‘যিহোবার আশীর্ব্বাদই ধনবান করে’
‘যিহোবার আশীর্ব্বাদই ধনবান করে’
আমরা সবাই আশীর্বাদ পেতে চাই। আশীর্বাদ সুখ, মঙ্গল অথবা সমৃদ্ধি বাড়ায়। যেহেতু যিহোবা হলেন ‘সমস্ত উত্তম দান এবং সমস্ত সিদ্ধ বরের’ দাতা তাই সমস্ত প্রকৃত ও চিরস্থায়ী আশীর্বাদ আমাদের প্রেমময় সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসে। (যাকোব ১:১৭) সমস্ত মানবজাতির ওপর তিনি আশীর্বাদ বর্ষণ করেন, এমনকি যারা তাঁর সম্বন্ধে জানে না তাদেরও তিনি আশীর্বাদ করেন। যীশু তাঁর পিতা সম্বন্ধে বলেছিলেন: “তিনি ভাল মন্দ লোকদের উপরে আপনার সূর্য্য উদিত করেন, এবং ধার্ম্মিক অধার্ম্মিকগণের উপরে জল বর্ষান।” (মথি ৫:৪৫) কিন্তু, যিহোবাকে যারা ভালবাসে তাদেরকে তিনি বিশেষভাবে যত্ন নেন।—দ্বিতীয় বিবরণ ২৮:১-১৪; ইয়োব ১:১; ৪২:১২.
গীতরচক লিখেছিলেন: ‘যাহারা সিদ্ধতায় চলে, সদাপ্রভু তাহাদের মঙ্গল করিতে অস্বীকার করিবেন না।’ (গীতসংহিতা ৮৪:১১) হ্যাঁ, যারা যিহোবাকে সেবা করেন, তারা সমৃদ্ধ ও অর্থপূর্ণ জীবনযাপন করেন। তারা জানেন যে, ‘যিহোবার আশীর্ব্বাদই ধনবান করে, এবং তিনি তাহার সহিত মনোদুঃখ দেন না।’ বাইবেল আরও বলে: ‘তাঁহার [যিহোবার] আশীর্ব্বাদের পাত্রেরা দেশের অধিকারী হইবে।’ (হিতোপদেশ ১০:২২; গীতসংহিতা ৩৭:২২, ২৯) কত বড় আশীর্বাদের বিষয়ই না তা হবে!
কীভাবে আমরা যিহোবার আশীর্বাদ পেতে পারি? একটা উপায় হল, আমাদের এমন গুণাবলি গড়ে তুলতে হবে, যা তাঁকে খুশি করে। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩০:১৬, ১৯, ২০; মীখা ৬:৮) আর এটা আমরা যিহোবার প্রাচীন কালের তিনজন দাসের উদাহরণ থেকে দেখতে পারি।
যিহোবা তাঁর দাসদেরকে আশীর্বাদ করেন
নোহ ছিলেন ঈশ্বরের একজন উল্লেখযোগ্য দাস। আদিপুস্তক ৬:৮ পদে আমরা পড়ি: “নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইলেন।” কেন? কারণ নোহ বাধ্য ছিলেন। বিবরণ বলে: “নোহ ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন।” নোহ যিহোবার ধার্মিক নীতিগুলো ও তাঁর আজ্ঞাগুলো মেনে চলতেন। পৃথিবী যখন দৌরাত্ম্য এবং কলুষতায় ভরে গিয়েছিল, তখন নোহ “সেইরূপ করিলেন, ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারেই সকল কর্ম্ম করিলেন।” (আদিপুস্তক ৬:৯, ২২) এর ফলে যিহোবা তাকে “আপন পরিবারের ত্রাণার্থে এক জাহাজ” তৈরি করার আদেশ দিয়েছিলেন। (ইব্রীয় ১১:৭) এভাবেই নোহ ও তার পরিবার এবং তাদের মাধ্যমে মানবজাতি সেই বংশের ধ্বংস থেকে রক্ষা পেয়েছিল। আর নোহ পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার জন্য পুনরুত্থানের আশা নিয়ে মারা গিয়েছিলেন। তিনি কত আশীর্বাদই না পেয়েছিলেন!
