সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মুক্তহস্তে দান করে আনন্দ পাওয়া যায়

মুক্তহস্তে দান করে আনন্দ পাওয়া যায়

মুক্তহস্তে দান করে আনন্দ পাওয়া যায়

 প্রেরিত পৌল একজন প্রেমময় অধ্যক্ষ ছিলেন বলে তিনি সবসময়েই তার বিশ্বাসী ভাইবোনদের মঙ্গল চাইতেন। (২ করিন্থীয় ১১:২৮) সাধারণ কালের ৫০ এর দশকে যিহূদিয়ার খ্রীষ্টানেরা যখন সংকটের মধ্যে ছিল, তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তিনি ভাইদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার ব্যবস্থা করেছিলেন। এই সময়ে তিনি ভাইবোনদেরকে মুক্তহস্তে দান করার কথা শেখানোর সুযোগ পান। পৌল জোর দিয়ে বলেছিলেন যে খুশি মনে দান করলে যিহোবা তা খুবই ভাল চোখে দেখেন। তিনি বলেছিলেন: “প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন হৃদয়ে যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছে, তদনুসারে দান করুক, মনোদুঃখপূর্ব্বক কিম্বা আবশ্যক বলিয়া না দিউক; কেননা ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভাল বাসেন।”—২ করিন্থীয় ৯:৭.

অগাধ দীনতার মধ্যেও মুক্তহস্তে দান

প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানদের অনেকেরই সামাজে কোন বড় পদ ছিল না। পৌল বলেছিলেন যে “পরাক্রমী অনেক নাই।” তারা ছিলেন ‘জগতের দুর্ব্বল বিষয়, জগতের নীচ’ বিষয় যাদের ঈশ্বর বেছে নিয়েছিলেন। (১ করিন্থীয় ১:২৬-২৮) উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, মাকিদনিয়ার খ্রীষ্টানেরা “অগাধ দীনতা” ও ‘ক্লেশের’ মধ্যে ছিলেন। কিন্তু তবুও, মাকিদনিয়ার এই নম্র ভাইবোনেরা পৌলের কাছে মিনতি করেছিলেন যে তারা অর্থ দান দিয়ে ‘পবিত্রগণের পরিচর্য্যার সহভাগী’ হতে চান। আর পরে পৌল জানান যে তারা “সাধ্যের অতিরিক্ত পরিমাণে স্ব-ইচ্ছায় দান করিয়াছিল।”—২ করিন্থীয় ৮:১-৪.

মুক্তহস্তে করা এই দানের বিচার অবশ্য কতখানি দান দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে করা হয় না। বরং, দান করার প্রেরণা, ইচ্ছা ও খুশিই বড় কথা। পৌল বলেছিলেন যে করিন্থের খ্রীষ্টানেরা খুশি মনে দান করেছিল। তিনি বলেছিলেন: “আমি তোমাদের আগ্রহ জানি, এবং তোমাদের পক্ষে সে বিষয়ে মাকিদনীয়দের কাছে এই শ্লাঘা করিয়া থাকি যে, . . . আর তোমাদের উদ্যোগ তাহাদের অধিকাংশ লোককে উৎসাহিত করিয়া তুলিয়াছে।” মুক্তহস্তে দান করার জন্য তারা ‘তাদের হৃদয়ে সঙ্কল্প করেছিলেন।’—২ করিন্থীয় ৯:২, ৭.

‘তাহাদের মনে ইচ্ছা হইল’

প্রেরিত পৌলের হয়তো ১৫শ বছরেরও আগে প্রান্তরে ঘটা সেই ঘটনার কথা মনে ছিল যখন ইস্রায়েলীয়রা মুক্তহস্তে দান করেছিল। সেই সময় ইস্রায়েলের দ্বাদশ বংশ সবেমাত্র মিশরের দাসত্ব থেকে ছাড়া পেয়েছে। তারা এখন সীনয় পর্বতের পাদদেশে আছে আর যিহোবা ঈশ্বর তাদেরকে সমাগম তাম্বু ও সেখানে উপাসনা করার জন্য দরকারি জিনিস বানানোর আদেশ দিয়েছেন। আর এই কাজের জন্য অনেক ধনসম্পত্তির দরকার ছিল তাই যিহোবা তাঁর জাতিকে দান করার কথা বলেন।

