সুসমাচারের আশীর্বাদগুলো
সুসমাচারের আশীর্বাদগুলো
“নম্রগণের কাছে সুসমাচার প্রচার করিতে সদাপ্রভু আমাকে অভিষেক করিয়াছেন; তিনি আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন, যেন আমি ভগ্নান্তঃকরণ লোকদের ক্ষত বাঁধিয়া দিই; . . . যেন সমস্ত শোকার্ত্তকে সান্ত্বনা করি।”—যিশাইয় ৬১:১, ২.
১, ২. (ক) যীশু নিজেকে কী বলে শনাক্ত করেছিলেন ও কীভাবে? (খ) যীশু যে সুসমাচার ঘোষণা করেছিলেন তা কোন্ কোন্ আশীর্বাদ নিয়ে এসেছিল?
যীশু তাঁর পরিচর্যার প্রথম দিকে এক বিশ্রামবারে নাসরতের সমাজগৃহে গিয়েছিলেন। লিখিত বিবরণ অনুসারে, “যিশাইয় ভাববাদীর পুস্তক তাঁহার হস্তে সমর্পিত হইল, আর তিনি পুস্তকখানি খুলিয়া সেই স্থান পাইলেন, যেখানে লেখা আছে, ‘প্রভুর [“যিহোবার,” NW] আত্মা আমাতে অধিষ্ঠান করেন, কারণ তিনি আমাকে অভিষিক্ত করিয়াছেন, . . . সুসমাচার প্রচার করিবার জন্য।’” ওই ভবিষ্যদ্বাণীর আরও অন্যান্য কথাগুলো যীশু পড়েছিলেন। এরপর তিনি বসে বলেন: “অদ্যই এই শাস্ত্রীয় বচন তোমাদের কর্ণগোচরে পূর্ণ হইল।”—লূক ৪:১৬-২১.
২ এভাবে যীশু নিজেকে ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা সুসমাচার প্রচারক ও সান্ত্বনাকারী হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন। (মথি ৪:২৩) আর যীশু যা বলেছিলেন, তা সত্যিই সুসমাচার ছিল! তিনি তাঁর শ্রোতাদেরকে বলেছিলেন: “আমি জগতের জ্যোতি; যে আমার পশ্চাৎ আইসে, সে কোন মতে অন্ধকারে চলিবে না, কিন্তু জীবনের দীপ্তি পাইবে।” (যোহন ৮:১২) তিনি আরও বলেছিলেন: “তোমরা যদি আমার বাক্যে স্থির থাক, তাহা হইলে সত্যই তোমরা আমার শিষ্য; আর তোমরা সেই সত্য জানিবে, এবং সেই সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে।” (যোহন ৮:৩১, ৩২) হ্যাঁ, যীশুর কাছে “অনন্ত জীবনের কথা” ছিল। (যোহন ৬:৬৮, ৬৯) জ্যোতি, জীবন, স্বাধীনতা—মূল্যবান মনে করার মতো কিছু আশীর্বাদ!
৩. যীশুর শিষ্যরা কোন্ সুসমাচার প্রচার করেছিলেন?
৩ সাধারণ কাল ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর পর শিষ্যরা যীশুর মতো সুসমাচার প্রচার চালিয়ে গিয়েছিলেন। ইস্রায়েলীয় ও পরজাতীয় এই দুধরনের লোকেদের কাছেই তারা “রাজ্যের . . . সুসমাচার” প্রচার করেছিলেন। (মথি ২৪:১৪; প্রেরিত ১৫:৭; রোমীয় ১:১৬) যারা শুনে সাড়া দিয়েছিলেন তারা যিহোবা ঈশ্বর সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলেন। তারা ধর্মীয় দাসত্ব থেকে স্বাধীন হয়েছিলেন এবং নতুন আধ্যাত্মিক জাতি, ‘ঈশ্বরের ইস্রায়েলের’ অংশ হয়েছিলেন, যাদের স্বর্গে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে চিরকাল রাজত্ব করার আশা আছে। (গালাতীয় ৫:১; ৬:১৬; ইফিষীয় ৩:৫-৭; কলসীয় ১:৪, ৫; প্রকাশিত বাক্য ২২:৫) সত্যিই, সেগুলো চমৎকার আশীর্বাদ ছিল!
আজকে সুসমাচার প্রচার
৪. আজকে কোন্ উপায়ে সুসমাচার প্রচার করার দায়িত্ব পূর্ণ হচ্ছে?
৪ আজকে, ‘অপর মেষের’ অভিষিক্ত খ্রীষ্টানরা মূলত যীশুকে দেওয়া এই ভবিষ্যদ্বাণীমূলক দায়িত্বটা ‘বিস্তর লোকেদের’ সহযোগিতায় পালন করে চলেছেন। (যোহন ১০:১৬, NW; প্রকাশিত বাক্য ৭:৯) ফলে, সুসমাচার এখন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে আরও বড় আকারে প্রচারিত হচ্ছে। দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় যিহোবার সাক্ষিরা ‘নম্রগণের কাছে সুসমাচার প্রচার করিতে . . . ভগ্নান্তঃকরণ লোকদের ক্ষত বাঁধিয়া দিতে; বন্দি লোকদের কাছে মুক্তি, ও কারাবদ্ধ লোকদের কাছে কারামোচন প্রচার করিতে; সদাপ্রভুর প্রসন্নতার বৎসর ও আমাদের ঈশ্বরের প্রতিশোধের দিন ঘোষণা করিতে; সমস্ত শোকার্ত্তকে সান্ত্বনা করিতে’ বের হয়েছেন। (যিশাইয় ৬১:১, ২) তাই, খ্রীষ্টীয় সুসমাচার প্রচারের কাজ অনেকের জন্য আশীর্বাদ ও “সমস্ত ক্লেশের পাত্রদিগকে” প্রকৃত সান্ত্বনা দিয়ে চলেছে।—২ করিন্থীয় ১:৩, ৪.
৫. সুসমাচার প্রচারের ব্যাপারে যিহোবার সাক্ষিরা কীভাবে খ্রীষ্টীয়জগতের গির্জাগুলো থেকে আলাদা?
৫ এটা ঠিক যে, খ্রীষ্টীয়জগতের গির্জাগুলো বিভিন্নভাবে সুসমাচার প্রচারের ব্যয় বহন করে থাকে। অনেকে ধর্মান্তরিত করার জন্য মিশনারিদেরকে অন্য দেশে পাঠায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দি অর্থোডক্স খ্রীষ্টান মিশন সেন্টার ম্যাগাজিন-এ মাদাগাস্কার, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাঞ্জেনিয়া ও জিম্বাবুয়ের অর্থোডক্স মিশনারিদের কাজ সম্বন্ধে রিপোর্ট করা হয়েছে। কিন্তু, খ্রীষ্টীয়জগতের অন্যান্য গির্জার মতো অর্থোডক্স গির্জার বেশির ভাগ সদস্য এই কাজে অংশ নেন না। অন্যদিকে, যিহোবার সমস্ত উৎসর্গীকৃত সাক্ষি সুসমাচার প্রচারে অংশ নেওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। তারা বুঝতে পারেন যে, সুসমাচার ঘোষণা করা হল এক প্রমাণ যে তাদের বিশ্বাস সত্য। পৌল বলেছিলেন: “লোকে হৃদয়ে বিশ্বাস করে, ধার্ম্মিকতার জন্য, এবং মুখে স্বীকার করে, পরিত্রাণের জন্য।” আসলে, বিশ্বাস যদি একজনকে কাজ করার দিকেই পরিচালিত না করে, তাহলে তা মৃত।—রোমীয় ১০:১০; যাকোব ২:১৭.
সুসমাচার যা অনন্ত আশীর্বাদ নিয়ে আসে
৬. আজকে কোন্ সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে?
৬ যিহোবার সাক্ষিরা সবচেয়ে উত্তম খবর প্রচার করেন। যারা তাদের কথা শুনতে চান তাদেরকে তারা বাইবেল খুলে দেখান যে ঈশ্বরের সঙ্গে এক কাছের সম্পর্ক গড়ে তোলার, পাপের ক্ষমা পাওয়ার এবং অনন্ত জীবনের আশা দেওয়ার এক উপায় হিসেবে মানবজাতির জন্য যীশু তাঁর জীবন বলি দিয়েছিলেন। (যোহন ৩:১৬; ২ করিন্থীয় ৫:১৮, ১৯) তারা ঘোষণা করেন যে, অভিষিক্ত রাজা যীশু খ্রীষ্টের অধীনে ঈশ্বরের রাজ্য স্বর্গে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং শীঘ্রিই এটা পৃথিবী থেকে সমস্ত দুষ্টতা সরিয়ে দেবে ও আবার পরমদেশ গড়ে তোলার কাজ দেখাশোনা করবে। (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫; ২১:৩, ৪) যিশাইয়ের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতাস্বরূপ, তারা তাদের প্রতিবেশীদেরকে জানান যে, এখনই হল “সদাপ্রভুর প্রসন্নতার বৎসর” অর্থাৎ মানবজাতির এখনও সুসমাচার শুনে তাতে সাড়া দেওয়ার সুযোগ আছে। তারা আরও সাবধান করেন যে, শীঘ্রিই “আমাদের ঈশ্বরের প্রতিশোধের দিন” আসবে, যখন অনুতাপহীন অন্যায়কারীদেরকে যিহোবা ধ্বংস করে দেবেন।—গীতসংহিতা ৩৭:৯-১১.
৭. কোন্ অভিজ্ঞতা থেকে যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে একতার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং কেন তারা এইরকম একতা উপভোগ করেন?
৭ দুঃখ দুর্দশায় পরিপূর্ণ এক জগতে এটাই হল একমাত্র সুসমাচার, যার মধ্যে অনন্ত আশীর্বাদ রয়েছে। যারা এটাকে মেনে নেন তারা এক একতাবদ্ধ, বিশ্বব্যাপী খ্রীষ্টীয় ভ্রাতৃসমাজের অংশ হন, যারা কোন জাতিগত, উপজাতিগত বা অর্থনৈতিক বৈষম্যকে তাদের বিভক্তের কারণ হতে দেন না। তারা ‘প্রেম পরিধান করিয়াছেন; তাহাই সিদ্ধির যোগবন্ধন।’ (কলসীয় ৩:১৪; যোহন ১৫:১২) এই বিষয়টা গত বছর আফ্রিকার একটা দেশে দেখা গিয়েছিল। একদিন রাজধানী শহরে ভোরবেলা গুলির আওয়াজে সকলের ঘুম ভেঙে যায়। সেখানে সরকারকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছিল। ব্যাপারটা যখন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে মোড় নেয়, তখন এক সাক্ষি পরিবারকে অন্য আরেক উপজাতির সাক্ষিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নিন্দা করা হয়। ওই পরিবার উত্তর দিয়েছিল: “আমাদের ঘরে আমরা কেবল যিহোবার সাক্ষিদেরকে থাকতে দিয়েছি।” তাদের কাছে উপজাতিগত পার্থক্য কোন বড় বিষয় ছিল না; যাদের দরকার ছিল এমন লোকেদেরকে খ্রীষ্টীয় প্রেম সান্ত্বনা দিয়েছিল। সাক্ষি নন এমন একজন আত্মীয়া বলেছিলেন: “অন্যান্য সব ধর্মের লোকেরা তাদের সহ বিশ্বাসীদের ধরিয়ে দিয়েছে। কেবল যিহোবার সাক্ষিরা তা করেননি।” গৃহযুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এইরকম ঘটনাগুলো দেখায় যে, ‘ভ্রাতৃসমাজের প্রতি’ যিহোবার সাক্ষিদের সত্যিকারের “প্রেম” রয়েছে।—১ পিতর ২:১৭.
সুসমাচার লোকেদেরকে বদলে দেয়
৮, ৯. (ক) যারা সুসমাচার গ্রহণ করেন, তারা কোন্ পরিবর্তনগুলো করে থাকেন? (খ) কোন্ অভিজ্ঞতাগুলো দেখায় যে, সুসমাচারের অনেক ক্ষমতা রয়েছে?
৮ পৌলের বলা ‘বর্ত্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের’ সঙ্গে সুসমাচারের সম্পর্ক রয়েছে। (১ তীমথিয় ৪:৮) এটা শুধু ভবিষ্যতের জন্য এক চমৎকার ও নিশ্চিত আশাই দেয় না কিন্তু সেইসঙ্গে তা ‘বর্ত্তমান জীবনকেও’ উন্নত করে। যিহোবার সাক্ষিরা প্রত্যেকে ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে চলার জন্য তাঁর বাক্য বাইবেলের দ্বারা পরিচালিত হন। (গীতসংহিতা ১১৯:১০১) তারা যখন ধার্মিকতা ও নিষ্ঠার মতো গুণগুলো গড়ে তোলেন, তখন তাদের ব্যক্তিত্ব নতুন হয়ে ওঠে।—ইফিষীয় ৪:২৪.
৯ ফ্রাঙ্কোর উদাহরণ বিবেচনা করুন। তার প্রচণ্ড রাগ ছিল। তার মনমতো কিছু না হলেই তিনি রেগে আগুন হয়ে যেতেন ও জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেন। তার স্ত্রী যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতেন এবং তাদের খ্রীষ্টীয় উদাহরণ ধীরে ধীরে ফ্রাঙ্কোকে বুঝতে সাহায্য করেছিল যে, তাকে বদলাতে হবে। তিনি তাদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত পবিত্র আত্মার ফল শান্তি ও ইন্দ্রিয় দমন প্রকাশ করতে পেরেছিলেন। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) ২০০১ সালের পরিচর্যা বছরে বেলজিয়ামে ৪৯২ জন বাপ্তিস্ম নেন আর তাদের মধ্যে ফ্রাঙ্কোও ছিলেন। এছাড়াও আল্যান্দ্রোর কথা ভেবে দেখুন। এই যুবক মাদকদ্রব্যের প্রতি এত আসক্ত হয়ে পড়েছিল যে সারাক্ষণ আবর্জনার-স্তূপের কাছে পড়ে থাকত, যেন সেখানে যা কিছু পায় সেগুলো বিক্রি করে তার নেশার খোরাক জোগাতে পারে। আল্যান্দ্রোর যখন ২২ বছর বয়স, তখন যিহোবার সাক্ষিরা তাকে বাইবেল অধ্যয়ন করার আমন্ত্রণ জানান এবং সে রাজি হয়। সে রোজ বাইবেল পড়ত এবং নিয়মিত খ্রীষ্টীয় সভাতে আসত। সে তার জীবনধারা এত তাড়াতাড়ি পালটে ফেলেছিল যে মাত্র ছমাসেরও কম সময়ের মধ্যে সে সুসমাচার প্রচার করার মতো যোগ্য হয়ে ওঠে—গত বছর পানামায় ১০,১১৫ জন প্রকাশকদের মধ্যে সে-ও ছিল।
সুসমাচার—নম্রদের জন্য আশীর্বাদ
১০. কারা সুসমাচারের প্রতি সাড়া দেন এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে পালটে যায়?
১০ যিশাইয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, নম্রদের কাছে সুসমাচার প্রচার করা হবে। এই নম্র ব্যক্তি কারা? তাদের সম্বন্ধে প্রেরিতের বইয়ে বলা হয়েছে যে, তারা হলেন “অনন্ত জীবনের জন্য নিরূপিত।” (প্রেরিত ১৩:৪৮) তারা হলেন সমাজের সর্বস্তরের নম্র ব্যক্তি, যারা সত্যের বার্তার প্রতি সাড়া দেন। এই ব্যক্তিরা জানেন যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করলে অনেক আশীর্বাদ পাওয়া যায়, যা জগতের যে কোন সুযোগসুবিধার চেয়ে হাজার গুণ শ্রেষ্ঠ। (১ যোহন ২:১৫-১৭) কিন্তু, সুসমাচার প্রচার করে যিহোবার সাক্ষিরা কীভাবে লোকেদের হৃদয় স্পর্শ করেন?
১১. পৌলের কথা অনুসারে, কীভাবে সুসমাচার প্রচারিত হওয়া উচিত?
১১ এই ক্ষেত্রে প্রেরিত পৌলের উদাহরণ বিবেচনা করুন, যিনি করিন্থীয়দের প্রতি লিখেছিলেন: “হে ভ্রাতৃগণ, আমি যখন তোমাদের নিকটে গিয়াছিলাম, তখন গিয়া বাক্যের কি জ্ঞানের উৎকৃষ্টতা অনুসারে তোমাদিগকে যে ঈশ্বরের সাক্ষ্য জ্ঞাত করিতেছিলাম, তাহা নয়। কেননা আমি মনে স্থির করিয়াছিলাম, তোমাদের মধ্যে আর কিছুই জানিব না, কেবল যীশু খ্রীষ্টকে, এবং তাঁহাকে ক্রুশে হত বলিয়াই, জানিব।” (১ করিন্থীয় ২:১, ২) পৌল তার জ্ঞান জাহির করে লোকেদের ওপর ছাপ ফেলতে চাননি। তিনি অন্য আর কিছু নয় কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা নিশ্চিত জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছিলেন, যা আজকে বাইবেলে লেখা রয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্য করুন যে, পৌল তার সহ সুসমাচার প্রচারককে উৎসাহ দিয়েছিলেন: “তুমি বাক্য প্রচার কর, . . . কার্য্যে অনুরক্ত হও।” (২ তীমথিয় ৪:২) তীমথিয়কে “বাক্য” অর্থাৎ ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করতে বলা হয়েছিল। এছাড়াও তীমথিয়কে পৌল লিখেছিলেন: “তুমি আপনাকে ঈশ্বরের কাছে পরীক্ষাসিদ্ধ লোক দেখাইতে যত্ন কর; এমন কার্য্যকারী হও, যাহার লজ্জা করিবার প্রয়োজন নাই, যে সত্যের বাক্য যথার্থরূপে ব্যবহার করিতে জানে।”—২ তীমথিয় ২:১৫.
১২. আজকে যিহোবার সাক্ষিরা কীভাবে পৌলের কথা ও উদাহরণে মনোযোগ দেন?
১২ যিহোবার সাক্ষিরা পৌলের উদাহরণ ও সেইসঙ্গে তীমথিয়কে বলা তার কথাগুলোতে মনোযোগ দেন। তারা ঈশ্বরের বাক্যের ক্ষমতাকে স্বীকার করেন এবং তাদের প্রতিবেশীদের কাছে আশা ও সান্ত্বনার উপযুক্ত বাক্য বলার সময় এটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগান। (গীতসংহিতা ১১৯:৫২; ২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭; ইব্রীয় ৪:১২) সত্যি, তারা বাইবেল-ভিত্তিক সাহিত্যাদি সঠিকভাবে ব্যবহার করেন, যাতে আগ্রহী ব্যক্তিরা তাদের অবসর সময়ে বাইবেল সম্বন্ধে আরও বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। কিন্তু তারা সবসময় লোকেদেরকে শাস্ত্রের বার্তা দেখানোর সুযোগ খোঁজেন। তারা জানেন যে, ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য নম্র ব্যক্তিদের হৃদয় স্পর্শ করবে। আর এটাকে এভাবে ব্যবহার করা তাদের নিজেদের বিশ্বাসকেও মজবুত করে।
‘সমস্ত শোকার্ত্তকে সান্ত্বনা কর’
১৩. ২০০১ সালে কোন্ ঘটনাগুলো শোকার্ত ব্যক্তিদের সান্ত্বনা দেওয়ার প্রয়োজনকে আরও বেশি জরুরি করে তুলেছে?
১৩ ২০০১ সালে অনেক বিপর্যয় ঘটেছে আর তাই অনেক লোকেদের সান্ত্বনার দরকার ছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র ও ওয়াশিংটন ডি.সি.-র কাছে পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলা ছিল এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এই হামলা পুরো দেশের জন্য কত বড় আঘাতই না ছিল! এইরকম ঘটনাগুলোর মধ্যেও যিহোবার সাক্ষিরা “সমস্ত শোকার্ত্তকে সান্ত্বনা” করার বিষয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কয়েকটা উদাহরণ থেকে দেখা যাবে যে, কীভাবে তারা এটা করেন।
১৪, ১৫. দুটো ভিন্ন পরিস্থিতিতে সাক্ষিরা কীভাবে শোকার্ত ব্যক্তিদের কাছে কার্যকারীভাবে শাস্ত্র ব্যবহার করতে পেরেছিলেন?
১৪ পূর্ণ-সময় সুসমাচার প্রচার করেন এমন একজন বোন ফুটপাতের ওপর একজন ভদ্রমহিলার কাছে যান ও জিজ্ঞেস করেন যে, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে তিনি কী মনে করেন। কথা শুনে ওই ভদ্রমহিলা ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। তিনি বলেছিলেন যে এই হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক আর তিনি কোন না কোনভাবে এই কাজে সাহায্য করতে চান। সাক্ষি বোন তাকে বলেছিলেন যে, ঈশ্বর আমাদের সকলের প্রতি খুবই আগ্রহী এবং তিনি যিশাইয় ৬১:১, ২ পদ খুলে পড়েছিলেন। ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় লেখা এই কথাগুলো ভদ্রমহিলার কাছে অর্থপূর্ণ মনে হয়েছিল কারণ তিনি বলেছিলেন যে, সবাই শোক করছিল। তিনি একটা ট্র্যাক্ট নিয়েছিলেন ও সাক্ষি বোনকে তার বাড়িতে এসে দেখা করতে বলেছিলেন।
১৫ দুজন সাক্ষি সুসমাচার প্রচার করার সময় একজন ব্যক্তির দেখা পান যিনি তার গুদামে কাজ করছিলেন। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের দুঃখজনক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বাইবেল থেকে সান্ত্বনার বার্তা জানাতে চেয়েছিলেন। ব্যক্তির অনুমতি নিয়ে তারা ২ করিন্থীয় ১:৩-৭ পদ পড়েছিলেন, যেখানে এই কথাগুলো ছিল: ‘খ্রীষ্ট দ্বারা সান্ত্বনা উপচিয়া পড়ে।’ সাক্ষি প্রতিবেশীরা অন্যদেরকে সান্ত্বনার বার্তা জানাচ্ছেন বলে তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও তাদেরকে বলেন: “আপনাদের চমৎকার কাজের জন্য ঈশ্বর আপনাদের আশীর্বাদ করুন।”
১৬, ১৭. কোন্ দুটো অভিজ্ঞতা দেখায় যে, দুঃখজনক ঘটনাগুলোর কারণে শোকার্ত বা মর্মাহত ব্যক্তিদেরকে সাহায্য করার বিষয়ে বাইবেলের ক্ষমতা রয়েছে?
১৬ একজন সাক্ষি আগ্রহী ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করার সময় একজন ব্যক্তির দেখা পান, যার মা আগে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। সেই সাক্ষি বলেছিলেন যে, সাম্প্রতিক এই দুঃখজনক ঘটনার পর প্রতিবেশীরা কেমন আছে, সেই বিষয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন। এই সাক্ষি ভাই তার নিজের সময় ব্যয় করে লোকেদের খোঁজখবর নিচ্ছেন দেখে ওই ব্যক্তি খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, তিনি এই হামলার সময় বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের কাছেই কাজ করছিলেন আর এই পুরো ঘটনাটা নিজের চোখে দেখেছেন। যখন তিনি জিজ্ঞেস করেন যে, ঈশ্বর কেন এই দুঃখকষ্ট ভোগ করতে দেন, তখন ওই সাক্ষি বাইবেল থেকে কিছু পদ পড়ে শুনিয়েছিলেন, যার মধ্যে গীতসংহিতা ৩৭:৩৯ পদ ছিল, যেখানে বলা আছে: “ধার্ম্মিকদের পরিত্রাণ সদাপ্রভু হইতে, তিনি সঙ্কটকালে তাহাদের দৃঢ় দুর্গ।” দয়ার সঙ্গে ওই ব্যক্তি সাক্ষি ভাই ও তার পরিবার কেমন আছেন সেই বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন এবং তাকে আবার আসতে বলেছিলেন ও তার সঙ্গে দেখা করার জন্য অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন।
১৭ সন্ত্রাসী হামলার পর যিহোবার সাক্ষিরা যে হাজার হাজার শোকার্ত ব্যক্তিদেরকে সান্ত্বনা দিয়েছেন তাদের মধ্যে একজন ভদ্রমহিলাও ছিলেন, যার কাছে যিহোবার সাক্ষিরা তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা করার সময় গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় তিনি খুবই মর্মাহত হয়েছিলেন এবং সাক্ষিরা গীতসংহিতা ৭২:১২-১৪ পদের কথাগুলো পড়ার সময় মন দিয়ে শুনেছিলেন: “তিনি আর্ত্তনাদকারী দরিদ্রকে, এবং দুঃখী ও নিঃসহায়কে উদ্ধার করিবেন। তিনি দীনহীন ও দরিদ্রের প্রতি দয়া করিবেন, তিনি দরিদ্রগণের প্রাণ নিস্তার করিবেন। তিনি চাতুরী ও দৌরাত্ম্য হইতে তাহাদের প্রাণ মুক্ত করিবেন, তাঁহার দৃষ্টিতে তাহাদের রক্ত বহুমূল্য হইবে।” এই কথাগুলো কত অর্থপূর্ণই না ছিল! ওই ভদ্রমহিলা সাক্ষিদেরকে আবার পদগুলো পড়তে বলেন ও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তার ঘরে আমন্ত্রণ জানান। আলোচনার শেষে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু হয়েছিল।
১৮. একজন সাক্ষিকে যখন তার প্রতিবেশীরা তাদের হয়ে প্রার্থনা করতে বলেছিলেন, তখন তিনি কীভাবে সাহায্য করেছিলেন?
১৮ একজন সাক্ষি এক অভিজাত এলাকার একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করেন, যেখানে লোকেরা আগে রাজ্যের সুসমাচারের প্রতি তেমন একটা আগ্রহ দেখাতেন না। সন্ত্রাসী হামলার পর ওই এলাকার লোকেরা একেবারে ভেঙে পড়েছিল বলে মনে হয়। হামলার পরের শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সকলকে বাইরে এসে মোমবাতি হাতে নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কিছুক্ষণ নীরব থাকতে অনুরোধ করেছিলেন। তাদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওই সাক্ষি বাইরে যান ও ফুটপাতের ওপর চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। ম্যানেজার জানতেন যে তিনি যিহোবার সাক্ষিদের একজন পরিচারক ছিলেন, তাই নীরবতা শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি তাকে সকলের হয়ে প্রার্থনা করার জন্য অনুরোধ করেন। সাক্ষি তাতে রাজি হন। প্রার্থনায় তিনি সব জায়গায় যে ব্যাপক শোকের ছায়া নেমে এসেছে সেই বিষয়ে উল্লেখ করেন ও সেইসঙ্গে তিনি এও বলেন যে, শোকার্তদের আশা রয়েছে। তিনি সেই সময়ের কথা উল্লেখ করেন যখন এইধরনের ভয়ংকর ঘটনা আর ঘটবে না এবং আরও বলেন যে, বাইবেল থেকে সঠিক জ্ঞান নিয়ে সকলেই সান্ত্বনার ঈশ্বরের আরও ঘনিষ্ঠ হতে পারেন। “আমেন” বলার পর ম্যানেজার ও তার পিছে পিছে রেস্টুরেন্টের বাইরের আরও ৬০ জনেরও বেশি লোক সাক্ষির কাছে এসে তাকে ধন্যবাদ দেন ও জড়িয়ে ধরেন। আর ম্যানেজার বলেন যে, এ যাবৎ তিনি যত প্রার্থনা শুনেছেন তার মধ্যে এটা ছিল শ্রেষ্ঠ প্রার্থনা।
সমাজের জন্য আশীর্বাদ
১৯. কোন্ অভিজ্ঞতা দেখায় যে, কেউ কেউ যিহোবার সাক্ষিদের উচ্চ মানগুলোকে উপলব্ধি করেন?
১৯ অনেকে যেমন মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান সময়ে যে সমাজে যিহোবার সাক্ষিরা সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানকার লোকেরা তাদের মাধ্যমে অনেক উপকার লাভ করেন। যে লোকেরা শান্তি ও সততাকে বাড়ান এবং নৈতিক দিক দিয়ে শুচি থাকার ওপর জোর দেন তারা কেনই বা অন্যের জন্য উপকারজনক হবে না? সেন্ট্রাল এশিয়ার একটা দেশে সাক্ষিরা একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন সরকারি নিরাপত্তা অফিসারের দেখা পান। তিনি বলেছিলেন যে, তাকে একবার বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি যখন যিহোবার সাক্ষিদের তদন্ত করতে গিয়েছিলেন, তখন তাদের সততা ও সৎ আচরণ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাদের অটল বিশ্বাস ও শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তাদের শিক্ষা দেখে প্রশংসা করেছিলেন। এই ব্যক্তি বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছিলেন।
২০. (ক) গত বছরের যিহোবার সাক্ষিদের কাজের বিবরণ কী দেখায়? (খ) কী দেখায় যে, আরও অনেক কাজ করার আছে এবং সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে আমাদের সুযোগকে আমরা কীভাবে দেখি?
২০ হাজার হাজার অভিজ্ঞতার মধ্যে এই প্রবন্ধে বলা মাত্র কয়েকটা অভিজ্ঞতা থেকে এই বিষয়টা স্পষ্ট যে, ২০০১ সালের পরিচর্যা বছরে যিহোবার সাক্ষিরা অনেক ব্যস্ত ছিলেন। * তারা লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, শোকার্ত ব্যক্তিদেরকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন এবং তাদের সুসমাচার প্রচারের কাজ অনেক আশীর্বাদ নিয়ে এসেছিল। ২,৬৩,৪৩১ জন ব্যক্তি ঈশ্বরের প্রতি তাদের উৎসর্গীকরণের প্রতীকস্বরূপ জলে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন। সারা পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচারকদের সংখ্যা ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর যীশুর মৃত্যুর বার্ষিক স্মরণার্থক সভায় ১,৫৩,৭৪,৯৮৬ জনের উপস্থিতি দেখায় যে, আরও অনেক কাজ করার আছে। (১ করিন্থীয় ১১:২৩-২৬) আসুন আমরা সেই নম্র লোকেদের খুঁজে চলি, যারা সুসমাচার শুনে সাড়া দেন। আর যিহোবার প্রসন্নতার বছর যত দিন ধরে চলে, আসুন আমরা “ভগ্নান্তঃকরণ লোকদের” সান্ত্বনা দিয়ে চলি। কী মূল্যবান সুযোগই না আমাদের রয়েছে! আমরা সকলে নিশ্চয়ই যিশাইয়ের এই কথাগুলো বলতে চাই: “আমি সদাপ্রভুতে অতিশয় আনন্দ করিব, আমার প্রাণ আমার ঈশ্বরে উল্লাস করিবে।” (যিশাইয় ৬১:১০) ভবিষ্যদ্বাণীমূলক এই কথাগুলো পূর্ণ করার সময় ঈশ্বর যেন আমাদেরকে কাজে লাগিয়ে চলেন: “প্রভু সদাপ্রভু সমুদয় জাতির সাক্ষাতে ধার্ম্মিকতা ও প্রশংসা অঙ্কুরিত করিবেন।”—যিশাইয় ৬১:১১.
[পাদটীকা]
^ ১৯ থেকে ২২ পৃষ্ঠায় দেওয়া তালিকাটা ২০০১ সালের পরিচর্যা বছরে যিহোবার সাক্ষিদের কাজের রিপোর্ট তুলে ধরে।
আপনার কি মনে আছে?
• যীশু যে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন তার মাধ্যমে নম্র ব্যক্তিরা কীভাবে আশীর্বাদ পেয়েছিলেন?
• যীশুর প্রথম শতাব্দীর শিষ্যদের সুসমাচারের প্রতি যারা সাড়া দিয়েছিলেন তারা কোন্ আশীর্বাদ লাভ করেছিলেন?
• আজকে যারা সুসমাচারকে গ্রহণ করে নেন তারা কীভাবে এর মাধ্যমে আশীর্বাদ পেয়েছেন?
• সুসমাচার প্রচারক হিসেবে আমাদের মূল্যবান সুযোগকে আমরা কীভাবে দেখি?
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
[১৯-২২ পৃষ্ঠার তালিকা]
বিশ্বব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের ২০০১ পরিচর্যা বছরের রিপোর্ট
(বাঁধাই করা খণ্ড দেখুন)
[১৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
যিহোবার সাক্ষিরা সবসময় সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে তাদের দায়িত্বের কথা মনে রাখেন
[১৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
যারা সুসমাচারে সাড়া দেন তারা এক একতাবদ্ধ বিশ্ব ভ্রাতৃসমাজের অংশ হন