সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“যিহোবা সবসময় আমার মঙ্গল করে এসেছেন!”

“যিহোবা সবসময় আমার মঙ্গল করে এসেছেন!”

“যিহোবা সবসময় আমার মঙ্গল করে এসেছেন!”

 উনিশশ পঁচাশি সালের মার্চ মাসে এক সুন্দর সন্ধ্যায় আমেরিকার নিউ ইয়র্কে যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়ের লিখন বিভাগের নারী-পুরুষ সকলে এক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছিলেন। সেই সময় কার্ল এফ. ক্লাইনের পূর্ণ-সময়ের পরিচর্যার ৬০ বছর হয়েছিল। ভাই ক্লাইন অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে বলেছিলেন: “যিহোবা সবসময় আমার মঙ্গল করে এসেছেন!” তিনি বলেছিলেন যে গীতসংহিতা ৩৭:৪ পদ হল তার সবচেয়ে প্রিয় শাস্ত্রপদ। এরপর তিনি সেলো বাজিয়ে সকলকে আনন্দ দিয়েছিলেন।

পরের ১৫ বছর ভাই ক্লাইন লিখন বিভাগ ও যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য হিসেবে কাজ করেছিলেন। আর ২০০১ সালের ৩রা জানুয়ারি ৯৫ বছর বয়সে কার্ল ক্লাইন বিশ্বস্তভাবে পৃথিবীতে তার কাজ শেষ করেন।

কার্লের জন্ম জার্মানিতে। তার পরিবার আমেরিকাতে চলে গিয়েছিলেন আর সিকাগোর ইলিনোয়িস শহরতলিতে কার্ল মানুষ হয়েছিলেন। ছেলেবেলাতেই কার্ল ও তার ছোট ভাই টেডের বাইবেলের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। কার্ল ১৯১৮ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন এবং ১৯২২ সালে বাইবেল ছাত্রদের একটা সম্মেলনে রোমাঞ্চকর বিষয়গুলো শুনে তিনি সারা জীবনের জন্য প্রচার কাজকে ভালবেসে ফেলেছিলেন। তিনি কোন সপ্তায় প্রচারে যাওয়া বাদ দিতে চাননি, এমনকি তার জীবনের শেষ সপ্তাগুলোতেও তিনি প্রচার করেছিলেন।

কার্ল ১৯২৫ সালে প্রধান কার্যালয়ের সদস্য হয়েছিলেন, প্রথমে তিনি ছাপাখানায় কাজ করেছিলেন। তিনি গানবাজনা ভালবাসতেন এবং কয়েক বছর তিনি খ্রীষ্টান রেডিও কার্যক্রমে সম্প্রচারিত অর্কেস্ট্রা দলের সঙ্গে সেলো বাজাতেন। এরপর তিনি পরিচর্যা বিভাগে কাজ করেছিলেন আর এই বিভাগের অধ্যক্ষ টি. জে. সুলিভানের সঙ্গে মেলামেশা উপভোগ করেছিলেন। এরই মধ্যে, ডরিসকে বিয়ে করে টেড পুয়ের্টো রিকোতে মিশনারি হিসেবে কাজ করেন।

পঞ্চাশ বছর ধরে কার্ল ক্লাইন লিখন বিভাগে কাজ করেছিলেন, এখানে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন কারণ তিনি গবেষণা করতে পছন্দ করতেন ও বাইবেলের ওপর তার গভীর জ্ঞান ছিল। ১৯৬৩ সালে কার্ল জার্মানির মার্গারেটাকে বিয়ে করেন, যিনি তখন বলিভিয়াতে মিশনারি হিসেবে কাজ করছিলেন। তার প্রেমপূর্ণ যত্নের জন্য, বিশেষ করে শারীরিক সমস্যার মধ্যেও কার্ল কাজ চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন। অধিকাংশ লোকেরা সাধারণত এই বয়সে অবসর নেন কিন্তু তিনি তারপরও অনেক বছর পর্যন্ত কাজ করেছিলেন। কার্লের সহজাত সারল্য, সেইসঙ্গে একজন বাদকের উদ্যোগ মণ্ডলী ও সম্মেলনগুলোতে স্মরণীয় বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষেত্রে এক বিশেষ অবদান রেখেছিল। তার মৃত্যুর অল্প কিছুদিন আগেও তিনি নিউ ইয়র্কের বড় বেথেল পরিবারের জন্য সকালের শাস্ত্রপদ আলোচনা পরিচালনা করেছিলেন, যা প্রত্যেককে আনন্দ দিয়েছিল ও উপকার করেছিল।

প্রহরীদুর্গ পত্রিকার নিয়মিত পাঠক-পাঠিকারা ১৯৮৪ সালের ১লা অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত ভাই ক্লাইনের জীবন কাহিনী, তার চমৎকার অভিজ্ঞতাগুলোর কথা মনে করে থাকবেন। আপনি তা পড়ে কিংবা আগে পড়ে থাকলে আরও একবার পড়ে আনন্দ পাবেন। কারণ পড়ার সময় আপনার মনে থাকবে যে, এর লেখক আরও প্রায় ১৫ বছর ধরে একজন বিশ্বস্ত ও আন্তরিক খ্রীষ্টান হিসেবে জীবনযাপন করেছেন।

প্রভুর একজন অভিষিক্ত ব্যক্তি হিসেবে ভাই ক্লাইন তার সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে স্বর্গে খ্রীষ্টের সঙ্গে রাজত্ব করতে চেয়েছিলেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, যিহোবা তার সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন।—লূক ২২:২৮-৩০.

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

টি. জে. সুলিভান, টেড ও ডরিসের সঙ্গে ১৯৪৩ সালে কার্ল

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

কার্ল ও মার্গারেটা, অক্টোবর ২০০০