সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোবার সেবায় বিস্ময়ে ভরা এক জীবন

যিহোবার সেবায় বিস্ময়ে ভরা এক জীবন

জীবন কাহিনী

যিহোবার সেবায় বিস্ময়ে ভরা এক জীবন

বলেছেন এরিক ও হেজেল বেভেরিজ

“আমি আপনাকে ছমাসের জন্য জেলে পাঠাচ্ছি।” এই কথাগুলো আমার কানে কেবল বাজছিল আর আমাকে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারের স্ট্রেঞ্জওয়েজ জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সময়টা ছিল ১৯৫০ সালের ডিসেম্বর মাস আর আমার বয়স তখন ১৯ বছর। মাত্র অল্প কিছুদিন আগে আমি আমার যুবক বয়সের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর একটার মুখোমুখি হয়েছিলাম আর তা ছিল আমি বাধ্যতামূলক সামরিক কাজে যোগ দিতে অস্বীকার করেছি।—২ করিন্থীয় ১০:৩-৫.

 আমি যিহোবার সাক্ষিদের একজন পূর্ণ-সময়ের পরিচারক ছিলাম আর এর মানে ছিল সামরিক কাজে কোনরকম জড়িত না থাকা কিন্তু ব্রিটিশ আইন আমাদের কাজকে মেনে নেয়নি। তাই একা আমাকে জেলে পাঠানো হয়। আর সেখানে বসে আমি আমার বাবার কথা মনে করেছিলাম। কারণ সরাসরি না হলেও একরকম, তার জন্যই আমাকে জেলে যেতে হয়েছিল।

এর আগে আপনাদের বলে নিই যে, আমার বাবা ইয়র্কশিয়ারের একজন জেল অফিসার ছিলেন, যিনি বিশ্বাসে দৃঢ় ও নীতিবান ব্যক্তি ছিলেন। সেনাবাহিনী এবং জেল অফিসার হিসেবে তার অভিজ্ঞতার দরুন তিনি ক্যাথলিক ধর্মের ঘোর বিরোধী ছিলেন। ১৯৩০ দশকের গোড়ার দিকে সাক্ষিদের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল, যখন তিনি তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দরজার কাছে গিয়েছিলেন ও তাদের কয়েকটা বইপত্র নিয়ে ফিরে এসেছিলেন! পরে তিনি সান্ত্বনা (ইংরেজি) (এখন যেটা সচেতন থাক!) পত্রিকার গ্রাহক হয়েছিলেন। গ্রাহকভুক্তি পুনর্নবীকরণ করার জন্য তাকে উৎসাহিত করতে সাক্ষিরা প্রতি বছর তার কাছে আসতেন। আমার বয়স যখন প্রায় ১৫ বছর, তখন তারা বাবার সঙ্গে আরেকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন আর সাক্ষিদের সঙ্গে আমি একমত হই। সেই সময়ই আমি বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেছিলাম।

১৯৪৯ সালের মার্চ মাসে ১৭ বছর বয়সে, যিহোবার কাছে আমার উৎসর্গীকরণের প্রতীক হিসেবে আমি বাপ্তিস্ম নিই। পরে সেই বছর, কিছুদিন আগে ফিরে আসা গিলিয়েড মিশনারি স্কুলের গ্র্যাজুয়েট, জন এবং মাইকেল চারুকের সঙ্গে আমার দেখা হয়, যারা তখন নাইজিরিয়ায় যাচ্ছিলেন। মিশনারি কাজের প্রতি তাদের মনোভাব দেখে আমি খুবই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তারা এটা জানুন বা না-ই জানুন, তারাই কিন্তু আমার হৃদয়ে মিশনারি কাজের মনোভাব গেঁথে দিয়েছিলেন।

বাইবেল অধ্যয়ন করার সময়, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার আগ্রহ হারাই। লন্ডনে কাস্টমস্‌ ও এক্সাইজ অফিসে কাজ করার জন্য বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার এক বছরের মধ্যে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, সরকারি কাজ করে আমি ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে চলতে পারব না। তাই আমি যখন চাকরি ছেড়ে দিই, তখন আমার একজন অভিজ্ঞ সহকর্মী “মনের আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করে এমন কাজ” ছেড়ে দেওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।

