সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মৃতেরা অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে—এই আশা আমাদের শক্তি দেয়

মৃতেরা অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে—এই আশা আমাদের শক্তি দেয়

মৃতেরা অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে—এই আশা আমাদের শক্তি দেয়

“আমি সেগুলোকে আবর্জনা বলে মনে করি। . . . আমি খ্রীষ্টকে জানতে চাই এবং যে শক্তির দ্বারা তাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করা হয়েছিল সেই শক্তিকে জানতে চাই।”—ফিলিপীয় ৩:৮-১০, প্রে.বা.

১, ২. (ক) একজন পাদ্রি ঈশ্বর মৃত লোকেদের যে আবার বাঁচিয়ে তুলবেন এই ব্যাপারটাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিলেন? (খ) কিন্তু ঈশ্বর কীভাবে তা করবেন?

 আঠেরোশো নব্বইয়ের প্রথমদিকে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক ব্রুকলিনের একজন পাদ্রি ঈশ্বর মৃত লোকেদের কীভাবে আবার বাঁচিয়ে তুলবেন তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। তার মতে, মরা লোকেদের হাত, পা, আঙুল, হাড়, শিরা-উপশিরা, চামড়া সবকিছু এসে আবার ঠিক ঠিক জায়গায় লেগে যাবে। লোকেরা যেভাবেই মারা যাক না কেন সেটা কোন ব্যাপার নয়। তাদের শরীর পুড়িয়েই দেওয়া হোক, তারা দুর্ঘনটাতেই মারা যাক, তাদেরকে কোন জানোয়ারেই খেয়ে ফেলুক বা তারা মাটিতে মিশে সার হয়ে যাক। সব লোকেরা আবার তাদের নিজেদের দেহ ফিরে পাবে। তারপর স্বর্গ ও নরক থেকে আত্মারা আসবে আর দেহগুলোতে ঢুকে পড়বে।

যাই হোক না কেন এই ব্যাখ্যা একেবারেই অবাস্তব। আর এর একটা কারণ হল সারা পৃথিবীর মালিক যিহোবা ঈশ্বর যাঁর শক্তির কোন সীমা নেই তাঁর লোকেদের পুরনো দেহগুলোকে আবার জোড়া লাগানোর দরকার হবে না। তিনি যে লোকেদের বাঁচিয়ে তুলবেন তাদের নতুন দেহ দেবেন। তিনি তার পুত্র যীশু খ্রীষ্টকে মৃতদের আবার বাঁচিয়ে তোলার শক্তি দিয়েছেন। (যোহন ৫:২৬) সেইজন্য যীশু খ্রীষ্ট বলেছিলেন: “আমিই পুনরুত্থান ও জীবন; যে আমাতে বিশ্বাস করে, সে মরিলেও জীবিত থাকিবে; আর যে কেহ জীবিত আছে, এবং আমাতে বিশ্বাস করে, সে কখনও মরিবে না।” (যোহন ১১:২৫, ২৬) যীশুর এই প্রতিজ্ঞা আমাদের আশায় ভরিয়ে দেয়! এই আশা আমাদের যিহোবার সাক্ষিদেরকে তাড়না সহ্য করতে শক্তি দেয়। মৃত্যুর মুখেও আমরা যিহোবা ঈশ্বরের বাধ্য থাকতে পারি।

৩. প্রেরিত পৌলকে কেন করিন্থ মণ্ডলীর ভাইদের মৃতেরা যে অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে এ বিষয়ে জোরালো যুক্ত দিতে হয়েছিল?

