সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

কোথায় আপনার সুরক্ষা রয়েছে?

কোথায় আপনার সুরক্ষা রয়েছে?

কোথায় আপনার সুরক্ষা রয়েছে?

পশ্চিম আফ্রিকার এক ছোট্ট গ্রাম থেকে যুবক জোজুয়া তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের বিদায় জানিয়ে চলে যায়। * সে আর্থিক সুরক্ষার খোঁজে বড় শহরে আসে। কিন্তু এখানে এসে সে যখন দেখে যে, শহরের রাস্তাগুলো আসলে সোনা দিয়ে মোড়া নয়, তখন সে হতাশ হয়ে পড়ে।

 শহরের জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার লড়াই জোজুয়াকে হতাশ করে। বড় শহর সম্বন্ধে সে যা ভেবেছিল তার থেকে এর আকাশপাতাল পার্থক্য রয়েছে। ইতিমধ্যে সেই ফেলে আসা ছোট্ট গ্রামে তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জোজুয়ার হৃদয়ে জেগে ওঠে। কিন্তু সে এই ভেবে ভয় পায় যে, কিছু গ্রামবাসী তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে। তার দুশ্চিন্তা যে, ‘শহরে গিয়ে সফল হতে পারিনি বলে তারা আমাকে নিষ্ফল ব্যক্তি বলবে।’

তার বাবামা যে কত হতাশ হবে এই চিন্তা তাকে আরও ভারগ্রস্ত করে তোলে। তারা আর্থিক সাহায্যের জন্য তার ওপরই ভরসা করে আছে। মনের এই বোঝাকে দূর করার চেষ্টায় জোজুয়া কম মাইনের চাকরি করে, যেখানে তাকে অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয় এবং যত টাকা সে কামাই করার স্বপ্ন দেখেছিল তার মাত্র কিছু অংশ আয় করে। অত্যধিক খাটুনির জন্য সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর এর ফলে খ্রীষ্টীয় যে-কাজগুলোকে সে খুব মূল্য দেয়, সেগুলোর জন্য সময় দেওয়া দিন-দিন কমে যায়। তার পরিবার ও পুরনো বন্ধুবান্ধবদের উষ্ণ প্রেম থেকে দূরে থাকায় সে খুব দুঃখ পায় ও একলা বোধ করে। সে বুঝতে পারে, যে-সুরক্ষার জন্য সে আকুল আকাঙ্ক্ষা করেছিল, তা ওই শহর তাকে দিতে পারেনি।

যদিও নাম ও জায়গাগুলো আলাদা হতে পারে কিন্তু জোজুয়ার এই দুঃখজনক গল্প প্রায়ই ঘটে থাকে। কারণটা এই নয় যে, জোজুয়ার শহরে চলে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষার পিছনে কোন স্বার্থ ছিল, বরং সে শুধু সুরক্ষার খোঁজে সেখানে গিয়েছিল। সে অন্তর থেকে বুঝতে পেরেছিল যে, সেই ছোট্ট গ্রামের চেয়ে শহরে তার আরও বেশি সুযোগ রয়েছে। অবশ্য, কখনও কখনও একজন ব্যক্তি বস্তুগতভাবে নিজের অবস্থাকে উন্নত করতে পারে কিন্তু এটা প্রকৃত সুরক্ষা নয়। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, জোজুয়ার বেলায় তা হয়নি, এমনকি যারা ঠিক এইরকম চেষ্টা করে তাদের অনেকের বেলায়ও সম্ভবত তা হবে না। এটা আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞেস করতে প্রেরণা দেয় যে, ‘সুরক্ষা বলতে কী বোঝায়?’

সুরক্ষা, বিভিন্ন লোকের জন্য বিভিন্ন অর্থ রাখে। একটা অভিধান বলে যে, সুরক্ষা হল “বিপদ থেকে মুক্তি” অথবা “ভয় বা উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্তি।” বেশির ভাগ লোক মনে করে যে, এখনই পুরোপুরিভাবে “বিপদ থেকে মুক্তি” পাওয়া যাবে না। তাদের চারপাশে ভয়াবহ পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও তারা যতদিন সুরক্ষা বোধ করে ততদিন সন্তুষ্ট।

আপনার সম্বন্ধে কী বলা যায়? সুরক্ষার জন্য আপনি কোথায় তাকান? জোজুয়া যেমন ভেবেছিল, গ্রামে না পেয়ে শহরে কি তা পাওয়া যায়? নাকি টাকাপয়সার মাধ্যমে পাওয়া যায়, তা যেখানে বা যেভাবেই আপনি অর্জন করুন না কেন? সমাজে উচ্চ পদমর্যাদার চেষ্টা করার দ্বারা কি তা পাওয়া যায়? আপনার সুরক্ষা যেখানেই রয়েছে বলে আপনি বিশ্বাস করুন না কেন, তা আপনার ও আপনার পরিবার উভয়ের জন্য কতদিন স্থায়ী থাকবে?

বেশির ভাগ লোকেরা যে-তিনটে উপায়ের মধ্যে সুরক্ষা খোঁজে, আসুন আমরা সেগুলো বিবেচনা করি—ভৌগোলিক অবস্থান; টাকাপয়সা; পদমর্যাদা। এরপর আমরা পরীক্ষা করে দেখব যে, কোথায় প্রকৃত ও স্থায়ী সুরক্ষা রয়েছে।

[পাদটীকা]

^ নাম পালটানো হয়েছে।