর ১৯৯১ সালে আবার পুরো সময় প্রচার করেন এমন দুজন বোনকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এবারও মনে হয়েছিল যে সত্যের বীজ বাড়ার জন্য এটাও বোধহয় ঠিক সময় নয়। কিছু বছর পরে এই বোনেদের এমন এক জায়গায় পাঠানো হয়েছিল যেখানে সত্য ছড়িয়ে পড়ার বেশি সম্ভাবনা ছিল। এইভাবে কিছু সময়ের জন্য মিয়ালি জেলাকে এমনিই ফেলে রাখা হয়েছিল।

পরের চেষ্টা সফল হয়েছিল

১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঠিক করা হয়েছিল যে তাইওয়ানের সেই জায়গাগুলোকে খুঁজে বের করা দরকার যেখানে কখনও প্রচার করা হয়নি আর যেখানে ফসল বেশ ভাল বাড়বে। এর জন্য কী করা দরকার ছিল? এরজন্য প্রায় ৪০ জন ভাইবোন যারা তিন মাসের জন্য পুরো সময়ের প্রচার কাজ করছিলেন তাদের এমন জায়গায় পাঠানো হয়েছিল যেখানে অনেক লোকেরা বাস করেন আর যেখানে আগে কখনও প্রচার হয়নি।

এর মধ্যে মিয়ালি জেলার দুটো শহর পড়েছিল। সেখানে এখন কেমন ফল পাওয়া যায় তা পরখ করে দেখার জন্য চারজন অবিবাহিত বোনকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। তারা পৌঁছানোর অল্প কিছু সময় পরেই বোনেরা খুব ভাল রিপোর্ট পাঠাতে থাকেন যে তারা অনেক লোকেদের খুঁজে পাচ্ছেন যারা সত্য শিখতে চান। বোনেদের তিনমাস ফুরিয়ে আসার মুখোমুখি সময়ে বেশ অনেক লোকেদেরকে তারা বাইবেল শেখাচ্ছিলেন। এছাড়াও কাছাকাছি মণ্ডলীর প্রাচীনের সাহায্যে সেখানে একটা বুকস্টাডি গ্রুপও শুরু করা হয়।

বোনেদের মধ্যে তিনজন বলেন যে আমরা যাদের মধ্যে সত্যের “বীজ” বুনেছি, আমরা এখনও কিছুসময় ধরে তাদের দেখাশোনা করতে চাই কারণ তারা এখন বেড়ে উঠছে। ফলে দুজন বোনকে বরাবরের জন্যই পুরো সময়ের প্রচারক করে দেওয়া হয়। আর তৃতীয় জন সেখানেই প্রচার করতে থাকেন। এই বোনেদের সাহায্য করার জন্য কাছের একটা মণ্ডলীর প্রাচীন এখানে এসে থাকতে শুরু করেন। এরপর সেখানে যখন প্রথমবার জনভাষণ দেওয়া হয়েছিল ৬০ জনেরও বেশি লোকেরা তা শুনতে এসেছিলেন। আজকাল কাছের একটা মণ্ডলী এই বাড়ন্ত দলটাকে তাদের রবিবারের মিটিং ও বুকস্টাডি করতে সাহায্য করে। এই জায়গায় বোধহয় খুব শীঘ্রিই একটা মণ্ডলী গড়ে উঠবে।

তাইওয়ানের অন্য জায়গাতেও ধৈর্য ধরে ঠাণ্ডামাথায় কাজ করায় ফসল ভাল হয়েছে

এইরকমই অন্য জায়গাতেও ভাল ফসল পাওয়া গেছে। দ্বীপের উত্তরপূর্ব দিকে এল্যান জেলা আছে। সেখানে একটা নতুন বুকস্টাডি গ্রুপ শুরু করা হয়। এখানে পুরো সময়ের প্রচারকরা তিন মাস কাজ করেছিলেন।

একদিন সন্ধ্যেবেলায় একজন বোন ঘরে-ঘরে প্রচার করার সময় একজন যুবকের সঙ্গে কথা বলেন। বোন তাকে একটা হ্যান্ডবিল দেন যাতে মিটিংয়ের সময় লেখা ছিল। সেই যুবক তক্ষুণি বোনকে জিজ্ঞেস করে: “কাল রাতে কি আমি আপনাদের মিটিংয়ে আসতে পারি?” আর আমি কেমন কাপড়জামা পরে আসব?” সেই বোন এইরকম ৮ জন আগ্রহী লোককে বাইবেল শেখাতে শুরু করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই তাড়াতাড়ি বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য আগে রাজ্যের সুখবর প্রচার করার জন্য তৈরি হতে চায়।

এই জেলাতেই এক মহিলা থাকতেন যিনি অনেকদিন ধরে গির্জায় যেতেন কিন্তু তিনি কখনও এমন কাউকে খুঁজে পাননি যার কাছ থেকে তিনি বাইবেল শিখতে পারেন। যখন তিনি বাইবেল স্টাডির কথা শুনতে পেয়েছিলেন তিনি তা করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাকে আগে থেকেই পড়ে স্টাডির জন্য তৈরি হয়ে থাকতে বলা হয়েছিল। তার সঙ্গে স্টাডি করার জন্য যখন বোন আসেন তিনি দেখেন যে এই মহিলা আগে থেকেই পড়ে, একটা খাতা কিনে তাতে বইয়ের সব প্রশ্নগুলো লিখে তৈরি হয়ে বসে আছেন। শুধু তাই নয় সেই মহিলা সব প্রশ্নের উত্তরগুলো লিখেছিলেন। আর বইয়ে দেওয়া সব পদগুলোও তিনি তার খাতায় লিখেছিলেন। প্রথমদিন স্টাডিতে গিয়েই বোন দেখেন যে এই মহিলা বইয়ের তিনটে অধ্যায় এইভাবে তৈরি করে রেখেছেন!

মধ্য তাইওয়ানের ডংগশি শহরেও এমনই কিছু ঘটেছিল। এইখানে বোনেরা তিন মাস প্রচার করেছিলেন আর ২০০০ ব্রোশার লোকেদের দিয়েছিলেন। তিন মাসের শেষের দিকে তারা প্রায় ১৬ জনের সঙ্গে বাইবেল স্টাডি করছিলেন। ১৯৯৯ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর মধ্য তাইওয়ানে ভূমিকম্প হওয়ায় এই শহরে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু তবুও কিছু লোকেরা সত্য শিখে চলে ও উন্নতি করতে থাকে। যদিও তাদের সবচেয়ে কাছের কিংডম হলে মিটিংয়ে যেতেও ১ ঘন্টা লেগে যেত। হ্যাঁ, ভাল ফসল পেতে হলে ধৈর্য ধরে ঠাণ্ডামাথায় কাজ করার দরকার আছে তা সে সত্যিকারের ফসল হোক বা প্রচার কাজে পাওয়া ফসল হোক।

[৮ পৃষ্ঠার মানচিত্র]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

চিন

তাইওয়ানের সামুদ্রিক এলাকা

তাইওয়ান

[সৌজন্যে]

Mountain High Maps® Copyright © ১৯৯৭ Digital Wisdom, Inc.