সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনার হৃদয় ও মন দিয়ে ঈশ্বরের অন্বেষণ করুন

আপনার হৃদয় ও মন দিয়ে ঈশ্বরের অন্বেষণ করুন

আপনার হৃদয় ও মন দিয়ে ঈশ্বরের অন্বেষণ করুন

সত্য খ্রীষ্টধর্ম, ঈশ্বরকে খুশি করে এমন বিশ্বাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে হৃদয় ও মন দুটোকেই কাজে লাগাতে উৎসাহ দেয়।

 আসলে, খ্রীষ্টধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রীষ্ট শিখিয়েছিলেন যে, আমাদেরকে অবশ্যই “সমস্ত মন” অথবা বুদ্ধি দিয়ে, “সমস্ত অন্তঃকরণ” ও সেইসঙ্গে “সমস্ত প্রাণ” দিয়ে ঈশ্বরকে ভালবাসতে হবে। (মথি ২২:৩৭) হ্যাঁ, আমাদের উপাসনায় আমাদের হৃদয় ও মন অবশ্যই এক মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

যীশু তাঁর শিক্ষার বিষয়ে চিন্তা করতে তাঁর শ্রোতাদেরকে আমন্ত্রণ জানানোর সময় প্রায়ই বলতেন: “তোমাদের কেমন বোধ হয়?” (মথি ১৭:২৫; ১৮:১২; ২১:২৮; ২২:৪২) একইভাবে, ‘তাহাদের সরল চিত্তকে জাগ্রত করিতে’ প্রেরিত পিতর সহ বিশ্বাসীদেরকে লিখেছিলেন। (২ পিতর ৩:১) সবচেয়ে বেশি জায়গায় ভ্রমণ করেছেন এমন একজন প্রাচীন মিশনারি প্রেরিত পৌল, খ্রীষ্টানদের তাদের “যুক্তি করার ক্ষমতা” (NW)-কে কাজে লাগাতে এবং “ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ” তা ‘[নিজেদের] পরীক্ষা করিয়া জানিবার’ পরামর্শ দিয়েছিলেন। (রোমীয় ১২:১, ২) তাদের বিশ্বাসকে এইরকমভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ, মনোযোগপূর্বক পরীক্ষা করার দ্বারাই খ্রীষ্টানরা ঈশ্বরকে খুশি করেন এবং জীবনের পরীক্ষাগুলোকে সফলভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে এমন বিশ্বাস গড়ে তুলতে পারেন।—ইব্রীয় ১১:১, ৬.

এইরকম বিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য অন্যদেরকে সাহায্য করতে, প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টান প্রচারকরা ‘তাহাদের সহিত শাস্ত্রের কথা লইয়া প্রসঙ্গ করিতেন,’ ও তারা যা শিক্ষা দিচ্ছিলেন সেটার ‘অর্থ বুঝাইয়া দিতেন, এবং দেখাইতেন।’ (প্রেরিত ১৭:১-৩) এইরকম এক যুক্তিযুক্ত উপস্থাপনার ফলে সৎহৃদয়ের ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। উদাহরণ হিসেবে, বিরয়ার মাকিদনিয়া নগরের অনেক লোক “সম্পূর্ণ আগ্রহপূর্ব্বক [ঈশ্বরের] বাক্য গ্রহণ করিল, আর এ সকল [পৌল ও তার সঙ্গীরা যা ব্যাখ্যা করেছিলেন] বাস্তবিকই এইরূপ কি না, তাহা জানিবার জন্য প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করিতে লাগিল।” (প্রেরিত ১৭:১১) এখানে দুটো বিষয় লক্ষ্য করার মতো। প্রথমত, বিরয়ার লোকেরা ঈশ্বরের বাক্য শুনতে আগ্রহী ছিল; দ্বিতীয়ত, তারা যা শুনেছিল সেগুলোকে সঠিক মনে করে অন্ধের মতো বিশ্বাস না করে বরং শাস্ত্র থেকে তারা পরীক্ষা করে দেখেছিল। এর জন্য খ্রীষ্টান মিশনারি লূক বিরয়ার লোকেদেরকে সম্মান দেখিয়ে “ভদ্র” বলে ডেকে তাদের প্রশংসা করেছিলেন। আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে পরীক্ষা করার সময় আপনি কি এইরকম এক ভদ্র মনোভাব দেখান?