এর আগে আমি আরেকটা পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিলাম—যেটা ছিল, কীভাবে আমি আমার বাবাকে বলব যে পূর্ণ-সময়ের পরিচারক হওয়ার জন্য আমি আমার চাকরি ছেড়ে দিতে চাই। ছুটির দিনে এক সন্ধ্যায় আমি ঘরে ছিলাম ও সেদিনই আমি আসল কথাটা জানিয়ে দিয়েছিলাম। বাবা কী প্রতিক্রিয়া দেখান, তা জানার জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি শুধু এটুকুই বলেছিলেন: “তুমি যে সিদ্ধান্ত নেবে তার পরিণতি তোমাকেই ভোগ করতে হবে। কিন্তু ব্যর্থ হলে, আমার কাছে ফিরে এসো না।” ১৯৫০ সালের ১লা জানুয়ারিতে আমি ডায়রিতে এই কথাগুলো লিখেছিলাম: “বাবাকে আমি অগ্রগামীর কাজের বিষয়ে বলেছি। কিন্তু তিনি যে যুক্তিযুক্ত ও সাহায্যপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছিলেন, সেই সম্বন্ধে আমার কোন ধারণাই ছিল না। তার দয়া দেখে আমি নিজেকে সামলাতে না পেরে কেঁদে দিয়েছিলাম।” আমি সরকারি কাজে ইস্তফা দিই আর পূর্ণ-সময়ের অগ্রগামীর কাজ গ্রহণ করি।

একটা “ছোট ঘরে” থাকা

এরপর ঈশ্বরের প্রতি আমার ভক্তির বিষয়ে পরের পরীক্ষাটা আসে। ওয়েলস থেকে আসা একজন সহ খ্রীষ্টান, লয়েড গ্রিফিথের সঙ্গে ল্যাঙ্কাশিয়ারে একটা “ছোট ঘরে” আমাকে থাকতে দেওয়া হয়। সেই ছোট্ট ঘর সম্বন্ধে নানা জল্পনাকল্পনা করে আমি এক প্রাণহীন, স্যাঁতসেঁতে শহর ব্যাকআপে এসে পৌঁছাই। শীঘ্রিই আমার সেই স্বপ্ন ভেঙে যায় যখন আমি দেখি যে, সেই ছোট্ট ঘরটা মাটির নিচে ছিল। সেখানে রাতে ইঁদুর ও আরশোলা আমাদের সঙ্গ দিত। আমি আমার মন পালটে ফেলেছিলাম ও মনে মনে ঠিকই করে ফেলেছিলাম যে ঘরে ফিরে যাব। কিন্তু, একান্তে প্রার্থনায় আমি এই পরীক্ষার মোকাবিলা করার জন্য সাহায্য চেয়েছিলাম। হঠাৎ করে, আমার মনে হয় যেন আমি একধরনের শান্তি অনুভব করেছি আর তাই এই অবস্থাকে অন্যভাবে দেখতে শুরু করি। আমার এই কাজ যিহোবার সংগঠন থেকে ছিল। সাহায্যের জন্য আমি যিহোবার ওপর আস্থা রাখব। আমি কতই না কৃতজ্ঞ যে এই পরিস্থিতিকে আমি সহ্য করতে পেরেছিলাম, কারণ এর থেকে সরে গেলে তা হয়তো আমার জীবনকে চিরকালের জন্য পালটে দিত!—যিশাইয় ২৬:৩, ৪.

সৈন্যদলে যোগ দিতে অস্বীকার করায় আমাকে জেলে পাঠানো হয় আর এর আগে প্রায় নমাস আমি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মন্দা বিরাজমান রোসেনডাল উপত্যকায় প্রচার করেছিলাম। ঞ্জওয়েজ জেলে দুসপ্তা থাকার পর, আমাকে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলের লুয়িস জেলে পাঠানো হয়। শেষ পর্যন্ত সেখানে আমরা পাঁচজন সাক্ষি একসঙ্গে ছিলাম আর আমরা জেলের একটা কক্ষে খ্রীষ্টের মৃত্যুর স্মরণার্থক দিবস পালন করতে পেরেছিলাম।