দ্বিতীয় কারণ হল মানুষের মধ্যে আত্মা বলে কিছু নেই যা মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকে। (উপদেশক ৯:৫, ১০; যিহিষ্কেল ১৮:৪) এই শিক্ষা গ্রিক দর্শন থেকে এসেছে। প্লেটো লোকেদের এই শিক্ষা দিয়েছিলেন। আর অনেক গ্রিকেরা এতে বিশ্বাস করেছিল। তাই যখন প্রেরিত পৌল এথেন্সের আরিওপাগে গ্রিক লোকেদের সামনে বলেছিলেন যে যীশু খ্রীষ্ট মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেছিলেন, তখন কী হয়েছিল? বাইবেল বলে: “মৃতদের আবার জীবিত হয়ে উঠার কথা শুনে লোকেদের মধ্যে কয়েকজন মুখ বাঁকাল।” (প্রেরিত ১৭:২৯-৩৪ প্রে.বা.) যীশু বেঁচে ওঠার পর অনেক শিষ্যেরা তাঁকে নিজের চোখে দেখেছিলেন আর পৌল যখন প্রচার করছিলেন সেই সময়ে তাদের অনেকেই বেঁচে ছিলেন। যদিও তাদেরকেও ঠাট্টা করা হচ্ছিল কিন্তু তবুও তারা সাহসের সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়ে চলেছিলেন। গ্রিসের করিন্থ মণ্ডলীতে কিছু মিথ্যা শিক্ষকেরা লোকেদের বলছিল যে মৃতেরা কখনো বেঁচে উঠতে পারে না। তাই প্রেরিত পৌল করিন্থ মণ্ডলীর ভাইদের ধারণা শুধরে দেওয়ার জন্য ১ম করিন্থীয় ১৫ অধ্যায়ে খুব জোরালো যুক্তি দেখিয়েছিলেন। এই যুক্তিগুলোকে মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলে আমরা দেখব যে মৃতেরা অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে আর এই আশা আমাদের শক্তি দেবে।

যীশু আবার বেঁচে উঠেছিলেন—তার পাকা প্রমাণ

৪. যীশুকে যারা চাক্ষুস দেখেছিলেন এমন কাদের কথা পৌল বলেছিলেন?

এই চিঠিতে করিন্থের ভাইদেরকে প্রেরিত পৌল প্রথমেই কি লিখেছিলেন তা দেখুন। (১ করিন্থীয় ১৫:১-১১) যদি করিন্থের ভাইরা তাদের বিশ্বাসকে মিথ্যে হয়ে যেতে না দিতে চায়, তাহলে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার সুসমাচারকে সবসময় মনে রাখা দরকার। খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরেছিলেন। তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল আর তিনি আবার বেঁচে উঠেছিলেন। তাঁকে অনেকে চাক্ষুস দেখেছিলেন। তিনি কৈফাকে (পিতর) দেখা দিয়েছিলেন। “পরে সেই বারোজনকে।” (যোহন ২০:১৯-২৩) এরপর তাঁর আরও ৫০০ জন শিষ্য তাঁকে দেখেছিলেন আর বোধহয় সেই সময়েই যীশু শিষ্যদের আজ্ঞা দিয়েছিলেন যে “তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর।” (মথি ২৮:১৯, ২০) যীশুর ভাই যাকোবও তাঁকে দেখেছিলেন। তিনি আবারও তাঁর এগারো জন বিশ্বস্ত প্রেরিতের কাছে দেখা দিয়েছিলেন। (প্রেরিত ১:৬-১১) এরপর দম্মেশকের কাছে যীশু শৌলকে দেখা দিয়েছিলেন যে বিষয়ে পৌল লিখেছিলেন “সকলের শেষে অকালজাতের ন্যায় যে আমি, আমাকেও দেখা দিলেন।” এর মানে কী? ঠিক যেমন একজন অপুষ্ট শিশু সময়ের আগেই জন্ম নেয় তেমনি পৌল স্বর্গে যাওয়ার আগেই স্বর্গে যীশুকে দেখেছিলেন। (প্রেরিত ৯:১-৯) তাই পৌল যখন করিন্থীয়দের কাছে প্রচার করেছিলেন তখন তারা সুসমাচার শুনেছিল আর বিশ্বাসী হয়েছিল।

৫. ১ করিন্থীয় ১৫:১২-১৯ পদে পৌল কীভাবে যুক্তি দেখিয়েছেন?

করিন্থীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় পৌল কীভাবে যুক্তি দেখিয়েছিলেন এখন তা দেখুন। (১ করিন্থীয় ১৫:১২-১৯) যারা নিজের চোখে যীশুকে বেঁচে উঠতে দেখেছিলেন তারাই যখন সাক্ষি দিচ্ছেন তখন কী করে বলা যেতে পারে যে মৃতেরা বেঁচে উঠবে না? যীশু যদি বেঁচে না উঠতেন, তাহলে আমাদের বিশ্বাস মিথ্যে আর আমাদের প্রচারের কোন মূল্যই থাকত না। আর আমরা সবাই মিথ্যেবাদী হয়ে যেতাম কারণ আমরা ঈশ্বরের নামে মিথ্যে কথা রটাচ্ছি যে তিনি যীশু খ্রীষ্টকে বাঁচিয়ে তুলেছেন। আর খ্রীষ্ট যদি না বেঁচে ওঠেন, তাহলে ‘এখনও আমরা আপন আপন পাপে রহিয়াছ।’ খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তারা বিনষ্ট হয়ে গেছেন। এছাড়াও “শুধু এই জীবনে যদি আমরা খ্রীষ্টে প্রত্যাশা করিয়া থাকি, তবে আমরা সকল মনুষ্যের মধ্যে অধিক দুর্ভাগা।”