মন ও হৃদয় একসঙ্গে কাজ করে

আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, সত্য উপাসনায় মন ও হৃদয় দুটোই জড়িত। (মার্ক ১২:৩০) আগের প্রবন্ধে ভাড়া করা রং মিস্ত্রির উদাহরণের কথা চিন্তা করুন, যিনি একটা বাড়ি রং করার সময় ভুল রং ব্যবহার করেছিলেন। তিনি যদি তার মালিকের নির্দেশনাগুলো শুনতেন, তা হলে তিনি মনপ্রাণ দিয়ে তার কাজ করতে পারতেন এবং তার এই আস্থা থাকত যে, তার কাজে মালিক খুশি হবেন। আমাদের উপাসনার ব্যাপারেও একই বিষয় প্রযোজ্য।

যীশু বলেছিলেন, “প্রকৃত ভজনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতার ভজনা করিবে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (যোহন ৪:২৩) তাই, প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “এই কারণ আমরাও, . . . তোমাদের নিমিত্তে প্রার্থনা ও বিনতি করিতে ক্ষান্ত হই নাই, যেন তোমরা সমস্ত আত্মিক জ্ঞানে ও বুদ্ধিতে তাঁহার ইচ্ছার তত্ত্বজ্ঞানে [“সঠিক জ্ঞানে,” NW] পূর্ণ হও, আর তদ্দ্বারা প্রভুর যোগ্যরূপে সর্ব্বতোভাবে প্রীতিজনক আচরণ কর।” (কলসীয় ১:৯, ১০) এইধরনের ‘সঠিক জ্ঞান’ আন্তরিক লোকেদেরকে তাদের উপাসনায় পূর্ণ আস্থা নিয়ে তাদের মনপ্রাণ ঢেলে দিতে সাহায্য করে কারণ ‘[তাহারা] যাহা জানে তাহার ভজনা করে।’—যোহন ৪:২২.

এই কারণগুলোর জন্য যিহোবার সাক্ষিরা শিশুদের অথবা নতুন আগ্রহী ব্যক্তিদের যারা মনোযোগপূর্বক শাস্ত্র অধ্যয়ন করেননি, তাদেরকে বাপ্তিস্ম দেন না। যীশু তাঁর অনুসারীদের আদেশ দিয়েছিলেন: “সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; . . . আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও।” (মথি ২৮:১৯, ২০) ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান নেওয়ার পরই আন্তরিক বাইবেল ছাত্ররা উপাসনার ব্যাপারে সঠিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করা এক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আপনি কি এইরকম সঠিক জ্ঞান নেওয়ার চেষ্টা করছেন?

প্রভুর প্রার্থনাকে বোঝা

বাইবেলের সঠিক জ্ঞান থাকা এবং এটা যা বলে সে বিষয়ে সীমিত জ্ঞান থাকার মধ্যে পার্থক্য দেখতে আসুন আমরা মথি ৬:৯-১৩ পদে লিপিবদ্ধ, সাধারণভাবে যেটাকে প্রভুর প্রার্থনা বলা হয় সেটাকে বিবেচনা করি।

গির্জাতে লক্ষ লক্ষ লোকেরা প্রতিদিন যীশুর আদর্শ প্রার্থনাটাকে মুখস্থ বলে। কিন্তু কতজনকে এর অর্থ শেখানো হয়েছে, বিশেষ করে প্রার্থনার প্রথম অংশ যেখানে ঈশ্বরের নাম ও রাজ্যের উল্লেখ রয়েছে? এই বিষয়গুলো এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, যীশু সেগুলোকে প্রার্থনায় একেবারে প্রথমে উল্লেখ করেছিলেন।

এভাবে এটা শুরু হয়: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক” অর্থাৎ পবিত্র করা হোক। লক্ষ্য করুন যে, ঈশ্বরের নাম পবিত্র করার জন্য যীশু প্রার্থনা করতে বলেছিলেন। এটা অনেক লোকের মধ্যে, অন্তত এই প্রশ্ন দুটো উত্থাপন করে থাকে। প্রথমত, ঈশ্বরের নাম কী? আর দ্বিতীয়ত, কেন এটাকে পবিত্র করা দরকার?