বাবা আমাকে একবার দেখতে এসেছিলেন। সেটা ছিল তার অহংকারের পরীক্ষা—একজন সুপরিচিত জেল অফিসার তার জেলবন্দি ছেলেকে দেখতে এসেছেন! বাবার এই দেখতে আসার জন্য আমি সবসময় তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। অবশেষে, ১৯৫১ সালের এপ্রিল মাসে আমি ছাড়া পাই।

লুয়িস জেল থেকে ছাড়া পেয়ে, ট্রেনে করে আমি ওয়েলসের কারডিফে যাই, যেখানে আমার বাবা তখনও জেলের প্রধান অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আমিই ছিলাম সবচেয়ে বড় ছেলে। নিজের ভরণপোষণ ও অগ্রগামীর কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে একটা পার্টটাইমের কাজ খুঁজতে হয়েছিল। আমি একটা কাপড়ের দোকানে কাজ পেয়েছিলাম কিন্তু আমার জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল খ্রীষ্টীয় পরিচর্যা। এই সময় আমাদের মা আমাদেরকে ছেড়ে চলে যান। বাবা ও আমাদের জন্য তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা ছিল, আমাদের ভাইবোনদের বয়স ৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে ছিল। দুঃখের বিষয়, আমাদের বাবামার মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।

যিনি একজন ভাল স্ত্রী খুঁজে পান . . .

মণ্ডলীতে বেশ কয়েকজন অগ্রগামী ছিলেন। এদের মধ্যে একজন বোন চাকরি ও প্রচার করার জন্য প্রতিদিন রোন্ডা উপত্যকার কয়লাখনি থেকে এখানে আসত। তার নাম ছিল হেজেল গ্রিন এবং সে একজন চমৎকার অগ্রগামী ছিল। হেজেল আমার চেয়ে আরও অনেক আগে সত্য জেনেছিল কারণ তার বাবামা ১৯২০ দশক থেকে বাইবেল ছাত্রদের (এখন যিহোবার সাক্ষি নামে পরিচিত) সভাগুলোতে যোগ দিতেন। কিন্তু এবার তার নিজের মুখ থেকেই শুনুন।

“১৯৪৪ সালে রিলিজ্‌ন্‌ রিপ্স দ্যা ওয়ার্লবিন্ড নামে পুস্তিকাটা পড়ার আগে পর্যন্ত আমি বাইবেলকে গুরুত্বের সঙ্গে নিইনি। আমার মা আমাকে কারডিফে এক সীমা অধিবেশনে যাওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন। বাইবেল সম্বন্ধে একেবারে সামান্য জ্ঞান নিয়ে অথচ গলায় একটা প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে প্রধান বিক্রয়কেন্দ্রে আমি জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে থাকি। পাদরি ও অন্যদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে হয়রানি হওয়া সত্ত্বেও, আমি তা সহ্য করেছিলাম। ১৯৪৬ সালে আমি বাপ্তিস্ম নিই আর সেই বছরের ডিসেম্বর মাসে অগ্রগামীর কাজ শুরু করি। এরপর ১৯৫১ সালে জেল থেকে সবেমাত্র ছাড়া পাওয়া একজন যুবক অগ্রগামী কারডিফে আসে। তার নাম ছিল এরিক।

“আমরা একসঙ্গে প্রচারে যেতাম। আমরা দুজনে একে অন্যের সঙ্গে ভালভাবেই মানিয়ে নিয়েছিলাম। আমাদের দুজনের জীবনেই এক লক্ষ্য ছিল আর তা হল, রাজ্যের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাই, ১৯৫২ সালের ডিসেম্বর মাসে আমরা বিয়ে করি। আমরা দুজনেই পূর্ণ-সময়ের কাজ করতাম বলে আমাদের আয় খুব একটা বেশি ছিল না কিন্তু তবুও, আমাদের কখনও মৌলিক জিনিসগুলোর অভাব হয়নি। একজন সাক্ষি বোনের মুদির দোকান ছিল আর তার কাছ থেকে আমরা কখনও কখনও উপহার হিসেবে জ্যাম অথবা সাবান পেতাম আর ঠিক যখন আমাদের সেগুলোর দরকার ছিল ঠিক তখনই পেতাম! এইরকম দরকারি সাহায্যগুলোর জন্য আমরা খুবই কৃতজ্ঞ ছিলাম। কিন্তু, এর চেয়েও আরও বড় বড় বিস্ময় আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।”

