সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

তিনি ‘শেষ পর্য্যন্ত স্থির ছিলেন’

তিনি ‘শেষ পর্য্যন্ত স্থির ছিলেন’

তিনি ‘শেষ পর্য্যন্ত স্থির ছিলেন’

 যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়ের নতুন সদস্যদেরকে ১৯৯৩ সালে একটা ভিডিও দেখানো হয়েছিল আর তাতে লিম্যান আলেকজান্ডার সুইংগ্যাল, যিহোবাকে সেবা করার ব্যাপারে তার অনুভূতির কথা বলেছিলেন: “জুতো পরা অবস্থায় মারা যান!” *

নব্বই বছর বয়সী ভাই সুইংগ্যাল, অন্যদেরকে যা করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন নিজে ঠিক তা-ই করেছিলেন। তিনি ‘শেষ পর্য্যন্ত স্থির ছিলেন।’ (মথি ২৪:১৩) যদিও তার শরীর খুব একটা ভাল ছিল না কিন্তু তবুও তিনি ৭ই মার্চ বুধবার যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর একটা সভাতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি নিজেও পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য ছিলেন। এর পরের মঙ্গলবার তার শরীরের অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং ১৪ই মার্চ ভোর ৪:২৬ মিনিটে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভাই লিম্যান সুইংগ্যাল, যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়, নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে ১৯৩০ সালের ৫ই এপ্রিল থেকে সেবা করতে শুরু করেছিলেন। তিনি প্রায় ৭১ বছর সেখানে সেবা করেছেন। ভাই লিম্যানকে প্রথমে বই বাঁধাই, এর পর ছাপাখানায় নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং পরে তিনি কালি তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন। আসলে, ভাই সুইংগ্যাল কালি তৈরির বিভাগে প্রায় ২৫ বছর কাজ করেছিলেন। তবে তিনি প্রায় ২০ বছর প্রধান কার্যালয়ের লিখন বিভাগের সদস্য হিসেবেও কাজ করেছিলেন। তার জীবনের শেষ ১৭ বছর তিনি কোষাধ্যক্ষের অফিসে কাজ করেছিলেন।

লিম্যান, ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে সাহসী ঘোষক ছিলেন। ব্রুকলিনে প্রথম দিকে তিনি ও তার রুমমেট আর্থার ওয়োর্সলি একজন সাক্ষির নৌকায় করে হাডসন নদী পর্যন্ত যেতেন। ধ্বনিবর্ধক যন্ত্র ব্যবহার করে তারা সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে তীরবর্তী লোকেদের কাছে রাজ্যের বার্তা ঘোষণা করতেন।

ভাই সুইংগ্যাল ১৯১০ সালের ৬ই নভেম্বর নেব্রাসকার লিংকনে জন্মগ্রহণ করেন কিন্তু কিছুদিন পর তার পরিবার ইয়ুটোর সল্ট লেক সিটিতে চলে যান। সেখানে ১৯১৩ সালে তার বাবামা বাইবেল ছাত্র হন, যে নামে যিহোবার সাক্ষিরা তখন পরিচিত ছিলেন। বছরের পর বছর ধরে সেখানে সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয় ব্রুকলিন থেকে অতিথি বক্তারা যেতেন এবং সুইংগ্যাল পরিবার সেই ভাইদের প্রতি আতিথেয়তা দেখাতেন আর এই ব্যক্তিরা ভাই লিম্যানের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিলেন। ১৯২৩ সালে ১২ বছর বয়সে ঈশ্বরের প্রতি তার উৎসর্গীকরণের প্রতীকস্বরূপ তিনি জলে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন।

ব্রুকলিন বেথেলে ২৬ বছরেরও বেশি সময় অবিবাহিত ব্যক্তি হিসেবে সেবা করার পর ভাই লিম্যানের জীবন সমৃদ্ধ হয়েছিল, যখন ১৯৫৬ সালের ৮ই জুন তিনি ক্রিস্টেল জারচারকে বিয়ে করেন। সবসময় তাদেরকে একসঙ্গে দেখা যেত ও ১৯৯৮ সালে ক্রিস্টেলের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তারা দুজনে একসঙ্গে প্রচার করেছিলেন। প্রায় তিন বছর আগে ক্রিস্টেলের স্ট্রোক হয় ও এর ফলে তিনি একেবারেই হাঁটতে চলতে পারতেন না। ভাই লিম্যান রোজ যেভাবে তার স্ত্রীর যত্ন নিতেন তা ছিল স্ত্রীর প্রতি গভীর অনুরাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা দেখে সবাই উৎসাহ পেত। বিশেষ করে প্রায়ই দেখা যেত যে, ক্রিস্টেল কাছাকাছি এলাকাগুলোতে ফুটপাতের পথচারীদের কাছে প্রহরীদুর্গসচেতন থাক! পত্রিকা দেওয়ার সময় তার হুইল চেয়ারটাকে ভাই লিম্যান প্রেমের সঙ্গে ঠেলে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন।

ভাই সুইংগ্যাল উদার মনের ও আন্তরিক ব্যক্তি ছিলেন। যারা তাকে চিনতেন সকলের কাছে তিনি খুব প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। তার বাবামায়ের মতো তারও যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে স্বর্গীয় জীবনে বেঁচে থাকার বাইবেল-ভিত্তিক আশা ছিল। আর আমরা নিশ্চিত যে তার এই আশা এখন বাস্তবায়িত হয়েছে।—১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৮; প্রকাশিত বাক্য ১৪:১৩.

[পাদটীকা]

^ এর মানে হল, কাজ করতে করতে মারা যাওয়া।

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

ভাই সুইংগ্যাল প্রায় ২৫ বছর কালি তৈরির বিভাগে কাজ করেছিলেন

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

লিম্যান ও ক্রিস্টেলকে সবসময় একসঙ্গে দেখা যেত