অব্রাহামেরও এমন গুণাবলি ছিল, যা যিহোবাকে খুশি করেছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তার বিশ্বাস। (ইব্রীয় ১১:৮-১০) অব্রাহাম প্রথমে ঊর এবং পরে হারণের আরাম-আয়েশের জীবন ছেড়ে এসেছিলেন কারণ যিহোবার প্রতিজ্ঞার ওপর তার বিশ্বাস ছিল যে, তার বংশ অনেক বড় হবে এবং এর মাধ্যমে সমস্ত জাতি আশীর্বাদ পাবে। (আদিপুস্তক ১২:২, ৩) অনেক বছর ধরে পরীক্ষা সত্ত্বেও, তার বিশ্বাস পুরস্কৃত হয়েছিল যখন তার ছেলে ইস্হাকের জন্ম হয়েছিল। তার মাধ্যমে অব্রাহাম ঈশ্বরের মনোনীত জাতি ইস্রায়েলের এবং পরে মশীহের পূর্বপুরুষ হয়েছিলেন। (রোমীয় ৪:১৯-২১) এছাড়াও “যাহারা বিশ্বাস করে, তিনি তাহাদের সকলের পিতা” এবং তাকে “ঈশ্বরের বন্ধু” বলা হয়। (রোমীয় ৪:১১; যাকোব ২:২৩; গালাতীয় ৩:৭, ২৯) তিনি কত অর্থপূর্ণ জীবন উপভোগ করেছিলেন এবং কত আশীর্বাদই না পেয়েছিলেন!
ইব্রীয় ১১:২৭) মিদিয়নে ৪০ বছর থাকার পর বুড়ো বয়সে তিনি মিশরে আসেন এবং সেই সময়ের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ফরৌণের সামনে গিয়ে সাহসের সঙ্গে তার ভাইদের মুক্তির আবেদন জানান। (যাত্রাপুস্তক ৭:১-৭) তিনি দশটা আঘাত, লোহিত সাগরের জল ভাগ হয়ে যাওয়া এবং ফরৌণের সৈন্যদের ধ্বংস হতে দেখেছিলেন। ইস্রায়েলকে ব্যবস্থা দেওয়ার জন্য এবং নতুন জাতির সঙ্গে করা চুক্তির মধ্যস্থ হিসেবে যিহোবা তাকে ব্যবহার করেছিলেন। ৪০ বছর ধরে মোশি প্রান্তরে ইস্রায়েল জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার জীবনে এক প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল এবং তিনি সেবা করার প্রচুর সুযোগ পেয়ে আশীর্বাদ উপভোগ করেছিলেন।
এছাড়াও বিশ্বস্ত মোশির কথা বিবেচনা করুন। তার গুণাবলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর প্রতি তার উপলব্ধিবোধ। মোশি মিশরের সমস্ত ঐশ্বর্যকে অস্বীকার করেছিলেন এবং “যিনি অদৃশ্য, তাঁহাকে যেন দেখিয়াই স্থির থাকিলেন।” (বর্তমান দিনের আশীর্বাদগুলো
এই বিবরণগুলো দেখায়, যারা ঈশ্বরকে সেবা করে তাদের জীবন সত্যিই অর্থপূর্ণ হয়। যিহোবার লোকেরা এইরকম গুণাবলি যেমন, বাধ্যতা, বিশ্বাস এবং আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর প্রতি উপলব্ধি গড়ে তোলার মাধ্যমে অনেক আশীর্বাদ পেয়ে থাকেন।
কীভাবে আমরা সেই আশীর্বাদ পাচ্ছি? খ্রীষ্টীয়জগতের হাজার হাজার লোক যেখানে আধ্যাত্মিক দুর্ভিক্ষের মধ্যে রয়েছে, সেখানে আমরা “যিহোবার মঙ্গলভাবে আনন্দ” করতে পারি। (যিরমিয় ৩১:১২, NW) যীশু খ্রীষ্ট এবং “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” এর মাধ্যমে যিহোবা প্রচুর আধ্যাত্মিক খাবার জুগিয়েছেন, যা আমাদেরকে ‘জীবনে যাইবার দ্বারে’ থাকতে সাহায্য করে। (মথি ৭:১৩, ১৪; মথি ২৪:৪৫; যোহন ১৭:৩) আমাদের খ্রীষ্টীয় ভ্রাতৃসমাজের সঙ্গে মেলামেশা করা হল আরেকটা বড় আশীর্বাদ। সভাগুলোতে এবং অন্যান্য সময়ে সহ উপাসকদের সঙ্গে মেলামেশা করা হল এক পরম আনন্দের বিষয়, যারা প্রেম দেখিয়ে থাকেন ও “নতুন মনুষ্যকে” পরিধান করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। (কলসীয় ৩:৮-১০; গীতসংহিতা ১৩৩:১) কিন্তু, যিহোবা ঈশ্বরের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখার মূল্যবান সুযোগ এবং তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের পদচিহ্ন অনুসরণ করা হল আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ।—রোমীয় ৫:১, ৮; ফিলিপীয় ৩:৮.