এক বিস্ময়, যা আমাদের জীবনকে পালটে দিয়েছিল

১৯৫৪ সালের নভেম্বর মাসে, হেজেল ও আমি অপ্রত্যাশিতভাবে এক বিস্ময়কর বিষয় জানতে পারি আর সেটা ছিল লন্ডনে যিহোবার সাক্ষিদের শাখা অফিস থেকে ভ্রমণ অধ্যক্ষের অর্থাৎ প্রতি সপ্তায় বিভিন্ন মণ্ডলীতে পরিদর্শন করার জন্য একটা আবেদনপত্র। আমরা একেবারে নিশ্চিত ছিলাম যে এটা ভুল করে আমাদের কাছে এসেছে, তাই আমরা মণ্ডলীর কাউকে সে কথা জানাইনি। কিন্তু, আমি ফর্মটা পূরণ করে পাঠিয়ে দিই আর উদ্বেগ নিয়ে উত্তরের অপেক্ষায় থাকি। কয়েকদিন পর, উত্তর আসে: “ট্রেনিংয়ের জন্য লন্ডনে চলে আসুন।”

আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, লন্ডন অফিসে মাত্র ২৩ বছর বয়সে আমি এমন সব চমৎকার ভাইদের সঙ্গে ছিলাম, যারা আমার চেয়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞানে অনেক অনেক বেশি পরিপক্ব ছিলেন। তারা হলেন প্রাইস হিউস্‌, এমলিন উইনস্‌, আরনি বিভোর, আরনি গিভার, বব গাফ, গ্লিন পার, স্টান এবং মার্টিন উডবার্ন সহ আরও অনেকে আর এদের বেশির ভাগই মারা গেছেন। তারা ব্রিটেনে ১৯৪০ ও ১৯৫০ দশকে উদ্যোগ ও আনুগত্যের এক দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন।

ইংল্যান্ডে সীমার কাজ, কখনও একঘেঁয়ে মনে হয়নি

১৯৫৪/৫৫ সালে প্রচণ্ড শীতে তুষারপাতের মধ্যে আমরা ভ্রমণের কাজ শুরু করি। আমাদেরকে ইংল্যান্ডের সমতল এলাকা পূর্ব আ্যংলিয়াতে পাঠানো হয় আর সেখানে উত্তর সাগরের প্রচণ্ড ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে চলে। সেই সময় ব্রিটেনে মাত্র ৩১,০০০ জন সাক্ষি ছিলেন। প্রথম সীমায় গিয়ে কাজ শেখা আমাদের জন্য এক কঠিন অভিজ্ঞতা ছিল; এছাড়া যে ভাইদেরকে আমরা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম তাদের কাছেও তা এত সহজ ছিল না। আমার অভিজ্ঞতা কম ছিল আর ইয়র্কশিয়ারের লোক হওয়ায় আমি খুব স্পষ্টবাদী ও কাঠখোট্টা ছিলাম, ফলে কখনও কখনও আমার ব্যবহারে ভাইরা কষ্ট পেতেন। বছরের পর বছর ধরে, আমি শিখেছিলাম যে দক্ষতার চেয়ে দয়া দেখানো বেশি জরুরি আর কার্য-পরিচালনার প্রণালীগুলোর চেয়ে লোকেরা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি এখনও চেষ্টা করে চলেছি কিন্তু অন্যদেরকে বিশ্রাম দেওয়া সম্বন্ধে যীশুর উদাহরণ সফলতার সঙ্গে সবসময় মেনে চলতে পারি না।—মথি ১১:২৮-৩০.

পূর্ব আ্যংলিয়াতে দেড় বছর থাকার পর, আমাদেরকে ইংল্যান্ডের উত্তরপূর্বে নিউক্যাসল আপন টাইন ও উত্তর নর্দাম্বারল্যান্ডে সীমার কাজ করতে দেওয়া হয়। সেই মনোরম অঞ্চলের আন্তরিক লোকেদেরকে আমি ভালবেসেছিলাম। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সিয়াটেল থেকে আসা জেলা অধ্যক্ষ ডন ওয়ার্ডের পরিদর্শন আমাকে অনেক সাহায্য করেছিল। তিনি ২০তম গিলিয়েড ক্লাস থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন। বক্তৃতা দেওয়ার সময় আমি খুব দ্রুত বিভিন্ন তথ্য জানাতাম। তিনি আমাকে ধীরে ধীরে, থেমে এবং কীভাবে শিক্ষা দিতে হয় তা শিখিয়েছেন।