ইস্রায়েলীয়রা কীভাবে দান করেছিল? “যাহাদের হৃদয়ে প্রবৃত্তি ও মনে ইচ্ছা হইল, তাহারা সকলে সমাগমতাম্বু নির্ম্মাণের জন্য . . . সদাপ্রভুর উদ্দেশে উপহার আনিল।” (যাত্রাপুস্তক ৩৫:২১) লোকেরা কি খুশি মনে দান করেছিল? অবশ্যই! কারণ এই বিষয়ে মোশিকে জানানো হয়েছিল যে: “সদাপ্রভু যাহা যাহা রচনা করিতে আজ্ঞা করিয়াছিলেন, লোকেরা সেই রচনাকার্য্যের জন্য অতিরিক্ত অধিক বস্তু আনিতেছে।”—যাত্রাপুস্তক ৩৬:৫.

কিন্তু সেই সময়ে ইস্রায়েলীয়দের আর্থিক অবস্থা কেমন ছিল? অল্প কিছুদিন আগে পর্যন্ত তারা মিশরের দাস ছিল, তারা ‘ভার বহনে’ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল তাদের ‘প্রাণ তিক্ত’ হয়ে উঠেছিল ও তাদের জীবন ‘কষ্টে’ ভরা ছিল। (যাত্রাপুস্তক ১:১১, ১৪; ৩:৭; ৫:১০-১৮) তাই বোঝাই যায় যে তাদের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল ছিল না। যদিও মিশর ছেড়ে আসার সময় ইস্রায়েলীয়রা তাদের পশুপাল সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু তা খুব বেশি ছিল না। (যাত্রাপুস্তক ১২:৩২) তাই মিশর ছেড়ে আসার মাত্র কিছু দিন পরেই তারা অভিযোগ করেছিল যে তাদের কাছে মাংস আর রুটি কিছুই নেই।—যাত্রাপুস্তক ১৬:৩.

কিন্তু তাহলে সমাগম তাম্বু বানানোর জন্য ইস্রায়েলীয়রা কোথা থেকে দান দিয়েছিল? তারা তা মিশরীয়দের কাছ থেকে পেয়েছিল, যাদের তারা দাস ছিল। বাইবেল জানায় যে: “ইস্রায়েল-সন্তানেরা . . . মিস্রীয়দের কাছে রৌপ্যালঙ্কার স্বর্ণালঙ্কার ও বস্ত্র চাহিল; . . . তাহারা যাহা চাহিল, মিস্রীয়েরা তাহাদিগকে তাহাই দিল।” ঈশ্বরের বাক্য আরও বলে: “সদাপ্রভু মিস্রীয়দের দৃষ্টিতে তাহাদিগকে অনুগ্রহপাত্র করিলেন, তাই তাহারা যাহা চাহিল, মিস্রীয়েরা তাহাদিগকে তাহাই দিল।” (যাত্রাপুস্তক ১২:৩৫, ৩৬) তাই বলা যায় যে ফরৌণের ইচ্ছায় নয় কিন্তু যিহোবা ঈশ্বরই মিশরীয়দের মনে ইচ্ছা দিয়েছিলেন যাতে তারা ইস্রায়েলীয়দেরকে অনেক ধনসম্পদ দেয়।