৬. (ক) যীশুর আবার বেঁচে ওঠার কথা যে মিথ্যে হতেই পারে না তা পৌল কীভাবে বলেছিলেন? (খ) “শেষ শত্রু” কী আর কীভাবে তা শেষ করে দেওয়া হবে?

প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, যীশু যে আবার বেঁচে উঠেছিলেন একথা মিথ্যে হতেই পারে না। (১ করিন্থীয় ১৫:২০-২৮) আর যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে খ্রীষ্ট যদি “নিদ্রাগতদের অগ্রিমাংশ” হন, তাহলে অন্য শিষ্যেরাও আবার বেঁচে উঠবেন। যেমন একজন মানুষ আদম পাপ করায় সবাই মারা যায় তেমনি একজন মানুষ যীশু খ্রীষ্ট আবার বেঁচে ওঠায় সকলে আবার বেঁচে উঠবে। খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাস রাখেন এমন সকলে তাঁর রাজ্যে আবার বেঁচে উঠবেন। এরপর খ্রীষ্ট যারা যিহোবার শাসন করার অধিকারকে মেনে নেয় না তাদের ‘সমস্ত আধিপত্য এবং সমস্ত কর্ত্তৃত্ব ও পরাক্রমকে’ ধ্বংস করবেন। আর ততদিন পর্যন্ত রাজত্ব করবেন যতদিন না যিহোবা তাঁর শত্রুদের তাঁর পায়ের তলায় রাখেন। এরপর “শেষ শত্রু” মৃত্যুকে যা আমরা আদম থেকে পেয়েছি যীশুর বলিদানের কারণে শেষ করে দেওয়া হবে। এরপর খ্রীষ্ট তাঁর পিতাকে রাজ্য দিয়ে দেবেন। আর “সকলই তাঁহার বশীভূত করা হইলে পর পুত্ত্র আপনিও তাঁহার বশীভূত হইবেন, যিনি সকলই তাঁহার বশে রাখিয়াছিলেন; যেন ঈশ্বরই সর্ব্বেসর্ব্বা হন।”

মৃতদের জন্য বাপ্তিস্ম?

৭. কারা “মৃতদের নিমিত্ত বাপ্তাইজিত হয়” আর এর মানে কী?

যারা মানেন না যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে তাদেরকে পৌল জিজ্ঞাসা করেন: “মৃতদের নিমিত্ত যাহারা বাপ্তাইজিত হয়, তাহারা কি করিবে? ” (১ করিন্থীয় ১৫:২৯) একথা বলে পৌল বোঝাতে চাননি যে যারা বেঁচে আছেন তাদের মৃতদের জন্য বাপ্তিস্ম নিতে হবে। কারণ যিনি বাপ্তিস্ম নিতে চান তাকে বাইবেল শিখতে হবে, খ্রীষ্টের শিক্ষায় বিশ্বাস করতে হবে আর মৃতেরা তা করতে পারে না। (মথি ২৮:১৯, ২০; প্রেরিত ২:৪১) কিন্তু অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরা ‘মৃতদের নিমিত্ত বাপ্তাইজিত হন।’ আর এর মানে হল যে তারা মারা যাওয়ার জন্য বাপ্তিস্ম নেন। এইরকম বাপ্তিস্ম তখন শুরু হয় যখন যিহোবার আত্মা তাদের মধ্যে স্বর্গে যাওয়ার আশা জাগায় আর তখন শেষ হয় যখন মারা যাওয়ার পর তারা আত্মিক প্রাণী হয়ে স্বর্গে চলে যান।—রোমীয় ৬:৩-৫; ৮:১৬, ১৭; ১ করিন্থীয় ৬:১৪.