মূল ভাষাগুলোর বাইবেলে ৭,০০০ রেরও বেশি জায়গায় প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজে পাওয়া যায়। একটা পাওয়া যায় গীতসংহিতা ৮৩:১৮ পদে: “আর জানুক যে তুমি, যাঁহার নাম সদাপ্রভু একা তুমিই সমস্ত পৃথিবীর উপরে পরাৎপর।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) ঈশ্বরের নাম যিহোবা সম্বন্ধে যাত্রাপুস্তক ৩:১৫ পদ বলে: “আমার এই নাম অনন্তকালস্থায়ী, এবং এতদ্দ্বারা আমি পুরুষে পুরুষে স্মরণীয়।” * কিন্তু কেন ঈশ্বরের নাম যেটা শুদ্ধতা ও পবিত্রতার প্রতীক, সেটাকে পবিত্র করা দরকার? কারণ মানব ইতিহাসের একেবারে শুরু থেকেই এই নামের ওপর নিন্দা এসেছে ও দোষারোপ করা হয়েছে।

এদনে, ঈশ্বর আদম ও হবাকে বলেছিলেন যে, তারা যদি নিষিদ্ধ গাছের ফল খায়, তা হলে মারা যাবে। (আদিপুস্তক ২:১৭) শয়তান ধৃষ্টতার সঙ্গে হবাকে এই বলে ঈশ্বরের বিরোধিতা করেছিল: “কোন ক্রমে মরিবে না।” তাই, শয়তান ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী বলে দোষ দেয়। কিন্তু সে এখানেই থেমে থাকেনি। সে হবাকে বলে যে, ঈশ্বর অন্যায়ভাবে তার কাছ থেকে মূল্যবান জ্ঞান লুকাচ্ছেন আর এভাবে সে ঈশ্বরের নামের ওপর আরও নিন্দা নিয়ে আসে। “কেননা ঈশ্বর জানেন, যে দিন তোমরা [সদসদ্‌-জ্ঞানদায়ক গাছের ফল] খাইবে, সেই দিন তোমাদের চক্ষু খুলিয়া যাইবে, তাহাতে তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইয়া সদসদ্‌-জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে।” কত বড় অপবাদ!—আদিপুস্তক ৩:৪, ৫.

নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে, আদম ও হবা শয়তানের পক্ষ নিয়েছিল। সেই সময় থেকে বেশির ভাগ মানুষ, জেনেশুনে অথবা না জেনে, ঈশ্বরের ধার্মিক মানগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে সেই আদি নিন্দাকে আরও বাড়িয়েছে। (১ যোহন ৫:১৯) লোকেরা তাদের দুঃখকষ্টের জন্য ঈশ্বরকে দায়ী করে এখনও তাঁর দোষারোপ করে, যদিও তা হয়তো নিজেদের মন্দ কাজেরই ফল। হিতোপদেশ ১৯:৩ পদ বলে, “মানুষের নিজের মূর্খতা তার জীবনকে ধ্বংস করে আর তাই সে প্রভুর বিরুদ্ধে রুষ্ট হয়।” (নতুন ইংরেজি বাইবেল) আপনি কি বুঝতে পারছেন যে, কেন যীশু প্রার্থনা করেছিলেন যে তাঁর নাম যেন পবিত্র হয়, যিনি সত্যিই তাঁর পিতাকে ভালবাসতেন?

“তোমার রাজ্য আইসুক”

ঈশ্বরের নাম পবিত্র হওয়ার জন্য প্রার্থনা করার পর, যীশু বলেছিলেন: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” (মথি ৬:১০) এই অংশটা সম্বন্ধে আমরা হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারি: ‘ঈশ্বরের রাজ্য কী? আর ঈশ্বরের ইচ্ছা পৃথিবীতে পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে এই রাজ্য আসার কী সম্পর্ক রয়েছে?’