আরেকটা বিস্ময়, যা আমাদের জীবনকে পালটে দিয়েছিল

১৯৫৮ সালে আমরা একটা চিঠি পাই, যেটা আমাদের জীবনকে পালটে দিয়েছিল। আমাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের দক্ষিণ ল্যানসিংয়ে গিলিয়েড স্কুলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমরা আমাদের ১৯৩৫ অস্টিন সেভেন নামে ছোট গাড়িটা বিক্রি করে নিউ ইয়র্ক যাওয়ার টিকিট কাটি। প্রথমে আমরা নিউ ইয়র্ক শহরে যিহোবার সাক্ষিদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিই। দক্ষিণে গিলিয়েড স্কুলে যাওয়ার আগে ছমাস অগ্রগামীর কাজ করার জন্য আমরা সেখান থেকে অন্টারিওর পিটারবোরোতে যাই।

শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন আ্যলবার্ট শ্রোডার, যিনি এখন পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য ও সেইসঙ্গে ছিলেন ম্যাক্সওয়েল ফ্রেন্ড এবং জ্যাক রেডফোর্ড, যারা অনেক আগে মারা গেছেন। ১৪টা দেশ থেকে আসা ৮২ জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করা খুবই গঠনমূলক ছিল। আমরা ধীরে ধীরে অন্যদের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করি। ইংরেজি শেখার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন, এমন বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করে আমরা অন্তত এটুকু আগেই বুঝতে পেরেছিলাম যে, অন্য ভাষা শিখতে গেলে আমাদেরকে কষ্ট পোহাতে হবে। পাঁচ মাসের মধ্যে আমরা আমাদের ট্রেনিং শেষ করেছিলাম আর আমাদেরকে ২৭টা দেশে পাঠানো হয়েছিল। এরপর গ্র্যাজুয়েশনের দিন আসে আর কয়েকদিনের মধ্যে আমরা নিউ ইর্য়ক শহরে চলে যাই ও সেখানে গিয়ে কুইন এলিজাবেথ জাহাজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি, যেটা আমাদেরকে ইউরোপে নিয়ে যাবে।

বিদেশে আমাদের প্রথম কার্যভার

আমাদের কোথায় কার্যভার দেওয়া হয়েছিল? পর্তুগালে! ১৯৫৯ সালের নভেম্বর মাসে আমরা লিসবনে পৌঁছাই। এখানেই নতুন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পরীক্ষা শুরু হয়। ১৯৫৯ সালে পর্তুগালের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৯০ লক্ষ আর সেখানে ৬৪৩ জন সক্রিয় সাক্ষি ছিলেন। কিন্তু, আইনগতভাবে আমাদের প্রচার কাজকে স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। যদিও আমাদের কিংডম হল ছিল কিন্তু বাইরের দিকে আমরা কোন সাইনবোর্ড লাগাতে পারতাম না।

মিশনারি এলসা পিকোনির কাছে পর্তুগিজ ভাষা শেখার পর, হেজেল ও আমি লিসবন, ফ্যারু, ইভোরা এবং বেইজার চারপাশের মণ্ডলী এবং দলগুলোকে পরিদর্শন করি। এরপর ১৯৬১ সালে পরিস্থিতি পালটাতে থাকে। আমি জোয়াও গনসালভেস ম্যাটেউস নামে এক যুবক ব্যক্তির সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করছিলাম। তিনি সামরিক কাজের ব্যাপারে একজন নিরপেক্ষ খ্রীষ্টান থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর অল্প কিছু দিন পরে আমাকে জেরা করার জন্য পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে ডাকা হয়। সত্যিই বিস্ময়কর! কয়েকদিন পর আমাদের জানানো হয় যে ৩০ দিনের মধ্যে আমাদেরকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে! সহ মিশনারি এরিক ও ক্রিস্টিনা ব্রিটেন এবং ডমেনিক ও এলসা পিকোনির প্রতিও তাই ঘটে।