৮. শয়তানের আনা কোন তাড়না সহ্য করতে করতে যদি আমারা মারাও যাই, তবুও আমরা কী জানি?

এরপর পৌল বলেন যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এই আশা আমাদের, খ্রীষ্টের শিষ্যদের বিপদের মুখে, মৃত্যুর সামনে রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করে চলতে শক্তি দেয়। (১ করিন্থীয় ১৫:৩০, ৩১) কারণ আমরা জানি যে শয়তানের আনা কোন তাড়না সহ্য করতে করতে যদি আমরা মারাও যাই, যিহোবা আমাদের অবশ্যই আবার বাঁচিয়ে তুলবেন। তাদের বেঁচে থাকার অধিকারকে কেউ কখনও কেড়ে নিতে পারবে না, শুধু যিহোবাই তাদেরকে ধ্বংস করতে পারেন।—লূক ১২:৫.

সাবধান হওয়া দরকার

৯. আমরা যদি চাই যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এই আশা আমাদেরও তাড়নার সময় শক্তি দিক, তাহলে আমাদের কী করা উচিত?

মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এই আশা পৌলকে তাড়নার সময় শক্তি দিয়েছিল। তিনি যখন ইফিষে ছিলেন তখন বন্য জন্তুদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য তার শত্রুরা তাকে বোধহয় এরিনায় ফেলে দিয়েছিল। (১ করিন্থীয় ১৫:৩২) কিন্তু ঈশ্বর তাকে রক্ষা করেছিলেন ঠিক যেমন দানিয়েল ভাববাদীকেও সিংহের মুখ থেকে রক্ষা করা হয়েছিল। (দানিয়েল ৬:১৬-২২; ইব্রীয় ১১:৩২, ৩৩) যেহেতু পৌল বিশ্বাস করতেন যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে, তাই তিনি যিশাইয়ের সময়ের অবিশ্বাসী যিহুদিদের মতো ভাবেননি। অবিশ্বাসী যিহুদিরা মনে করত: “‘আইস, আমরা ভোজন-পান করি, কেননা কল্য-মরিব।’” (যিশাইয় ২২:১৩) তাই আমরা যদি চাই যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এই আশা আমাদেরও তাড়নার সময় শক্তি দিক, তাহলে আমাদের এইরকম ভাবা উচিত নয়। এমনকি যারা এইরকম ভাবে তাদের থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিত। পৌল আমাদের সাবধান করেছিলেন: “ভ্রান্ত হইও না, কুসংসর্গ শিষ্টাচার নষ্ট করে।” (১ করিন্থীয় ১৫:৩৩) পৌলের এই কথা আমাদের জীবনের অনেক জায়গায় খাটে।

১০. মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এ কথায় আমাদের বিশ্বাস আমরা কীভাবে জীবন্ত রাখব?

১০ মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে একথায় যারা সন্দেহ করে তাদেরকে পৌল বলেছিলেন: “ধার্ম্মিক হইবার জন্য চেতন হও, পাপ করিও না, কেননা কাহারও কাহারও ঈশ্বর-জ্ঞান নাই; আমি তোমাদের লজ্জার নিমিত্ত এই কথা কহিতেছি।” (১ করিন্থীয় ১৫:৩৪) এই ‘শেষকালে’ আমাদের ঈশ্বর ও যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে যথার্থ জ্ঞান নেওয়া দরকার আর সেই মতো কাজ করা দরকার। (দানিয়েল ১২:৪; যোহন ১৭:৩) আর তাহলেই মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এ কথায় আমাদের বিশ্বাস জীবন্ত থাকবে।

আবার বেঁচে ওঠা—কোন্‌ দেহে?

১১. যাদের স্বর্গে যাওয়ার আশা আছে সেই অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের আবার বেঁচে ওঠার বিষয়ে পৌল কী বলেছেন?