বাইবেলে “রাজ্য” শব্দের অর্থ মূলত “একজন রাজার শাসনব্যবস্থা।” তা হলে যুক্তিযুক্তভাবে, ঈশ্বরের রাজ্য ঈশ্বরের এক শাসনব্যবস্থা অথবা সরকারকে বোঝায়, যেটার রাজা তাঁর দ্বারা মনোনীত। এই রাজা পুনরুত্থিত যীশু খ্রীষ্ট ছাড়া আর কেউ নন, যিনি হলেন “রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু।” (প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৬; দানিয়েল ৭:১৩, ১৪) যীশু খ্রীষ্টের হাতে ঈশ্বরের মশীহ রাজ্য সম্বন্ধে ভাববাদী দানিয়েল লিখেছিলেন: “সেই রাজগণের [যে মনুষ্য সরকারগুলো এখন শাসন করছে] সময়ে স্বর্গের ঈশ্বর এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না, এবং সেই রাজত্ব অন্য জাতির হস্তে সমর্পিত হইবে না; তাহা ঐ সকল রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট করিয়া আপনি চিরস্থায়ী হইবে” অর্থাৎ চিরকাল থাকবে।—দানিয়েল ২:৪৪.

হ্যাঁ, ঈশ্বরের রাজ্য পৃথিবীকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করবে, সমস্ত দুষ্টতাকে দূর করবে এবং “চিরস্থায়ী” ভাবে অর্থাৎ চিরকাল শাসন করবে। এইভাবে, ঈশ্বরের রাজ্য হল সেই মাধ্যম যেটার দ্বারা যিহোবা তাঁর নামকে পবিত্র করে শয়তান ও দুষ্ট মানুষের সমস্ত মিথ্যা নিন্দাকে দূর করবেন।—যিহিষ্কেল ৩৬:২৩.

অন্যান্য সমস্ত সরকারের মতো, ঈশ্বরের রাজ্যেরও প্রজা রয়েছে। এরা কারা? বাইবেল উত্তর দেয়: “মৃদুশীলেরা দেশের অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:১১) একইভাবে, যীশু বলেছিলেন: “ধন্য যাহারা মৃদুশীল, কারণ তাহারা দেশের অধিকারী হইবে।” অবশ্যই, এই লোকেদের ঈশ্বর সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান রয়েছে, যেটা জীবনের জন্য প্রয়োজনীয়।—মথি ৫:৫; যোহন ১৭:৩.

আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে সম্পূর্ণ পৃথিবী নম্র, মৃদুশীল লোকেদের দ্বারা ভরে যাবে, যারা সত্যিই যিহোবাকে ও একে অপরকে ভালবাসেন? (১ যোহন ৪:৭, ৮) এর জন্যই যীশু প্রার্থনা করেছিলেন যখন তিনি বলেছিলেন: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।” কেন যীশু তাঁর অনুসারীদের এভাবে প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন তা কি আপনি বুঝতে পেরেছেন? এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, সেই প্রার্থনার পরিপূর্ণতা ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে তা কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন?

লক্ষ লক্ষ লোকেরা এখন শাস্ত্রের ওপর যুক্তি করছে

পৃথিবীব্যাপী আধ্যাত্মিক শিক্ষার এক অভিযান সম্বন্ধে যীশু ভাববাণী করেছিলেন, যা ঈশ্বরের আসন্ন রাজ্যের বিষয় ঘোষণা করবে। তিনি বলেছিলেন: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন [বর্তমান জগৎ বা বিধিব্যবস্থার] শেষ উপস্থিত হইবে।”—মথি ২৪:১৪.

সারা পৃথিবীতে প্রায় ষাট লক্ষ যিহোবার সাক্ষি তাদের প্রতিবেশীদের কাছে সুসমাচার জানাচ্ছেন। যুক্তি করার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে “শাস্ত্র পরীক্ষা” করে ঈশ্বর ও তাঁর রাজ্য সম্বন্ধে আরও জানার জন্য তারা আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। সেই মতো কাজ করা আপনার বিশ্বাসকে আরও মজবুত করবে এবং এক পরমদেশ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার বিষয়ে আপনার আশাকে আরও উজ্জ্বল করবে, যে-পৃথিবী “সমুদ্র যেমন জলে আচ্ছন্ন, তেমনি . . . সদাপ্রভু-বিষয়ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ হইবে।” —যিশাইয় ১১:৬-৯.