আদালতে আমার মামলা শুনানির জন্য আমি আবেদন জানিয়েছিলাম আর আমাদেরকে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কেন আমাদের এই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে, তা তিনি স্পষ্ট করে ও জোরালোভাবে আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছিলেন এবং এরপর তিনি একজনের নাম জানিয়েছিলেন আর সে হল, আমার বাইবেল ছাত্র জোয়াও গনসালভেস ম্যাটেউস! তিনি বলেছিলেন যে পর্তুগাল ব্রিটেনের মতো নয়, এখানে বিবেক ও ধর্মের কারণে প্রতিবাদ জানানোকে অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই আমাদেরকে পর্তুগাল ছাড়তে হয়েছিল আর আমি জোয়াওর সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ করতে পারিনি। এর ২৬ বছর পর, পর্তুগালে নতুন বেথেলের উৎসর্গীকরণ অনুষ্ঠানের সময় তাকে তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের সঙ্গে দেখতে পেয়ে আমরা কত আনন্দিতই না হয়েছিলাম! পর্তুগালে আমাদের পরিচর্যা বৃথা যায়নি!—১ করিন্থীয় ৩:৬-৯.

আমাদের পরের কার্যভার কোথায় ছিল? সেটাও ছিল এক বিস্ময়! প্রতিবেশী দেশ স্পেনে। ১৯৬২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চোখে জল নিয়ে আমরা লিসবনে গিয়ে ট্রেন ধরে মাদ্রিদের উদ্দেশে রওনা দিই।

আরেক সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া

স্পেনে আমাদেরকে গোপনে প্রচার ও সভাগুলো করার অভ্যাস করতে হয়েছিল। প্রচার করার সময় আমরা সাধারণত পরপর পাশাপাশি দুটো ঘরে কখনও প্রচার করতাম না। একটা ঘরে প্রচার করার পর আমরা অন্য রাস্তার অন্য আরেকটা বিল্ডিংয়ে চলে যেতাম। ফলে আমাদেরকে ধরা পুলিশ অথবা পুরোহিতদের জন্য মুশকিল হতো। ভুলে যাবেন না যে আমরা ফ্যাসিস্ট, ক্যাথলিক একনায়কতন্ত্র শাসনাধীনে ছিলাম যেখানে আমাদের প্রচার করা নিষেধ ছিল। আমাদেরকে যাতে বিদেশি হিসেবে চিনতে না পারে, সেইজন্য আমরা স্প্যানিশ নাম নিয়েছিলাম। আমার নাম ছিল পাবলো আর হেজেলের নাম ছিল হুয়ানা।

মাদ্রিদে কয়েক মাস থাকার পর, আমাদেরকে বার্সিলোনাতে সীমার কাজের জন্য পাঠানো হয়। আমরা সেই শহরে বিভিন্ন মণ্ডলী পরিদর্শন করি, প্রায়ই প্রত্যেকটা মণ্ডলীতে দুই অথবা তিন সপ্তা করে কাটাই। এখানে পরিদর্শন করতে এত বেশি সময় লাগার কারণ ছিল আমাদেরকে প্রত্যেকটা বুকস্টাডি দলকে পরিদর্শন করতে হয়েছিল, সেগুলো যেন একেকটা মণ্ডলীর মতো ছিল আর সাধারণত সপ্তায় দুটো দলকে পরিদর্শন করতে হতো।

এক অপ্রত্যাশিত পরীক্ষা

১৯৬৩ সালে আমাদেরকে স্পেনে জেলার কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। প্রায় ৩,০০০ জন সক্রিয় সাক্ষিদের মাঝে কাজ করার জন্য আমাদেরকে সেই সময়ে সেখানকার নটা সীমা পরিদর্শন করে পুরো দেশ শেষ করতে হয়েছিল। আমরা সেভিলের কাছে জঙ্গলে, হিহোনের কাছে একটা খামারে এবং মাদ্রিদ, বার্সিলোনার ও লগ্রোনোর কাছে নদীর ধারে গোপনে কয়েকটা উল্লেখযোগ্য সীমা অধিবেশন করেছিলাম।