১১ এরপর পৌল কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। (১ করিন্থীয় ১৫:৩৫-৪১) মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এ কথায় সন্দেহ দেখিয়ে কেউ হয়তো জিজ্ঞাসা করতে পারেন: “মৃতেরা কি প্রকারে উত্থাপিত হয়? কি প্রকার দেহেই বা আইসে?” এর উত্তর দেওয়ার জন্য পৌল একটা উদাহরণ দেন। যখন বীজ বোনা হয় তখন সেটা মরে যায় আর তারপর অঙ্কুর বেরিয়ে নতুন চারাগাছ জন্মায়। ঠিক তেমনই যাদের স্বর্গে যাওয়ার আশা আছে সেই অভিষিক্ত খ্রীষ্টানরা যখন মারা যান তখন যিহোবা তাদের এক নতুন আত্মিক দেহ দেন, ঠিক যেমন বীজের দেহ চারাগাছের দেহ থেকে আলাদা হয়। যদিও তাদের স্বভাব একইরকম থাকবে কিন্তু তারা যখন বেঁচে উঠবেন তখন তাদের রক্তমাংসের দেহ থাকবে না। তারা এক আত্মিক দেহ নিয়ে বেঁচে উঠবেন আর সেই দেহ নিয়ে তারা স্বর্গে থাকতে পারবেন। কিন্তু যারা পৃথিবীতে বেঁচে উঠবেন তাদের রক্তমাংসের নতুন শরীর দেওয়া হবে।

১২. ‘আকাশের দেহ’ ও ‘জগতের দেহ’ কথাগুলোর মানে কী?

১২ পৌল বলেছিলেন যে মানুষের শরীরের চেয়ে পশুর শরীর আলাদা। এমনকি একটা পশুর দেহ থেকে আরেকটা পশুর দেহ আলাদা। (আদিপুস্তক ১:২০-২৫) ঠিক যেমন সূর্যের উজ্জ্বলতা চাঁদ ও অন্য তারাদের উজ্জ্বলতা থেকে আলাদা তেমনই যারা স্বর্গে থাকেন সেই ‘আকাশের দেহ’ ও রক্তমাংসের ‘জগতের দেহগুলোর’ মহিমা আলাদা। কিন্তু মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠে যারা স্বর্গে যাবেন তাদের মহিমা সবচেয়ে বেশি হবে।

১৩. ১ করিন্থীয় ১৫:৪২-৪৪ পদের কথামতো অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের কীভাবে কবর দেওয়া হবে আর কীভাবে ওঠানো হবে?

১৩ এই পার্থক্য বলার পর পৌল বলেন: “মৃতগণের পূনরুত্থানও তদ্রুপ। ক্ষয়ে বপন করা যায়, অক্ষয়তায় উত্থাপন করা হয়।” (১ করিন্থীয় ১৫:৪২-৪৪) পৌল হয়তো এখানে সব অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের কথা বলছিলেন যে মারা যাওয়ার সময় তারা এমন শরীরে মারা যান যা নষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু নষ্ট হবে না এমন শরীরে অর্থাৎ পাপ থেকে মুক্ত করে তাদের বাঁচিয়ে তোলা হবে। যদিও পৃথিবীতে তাদের কেউ কখনও সম্মান করেনি কিন্তু তবুও তাদের স্বর্গে জীবন পাওয়ার জন্য ওঠানো হবে ও যীশুর সঙ্গে থাকার মহিমা দেওয়া হবে। (প্রেরিত ৫:৪১; কলসীয় ৩:৪) এই অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের ‘প্রাণিক দেহে’ কবর দেওয়া হবে কিন্তু ‘আত্মিক দেহে’ ওঠানো হবে। তাই অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের ঈশ্বর যদি আত্মিক দেহ দেন, তাহলে আমরা পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারি যে তিনি পৃথিবীতে মৃত লোকেদের নতুন শরীর দিয়ে আবার বাঁচিয়ে তুলবেন আর তারা চিরকাল বেঁচে থাকবে।

১৪. আদম আর খ্রীষ্টের মধ্যে পৌল কোন্‌ পার্থক্যের কথা বলেন?

১৪ এরপর পৌল আদমের সঙ্গে যীশু খ্রীষ্টের পার্থক্য দেখান। (১ করিন্থীয় ১৫:৪৫-৪৯) “প্রথম ‘মনুষ্য’ আদম ‘সজীব প্রাণী’ হলেন।” (আদিপুস্তক ২:৭) কিন্তু “শেষ আদম” যীশু “জীবনদায়ক আত্মা হলেন।” তিনি তাঁর জীবন বলি দিয়েছিলেন। আর এর থেকে সবচেয়ে প্রথমে তাঁর অভিষিক্ত শিষ্যেরা লাভবান হন। (মার্ক ১০:৪৫) মানুষ হওয়ায় তারা ‘মৃন্ময়ের তুল্য।’ কিন্তু তারা যখন মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠবেন তখন শেষ আদমের মতো হয়ে যাবেন। এরপর যীশুর বলিদান থেকে অন্য লোকেরাও লাভবান হবেন। যারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করেন তারা এই পৃথিবীতে আবার বেঁচে উঠবেন।—১ যোহন ২:১, ২.

