সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল

 নিয়ম-সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাওয়ার দুই বহন-দণ্ডকে কীভাবে রাখা হতো কারণ ১ রাজাবলি ৮:৮ পদ ইঙ্গিত করে যে, সেগুলো পবিত্র স্থান থেকে দেখা যেত?

যিহোবা যখন মোশিকে প্রান্তরে সমাগম তাম্বুর নকশা দিয়েছিলেন, তখন নিয়ম-সিন্দুক ছিল এক প্রধান বিষয়। চতুষ্কোণ বিশিষ্ট স্বর্ণে মোড়া এই সিন্দুকে ব্যবস্থা ফলক ও অন্যান্য জিনিস থাকত। এটাকে অন্তর্গৃহে, অতি পবিত্র স্থানে রাখা হতো। সিন্দুকের পাপাবরণের ওপর স্বর্ণের তৈরি ডানাবিশিষ্ট দুটো করূব ছিল। সিন্দুকের প্রত্যেকটা দিকে কড়া ছিল যাতে শিটীম কাঠের তৈরি স্বর্ণে মোড়ানো দুটো বহন-দণ্ডকে বয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। তাই, এটা যুক্তিযুক্ত যে বহন-দণ্ডগুলোকে সিন্দুকের দৈর্ঘ্য বরাবর কড়ায় বসানো হতো। আর এই কারণেই, সমাগম তাম্বুর অতি পবিত্র স্থানে, সিন্দুকটাকে পূর্বদিকে মুখ করে রাখা হলে বহন-দণ্ডগুলো উত্তর-দক্ষিণে আড়াআড়ি হয়ে যেত। পরবর্তীকালে শলোমনের নির্মিত মন্দিরে যখন সিন্দুকটা ছিল, তখনও সেটা এভাবেই রাখা হতো।—যাত্রাপুস্তক ২৫:১০-২২; ৩৭:৪-৯; ৪০:১৭-২১. *

একটা তিরস্করিণী পবিত্র (বাইরের প্রকোষ্ঠ) স্থান থেকে অতি পবিত্র স্থানকে আলাদা করেছিল। পবিত্র স্থান থেকে যাজকেরা অতি পবিত্র স্থানে সিন্দুকটাকে দেখতে পেতেন না, যেটার ওপর ঈশ্বরের উপস্থিতিকে বোঝাতো। (ইব্রীয় ৯:১-৭) তাই, ১ রাজাবলি ৮:৮ পদটা হয়তো বোঝা কঠিন বলে মনে হতে পারে: “দুই বহন-দণ্ড এমন লম্বা ছিল যে, তাহার অগ্রভাগ অন্তর্গৃহের সম্মুখে পবিত্র স্থান হইতে দৃষ্ট হইত, তথাপি তাহা বাহিরে দৃষ্ট হইত না।” ২ বংশাবলি ৫:৯ পদেও একই বিষয় বলা হয়েছে। তাহলে কীভাবে মন্দিরের পবিত্র স্থানে যে কেউই বহন-দণ্ডগুলোকে দেখতে পেতেন?

কেউ কেউ ধরে নিয়েছেন যে বহন-দণ্ডগুলো তিরস্করিণীকে স্পর্শ করত, যার ফলে এগুলোর একটু অংশ দেখা যেত। কিন্তু বহন-দণ্ডগুলো যদি তিরস্করিণীর বরাবর উত্তর-দক্ষিণে আড়াআড়িভাবে থেকে থাকে, তাহলে তা সম্ভব নয়। (গণনাপুস্তক ৩:৩৮) এর চেয়ে আরও যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা রয়েছে। তিরস্করিণী ও মন্দিরের দেওয়ালের মধ্যে যদি ফাঁক থাকত অথবা মহাযাজক যখন অতি পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতেন, তখন যদি সামান্য ফাঁক থেকে যেত, তাহলে বহন-দণ্ডগুলোকে দেখা যেতে পারত। আসলে তিরস্করিণীর জন্য সিন্দুকটা দেখা যেত না কিন্তু বহন-দণ্ডগুলো প্রত্যেক দিকে প্রসারিত হওয়ায় ফাঁকের মধ্যে দিয়ে হয়তো দেখা যেত। এই ব্যাখ্যা যুক্তিযুক্ত বলে মনে হলেও এটাই যে শেষ ব্যাখ্যা তা আমরা ধরে নেব না।

এটা স্পষ্ট যে, আরও অনেক বিষয় রয়েছে যা এখনও আমাদের শেখার আছে। প্রেরিত পৌল ইব্রীয়দের উদ্দেশে তার চিঠিতে কয়েকটা বিষয়ের কথা বলেছিলেন। এরপর তিনি বলেছিলেন: “এই সকলের সবিশেষ কথা বলা এখন নিষ্প্রয়োজন।” (ইব্রীয় ৯:৫) সমাগম তাম্বুর নকশা ও এর কাজ সম্বন্ধে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন এমন বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের যেমন মোশি, হারোণ, বৎসলেল এবং আরও অন্যান্যদের আসন্ন পুনরুত্থান তাদের কাছ থেকে আরও কিছু জানার রোমাঞ্চকর সুযোগ খুলে যাবে।—যাত্রাপুস্তক ৩৬:১.

[পাদটীকা]

^ এমনকি সিন্দুকটা যখন সমাগম তাম্বুতে রাখা থাকত, তখনও বহন-দণ্ডগুলোকে কড়া থেকে বের করা নিষেধ ছিল। ফলে, বহন-দণ্ডগুলোকে অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেত না। এছাড়া, সিন্দুককেও স্পর্শ করা নিষেধ ছিল; বহন-দণ্ডগুলোকে যদি কড়া থেকে বের করা হতো, তাহলে প্রত্যেকবার বয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় বহন-দণ্ডগুলোকে আবার কড়াগুলোর মধ্যে বসানোর জন্য পবিত্র সিন্দুককে হাত দিয়ে ঠিক করতে হতো। গণনাপুস্তক ৪:৬ পদে ‘বহনদণ্ড পরানো’ সম্বন্ধে যে মন্তব্য করা হয়েছে সেটা হয়তো এক নতুন শিবিরে ভারি সিন্দুকটাকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহন-দণ্ডগুলোকে সাজানো অথবা ঠিকঠাক করার প্রস্তুতিকে বোঝায়।