সাবধানতা হিসেবে, ঘরে-ঘরে প্রচার করার সময় হঠাৎ করে কিছু ঘটে গেলে যাতে পালাতে পারি, সেইজন্য আমি কাছাকাছি রাস্তাগুলো দেখে রাখতাম। মাদ্রিদে একটা বিল্ডিংয়ের ওপর তলায় প্রচার করার সময়, আমি ও অন্য একজন সাক্ষি হঠাৎ করে নিচের তলা থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পাই। যখন আমরা নিচের তলায় নেমে আসি, তখন দেখি যে সেখানে এক দল কিশোরী রয়েছে, যারা ইহাস দি মারিয়া (মরিয়মের মেয়ে) নামে একটা ক্যাথলিক দলের সদস্য। তারা পাড়াপড়শিদের আমাদের সম্বন্ধে সতর্ক করে দিচ্ছিল। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি কারণ আমরা জানতাম যে আমাদের এখান থেকে এখনই চলে যেতে হবে নতুবা পুলিশ আমাদের ধরে ফেলবে। তাই তাড়াতাড়ি করে আমরা পালিয়ে গিয়েছিলাম!

স্পেনে সেই বছরগুলো রোমাঞ্চকর ছিল। বিশেষ অগ্রগামী সহ সেখানকার সমস্ত ভাইবোনদেরকে আমরা উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিলাম। তারা জেলে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার ও মণ্ডলী স্থাপন এবং ভাইবোনদের গড়ে তোলার জন্য ক্ষতিকে মাথা পেতে নিয়েছিলেন।

এছাড়া এই সময়ে, আমরা কিছু খারাপ খবরও পেয়েছিলাম। হেজেল জানায়: “১৯৬৪ সালে আমার মা, যিনি একজন বিশ্বস্ত সাক্ষি ছিলেন, তিনি মারা যান। তাকে হারানো খুবই দুঃখজনক ছিল, এমনকি শেষবারের মতো তার সঙ্গে দেখাও করতে পারিনি। মিশনারি কাজের জন্য এটা ছিল একটা ত্যাগস্বীকার।”

অবশেষে স্বাধীনতা

অনেক বছর ধরে তাড়না করার পর, অবশেষে ১৯৭০ সালের জুলাই মাসে ফ্রাঙ্কো সরকার আইনগতভাবে আমাদের কাজের স্বীকৃতি দেয়। হেজেল ও আমি কিংডম হলগুলো খোলার সময় খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম, এর প্রথমটা ছিল মাদ্রিদে ও দ্বিতীয়টা বার্সিলোনার লিসেপসে। সেগুলোতে সবসময় বড় বড় হরফে লেখা থাকত ও তা প্রায়ই জ্বলজ্বল করত। আমরা চেয়েছিলাম লোকেরা জানুক যে আমরা আইনগতভাবে স্বীকৃতি পেয়েছি ও এখানেই থাকব! ১৯৭২ সালে স্পেনে প্রায় ১৭,০০০ জন সাক্ষি ছিলেন।

এই সময়ে, আমি ইংল্যান্ড থেকে খুবই উৎসাহজনক কিছু খবর পাই। ১৯৬৯ সালে আমার বাবা স্পেনে এসেছিলেন। স্প্যানিশ সাক্ষিরা তার সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করেছিলেন, তা দেখে তিনি এতই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন যে, ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে তিনি বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন। এরপর ১৯৭১ সালে আমাকে জানানো হয়েছিল যে বাবা বাপ্তিস্ম নিয়েছেন! আমরা যখন বাড়িতে গিয়েছিলাম সেই সময়টা খুবই আবেগময় মুহূর্ত ছিল আর আমার একজন খ্রীষ্টান ভাই হিসেবে আমাদের খাবারের আগে তিনি প্রার্থনা করেছিলেন। আমি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। আমার ভাই বব ও তার স্ত্রী আইরিস, ১৯৫৮ সালে সাক্ষি হয়েছিল। তাদের ছেলে ফিলিপ এখন তার স্ত্রী জেনের সঙ্গে স্পেনে সীমা অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করছে। তাদেরকে সেই চমৎকার দেশে সেবা করতে দেখে আমরা খুবই আনন্দিত।

আমাদের জন্য একেবারে নতুন বিস্ময়

১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, আঞ্চলিক অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য স্পেন পরিদর্শন করতে আসেন। তিনি আমার সঙ্গে পরিচর্যা করতে চান দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। আমি জানতাম না যে তিনি আমাকে পরীক্ষা করছিলেন! এরপর সেপ্টেম্বর মাসে, আমাদেরকে ব্রুকলিনে নিউ ইয়র্কের বিশ্বপ্রধান কার্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়! আমরা বিস্ময়ে একেবারে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমরা সেই আমন্ত্রণকে গ্রহণ করেছিলাম, যদিও স্পেনে আমাদের ভাইদের ছেড়ে যাওয়া খুবই দুঃখজনক ছিল। সেই সময়, সেখানে ৪৮,০০০ জন সাক্ষি ছিলেন!

