ঈশ্বর তার চোখের জল মুছে দিয়েছেন
রাজ্য ঘোষণাকারীরা বিবৃতি দেয়
ঈশ্বর তার চোখের জল মুছে দিয়েছেন
যেসব লোকেরা তাদের জীবনধারা পালটে যিহোবার ব্যবস্থা ও নীতিগুলোর সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করেন, তারা অনেক আশীর্বাদ পান। যদিও প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো করা সবসময় সহজ হয় না কিন্তু তা করার জন্য চাইলেই সাহায্য এবং উৎসাহ পাওয়া যায়। (গীতসংহিতা ৮৪:১১) নিচে দেওয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অভিজ্ঞতাটা থেকে তা দেখা যায়।
ফ্রান্সের একজন সাক্ষি বোন একবার ছুটি কাটানোর সময় কিম * নামে একজন দোকানের মালিককে পৃথিবীর জন্য যিহোবার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে জানান। এছাড়াও, তিনি তাকে আপনি পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তকাল বেঁচে থাকতে পারেন বইটাও দেন। সেই বইটার ওপর চোখ বুলানোর সময় কিম এই কথাগুলো দেখতে পান, “তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৪) স্মৃতির পাতা ঘেঁটে কিম বলেন, ‘এই পদ আমার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছিল। দোকানে সারাদিন আমার হাসিখুশি মুখ এবং আমাকে গল্প করতে দেখে কে জানে যে সন্ধ্যাবেলা ঘরে ফিরে কাঁদতে কাঁদতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি?’ তার দুঃখের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন: “একজন লোকের সঙ্গে আমি ১৮ বছর ধরে থেকেছি কিন্তু আমি একটুও সুখী ছিলাম না, কারণ সে আমাকে বিয়ে করতে চায়নি। আমি এইধরনের জীবনধারা পালটাতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার সঙ্গে অনেক দিন ধরে থাকায় সেই কথা বলার সাহস পাচ্ছিলাম না।”
কিছুদিন পর, লিন নামের এক যিহোবার সাক্ষির সঙ্গে কিম বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন। কিম বলেন: ‘বাইবেলের শিক্ষাগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য আমি অনেক আগ্রহী ছিলাম। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পরিবারের কাছ থেকে বিরোধিতা সত্ত্বেও, আমি আমার পূর্বপুরুষদের উপাসনা করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এছাড়াও, আমি আমাদের সম্পর্ককে বৈধ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার সঙ্গী তা করতে রাজি হয়নি। এই দুঃসময়ে ফ্রান্সের একজন সাক্ষি সবসময় আমাকে বাইবেল সাহিত্যাদি পাঠাতেন এবং লিন আমাকে অনেক উৎসাহ দিতেন। এই বোনদের ধৈর্য এবং প্রেমময় সাহায্য আমাকে ততদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে সাহায্য করেছিল, যতদিন পর্যন্ত না আমি আমার সঙ্গীর আসল রূপ দেখতে পেয়েছিলাম। আমি জানতে পেরেছিলাম যে, তার ৫ জন “স্ত্রী” এবং ২৫ জন ছেলেমেয়ে আছে। আর এই বিষয়টাই আমাকে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার মতো সাহস জুগিয়েছিল।
“বিরাট আরামদায়ক বাড়ি ছেড়ে একটা ছোট্ট আ্যপার্টমেন্টে চলে আসা খুব সহজ ছিল না। এছাড়াও, আমার প্রাক্তন সঙ্গী তার কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিত, এমনকি আমি যখন ফিরে যেতে রাজি হইনি, তখন সে আমাকে এসিড দিয়ে চেহারা নষ্ট করে দেওয়ার ভয়ও দেখিয়েছিল। যিহোবার সাহায্যে যা ঠিক, তা আমি করতে পেরেছিলাম।” কিম উন্নতি করে চলেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাসে বাপ্তিস্ম নেন। এছাড়াও, তার দুবোন এবং তার কিশোর বয়সী ছেলে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন।
কিম বলেন, ‘আমি ভাবতাম যে আমার জীবনে কোন আশা নেই। কিন্তু, আজকে আমি সুখী এবং রাতে শুয়ে শুয়ে আর চোখের জলে বুক ভাসাই না। যিহোবা আমার চোখের জল মুছে দিয়েছেন।’
[পাদটীকা]
^ নামগুলো পালটে দেওয়া হয়েছে।