একবার ভেবে দেখুন যে সেইসময় ইস্রায়েলীয়দের কেমন লেগেছিল। কত পুরুষ ধরে তারা মিশরের দাসত্ব করেছে ও অসহ্য দুঃখকষ্ট ভোগ করেছে। কিন্তু এখন তারা স্বাধীন আর অনেক ধনসম্পত্তির মালিক। এখন তাদেরকে যখন তাদের ধনসম্পত্তির থেকে কিছু দান দিতে বলা হচ্ছে তখন তাদের কেমন লেগেছিল? তারা হয়তো মনে করতে পারত যে তাদের ধনসম্পত্তি তারা উপার্জন করেছে আর তারা সেগুলোকে নিজেদের কাছে রাখতে চায়। কিন্তু, যিহোবা যখন তাদেরকে তাঁর সত্য উপাসনার জন্য দান করতে বলেছিলেন, তারা তা করেছিল, অনিচ্ছাভরে নয় কিন্তু তারা খুশি মনে দান করেছিল! কারণ তারা এ কথা ভুলে যাইনি যে যিহোবার আশীর্বাদেই তারা আজ এত ধনসম্পত্তির মালিক। তাই তারা মুক্তহস্তে সোনা, রুপো ও পশুধন দান করেছিল। তারা ‘ইচ্ছুক মনে’ তা করেছিল। তাদের ‘হৃদয় তাদেরকে প্রবৃত্তি দিয়েছিল।’ ‘তারা মনের ইচ্ছায়’ দান দিয়েছিল। সত্যিই তা “সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার” ছিল।—যাত্রাপুস্তক ২৫:১-৯; ৩৫:৪-৯, ২০-২৯; ৩৬:৩-৭.

দান করার ইচ্ছা

একজন ব্যক্তি কতখানি দান করছেন সেটা বড় বিষয় নয় আর তা দিয়ে এও বোঝায় না যে তিনি কতখানি উদার। যীশু খ্রীষ্ট একবার লোকেদেরকে মন্দিরের ধনভাণ্ডারে দান দিতে দেখেছিলেন। ধনী লোকেরা অনেক অনেক দান দিয়েছিল কিন্তু এক গরিব বিধবার দান যীশুর মনে ভীষণভাবে ছাপ ফেলেছিল যে ভাণ্ডারে সামান্য দুটো সিকি পয়সা রেখেছিল কারণ সেটাই ছিল তার সর্বস্ব। তাই যীশু বলেছিলেন: “এই দরিদ্রা বিধবা সকলের অপেক্ষা অধিক রাখিল; . . . এ নিজ অনাটন সত্ত্বেও ইহার যাহা কিছু ছিল, সমুদয় জীবনোপায় রাখিল।”—লূক ২১:১-৪; মার্ক ১২:৪১-৪৪.

প্রেরিত পৌল যখন করিন্থের ভাইবোনদেরকে দান করার জন্য বলেছিলেন তখন যীশুর এই কথাগুলো মাথায় রেখেই তিনি তা বলেছিলেন। পৌল বলেছিলেন যে গরিব ভাইবোনদের সাহায্য করার জন্য: “যদি কারও দেবার ইচ্ছা থাকে, তবে তার যা আছে সেই হিসাবেই তার দান ঈশ্বর গ্রহণ করেন; তার যা নেই, তা ঈশ্বর চান না।” (২ করিন্থীয় ৮:১২, প্রেমের বাণী) হ্যাঁ, দান করা অন্যের সঙ্গে রেষারেষি বা অন্যের সঙ্গে তুলনা করার বিষয় নয়। একজন ব্যক্তির যা আছে সে সেই মতো দান করে আর যিহোবা তার দান করার ইচ্ছায় খুশি হন।

কিন্তু দান দিয়ে আসলে আমরা কেউ-ই যিহোবাকে ধনী করি না, কারণ সমস্ত কিছুই তাঁর। বরং দান করা যিহোবার উপাসকদের জন্য একটা বিশেষ সুযোগ যা করে তারা তাঁকে ভালবাসা দেখান। (১ বংশাবলি ২৯:১৪-১৭) তাই লোক দেখানোর জন্য অথবা নিজের স্বার্থে দান করা উচিত নয়। কিন্তু সত্য উপাসনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য খোলা মনে দান করলে ঈশ্বর আমাদের আশীর্বাদ করেন আর তা আমাদের আনন্দও দেয়। (মথি ৬:১-৪) যীশু বলেছিলেন: “গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হইবার বিষয়।” (প্রেরিত ২০:৩৫) তাই আজকে আমরাও আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে যিহোবার সেবা করে আর সত্য উপাসনা ও যাদের সত্যিকরে সাহায্যের দরকার তাদেরকে অর্থ সাহায্য করে আনন্দ পেতে পারি।—১ করিন্থীয় ১৬:১, ২.