স্পেন ছেড়ে চলে আসার সময় এক ভাই আমাকে একটা পকেট ঘড়ি উপহার দেন। এর ওপরে তিনি দুটো শাস্ত্রপদ লিখে দিয়েছিলেন—“লূকাস ১৬:১০; লূকাস ১৭:১০.” তিনি বলেছিলেন যে সেগুলো ছিল আমার মূল শাস্ত্রপদ। লূক ১৬:১০ পদ জোর দিয়ে বলে যে ছোট ছোট বিষয়গুলোতে আমাদের বিশ্বস্ত থাকা উচিত আর লূক ১৭:১০ পদ বলে যে আমরা “অনুপযোগী দাস” আর তাই আমাদের অহংকার করার কোন কারণ নেই। আমি সবসময় উপলব্ধি করেছি যে যিহোবার সেবায় আমরা যাই-ই করি না কেন, উৎসর্গীকৃত খ্রীষ্টান হিসেবে তা আমাদের কর্তব্য।

স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত এক বিস্ময়

১৯৯০ সালে, আমার হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। পরিশেষে, আটকে যাওয়া একটা ধমনীকে আবার খুলে দেওয়ার জন্য আমার হার্টে একটা স্টেন্ট ঢোকানো হয়। এই শারীরিক দুর্বলতার সময়, হেজেল নানাভাবে আমাকে সাহায্য করেছে। সে আমার ব্যাগ ও সুটকেস বহন করেছে কারণ আমি এত দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম যে আমার পক্ষে তা বয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব ছিল। এরপর ২০০০ সালের মে মাসে, আমার হৃদযন্ত্রে একটা পেসমেকার বসানো হয়। এটা লাগানোর পর আমি অনেকটা ভাল বোধ করেছিলাম!

বিগত ৫০ বছরেরও বেশি বছর ধরে, আমি ও হেজেল দেখেছি যে যিহোবার হাত খাটো নয় আর তাই তিনি আমাদের নিরূপিত সময়ে নয় কিন্তু তাঁর নিরূপিত সময়ে তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেন। (যিশাইয় ৫৯:১; হবক্‌কূক্‌ ২:৩) আমাদের জীবনে আনন্দপূর্ণ অনেক বিস্ময় ও সেইসঙ্গে কিছু দুঃখজনক ঘটনাও ছিল কিন্তু এই সমস্ত কিছুর মধ্যে দিয়ে যিহোবা আমাদেরকে টিকিয়ে রেখেছেন ও শক্তি জুগিয়েছেন। যিহোবার সাক্ষিদের বিশ্বপ্রধান কার্যালয়ে প্রতিদিন পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে মেলামেশা করার সুযোগ আমাদের রয়েছে। কখনও কখনও আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করি, ‘আমরা কি সত্যিই এখানে আছি?’ এটা এক অযাচিত করুণা। (২ করিন্থীয় ১২:৯) আমরা বিশ্বাস করি যে শয়তানের চাতুরিগুলো থেকে যিহোবা আমাদেরকে রক্ষা করে যাবেন, যাতে আমরা পৃথিবীতে তাঁর ধার্মিক শাসনাধীনে জীবন উপভোগ করতে পারি।—ইফিষীয় ৬:১১-১৮; প্রকাশিত বাক্য ২১:১-৪.

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

ম্যানচেস্টারে স্ট্রেজওয়েজ জেল যেখানে আমাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল

[২৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

ইংল্যান্ডে সীমার কাজ করার সময় আমাদের অস্টিন সেভেন গাড়িতে

[২৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

১৯৬২ সালে স্পেনের মাদ্রিদের থরসিদিলয়ায় এক গোপন অধিবেশনে

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

ব্রুকলিনে বাইবেল সাহিত্যাদি রাখা টেবিল