সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোবার সাক্ষিরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন!

যিহোবার সাক্ষিরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন!

যিহোবার সাক্ষিরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন!

বার্ষিক সভার রিপোর্ট

 অনিশ্চয়তা ও সন্দেহের এই যুগে, যিহোবার সাক্ষিরা দৃঢ় প্রত্যয়ী খ্রীষ্টান হিসেবে সুপরিচিত। ২০০০ সালের ৭ই অক্টোবর শনিবার, ওয়াচ টাওয়ার বাইবেল আ্যন্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি অফ পেনসিলভানিয়ার বার্ষিক সভায় এই বিষয়টা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। এই সভা, নিউ জার্সির জার্সি সিটিতে যিহোবার সাক্ষিদের সম্মেলন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। *

ওই সভার সভাপতি ছিলেন যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য, জন ই. বার। শুরুতেই তিনি বলেছিলেন: “পৃথিবীর কোটি কোটি লোকেদের মধ্যে থেকে আমরা জানি ও বিশ্বাস করি যে, যিহোবার প্রিয় পুত্র, খ্রীষ্ট যীশু এখন স্বর্গে রাজা এবং সেখান থেকে তাঁর শত্রুদের মাঝে শাসন করছেন।” পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ছয়টা রোমাঞ্চকর রিপোর্ট জানিয়ে এই দৃঢ় প্রত্যয়ের প্রমাণ দেওয়া হয়েছিল।

হাইতিতে বাইবেলের সত্য দিয়ে প্রেতচর্চাকে পরাজিত করা

হাইতিতে প্রেতচর্চা খুবই জনপ্রিয়। শাখা কমিটি কোঅর্ডিনেটর জন নরম্যান বলেছিলেন, “প্রায় লোকেরাই নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য ডাকিনীবিদ্যা চর্চা করে।” একটা দুর্ঘটনায় একজন ওঝার পা কেটে গেলে তার মনে সন্দেহ জাগতে শুরু করে। তিনি মনে মনে চিন্তা করেন, ‘আমাকে যদি আত্মারা রক্ষাই করে, তাহলে এরকম কেন হল?’ অনেকের মতো এই ভদ্রলোককে যিহোবার সাক্ষিরা বাইবেলের সত্য শেখান ও প্রেতচর্চা ছাড়তে সাহায্য করেন। হাইতিতে প্রকাশকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে কারণ ২০০০ সালের ১৯শে এপ্রিল খ্রীষ্টের মৃত্যুর স্মরণার্থক সভায় সেখানকার প্রকাশকদের সংখ্যার চার গুণ বেশি লোক উপস্থিত ছিলেন।

কোরিয়ার বিরাট এলাকায় উদ্যোগ

কোরিয়াতে শতকরা ৪০ ভাগ যিহোবার সাক্ষি পূর্ণ-সময়ের পরিচারক হিসেবে কাজ করেন। শাখা কমিটি কোঅর্ডিনেটর মিলটন হ্যামিলটন বলেছিলেন, “এই বিশাল বাহিনী ওই এলাকার ৪ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি লোকেদের কাছে মাসে একবার প্রচার করে শেষ করেন।” বিশেষ করে বোবা ও বধিরদের মণ্ডলীগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়। বোবা ও বধিরদের একটা সীমায় প্রায় ৮০০টা গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করা হচ্ছে। এখানে প্রত্যেক প্রকাশকের গড়ে একটা করে অধ্যয়ন আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল যে, নিরপেক্ষতার জন্য যুবক ভাইয়েরা এখনও জেলে রয়েছে। তবে জেলের কর্মকর্তারা এই বিশ্বস্ত খ্রীষ্টানদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন ও প্রায়ই তাদেরকে এমন কাজ দেওয়া হয়, যেখানে বিশ্বাসযোগ্য লোকেদের দরকার।

মেক্সিকোতে বৃদ্ধির চাহিদাগুলো পূরণ করা

২০০০ সালের আগস্ট মাসে মেক্সিকোতে সর্বোচ্চ ৫,৩৩,৬৬৫ জন প্রকাশক প্রচারের রিপোর্ট দিয়েছেন। তার তিন গুণ বেশি লোকেরা স্মরণার্থক সভায় এসেছিলেন। শাখা কমিটি কোঅর্ডিনেটর রবার্ট ট্রেসি বলেন, “এই বছর আমাদের ২৪০টা কিংডম হল তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে। কিন্তু, এখনও আমাদের আরও অনেক কিংডম হল দরকার।”

মেক্সিকোতে যিহোবার সাক্ষি যুবক-যুবতীরা খুবই উদাহরণযোগ্য। এক যুবক সম্বন্ধে একজন ক্যাথলিক যাজক বলেছিলেন: “আমার শিষ্যদের মধ্যে ওর মতো শুধু একজন যুবককে আমার দরকার। এই লোকেরা সমস্ত কিছুতে বাইবেল ব্যবহার করতে চায় এবং খুব বিচক্ষণতার সঙ্গে তা ব্যবহার করে বলে আমি তাদের খুবই শ্রদ্ধা করি। তারা এমনকি তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও ঈশ্বরের পক্ষে থেকেছেন।”