১৫. অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরা কেন রক্তমাংসের দেহ নিয়ে বেঁচে ওঠেন না আর তারা যদি যীশুর উপস্থিতির সময়ে বিশ্বস্ত থেকে মারা যান, তাহলে কী হবে?

১৫ অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরা রক্তমাংসের দেহ নিয়ে বেঁচে ওঠেন না। (১ করিন্থীয় ১৫:৫০-৫৩) কারণ যে দেহ নষ্ট হয়ে যায় এমন রক্তমাংসের দেহ স্বর্গে যেতে পারে না। কিছু অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের মারা যাওয়ার পর অনেকদিন ধরে কবরে থাকতে হবে না। কারণ তারা যদি যীশুর উপস্থিতির সময়ে বিশ্বস্ত থেকে মারা যান, তাহলে “এক মুহূর্তের মধ্যে, চক্ষুর পলকে” তারা আত্মিক দেহ নিয়ে উঠবেন। এইভাবে ১,৪৪,০০০ জন অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের সবাই আত্মিক দেহে বেঁচে উঠে স্বর্গে যাবেন ও খ্রীষ্টের “কণে” হবেন।—প্রকাশিত বাক্য ১৪:১; ১৯:৭-৯; ২১:৯; ১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৭.

মৃত্যুকে জয়!

১৬. পৌল ও অন্য ভাববাদীরা মৃত্যুর বিষয়ে কী বলেন?

১৬ পৌল বলেন যে মৃত্যুকে চিরকালের জন্য জয় করা হবে। (১ করিন্থীয় ১৫:৫৪-৫৭) যখন ‘এই ক্ষয়ণীয় যখন অক্ষয়তা পরিহিত হইবে, এবং এই মর্ত্ত্য যখন অমরতা পরিহিত হইবে’ তখন এই কথাগুলো সত্যি হবে: “‘মৃত্যু জয়ে কবলিত হইল।’ মৃত্যু তোমার জয় কোথায়? মৃত্যু তোমার হুল কোথায়?” (যিশাইয় ২৫:৮; হোশেয় ১৩:১৪) মৃত্যুর হূল হল পাপ আর পাপের শক্তি হল ব্যবস্থা যা বলে যে পাপের বেতন মৃত্যু। কিন্তু যেহেতু যীশু মারা গেছেন ও আবার বেঁচে উঠেছেন তাই পাপী আদমের কাছ থেকে আসা মৃত্যু মানুষের ওপর আর কখনও জয়ী হতে পারবে না।—রোমীয় ৫:১২; ৬:২৩.

১৭. ১ করিন্থীয় ১৫:৫৮ পদের কথাগুলো কীভাবে আজকে খাটে?

১৭ এরপর পৌল বলেন: “অতএব হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃগণ, সুস্থির হও, নিশ্চল হও, প্রভুর কার্য্যে সর্ব্বদা উপচিয়া পড়, কেননা তোমরা জান যে, প্রভুতে তোমাদের পরিশ্রম নিষ্ফল নয়।” (১ করিন্থীয় ১৫:৫৮) প্রেরিত পৌলের এই কথাগুলো আজকে অভিষিক্ত খ্রীষ্টান ও অপর মেষদের জন্য খাটে যারা আজকে যদি এই শেষকালে মারাও যায়। (যোহন ১০:১৬) সুসমাচার প্রচার কাজে তারা আজ যে পরিশ্রম করে তা কখনও নিষ্ফল হবে না কারণ তারা মারা গেলেও আবার বেঁচে উঠবেন। তাই আসুন আমরা যিহোবার সেবায় ব্যস্ত থাকি আর সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করি যেদিন আমরা বলতে পারব: “মৃত্যু, তোমার জয় কোথায়?”

মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে!

১৮. মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এ কথায় পৌলের কতখানি অটল বিশ্বাস ছিল?

১৮ প্রথম করিন্থীয় ১৫ অধ্যায়ে পৌল যে যুক্তি দেখিয়েছেন তার থেকে জানা যায় যে, মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এই আশা পৌলকে অনেকখানি শক্তি দিয়েছিল। মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে এ কথায় তার বিশ্বাস ভীষণ অটল ছিল। তিনি একেবারে নিশ্চিত ছিলেন যে যীশুকে মৃতদের মধ্যে থেকে বাঁচিয়ে তোলা হয়েছে আর অন্যদেরকেও হবে। আপনার বিশ্বাস কি এতটাই অটল? পৌল জগতের ব্যাপারগুলোকে “আবর্জনা” বলে মনে করেছিলেন। তিনি ‘এসব ক্ষতি স্বীকার করেছিলেন’ যাতে তিনি ‘খ্রীষ্টকে জানতে পারেন এবং যে শক্তির দ্বারা তাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করা হয়েছিল সেই শক্তিকে জানতে পারেন।’ প্রেরিত খ্রীষ্টের মতো মারা যেতেও রাজি ছিলেন কারণ তিনি জানতেন যে তিনি আবার বেঁচে উঠবেন। এটা হল “প্রথমবার মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে ওঠা।” যীশুর ১,৪৪,০০০ জন অভিষিক্ত শিষ্য এভাবে বেঁচে উঠবেন। তাদের স্বর্গে আত্মিক জীবনের জন্য বাঁচিয়ে তোলা হবে। আর এটা দেখায় যে “বাকী মৃত লোকেরা” এই পৃথিবীতে বেঁচে উঠবে।—ফিলিপীয় ৩:৮-১১, প্রে.বা.; প্রকাশিত বাক্য ৭:৪; ২০:৫, ৬ প্রে.বা.

১৯, ২০. (ক) বাইবেলে কাদের আবার এই পৃথিবীতে বাঁচানো হবে বলে লেখা আছে? (খ) তাদের মধ্যে আপনি কার সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন?

১৯ অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের মধ্যে যারা জীবনভোর বিশ্বস্ত থেকে মারা গেছেন তারা ইতিমধ্যেই বেঁচে উঠেছেন তাদের কাছে মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠা ইতিমধ্যেই বাস্তব বিষয়। (রোমীয় ৮:১৮; ১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৮; প্রকাশিত বাক্য ২:১০) ‘মহাক্লেশ’ থেকে যারা রক্ষা পাবেন তারা তখন দেখবেন যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠছে কারণ ‘সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল।’ (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৩, ১৪; ২০:১৩) সেই সময় ইয়োব আবার বেঁচে উঠবেন যিনি তার সাত ছেলে ও তিনি মেয়েকে হারিয়েছিলেন। ভেবে দেখুন যে তিনি যখন তার সব ছেলেমেয়েদের জীবন্ত অবস্থায় কাছে পাবেন, তাদের জড়িয়ে ধরবেন তখন তিনি কতই না খুশি হবেন! আর ছেলেমেয়েরা যখন তাদের আরও সাত ভাই ও তিন সুন্দরী বোনেদের দেখবে তারাও খুশিতে উছলে উঠবে!—ইয়োব ১:১, ২, ১৮, ১৯; ৪২:১২-১৫.

২০ যখন অব্রাহাম ও সারা, ইস্‌হাক ও রিবিকা আর আরও অনেক অনেক বিশ্বাসী বীরেরা যাদের মধ্যে ‘ভাববাদীরাও’ রয়েছেন এই পৃথিবীতে আবার বেঁচে উঠবেন তাদের দেখে আমরা কতই না আনন্দ পাব! (লূক ১৩:২৮) এই ভাববাদীদের একজন হলেন দানিয়েল যার কাছে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল যে মশীহ রাজ্যে তাকে আবার বাঁচিয়ে তোলা হবে। প্রায় ২,৫০০ বছর ধরে দানিয়েল কবরে ঘুমিয়ে আছেন। কিন্তু খুব শীঘ্রিই তিনি “সমস্ত পৃথিবীতে অধ্যক্ষ” হিসেবে “দিন-সমূহের শেষে আপন অধিকারে দণ্ডায়মান” হবেন। (দানিয়েল ১২:১৩; গীতসংহিতা ৪৫:১৬) শুধু এই বিশ্বাসের বীরেরাই নয় কিন্তু আমাদের আপনজন, আমাদের বাবা, মা, ছেলে, মেয়ে আর অন্য আত্মীয়স্বজনদের আবার কাছে পাওয়া কতই না আনন্দের হবে যাদেরকে মৃত্যু একদিন কেড়ে নিয়েছিল!

