সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পৃথিবী শুধুই কি এক পরীক্ষার জায়গা?

পৃথিবী শুধুই কি এক পরীক্ষার জায়গা?

পৃথিবী শুধুই কি এক পরীক্ষার জায়গা?

 আহ্‌ কী যে শান্তি! পাশ করেছি। দুসপ্তা ধরে পরীক্ষা দেওয়ার পর, একজন ছাত্রী যখন পাশ করে তখন তার এরকমটাই মনে হয়। ওই দুসপ্তা তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আর পরীক্ষায় পাশ করলে পর সে খুব খুশি হয় কারণ এখন সে তার মনের মতো কাজ করতে পারবে।

আজকে, পৃথিবীর বেশির ভাগ লোকই তাদের জীবনকে এই ছাত্রীর মতো দেখে থাকে। তারা মনে করে যে এই পৃথিবী হল সবার পরীক্ষা দেওয়ার জায়গা। যারা এই “পরীক্ষায়” পাশ করবে তারা মারা যাওয়ার পর ভাল কিছু পাবে। অনেকের কাছে এই জীবন মানে শুধুই বেঁচে থাকা। আর এই জীবনেই যদি মানুষ সবচেয়ে ভাল কিছু পাওয়ার আশা করে, তাহলে তা খুবই দুঃখের বিষয় হবে। বাইবেলে একজন ব্যক্তির কথা বলা আছে, যার নাম ইয়োব। যদিও তার ভাল স্বাস্থ্য এবং অনেক টাকাপয়সা ও ধনসম্পদ ছিল কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে মানুষ খুব বেশি দিন বেঁচে থাকে না আর তাই তিনি বলেছিলেন: “মনুষ্য, অবলাজাত সকলে, অল্পায়ু ও উদ্বেগে পরিপূর্ণ।”—ইয়োব ১৪:১.

অনেকে যা মনে করে তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে নিউ ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া বলে: “ঈশ্বর চান যে মানুষেরা স্বর্গে গিয়ে স্বর্গীয় সুখ লাভ করুক। . . . একজন মানুষ তখনই পুরোপুরি সুখী হতে পারবে যখন সে স্বর্গসুখ পাবে।” কিছুদিন আগে, চার্চ অফ ক্রাইস্ট সম্প্রদায় আমেরিকায় একটা সমীক্ষা চালিয়েছিল। ওই সমীক্ষা থেকে জানা যায়, আমেরিকার শতকরা ৮৭ জন লোক বিশ্বাস করে যে মারা যাওয়ার পর তারা স্বর্গে যাবে।

খ্রীষ্টান নন এমন অনেক ব্যক্তিও আশা করেন যে মারা যাওয়ার পর, তারা পৃথিবী থেকে আরও ভাল কোন জায়গায় যাবেন। উদাহরণ হিসেবে মুসলমানদের কথাই ধরুন। তারা বিশ্বাস করে যে মারা যাওয়ার পর তারা বেহেশ্‌তে যাবে। “আমিদা” বা “অমিত আভা,” হল বুদ্ধদেবের একটা নাম। আর চীন ও জাপানে বৌদ্ধদের একটা সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে এই নাম জপলে তারা পূণ্য ভূমিতে বা পশ্চিমা পরমদেশে আবারও জন্ম নেবে ও সেখানে পরম সুখে বাস করতে পারবে।

সারা পৃথিবীতে বাইবেলই সবচেয়ে বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে ও সবচেয়ে বেশি লোকের কাছে আছে। কিন্তু, সেই বাইবেলে কোথাও বলা নেই যে আমরা এই পৃথিবী ছেড়ে আরও ভাল কোন জায়গায় যাব। বরং এটা বলে: “ধার্ম্মিকেরা দেশের অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:২৯) এছাড়াও আমরা বাইবেলে যীশুর এই কথাগুলো পাই, যা অনেকেই জানে: “যাদের স্বভাব নম্র, তারা ধন্য; কারণ পৃথিবী তাদেরই হবে।”—মথি ৫:৫, প্রেমের বাণী।

বেশির ভাগ লোকই মনে করে যে পৃথিবীতে আমরা দুদিনের অতিথি আর মৃত্যু হল স্বর্গে যাওয়ার দরজা। যদি তাই হয়, তাহলে মৃত্যু আমাদের জন্য সত্যিই এক আশীর্বাদ। কিন্তু, সব লোকই কি তা-ই মনে করে, নাকি তারা আরও বেশি দিন বেঁচে থাকার জন্য চেষ্টা করে? বেশির ভাগ সময়ই দেখা গেছে যে লোকেদের যদি স্বাস্থ্য ভাল থাকে, খাওয়া-পরার চিন্তা ও বিপদের ভয় না থাকে, তাহলে তারা মরতে চায় না।

কিন্তু, এই পৃথিবী যেহেতু খারাপ কাজ ও দুঃখকষ্টে ভরা, তাই অনেকে মনে করে যে স্বর্গ হল এমন একটা জায়গা যেখানে প্রকৃত শান্তি ও সুখ পাওয়া যাবে। স্বর্গ কি আসলেই এক পরম সুখের জায়গা যেখানে কোন দুষ্টতা বা ঝগড়া-বিবাদ নেই? আর মৃত্যুর পর মানুষ কি শুধু স্বর্গেই যাবে? বাইবেল এ সম্বন্ধে কী বলে, তা জেনে আপনি সত্যিই অবাক হবেন। এ সম্বন্ধে জানার জন্য পরের প্রবন্ধটাও পড়ুন।