এই আশীর্বাদগুলো নিয়ে চিন্তা করলে আমরা বুঝতে পারি যে, ঈশ্বরের কাছে আমাদের উপাসনা কতটা মূল্যবান। আমরা হয়তো যীশুর বলা বণিকের দৃষ্টান্ত নিয়ে চিন্তা করতে পারি, যিনি উত্তম মুক্তা খুঁজে পেয়েছিলেন। এই ব্যক্তির সম্বন্ধে যীশু বলেছিলেন: “সে একটী মহামূল্য মুক্তা দেখিতে পাইয়া গিয়া সর্ব্বস্ব বিক্রয় করিয়া তাহা ক্রয় করিল।” (মথি ১৩:৪৬) ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক, তাঁকে সেবা করার সুযোগ, আমাদের খ্রীষ্টীয় মেলামেশা, খ্রীষ্টীয় আশা এবং আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িত সমস্ত আশীর্বাদের বিষয়ে আমরাও নিশ্চয়ই এইরকম মনে করি। আমাদের জীবনে এর চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই।
যিহোবাকে দিন
যিহোবাকে সমস্ত উত্তম দানের দাতা হিসেবে স্বীকার করি বলে আমরা যে আশীর্বাদগুলো পাচ্ছি সেগুলোর জন্য মন থেকে কৃতজ্ঞতা দেখাতে চাই। কিন্তু, কীভাবে আমরা তা দেখাতে পারি? একটা উপায় হল, অন্যদেরকে একই আশীর্বাদগুলো উপভোগ করতে সাহায্য করে। (মথি ২৮:১৯) দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩০টারও বেশি জায়গায় যিহোবার সাক্ষিরা তাদের প্রতিবেশীদের কাছে গিয়ে ঠিক এই কাজটাই করছেন। তা করার সময় তারা তাদের সীমিত সম্পদ অর্থাৎ সময়, শক্তি এবং ধনসম্পত্তি কাজে লাগিয়ে অন্যদেরকে “সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পর্য্যন্ত পঁহুছিতে” সাহায্য করছেন।—২ তীমথিয় ২:৪.
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার গ্ল্যানডেলে বাস করেন, এমন অগ্রগামীদের কথা বিবেচনা করুন। ফেডারেল জেলে বন্দি লোকেদের সঙ্গে দেখা করার জন্য যেতে আসতে প্রতি শনিবার সকালে তাদেরকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করতে হয়। যদিও বন্দিদের সঙ্গে তারা খুব বেশি সময় কথা বলতে পারেন না কিন্তু তবুও, তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেননি। তাদের মধ্যে একজন বলেন: “এই অসাধারণ এলাকায় কাজ করা খুবই আনন্দের। আমরা এই কাজ খুবই উপভোগ করছি। এখানে এত বেশি আগ্রহী ব্যক্তি আছে যে সকলের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বর্তমানে আমরা পাঁচজনের সঙ্গে অধ্যয়ন করছি এবং আরও চারজন বাইবেল অধ্যয়নের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।”
উদ্যোগী খ্রীষ্টান পরিচারকরা বিনামূল্যে এই জীবন রক্ষাকারী কাজ করতে পেরে খুবই খুশি। তারা যীশুর মতো মনোভাব দেখান, যিনি বলেছিলেন: “তোমরা বিনামূল্যে পাইয়াছ, বিনামূল্যেই দান করিও।” (মথি ১০:৮) সারা পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ লোকেরা এই নিঃস্বার্থ কাজ করছেন এবং এর ফলে বিরাট সংখ্যক সৎহৃদয়ের লোকেরা এতে সাড়া দিচ্ছেন এবং শিষ্য হচ্ছেন। গত পাঁচ বছরে প্রায় ১৭ লক্ষ লোক যিহোবার কাছে তাদের নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই বেড়ে চলা লোকেদের যত্ন নেওয়ার জন্য বাইবেল এবং বাইবেল-ভিত্তিক প্রকাশনাদি ও সেইসঙ্গে নতুন কিংডম হল এবং অন্যান্য সভার জন্য জায়গার প্রয়োজন। এই প্রয়োজন মেটানোর জন্য কোথা থেকে টাকা আসে? একমাত্র স্বেচ্ছাকৃত দানের মাধ্যমেই তা আসে।
