পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
ধর্মীয় কারণে কোন্ কোন্ পরিস্থিতিতে একজন খ্রীষ্টান স্ত্রীর মাথায় কাপড় দেওয়া উপযুক্ত?
প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “যে কোন স্ত্রী অনাবৃত মস্তকে প্রার্থনা করে, কিম্বা ভাববাণী বলে, সে আপন মস্তকের অপমান করে।” কেন? মস্তকব্যবস্থা সম্বন্ধে বাইবেলের এই নীতির জন্য: “স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ পুরুষ।” খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে প্রার্থনা করা অথবা উপদেশ দেওয়া সাধারণত একজন পুরুষের দায়িত্ব। তাই, একজন খ্রীষ্টান স্ত্রী যখন উপাসনার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলোর দেখাশোনা করেন, যা সাধারণত তার স্বামীর অথবা একজন বাপ্তাইজিত পুরুষের করার কথা, তখন তার মাথায় কাপড় দেওয়া উচিত।—১ করিন্থীয় ১১:৩-১০.
বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে হয়তো একজন খ্রীষ্টান স্ত্রীর মাথায় কাপড় দেওয়ার মতো পরিস্থিতি আসতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, একত্রে পারিবারিক অধ্যয়নে শিক্ষা দেওয়ার অথবা খাবারের সময় সাধারণত স্বামী নেতৃত্ব দেন এবং তিনিই তাদের হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। কিন্তু, স্বামী যদি অবিশ্বাসী হন, তা হলে এই দায়িত্ব হয়তো স্ত্রীর ওপর এসে পড়ে। তাই, নিজের এবং অন্যদের জন্য উচ্চৈঃস্বরে প্রার্থনা করার সময় অথবা স্বামীর উপস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করার সময়, উপযুক্তভাবেই একজন খ্রীষ্টান বোনের মাথায় কাপড় দেওয়া দরকার। তার স্বামী যদি উপস্থিত না থাকেন, তা হলে স্ত্রীর মাথায় কাপড় দেওয়ার দরকার নেই কারণ ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার অধিকার তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছেন।—হিতোপদেশ ১:৮; ৬:২০.
কিন্তু, পরিবারের একজন অল্পবয়স্ক ছেলে ১ তীমথিয় ২:১২) বাবা যদি একজন বিশ্বাসী হন, তা হলে তিনি তার ছেলেকে শিক্ষা দেবেন। কিন্তু, বাবা যদি অনুপস্থিত থাকেন, তা হলে এই অল্পবয়স্ক বাপ্তাইজিত ছেলে ও অন্যান্য ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করার সময় মায়ের মাথায় কাপড় দেওয়া উচিত। এইধরনের অধ্যয়নে অথবা খাবারের সময় তিনি বাপ্তাইজিত ছেলেকে প্রার্থনা করতে বলবেন কি না সেটা তার সিদ্ধান্ত। তিনি হয়তো মনে করতে পারেন যে, তার ছেলে এখনও যথেষ্ট দক্ষ নয় আর তাই তিনি নিজেই হয়তো প্রার্থনা করতে পারেন। এইরকম ক্ষেত্রে তিনি যদি প্রার্থনা করা বেছে নেন, তা হলে তার মাথায় কাপড় দেওয়া উচিত।
যদি যিহোবা ঈশ্বরের উৎসর্গীকৃত, বাপ্তাইজিত দাস হয়, তা হলে কী? যেহেতু ছেলে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর একজন সদস্য, তাই খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর পুরুষ সদস্যদের কাছ থেকে তার শিক্ষা পাওয়া উচিত। (কিছু খ্রীষ্টীয় কাজকর্মে অংশ নেওয়ার সময়, খ্রীষ্টান স্ত্রীদের মাথায় কাপড় দেওয়ার দরকার হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, সপ্তার মাঝে ক্ষেত্রের পরিচর্যা সভার জন্য হয়তো কেবল খ্রীষ্টান বোনেরা উপস্থিত আছেন, কোন বাপ্তাইজিত পুরুষ নেই। এ ছাড়া, হয়তো এরকম পরিস্থিতি হতে পারে যখন মণ্ডলীর কোন একটা সভায় বাপ্তাইজিত কোন পুরুষ নেই। মণ্ডলীগতভাবে ব্যবস্থাকৃত কোন সভা অথবা ক্ষেত্রের পরিচর্যার জন্য সভা, যা সাধারণত একজন ভাইয়ের করার কথা তা যদি একজন বোন পরিচালনা করেন, তা হলে তার মাথায় কাপড় দেওয়া উচিত।