আজকে মুক্তহস্তে দান

আজকে যিহোবার সাক্ষিরা সারা পৃথিবীতে প্রচার করে “রাজ্যের সুসমাচার” ছড়িয়ে দিচ্ছেন আর তাতে তারা খুবই আনন্দিত। (মথি ২৪:১৪) বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে, প্রায় ৩,০০০০০০ এরও বেশি লোকেরা নিজেদেরকে যিহোবা ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করেছেন ও বাপ্তিস্ম নিয়েছেন আর প্রায় ৩০,০০০টা নতুন মণ্ডলী গড়ে উঠেছে। হ্যাঁ, আজকে সারা পৃথিবীতে যিহোবার সাক্ষিদের যত মণ্ডলী আছে সেই মণ্ডলীগুলোর তিনভাগের একভাগ গত দশ বছরে তৈরি হয়েছে! আর আমাদের ভাইবোনেদের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই তা হতে পেরেছে যারা তাদের সময় ও শক্তি দিয়ে তাদের প্রতিবেশীদের কাছে গিয়ে যিহোবার বিষয়ে বলেছেন। এছাড়া এই বৃদ্ধির পিছনে মিশনারি ভাইবোনেদেরও অনেক বড় ভূমিকা আছে যারা নিজেদের বাড়িঘর, দেশ ছেড়ে বিদেশে গিয়ে সুসমাচার প্রচার করেন। আর এই বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন সীমা বানানোর দরকার হয়েছে আর সেখানে নতুন সীমা অধ্যক্ষদেরও নিযুক্ত করা দরকার হয়ে উঠেছে। এছাড়া প্রচার ও অধ্যয়নের জন্য আরও বেশি বাইবেলের দরকার আছে। আরও বেশি বইপত্রিকার দরকার। আর একের পর এক শাখা অফিসগুলোকে বাড়ানোর কিংবা অন্য কোন বড় জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দরকার হয়ে পড়ছে। এই সমস্ত কিছুর খরচ যিহোবার লোকেদের স্বেচ্ছায় দেওয়া দানে চলে।

কিংডম হলের দরকার

যিহোবার সাক্ষিরা দিন দিন বেড়ে চলায় আরও কিংডম হলের খুবই দরকার হয়ে পড়েছে। ২০০০ সালের প্রথমদিকে করা এক সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানকার আর্থিক অবস্থা খুব একটা স্বচ্ছল নয়, সেখানে কম করে ১১০০০টা কিংডম হলের দরকার। যেমন আ্যঙ্গোলার কথাই ধরুন। বেশ কিছু বছর ধরে যুদ্ধ হয়ে চলা সত্ত্বেও সেখানে রাজ্যের প্রকাশকেরা বেড়েই চলেছেন। আর বছরে প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি এখানে হচ্ছে। আফ্রিকার এই বড় দেশের ৬৭৫টা মণ্ডলীর বেশির ভাগই খোলা মাঠে তাদের সভা করে। দেশে মাত্র ২২টা কিংডম হল আছে যার মধ্যে মাত্র ১২টার কোনরকম ছাত আছে।

গনতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর অবস্থাও একইরকম। রাজধানী কিনশাসাতে ৩০০টা মণ্ডলীর জন্য মাত্র দশটা কিংডম হল আছে। সারা দেশে, এখনই ১৫০০টা কিংডম হলের খুবই দরকার। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সাক্ষিরা বেড়ে চলায় রাশিয়া ও ইউক্রেনে বেশ কয়েকশ কিংডম হলের দরকার আছে। ল্যাটিন আমেরিকার ব্রাজিলেও একই অবস্থা। সেখানে পাঁচ লক্ষেরও বেশি সাক্ষিরা রয়েছেন ও কিংডম হলের খুবই দরকার।