বিশ্বের কিছু দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল না থাকায় অনেকে কোনরকমে তাদের পরিবারের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যান। নিউ সায়েনটিস্ট পত্রিকা অনুসারে, একশ কোটি লোক তাদের আয়ের শতকরা ৭০ ভাগ খাবারের জন্য খরচ করে। আমাদের অনেক খ্রীষ্টান ভাইবোনের অবস্থাও এইরকম। সহ বিশ্বাসীদের সাহায্য ছাড়া তারা কখনও এইরকম খ্রীষ্টীয় প্রকাশনাদি বা আরামদায়ক কিংডম হলগুলো তৈরি করতে পারতেন না।
অবশ্য, এর মানে এই নয় যে তারা চান অন্যরা যেন তাদের বোঝা বহন করেন। কিন্তু তাদের সাহায্যের দরকার। মোশি যখন ইস্রায়েলীয়দেরকে বস্তুগত দান দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন—যা যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া আশীর্বাদের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর একটা উপায়—তখন তিনি বলেছিলেন: “প্রত্যেক জন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত আশীর্ব্বাদানুসারে আপন আপন সঙ্গতি অনুযায়ী উপহার দিবে।” (দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:১৭) তাই, যীশু যখন মন্দিরে একজন বিধবাকে “দুইটি সিকি পয়সা” দান করতে দেখেছিলেন, তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের কাছে তার প্রশংসা করেছিলেন। তিনি তার সামর্থ্য অনুযায়ী দান করেছিলেন। (লূক ২১:২, ৩) একইভাবে খ্রীষ্টানরা অভাবের মধ্যে থেকেও যতটুকু পারেন ঠিক ততটুকু দেন। আর যদি ঘাটতি হয়, তাহলে যে খ্রীষ্টানরা বস্তুগত দিক দিয়ে ধনী তাদের দান দিয়ে তা মেটানো যেতে পারে।—২ করিন্থীয় ৮:১৩-১৫.
এভাবে আমরা যখন যিহোবাকে দিই, তখন আমাদের সঠিক উদ্দেশ্য থাকা জরুরি। (২ করিন্থীয় ৮:১২) পৌল বলেছিলেন: “প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন হৃদয়ে যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছে, তদনুসারে দান করুক, মনোদুঃখপূর্ব্বক কিম্বা আবশ্যক বলিয়া না দিউক; কেননা ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভাল বাসেন।” (২ করিন্থীয় ৯:৭) হৃদয় থেকে দান করে আমরা বর্তমানে ঈশ্বরের সংগঠনের ঘটে চলা বৃদ্ধিতে সাহায্য করি এবং সেইসঙ্গে আমাদের নিজেদের আনন্দকে বাড়াই।—প্রেরিত ২০:৩৫.
প্রচার কাজে অংশ নেওয়া ও স্বেচ্ছাকৃত দান দেওয়া হল দুটো উপায়, যার মাধ্যমে আমরা যিহোবা আমাদেরকে যে আশীর্বাদ দিয়েছেন তার প্রতিদান দিতে পারি। আর এটা জানা কত উৎসাহজনক যে, যিহোবা আরও বেশি সৎহৃদয়ের লোকেদের ওপর তাঁর আশীর্বাদ বর্ষণ করতে চান, যারা হয়তো এখনও তাঁকে জানে না। (২ পিতর ৩:৯) তাই আসুন আমরা ঈশ্বরের সেবায় সবসময় আমাদের সম্পদকে কাজে লাগাই, যাতে আমরা সৎহৃদয়ের লোকেদেরকে খুঁজে পেতে এবং তাদেরকে বাধ্যতা, বিশ্বাস এবং উপলব্ধিবোধের মতো গুণগুলো গড়ে তুলতে সাহায্য করি। এভাবে আমরা ‘সদাপ্রভু মঙ্গলময় কি না তাহা আস্বাদন করিয়া দেখিতে’ তাদেরকে সাহায্য করার আনন্দ উপভোগ করতে পারব।—গীতসংহিতা ৩৪:৮.