বাইবেলের বক্তৃতাগুলোকে মুখে অনুবাদ অথবা সাংকেতিক ভাষায় অনুবাদ করার সময় কিংবা মণ্ডলীর কোন সভায় বাইবেল অধ্যয়ন সহায়ক থেকে অনুচ্ছেদগুলো সকলের সামনে পড়ার সময় খ্রীষ্টান স্ত্রীলোকদের কি মাথায় কাপড় দিতে হবে? না। যে-বোনেরা এই কাজগুলো করেন, তারা দেখাশোনা করছেন না অথবা শিক্ষা দিচ্ছেন না। একইভাবে, নমুনা দেখানোয় অংশ নেওয়ার সময়, বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বলার সময় অথবা ঐশিক পরিচর্যা বিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় বোনদের মাথায় কাপড় দেওয়ার দরকার নেই।
যদিও বাপ্তাইজিত পুরুষরাই মণ্ডলীতে শিক্ষা দেবেন কিন্তু মণ্ডলীর বাইরে প্রচার করা ও শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পুরুষ ও স্ত্রী উভয়েরই রয়েছে। (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০) তাই, একজন খ্রীষ্টান স্ত্রী যখন যিহোবার একজন পুরুষ সাক্ষির সামনে বাইরের লোকেদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে কথা বলেন, তখন তার মাথায় কাপড় দেওয়ার দরকার নেই।
কিন্তু, যখন কোন গৃহে নিয়মিত, তালিকা অনুযায়ী বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করা হয় এবং একজন উৎসর্গীকৃত, বাপ্তাইজিত পুরুষ উপস্থিত আছেন, তখন পরিস্থিতি আলাদা। এটা আগে থেকে ব্যবস্থা করা শিক্ষাদানের এক পর্ব, যেখানে আসলে অধ্যয়নের পরিচালক দেখাশোনা করে থাকেন। এই পরিস্থিতিগুলোতে, কোন অধ্যয়নকে মণ্ডলীর একটা অংশ হিসেবে দেখা উচিত। একজন বাপ্তাইজিত পুরুষ সাক্ষির উপস্থিতিতে যদি একজন বাপ্তাইজিত স্ত্রী সাক্ষি এই অধ্যয়ন পরিচালনা করেন, তা হলে উপযুক্ত কারণেই তাকে মাথায় কাপড় দিতে হবে। কিন্তু, প্রার্থনা উৎসর্গীকৃত ভাই করবেন। একজন উৎসর্গীকৃত ভাইয়ের উপস্থিতিতে একজন বোন প্রার্থনা করবেন না, যদি না কোন বিশেষ কারণ থাকে যেমন সেই ভাই হয়তো কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।
এমন পরিস্থিতি হতে পারে যখন একজন খ্রীষ্টান বোনের সঙ্গে একজন অবাপ্তাইজিত পুরুষ রাজ্য প্রকাশক কোন বাইবেল অধ্যয়নে যান। বোন চাইলে তাকে অধ্যয়ন পরিচালনা করার জন্য বলতে পারেন। কিন্তু যেহেতু অবাপ্তাইজিত প্রকাশক বাপ্তাইজিত বোনের হয়ে প্রার্থনা করতে পারেন না, তাই অধ্যয়নে বোনেরই প্রার্থনা করা উপযুক্ত হবে। বোন যদি অধ্যয়ন পরিচালনা ও প্রার্থনা করেন, তা হলে তাকে মাথায় কাপড় দিতে হবে। এমনকি যদিও এই পুরুষ প্রকাশক বাপ্তিস্ম নেননি কিন্তু প্রচার করছেন বলে বাইরের লোকেরা তাকে মণ্ডলীর লোক বলেই শনাক্ত করবে।
প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “স্ত্রীর মস্তকে কর্ত্তৃত্বের চিহ্ন রাখা কর্ত্তব্য—দূতগণের জন্য।” হ্যাঁ, খ্রীষ্টান বোনেদের অগণিত দূতেদের সামনে উত্তম উদাহরণ রাখার এক বিশেষ সুযোগ রয়েছে, যে-দূতেরা সবসময় অনুগতভাবে যিহোবার বশীভূত থাকেন। এটা কতই না উপযুক্ত যে, ধার্মিক স্ত্রীলোকেরা দরকার হলে মাথায় কাপড় দেওয়ার প্রতি যথার্থ বিবেচনা দেখান!
[২৬ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
মাথায় কাপড় দেওয়া হল মস্তকব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখানোর এক চিহ্ন