[পাদটীকা]

^ কিছু পণ্ডিত “যিহোবার” পরিবর্তে “ইয়াওয়ে” অনুবাদ করাকে পছন্দ করেন। কিন্তু বেশির ভাগ আধুনিক বাইবেল অনুবাদকেরা যে-প্রকারেই হোক, তাদের সংস্করণ থেকে ঈশ্বরের নাম বাদ দিয়ে সেই জায়গায় সাধারণ উপাধি “প্রভু” অথবা “ঈশ্বর” বসিয়েছেন। ঈশ্বরের নাম সম্বন্ধে এক বিস্তারিত আলোচনার জন্য, দয়া করে যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত ঐশ্বরিক নামটি যা চিরকাল থাকবে (ইংরেজি) ব্রোশারটা দেখুন।

[৮ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

মহান শিক্ষককে অনুকরণ করুন

যীশু প্রায়ই বাইবেলের নির্দিষ্ট বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে শিক্ষা দিতেন। উদাহরণ হিসেবে, তাঁর পুনরুত্থানের পর তিনি তাঁর মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়া দুজন শিষ্যের কাছে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে তাঁর ভূমিকা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করেছিলেন। লূক ২৪:২৭ পদ বলে: “তিনি মোশি হইতে ও সমুদয় ভাববাদী হইতে আরম্ভ করিয়া সমুদয় শাস্ত্রে তাঁহার নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তাহা তাঁহাদিগকে বুঝাইয়া দিলেন।”

লক্ষ্য করুন যে, যীশু তাঁর আলোচনায় একটা নির্দিষ্ট বিষয়—‘নিজেকে,’ অর্থাৎ মশীহকে—বেছে নিয়েছিলেন এবং ‘সমুদয় শাস্ত্র’ থেকে উদ্ধৃতি করেছিলেন। বস্তুত, ঠিক যেমন ছবির আলাদা আলাদা টুকরোগুলোকে জুড়ে একটা গোটা ছবি বানানো হয়, তেমনই যীশু বাইবেলের প্রাসঙ্গিক পদগুলোকে একসঙ্গে জুড়তে পেরেছিলেন, যেগুলো সত্যের পরিষ্কার ছবি দেখতে তাঁর শিষ্যদেরকে সাহায্য করেছিল। (২ তীমথিয় ১:১৩) ফলে, তাদের কাছে বিষয়গুলো শুধু পরিষ্কারই হয়নি কিন্তু সেগুলো তাদেরকে গভীরভাবে প্রেরণাও দিয়েছিল। বিবরণ আমাদেরকে জানায়: “তাঁহারা পরস্পর কহিলেন, পথের মধ্যে যখন তিনি আমাদের সহিত কথা বলিতেছিলেন, আমাদের কাছে শাস্ত্রের অর্থ খুলিয়া দিতেছিলেন, তখন আমাদের অন্তরে আমাদের চিত্ত কি উত্তপ্ত হইয়া উঠিতেছিল না?”—লূক ২৪:৩২.

যিহোবার সাক্ষিরা তাদের পরিচর্যায় যীশুর পদ্ধতিকে অনুকরণ করার চেষ্টা করেন। প্রধান যে-প্রকাশনাগুলো থেকে তারা অধ্যয়ন করেন তা হল, ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান? ব্রোশার এবং জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে বই। এগুলো বাইবেলের অনেক আগ্রহজনক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে যেমন: “ঈশ্বর কে?,” “কেন ঈশ্বর কষ্টভোগের অনুমতি দিয়েছেন?,” “কিভাবে আপনি সত্য ধর্মের সন্ধান পেতে পারেন?,” “এটাই হল শেষ কাল!” এবং “ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে এমন এক পরিবার গড়ে তোলা।” প্রত্যেকটা পাঠে অনেক শাস্ত্রপদ রয়েছে।

এগুলো এবং অন্যান্য বিষয় সম্বন্ধে বিনা পয়সায় গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য আপনার এলাকায় যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অথবা এই পত্রিকার ২ পৃষ্ঠায় দেওয়া ঠিকানায় লিখতে আপনাকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

[চিত্র]

বাইবেলের নির্দিষ্ট বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ আকর্ষণ করে আপনার ছাত্রের হৃদয়ে পৌঁছান

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আপনি কি যীশুর আর্দশ প্রার্থনার অর্থ বুঝেছেন?

“হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক . . . ”

“তোমার [মশীহ] রাজ্য আইসুক . . .

“তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক”