স্বেচ্ছায় ঈশ্বরকে সেবা করুন
স্বেচ্ছায় ঈশ্বরকে সেবা করুন
প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “আমি অতিশয় আনন্দের সহিত তোমাদের প্রাণের নিমিত্ত ব্যয় করিব।” (২ করিন্থীয় ১২:১৫) এই কথাগুলো দেখে আপনার কী মনে হয়, যিহোবার লোকেদের আজকে কেমন দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব গড়ে তোলা উচিত? একজন বাইবেল পণ্ডিতের মতানুসারে, পৌল যখন করিন্থের খ্রীষ্টানদের ওই কথাগুলো লিখেছিলেন তিনি আসলে বলতে চেয়েছিলেন: “একজন বাবা যেমন তার সন্তানের জন্য খুশি মনে কাজ করেন, তেমনই আমিও তোমাদের জন্য আমার শক্তি, সময়, জীবন ও আমার যা কিছু আছে সব দিয়ে দিতে চাই।” খ্রীষ্টীয় পরিচর্যা পূর্ণ করার জন্য যদি সম্পূর্ণরূপে ‘ব্যয়িত’ হতে হয় কিংবা “নিজেকে নিঃশেষ করেও দিতে হয়” তার জন্যও পৌল তৈরি ছিলেন।
এছাড়াও, পৌল এই সমস্ত কিছু “অতিশয় আনন্দের সহিত” করেছিলেন। দ্যা যিরূশালেম বাইবেল বলে যে, তিনি “মন থেকে” তা করতে চেয়েছিলেন। আপনার সম্বন্ধে কী বলা যায়? আপনি কি আপনার সময়, শক্তি, মেধা ও সম্পদ যিহোবা ঈশ্বরের সেবায় ও অন্যদের উপকারের জন্য দিতে চান, এমনকি তা করতে গিয়ে যদি ‘নিঃশেষও হতে হয়?’ আর আপনি কি তা “অতিশয় আনন্দের সহিত” করবেন?
তারা ঈশ্বরকে সেবাই করতে চায় না
বেশির ভাগ লোকই ঈশ্বরকে সেবা করবে কী করবে না, তা নিয়ে শুধু দ্বিধার মধ্যেই থাকে না কিন্তু তারা ঈশ্বরকে সেবাই করতে চায় না। তারা অকৃতজ্ঞ, স্বার্থপর ও বিদ্রোহী। আদম ও হবাকে শয়তান এইরকম চিন্তা করতেই প্ররোচিত করেছিল। সে মিথ্যা কথা বলেছিল যে তারা “ঈশ্বরের সদৃশ হইয়া সদসদ্-জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে” অর্থাৎ তারা নিজেরাই ঠিক করতে পারবে যে কোন্টা ভাল বা কোন্টা খারাপ। (আদিপুস্তক ৩:১-৫) আজকে যাদের এইরকম মনোভাব আছে তারা মনে করে যে, তাদের পুরোপুরি স্বাধীনতা থাকা উচিত যেন তারা যা খুশি তাই-ই করতে পারে এবং ঈশ্বরের কাছে যেন তাদের কোন জবাবদিহি করতে না হয় বা তিনি যেন এতে হাত না দেন। (গীতসংহিতা ৮১:১১, ১২) নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য তারা তাদের সমস্ত কিছুকে কাজে লাগাতে চায়।—হিতোপদেশ ১৮:১.
আপনার মনোভাব হয়তো এতটা খারাপ নয়। আপনি যে এখন বেঁচে আছেন বা ভবিষ্যতে পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার যে চমৎকার আশা রয়েছে, তার জন্য আপনার হয়তো গভীর উপলব্ধি আছে। (গীতসংহিতা ৩৭:১০, ১১; প্রকাশিত বাক্য ২১:১-৪) যিহোবা আপনাকে যে দয়া দেখিয়েছেন তার জন্য আপনি হয়তো যিহোবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞ। কিন্তু, আমাদের সবার সাবধান হওয়া দরকার কারণ শয়তান আমাদের চিন্তাভাবনাকে এমনভাবে বিকৃত করে দিতে পারে, যার ফলে আমাদের সেবা হয়তো ঈশ্বর আর গ্রহণই করবেন না। (২ করিন্থীয় ১১:৩) তা কীভাবে হতে পারে?
স্বেচ্ছায় সেবা করা দরকার
যিহোবা চান আমরা যেন স্বেচ্ছায়, মন থেকে তাঁকে সেবা করি। তিনি কখনও আমাদেরকে তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য জোর করেন না। লোকেদেরকে চাপ দিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে যেভাবেই হোক, শয়তান তার ইচ্ছা পালন করাবে। তবে বাইবেল বলে যে ঈশ্বরকে সেবা করার জন্য আমাদের কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়, তাঁর বাধ্য হতে বা অন্যান্য আরও কাজ করতে হয়। (উপদেশক ১২:১৩; লূক ১:৬) অবশ্য ঈশ্বরকে সেবা করার পেছনে আমাদের মূল কারণ হল আমরা তাঁকে ভালবাসি।—যাত্রাপুস্তক ৩৫:২১; দ্বিতীয় বিবরণ ১১:১.
১ করিন্থীয় ১৩:১-৩) বাইবেল লেখকরা যখন খ্রীষ্টানদেরকে ঈশ্বরের দাস বলেন তখন তারা এটা বোঝাননি যে, তাদেরকে জোর করে দাসত্ব করানো হচ্ছে। (রোমীয় ১২:১১; কলসীয় ৩:২৪, ২৫) বরং তারা বুঝিয়েছিলেন যে ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের জন্য গভীর, আন্তরিক ভালবাসা থাকায় তারা স্বেচ্ছায় ঈশ্বরের বশীভূত হয়েছেন।—মথি ২২:৩৭; ২ করিন্থীয় ৫:১৪; ১ যোহন ৪:১০, ১১.
পৌল ঈশ্বরের সেবায় যতখানি সময়ই দিক না কেন, তিনি জানতেন যে ‘যদি তার প্রেম না থাকে,’ তাহলে সবকিছুই নিষ্ফল হয়ে যাবে। (এছাড়াও, ঈশ্বরকে সেবা করার মধ্যে দিয়ে লোকেদের জন্য আমাদের গভীর ভালবাসা প্রকাশ পায়। থিষলনীকী মণ্ডলীর ভাইবোনদের পৌল লিখেছিলেন: “যেমন স্তন্যদাত্রী নিজ বৎসদিগের লালন পালন করে, তেমনি তোমাদের মধ্যে কোমল ভাব দেখাইয়াছিলাম।” (১ থিষলনীকীয় ২:৭) আজকে অনেক দেশে আইন আছে, মায়েদের তাদের বাচ্চাদেরকে যত্ন নিতেই হবে। কিন্তু, বেশির ভাগ মায়েরা কি শুধু আইন পালন করার জন্যই তাদের বাচ্চাদের লালনপালন করেন? না। তারা তাদের বাচ্চাদের ভালবাসেন বলেই তাদেরকে লালনপালন করেন। একজন মা খুশি মনেই তার বাচ্চার জন্য অনেক ত্যাগস্বীকার করেন! পৌল যে লোকেদের পরিচর্যা করেছিলেন সেই লোকেদের জন্য তার একইরকম “স্নেহ” ছিল বলে তিনি তাদের সাহায্য করার জন্য তার নিজের জীবন দিতেও “সন্তুষ্ট” (“ইচ্ছুক,” কিং জেমস ভারসন; “আনন্দিত,” নিউ ইন্টারন্যাশনাল ভারসন) ছিলেন। (১ থিষলনীকীয় ২:৮) ভালবাসাই আমাদেরকে পৌলের মতো হতে প্রেরণা দেয়।—মথি ২২:৩৯.
সেবা করতে ইচ্ছা না হলে কী?
আমাদের মনে রাখতে হবে, ঈশ্বর ও লোকেদের চেয়ে আমরা যেন নিজেকে বেশি ভাল না বাসি। নতুবা বিপদ দেখা দিতে পারে অর্থাৎ আমরা হয়তো গা ছাড়া ভাব বা মনে অনীহা নিয়ে যিহোবাকে সেবা করতে পারি। এমনকি আমরা কিছুটা বিরক্ত হতে বা আমাদের ইচ্ছে মতো চলতে পারছি না বলে মনে মনে রাগ করতে পারি। কিছু ইস্রায়েলীয়দের বেলায় এমনটা হয়েছিল, যারা ঈশ্বরের জন্য ভালবাসা হারিয়ে ফেলেছিল কিন্তু শুধু কর্তব্যের খাতিরে কোনরকমে তাঁকে সেবা করেছিল। এর ফল কী হয়েছিল? ঈশ্বরকে সেবা করা তাদের জন্য “বিড়ম্বনা” হয়ে উঠেছিল।—মালাখি ১:১৩.
ঈশ্বরকে আমরা যা কিছুই দিই না কেন, তা “নির্দ্দোষ,” নিখুঁত এবং “সবচেয়ে ভাল” হওয়া উচিত। (লেবীয় পুস্তক ২২:১৭-২০; যাত্রাপুস্তক ২৩:১৯, NW) কিন্তু, যিহোবাকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পশু দেওয়ার বদলে মালাখির দিনের লোকেরা সেই সমস্ত পশু উৎসর্গ করতে শুরু করেছিল যেগুলো তাদের কোন কাজে আসত না। তা দেখে যিহোবা কী বলেছিলেন? তিনি যাজকদের বলেছিলেন: “যখন তোমরা যজ্ঞের নিমিত্ত অন্ধ পশু উৎসর্গ কর, সেটী কি মন্দ নয়? এবং যখন খঞ্জ ও রুগ্ন পশু উৎসর্গ কর, সেটী কি মন্দ নয়? তোমার দেশাধ্যক্ষের কাছে উহা উৎসর্গ কর দেখি; সে কি তোমার প্রতি প্রসন্ন হইবে? সে কি তোমাকে গ্রাহ্য করিবে? . . . আর তোমরা লুটিত, খঞ্জ ও রুগ্ন পশুকে উপস্থিত করিয়াছ, এই প্রকারে নৈবেদ্য উপস্থিত করিতেছ; আমি কি তোমাদের হস্ত হইতে ইহা গ্রাহ্য করিব?”—মালাখি ১:৮, ১৩.
আমরাও কীভাবে এমন কাজ করে ফেলতে পারি? আমাদের মনে যদি ইচ্ছা ও আগ্রহ না থাকে, তাহলে আমাদের বলিগুলো “বিড়ম্বনা” হয়ে উঠতে পারে। (যাত্রাপুস্তক ৩৫:৫, ২১, ২২; লেবীয় পুস্তক ১:৩; গীতসংহিতা ৫৪:৬; ইব্রীয় ১৩:১৫, ১৬) উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সমস্ত কাজ করার পর আমাদের হাতে যতটুকু সময় থাকে আমরা কি শুধু সেই সময়টুকুই যিহোবাকে দিই?
কোন পরিবারের ভাল মনের একজন ব্যক্তি বা একজন উদ্যোগী লেবীয় যদি কোন ইস্রায়েলীয়কে তার সবচেয়ে ভাল পশুটা উৎসর্গ করার জন্য জোর করে যেটা উৎসর্গ করার কোন ইচ্ছা তার ছিল না, তাহলে ঈশ্বর কি সেই বলি গ্রহণ করবেন? (যিশাইয় ২৯:১৩; মথি ১৫:৭, ৮) এইধরনের বলি এবং যারা সেগুলো দিয়েছিল তাদেরকে যিহোবা অগ্রাহ্য করেছিলেন।—হোশেয় ৪:৬; মথি ২১:৪৩.
ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে আনন্দিত হোন
যে সেবা পেয়ে ঈশ্বর খুশি, তা করার জন্য আমাদের অবশ্যই যীশু খ্রীষ্টের উদাহরণ মেনে চলতে হবে। যীশু বলেছিলেন, “আমি আপনার ইচ্ছা পূর্ণ করিতে চেষ্টা করি না, কিন্তু আমার প্রেরণকর্ত্তার ইচ্ছা পূর্ণ করিতে চেষ্টা করি।” (যোহন ৫:৩০) যীশু স্বেচ্ছায় ঈশ্বরকে সেবা করে অনেক আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন। দায়ূদ যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যীশু সেই কথাগুলো পূর্ণ করেছিলেন: “হে আমার ঈশ্বর, তোমার অভীষ্ট সাধনে আমি প্রীত।”—গীতসংহিতা ৪০:৮.
যদিও যিহোবার ইচ্ছা পালন করে যীশু আনন্দিত ছিলেন কিন্তু তা সবসময় সহজ ছিল না। যীশুকে গ্রেপ্তার ও বিচার করার এবং মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঠিক আগে কী ঘটেছিল তা একটু ভেবে দেখুন। গেৎশিমানী বাগানে যীশু “দুঃখার্ত্ত” এবং “মর্ম্মভেদী” হয়েছিলেন। তিনি এতটা মানসিক চাপের মধ্যে মথি ২৬:৩৮; লূক ২২:৪৪.
ছিলেন যে, প্রার্থনা করার সময় “তাঁহার ঘর্ম্ম যেন রক্তের ঘনীভূত বড় বড় ফোঁটা হইয়া ভূমিতে পড়িতে লাগিল।”—কেন যীশু এতটা দুঃখ পেয়েছিলেন? নিশ্চয়ই এর জন্য নয় যে তিনি নিজের বিষয়ে চিন্তা করছিলেন বা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে তাঁর কোন আগ্রহ ছিল না। মৃত্যুর জন্য তিনি তৈরিই ছিলেন কারণ পিতর যখন তাঁকে বলেছিলেন, “প্রভু, ইহা আপনা হইতে দূরে থাকুক, ইহা আপনার প্রতি কখনও ঘটিবে না” তখন তিনি পিতরকে কড়াভাবে অনুযোগ করেছিলেন। (মথি ১৬:২১-২৩) বরং যীশু চিন্তিত ছিলেন যে, একজন ঘৃণ্য অপরাধী হিসেবে মারা গেলে যিহোবা ও তাঁর পবিত্র নামের ওপর তা কীরকম প্রভাব ফেলবে। যীশু জানতেন, তাঁর পিতা যখন দেখবেন যে তাঁর প্রিয় পুত্র এত কষ্ট পাচ্ছে তখন তাঁরও খুব কষ্ট হবে।
এছাড়াও, যীশু বুঝতে পেরেছিলেন যে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য তিনি শীঘ্রিই এক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। ঈশ্বরের ব্যবস্থার প্রতি বিশ্বস্তভাবে লেগে থাকা দেখাবে যে, চাইলে আদমও ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে পারত। যীশুর বিশ্বস্ততা শয়তানের দাবিকে মিথ্যে প্রমাণ করবে। শয়তান দাবি করেছিল, পরীক্ষার সময় মানুষেরা স্বেচ্ছায় ও বিশ্বস্তভাবে ঈশ্বরকে সেবা করবে না। শেষ পর্যন্ত যীশু খ্রীষ্টকে দিয়ে যিহোবা শয়তানকে ধ্বংস করে দেবেন এবং তার বিদ্রোহের ফলে যে ক্ষতিগুলো হয়েছে সেগুলো দূর করবেন।—আদিপুস্তক ৩:১৫.