এই দেশগুলোতে কিংডম হলের দরকার মেটানোর জন্য যিহোবার সাক্ষিরা খুব জোরদারভাবে কিংডম হল বানানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আর এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সারা পৃথিবীতে আমাদের ভাইবোনেরা মুক্তহস্তে দান দেন যাতে সবচেয়ে গরিব মণ্ডলীগুলোও তাদের নিজস্ব কিংডম হল পায় যেখানে তারা যিহোবার উপাসনা করতে পারে।

তাই প্রাচীন ইস্রায়েলে যেমন হয়েছিল, আমাদের দিনেও অনেক কিছু করা যেতে পারে কারণ সত্য খ্রীষ্টানেরা ‘তাদের ধনে সদাপ্রভুকে সম্মান করেন।’ (হিতোপদেশ ৩:৯, ১০) যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠী অন্তর থেকে তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন যারা খুশি মনে দান দিয়ে এই কাজে সাহায্য করছেন। আর আমরা পুরোপুরি বিশ্বাস রাখতে পারি যে যিহোবার পবিত্র আত্মা বেড়ে চলা রাজ্যের এই কাজে দান দিয়ে সাহায্য করার জন্য তাঁর লোকেদের হৃদয়ে ইচ্ছা যুগিয়ে যাবে।

সারা পৃথিবীতে প্রচার কাজ যখন বেড়ে চলেছে, তখন আসুন আমরাও স্বেচ্ছায় ও খুশি মনে আমাদের শক্তি, সময় ও টাকাপয়সা দিয়ে এই কাজে সাহায্য করার জন্য সবসময় সুযোগ খুঁজে নিই। আর তা করে আমরা সত্যিকারের আনন্দ পাই।

[২৯ পৃষ্ঠার বাক্স]

“এটাকে ঠিকমতো কাজে লাগান!”

“আমার বয়স দশ বছর। আমি এই পয়সা পাঠাচ্ছি যাতে করে আপনারা বই ছাপানোর জন্য কাগজ বা অন্য কোন জিনিস কিনতে পারেন।”—সিনডে

“এই পয়সা পাঠাতে পেরে আমার খুবই ভাল লাগছে যা দিয়ে আপনারা আমাদের জন্য আরও বই ছাপাতে পারবেন। এই পয়সা আমি আমার হাতখরচ থেকে জমিয়েছি যা আমার বাবা আমাকে দিয়েছিল। তাই আপনারা এটাকে ঠিকমতো কাজে লাগাবেন।”—পাম, বয়স সাত বছর।

“সেই তুফানের কথা শুনে আমার খুব দুঃখ হয়েছিল। আশা করি আপনারা সকলে নিরাপদে আছেন। আমার মাত্র এই ২ ডলারই ব্যাঙ্কে জমা ছিল যা আমি পাঠালাম।”—ইলিসন, বয়স চার বছর।

“আমার নাম রুডি। আমার বয়স ১১ বছর। আমার ভাই রেল্ফের বয়স ৬ বছর। আর আমার বোন জুডিথের বয়স আড়াই বছর। আমরা তিনজনে তিন মাস ধরে আমাদের হাতখরচের টাকা থেকে কিছু জমিয়েছি। যেখানে [যুদ্ধ চলছে] আমাদের সেই ভাইদেরকে সাহায্য করার জন্য আমরা এই পয়সা পাঠাচ্ছি। আমরা মাত্র ২০ ডলার জমিয়েছি আর সেটাই আপনাদেরকে পাঠাচ্ছি।”

“সেই ভাইদের কথা শুনে আমার খুবই দুঃখ হয় [যারা তুফানের কবলে পড়েছেন]। আমি বাবার সঙ্গে কাজ করে ১৭ ডলার পেয়েছি আর আপনাদেরকে তা পাঠাচ্ছি। আমি বিশেষ কোন কাজের জন্য এই পয়সা পাঠাচ্ছি না, তাই আপনারা দরকার বুঝে এটাকে কাজে লাগাবেন।”—ম্যাকলিন, বয়স আট বছর।