সিয়েরা লিয়নে অস্থির অবস্থার মধ্যেও বিশ্বস্ততা রক্ষা

১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে যখন সিয়েরা লিয়নে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় তখন থেকে আজ পর্যন্ত হাজার হাজার লোকেরা মারা গেছে এবং আহত বা বিকলাঙ্গ হয়েছে। শাখা কমিটি কোঅর্ডিনেটর বিল কোয়ান রিপোর্ট করেছিলেন, “যুদ্ধ ও কষ্ট লোকেদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। আগে যারা আমাদের কথা শুনতে চাইত না তারা এখন অনেক আগ্রহ নিয়ে তা শোনে। আমন্ত্রণ ছাড়াই লোকেরা এখন কিংডম হলে আসে ও প্রথম বারের মতো সভায় যোগদান করে। ভাইদেরকে প্রায়ই লোকেরা রাস্তায় থামিয়ে বাইবেল অধ্যয়ন করানোর জন্য অনুরোধ করেন।” সিয়েরা লিয়নে অস্থির অবস্থার মধ্যেও, রাজ্যের প্রচার কাজ ভাল ফল উৎপন্ন করে চলেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বিরাট নির্মাণ কাজ

দক্ষিণ আফ্রিকা শাখা অফিসের অধীনে যে এলাকা রয়েছে, এখন সেখানে কয়েক হাজার কিংডম হল দরকার। এর মধ্যে শত শত নতুন কিংডম হল বানানো হয়ে গেছে। শাখা কমিটির সদস্য জন কিকট বলেছিলেন, “আগে আমাদের ভাইয়েরা ছোট্ট কুঁড়েঘর বা গাছের নিচে সভা করতেন কিন্তু এখন তারা উপযুক্ত জায়গায় সভা করেন, যেখানে বসার জন্য ভাল ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও বেশির ভাগ কিংডম হলই দেখতে খুবই সাধারণ কিন্তু এগুলোই হল তাদের এলাকায় সবচেয়ে সুন্দর নির্মাণ কাজ। কিছু কিছু এলাকায় দেখা গেছে, কিংডম হল বানানোর পরের বছর মণ্ডলীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে।”

ইউক্রেনে সাক্ষিদের এক নতুন প্রজন্ম

২০০০ সালের পরিচর্যা বছরে এই দেশে প্রকাশকদের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ১,১২,৭২০ জন। এদের মধ্যে ৫০,০০০ জনেরও বেশি গত পাঁচ বছরে বাইবেলের সত্য শিখেছেন। শাখা কমিটি কোঅর্ডিনেটর জন ডিডার বলেছিলেন, “সত্যিই যিহোবা তাঁর নাম জানানোর জন্য তারুণ্যে ভরা এক নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলেছেন!” তিনি আরও বলেছিলেন, “গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা ৫ কোটিরও বেশি পত্রিকা অর্পণ করেছি, যা দেশের জনসংখ্যার সমান। আরও তথ্য জানতে চান এমন উৎসাহিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরা প্রতি মাসে গড়ে এক হাজার করে চিঠি পাই।”

কার্যক্রমের অন্যান্য উদ্দীপনামূলক বৈশিষ্ট্য

পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য ড্যানিয়েল সিডলিক একটা দারুণ বক্তৃতা দিয়েছিলেন। এই পত্রিকায় ছাপানো “পরিচালক গোষ্ঠী বৈধ সত্তার মধ্যে পার্থক্য” প্রবন্ধটা ওই তথ্যবহুল বক্তৃতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্য, থিওডোর জারাস ভাবিয়ে তোলার মতো একটা বক্তৃতা দিয়েছিলেন যেটার শিরোনাম ছিল, “অধ্যক্ষ ও পরিচারক দাসেরা ঈশতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিযুক্ত।” এই বিষয়ের ওপর এই পত্রিকায় একটা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে।

এছাড়াও, বার্ষিক সভায় পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্য ডেভিড স্প্লান ২০০১ সালের বার্ষিক শাস্ত্রপদের ওপর ভিত্তি করে একটা উদ্দীপনামূলক বক্তৃতা দিয়েছিলেন। প্রেরিত পৌলের কথার ওপর ভিত্তি করে এটা হল: “পূর্ণতা লাভ করে এবং ঈশ্বরের সমস্ত ইচ্ছাতে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাক।” (কলসীয় ৪:১২, NW) সারা পৃথিবীর যিহোবার সাক্ষিরা বিশ্বস্তভাবে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার বিশ্বজুড়ে প্রচার করার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।—মথি ২৪:১৪.

[পাদটীকা]

^ বিভিন্ন জায়গায় এই অনুষ্ঠানটা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল। ফলে মোট ১৩,০৮২ জন দর্শক তা শুনেছিলেন।