ধর্ম কি বিশ্বশান্তি নিয়ে আসবে?
ধর্ম কি বিশ্বশান্তি নিয়ে আসবে?
দুহাজার সালের ২৮শে আগস্ট থেকে ৩১শে আগস্ট, ৭৩টা দেশ থেকে ৫০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি নিউ ইয়র্ক সিটিতে এসেছিলেন। “ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতাদের সহস্রাব্দ বিশ্বশান্তি শীর্ষ-বৈঠক”-এ যোগ দেওয়ার জন্য তারা রাষ্ট্রসংঘে মিলিত হয়েছিলেন। নেতাদের মধ্যে কারও মাথায় পাগড়ি ছিল, কেউবা জাফরান রঙের গাউন পরেছিলেন, কেউ মাথায় পালক দেওয়া পাগড়ি দিয়েছিলেন আবার কেউবা লম্বা কালো আলখাল্লা পরেছিলেন। আর এটা দেখিয়েছিল যে তারা বিভিন্ন বিশ্বাসে বিশ্বাসী। এদের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মের নেতারা ছিলেন যেমন ইসলাম, খ্রীষ্টীয়জগৎ, জোরোয়াস্ট্রিয়েন, জৈন, তাও, বাহাই, বৌদ্ধ, যিহুদি, শিখ, সিন্টো, এবং হিন্দু।
চারদিনের কনফারেন্সের প্রথম দুদিন প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রসংঘে মিলিত হয়েছিলেন। কিন্তু, রাষ্ট্রসংঘ এই কনফারেন্সের ব্যবস্থা করেনি বা এর জন্য কোন টাকাও দেয়নি বরং অন্যান্য সংগঠন থেকে এর আয়োজন করা হয়েছিল। তাসত্ত্বেও দরিদ্রতা, বর্ণবৈষম্য, পরিবেশগত সমস্যা, যুদ্ধ এবং এক সঙ্গে অনেক লোকেদের ধ্বংস করার অস্ত্রগুলোকে শেষ করার জন্য রাষ্ট্রসংঘ এবং ধর্মীয় নেতারা একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছিলেন।
প্রতিনিধিরা একটা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, যার শিরোনাম ছিল “বিশ্ব শান্তির জন্য চুক্তি।” দৌরাত্ম্য এবং যুদ্ধ “কখনও কখনও ধর্মের নামে সাধিত হয়” বলে স্বীকার করার পর সেই দলিলে বলা হয়েছিল যে, যারা সেটাতে স্বাক্ষর করেছেন তারা “শান্তি আনার জন্য . . . রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।” কিন্তু, কীভাবে তা করা হবে, সে সম্বন্ধে নির্দিষ্ট কোন উপায়ের কথা সেখানে বলা হয়নি।
দ্বিতীয় দিন শীর্ষ-বৈঠকের মহাসচিব বওয়া জাইন তার প্রথম বক্তৃতা এই বলে শেষ করেন যে, কয়েক বছর আগে তিনি রাষ্ট্রসংঘের দেওয়ালে একটা ছবি দেখেছিলেন। সেখানে একজন লোকের ছবি ছিল, যিনি রাষ্ট্রসংঘের সচিবালয়ের চেয়েও লম্বা। সেই দালানের গায়ে তিনি এমনভাবে ধাক্কা দিচ্ছিলেন যেন সেটা একটা দরজা। সেই ছবির নিচে লেখা ছিল “শান্তিরাজ।” মি. জাইন বলেছিলেন: “আমি যখন [সেই ছবিটা] দেখেছিলাম তখন তা আমার ওপর এক বিরাট ছাপ ফেলেছিল। আমি অনেক লোককে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, [এটার] মানে কী। কিন্তু, আজকে আমি এর উত্তর পেয়ে গেছি। সারা পৃথিবী থেকে আসা আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় নেতাদের দেখে আমার মনে হচ্ছে যে আপনারাই [সেই] শান্তিরাজ, যিনি রাষ্ট্রসংঘের দরজায় কড়া নাড়ছেন।”
কিন্তু, বাইবেল এই সম্বন্ধে ভিন্ন কথা বলে। এটা দেখায় যে শান্তিরাজ হলেন, যীশু খ্রীষ্ট। তিনি সারা পৃথিবীতে শান্তি নিয়ে আসবেন আর সেটা তিনি জগতের রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে নয় কিন্তু ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমে আনবেন। এই রাজ্য অর্থাৎ ঈশ্বরের স্বর্গীয় সরকার সমস্ত বাধ্য মানবজাতিকে একত্রিত করবে আর এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ হতে সাহায্য করবে।—যিশাইয় ৯:৬; মথি ৬:৯, ১০.