[৩১ পৃষ্ঠার বাক্স]

কিছুজন দান করার জন্য যে উপায়গুলো বেছে নেন

সারা পৃথিবীতে কাজের জন্য দান

অনেকে কিছু পয়সা আলাদা করে রাখেন যা তারা দান বাক্সে ফেলেন যেখানে লেখা থাকে: “সোসাইটির পৃথিবীব্যাপী কাজের জন্য দান—মথি ২৪:১৪.” প্রত্যেক মাসে মণ্ডলী এই পয়সা তাদের কাছাকাছি শাখা অফিসে পাঠিয়ে দেয়।

লোকেরা স্বেচ্ছায় যে পয়সা দান করেন সেটা সরাসরি নিচের এই ঠিকানায় পাঠানো যেতে পারে: The Watch Tower Bible and Tract Society of India, H-৫৮ Old Khandala Road, Lonavla ৪১০ ৪০১, Maharashtra. অথবা আপনার দেশে এই সোসাইটির অফিসে পাঠাতে পারেন। গয়না অথবা অন্য কোন দামি জিনিসও দান করা যেতে পারে। আর এই দানের সঙ্গে একটা ছোট চিঠি লিখে পাঠানো দরকার যাতে লেখা থাকবে যে এই উপহারকে যেন শর্তহীন দান হিসেবে নেওয়া হয়।

পরিকল্পিত দান

সারা পৃথিবীতে রাজ্যের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শর্তহীন ও কোন শর্তে দান করা ছাড়াও দান করার আরও কিছু উপায় আছে। যেমন:

বীমা: জীবন বীমা প্রকল্পের অংশীদার হওয়ার জন্য ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির নাম দেওয়া যেতে পারে।

ব্যাংক আ্যকাউন্ট: ব্যাংক আ্যকাউন্ট, ডিপোজিট সার্টিফিকেট অথবা ব্যক্তির অবসরকালীন আ্যকাউন্ট ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে ব্যক্তির মৃত্যুর পর যেন ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটি পায় তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

স্টক্সস্‌ ও বণ্ডস্‌: শর্তহীন উপহার হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটিকে স্টক্সস্‌ ও বণ্ডস্‌ দান দেওয়া যেতে পারে।

স্থাবর সম্পত্তি: বিক্রি করা যায় এমন স্থাবর সম্পত্তি সরাসরি ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটিকে দান করা যেতে পারে। শর্তহীন উপহার হিসেবে তা দেওয়া যেতে পারে বা দাতার জীবন কাল অবধি তিনি সেখানে থাকবেন এমন শর্তেও দেওয়া যেতে পারে। সোসাইটিকে কোন স্থাবর সম্পত্তি দেওয়ার জন্য লিখিত ব্যবস্থা করার আগে সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

উইল ও ট্রাস্ট: সম্পত্তি অথবা অর্থ ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটিকে আইনসম্মতভাবে স্বীকৃত উইলের সাহায্যে দেওয়া যেতে পারে অথবা ট্রাস্টের অংশীদার হিসেবে সোসাইটির নাম দেওয়া যেতে পারে। সোসাইটিকে উইল করার সময় ইন্ডিয়ান সাকসেসন এ্যক্ট ১৯২৫ সেকশন ১১৮ অনুযায়ী উইল তৈরি করা উচিত যেখানে লেখা আছে, “কোন ব্যক্তি যার ভাইপো, ভাইঝি বা কোন কাছের আত্মীয় আছে তার সম্পত্তি কোন ধর্মীয় সংগঠনকে দান করার অধিকার নেই। কিন্তু ধর্মীয় সংগঠনকে দান করতে চাইলে ব্যক্তিকে তার মৃত্যুর এক বছর আগে তাকে উইল করতে হবে। আর উইল করার ছমাসের মধ্যেই তত্ত্বাবধানের জন্য আইন মতো ব্যবস্থা করা দরকার।”