যীশুর কাঁধে কত বড় এক দায়িত্বই না ছিল! তাঁর পিতার নাম, সারা পৃথিবীতে শান্তি এবং পুরো মানব পরিবারের পরিত্রাণ এই সমস্ত কিছুই যীশু বিশ্বস্ত থাকবেন কী থাকবেন না, তার ওপর নির্ভর করেছিল। এই সমস্ত কিছু উপলব্ধি করে তিনি প্রার্থনা করেছিলেন: “হে আমার পিতঃ, যদি হইতে পারে, তবে এই পানপাত্র আমার নিকট হইতে দূরে যাউক; তথাপি আমার ইচ্ছামত না হউক, তোমার ইচ্ছামত হউক।” (মথি ২৬:৩৯) দুঃসহ চাপের মধ্যেও যীশু কখনও তাঁর পিতার ইচ্ছা পালন করা থেকে পিছপা হননি।
‘আত্মা ইচ্ছুক, কিন্তু মাংস দুর্ব্বল’
যিহোবাকে সেবা করতে গিয়ে যীশু যেমন প্রবল মানসিক চাপ সহ্য করেছিলেন, তেমনই আমরা আশা করতে পারি যে আজকে আমরা যারা ঈশ্বরের দাস, আমাদের ওপরও শয়তান একইরকম চাপ নিয়ে আসবে। (যোহন ১৫:২০; ১ পিতর ৫:৮) আমরা অসিদ্ধ আর তাই স্বেচ্ছায় ঈশ্বরকে সেবা করতে চাইলেও তা করা সবসময় সহজ হবে না। যীশু দেখেছিলেন যে তাঁর প্রেরিতরা তাঁর বলা কাজগুলো করার জন্য কতটা সংগ্রাম করেছিলেন। সেইজন্য তিনি বলেছিলেন: “আত্মা ইচ্ছুক বটে, কিন্তু মাংস দুর্ব্বল।” (মথি ২৬:৪১) যীশুর সিদ্ধ শরীরে জন্মগত কোন দুর্বলতাই ছিল না। কিন্তু, তিনি জানতেন যে তাঁর শিষ্যদের মাংস দুর্বল কারণ তারা আদমের কাছ থেকে অসিদ্ধতা পেয়েছে। এছাড়া তিনি এও জানতেন যে, জন্ম থেকে অসিদ্ধ হওয়ায় এবং মাংসিক দুর্বলতাগুলো থাকায় যিহোবাকে সেবা করা তাদের জন্য সহজ হবে না, এর জন্য তাদেরকে অনেক সংগ্রাম করতে হবে।
অসিদ্ধতার জন্য প্রেরিত পৌল যখন পূর্ণরূপে ঈশ্বরকে সেবা করা থেকে পিছিয়ে পড়েছিলেন তখন তিনি যেমন দুঃখ পেয়েছিলেন আজকে আমরাও তার মতো দুঃখ পেতে পারি। পৌল লিখেছিলেন, “আমার ইচ্ছা উপস্থিত বটে, কিন্তু উত্তম ক্রিয়া সাধন উপস্থিত নয়।” (রোমীয় ৭:১৮) মাঝে মাঝে আমরাও ভাল কাজ করতে চাই কিন্তু করতে পারি না। (রোমীয় ৭:১৯) তবে তার মানে এই নয় যে, সেই কাজগুলো করার ইচ্ছা আমাদের নেই। প্রাণপণ চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও, মাংসিক দুর্বলতার জন্যই আমরা ভাল কাজ করা থেকে পিছিয়ে পড়ি।
এর জন্য আসুন আমরা যেন হতাশ না হই। আমরা যদি আমাদের সাধ্যমতো যিহোবাকে সেবা করি, তাহলে তিনি অবশ্যই তা মেনে নেবেন। (২ করিন্থীয় ৮:১২) ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণরূপে পালন করার জন্য আসুন আমরা খ্রীষ্টের উদাহরণ অনুকরণ করতে ‘যত্ন করি।’ (২ তীমথিয় ২:১৫; ফিলিপীয় ২:৫-৭; ১ পিতর ৪:১, ২) আমরা যদি স্বেচ্ছায় তা করি, তাহলে যিহোবা আমাদেরকে পুরস্কার দেবেন ও সাহায্য করবেন। আমাদের দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে ওঠার জন্য যিহোবা আমাদেরকে “পরাক্রমের উৎকর্ষ” দেবেন। (২ করিন্থীয় ৪:৭-১০) যিহোবার সাহায্যে আমরাও পৌলের মতো যিহোবার মূল্যবান সেবায় “অতিশয় আনন্দের সহিত . . . ব্যয় করিব, এবং ব্যয়িতও হইব।”
[২১ পৃষ্ঠার চিত্র]
ঈশ্বরের সেবা করার জন্য পৌল স্বেচ্ছায় যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন
[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]
এমনকি প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও যীশু তাঁর পিতার ইচ্ছা পালন করেছিলেন