২১. অন্যদের জন্য ভাল কাজ করা কেন খুব জরুরি?

২১ আমাদের কিছু আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবেরা হয়তো বছরের পর বছর ধরে ঈশ্বরের সেবা করে আসছেন আর তারা হয়তো এখন বেশ বয়স্ক। বয়সের জন্য জীবনের অসুবিধাগুলোকে কাটিয়ে ওঠা তাদের জন্য হয়তো খুবই কঠিন। তাই যতখানি পারা যায় তাদের সাহায্য করা আমাদের কতই না উচিত! তাহলে মৃত্যু যখন তাদেরকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবে সেই সময় আমাদের কোন আক্ষেপ থাকবে না যে আমরা তাদের জন্য কিছুই করিনি। (উপদেশক ৯:১১; ১২:১-৭; ১ তীমথিয় ৫:৩, ৮) আমরা জানি যে অন্যদের জন্য ভাল কাজ করা খুব জরুরি। আর যখন আমরা সবাইয়ের জন্য তা করি তা সে তাদের বয়স বা অবস্থা যাই হোক না কেন, যিহোবা কখনও তা ভুলে যান না। তাই প্রেরিত পৌল বলেছিলেন: “এজন্য আইস, আমরা যেমন সুযোগ পাই, তেমনি সকলের প্রতি, বিশেষতঃ যাহারা বিশ্বাস-বাটীর পরিজন, তাহাদের প্রতি সৎকর্ম্ম করি।”—গালাতীয় ৬:১০; ইব্রীয় ৬:১০.

২২. যতদিন পর্যন্ত না আমরা নিজের চোখে মৃত লোকেদের আবার বেঁচে উঠতে দেখছি ততদিন পর্যন্ত আমাদের কী করা উচিত?

২২ যিহোবা “করুণা-সমষ্টির পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর।” (২ করিন্থীয় ১:৩, ৪) তাঁর বাক্য বাইবেল আমাদের সান্ত্বনা দেয় আর তাই আমরাও বাইবেল থেকে অন্যদেরও সান্ত্বনা দিতে পারি কারণ মৃতেরা অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে এই আশা আমাদের শক্তি দেয়। তাই যতদিন পর্যন্ত না আমরা নিজের চোখে মৃত লোকেদের আবার বেঁচে উঠতে দেখছি ততদিন পর্যন্ত আমাদের কী করা উচিত? আসুন আমরা প্রেরিত পৌলের মত ভাবি যিনি বিশ্বাস করতেন যে মৃতেরা আবার বেঁচে উঠবে। আর বিশেষ করে আমরা যীশুর মতো ভাবি যিনি দেখেছিলেন যে তাঁকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য যিহোবার শক্তি আছে। যারা কবরে আছেন তারা খুব শীঘ্রিই যীশুর রব শুনবে ও কবর থেকে বেরিয়ে আসবে। এই আশা আমাদের সান্ত্বনা দিক আর খুশি করুক। আর তার চেয়েও বড় কথা যে আমরা যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞ হই যিনি আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা মৃত্যুকে জয় করেছেন!

আপনি কী উত্তর দেবেন?

• যীশুকে যারা চাক্ষুস দেখেছিলেন এমন কাদের কথা পৌল বলেছিলেন?

• “শেষ শত্রু” কী আর কীভাবে তা শেষ করে দেওয়া হবে?

• অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের কীভাবে কবর দেওয়া হবে আর কীভাবে ওঠানো হবে?

• বাইবেলে যাদেরকে এই পৃথিবীতে আবার বাঁচানো হবে বলে লেখা আছে তাদের মধ্যে আপনি কার সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন?

[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

মৃতেরা যে অবশ্যই আবার বেঁচে উঠবে এ বিষয়ে প্রেরিত পৌল খুব জোরালো যুক্তি দিয়েছিলেন

[২০ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

ইয়োব, তার পরিবার ও আরও অনেককে আবার বেঁচে উঠতে দেখে আমাদের আনন্দের সীমা থাকবে না!