[২৮, ২৯ পৃষ্ঠার বাক্স]
কিছুজন দান করার জন্য যে উপায়গুলো বেছে নেন
সারা পৃথিবীতে কাজের জন্য দান
অনেকে কিছু পয়সা আলাদা করে রাখেন যা তারা দান বাক্সে ফেলেন যেখানে লেখা থাকে: “পৃথিবীব্যাপী কাজের জন্য দান—মথি ২৪:১৪.”
প্রত্যেক মাসে মণ্ডলী এই পয়সা নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়ে অথবা স্থানীয় শাখা অফিসে পাঠিয়ে দেয়। লোকেরা স্বেচ্ছায় যে পয়সা দান করেন সেটা সরাসরি নিচের এই ঠিকানায় পাঠানো যেতে পারে: The Watch Tower Bible and Tract Society of India, G-৩৭, South Avenue, Santacruz, Mumbai ৪০০ ০৫৪ অথবা আপনার দেশে এই সোসাইটির অফিসে পাঠাতে পারেন। গয়না অথবা অন্য কোন দামি জিনিসও দান করা যেতে পারে। আর এই দানের সঙ্গে একটা ছোট চিঠি লিখে পাঠানো দরকার যাতে লেখা থাকবে যে এই উপহারকে যেন শর্তহীন দান হিসেবে নেওয়া হয়।
পরিকল্পিত দান
সারা পৃথিবীতে রাজ্যের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শর্তহীন ও কোন শর্তে দান করা ছাড়াও দান করার আরও কিছু উপায় আছে। যেমন:
বীমা: জীবন বীমা প্রকল্পের অংশীদার হওয়ার জন্য ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির নাম দেওয়া যেতে পারে।
ব্যাংক আ্যকাউন্ট: ব্যাংক আ্যকাউন্ট, ডিপোজিট সার্টিফিকেট অথবা ব্যক্তির অবসরকালীন আ্যকাউন্ট ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে ব্যক্তির মৃত্যুর পর যেন ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটি পায় তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
স্টক্সস্ ও বণ্ডস্: শর্তহীন উপহার হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটিকে স্টক্সস্ ও বণ্ডস্ দান দেওয়া যেতে পারে।
স্থাবর সম্পত্তি: বিক্রি করা যায় এমন স্থাবর সম্পত্তি সরাসরি ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটিকে দান করা যেতে পারে। শর্তহীন উপহার হিসেবে তা দেওয়া যেতে পারে বা দাতার জীবন কাল অবধি তিনি সেখানে থাকবেন এমন শর্তেও দেওয়া যেতে পারে। সোসাইটিকে কোন স্থাবর সম্পত্তি দেওয়ার জন্য লিখিত ব্যবস্থা করার আগে সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
উইল ও ট্রাস্ট: সম্পত্তি অথবা অর্থ ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটিকে আইনসম্মতভাবে স্বীকৃত উইলের সাহায্যে দেওয়া যেতে পারে অথবা ট্রাস্টের অংশীদার হিসেবে সোসাইটির নাম দেওয়া যেতে পারে।
সোসাইটিকে উইল করার সময় ইন্ডিয়ান সাকসেসন এ্যক্ট ১৯২৫ সেকশন ১১৮ অনুযায়ী উইল তৈরি করা উচিত যেখানে লেখা আছে, “কোন ব্যক্তি যার ভাইপো, ভাইঝি বা কোন কাছের আত্মীয় আছে তার সম্পত্তি কোন ধর্মীয় সংগঠনকে দান করার অধিকার নেই। কিন্তু ধর্মীয় সংগঠনকে দান করতে চাইলে ব্যক্তিকে তার মৃত্যুর এক বছর আগে তাকে উইল করতে হবে। আর উইল করার ছমাসের মধ্যেই তত্ত্বাবধানের জন্য আইন মতো ব্যবস্থা করা দরকার।”
আপনার উইলে অংশীদার হওয়ার জন্য যদি ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির নাম দিতে চান, তাহলে সেই উইলে উল্লেখ করার জন্য সোসাইটির এই পুরো নাম ও ঠিকানাকে দয়া করে মনে রাখুন:
The Watch Tower Bible and Tract Society of India
G-৩৭, South Avenue,
Santa Cruz,
Mumbai - ৪০০ ০৫৪.