সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

কুসংস্কারগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?

কুসংস্কারগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?

কুসংস্কারগুলো কি আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে?

 কুসংস্কারের ওপর বিশ্বাস জগতে সর্বত্র দেখা যায়। এগুলোকে কখনও কখনও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অংশ হিসেবে মূল্য দেওয়া হয়। অথবা এগুলোকে অল্প আগ্রহের—জীবনে বৈচিত্র্য আনে এমন এক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পাশ্চাত্য জগতে, কুসংস্কারগুলোকে সাধারণত গুরুগম্ভীর ব্যাপার হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। অন্য জায়গায়, যেমন আফ্রিকায় কুসংস্কারগুলো লোকেদের জীবনকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

আফ্রিকার অধিকাংশ সংস্কৃতি কুসংস্কারের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আফ্রিকায় সিনেমা, রেডিওর কার্যক্রম ও সাহিত্যাদি কুসংস্কার ও রহস্যময় বিষয়গুলোকে তুলে ধরে যেমন জাদুবিদ্যা, পূর্বপুরুষদের উপাসনা এবং মাদুলির ব্যবহার। লোকেরা কুসংস্কারগুলোর দ্বারা কেন এতটা প্রভাবিত আর কুসংস্কারগুলো কোথা থেকে এসেছে?

কুসংস্কারগুলোর পিছনে কী রয়েছে?

বেশির ভাগ কুসংস্কার মূলত মৃত ব্যক্তিদের আত্মা অথবা অন্য কোন প্রকারের আত্মার প্রতি ভয় থেকে শুরু হয়। এই ঘটনাগুলো সম্বন্ধে এভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, এই আত্মারা জীবিত ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে, হুমকি অথবা আশীর্বাদ দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে।

এ ছাড়া, আরোগ্য ও ওষুধের সঙ্গেও কুসংস্কারগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, অধিকাংশ ব্যক্তিদের জন্য আধুনিক ওষুধ অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও প্রায়ই দুষ্প্রাপ্য হয়ে থাকে। এইজন্য অনেকে সুস্থ হওয়ার জন্য অথবা কিছু প্রতিষেধক ধাপ নেওয়ার চেষ্টায় পূর্বপুরুষদের রীতিনীতি, প্রেতচর্চা ও কুসংস্কারগুলোর সাহায্য নেন। এ ছাড়া, তারা একজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার চেয়ে একজন ওঝার কাছে যেতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, যিনি তাদের সমস্ত রীতিনীতি সম্বন্ধে জানেন এবং তাদের ভাষায় কথা বলেন। এভাবে কুসংস্কারপূর্ণ বিশ্বাসগুলো অক্ষুণ্ণ থাকে।

পরম্পরাগত কুসংস্কারপূর্ণ বিশ্বাস হল যে, অসুস্থতা ও দুর্ঘটনাগুলো কেবল হঠাৎ করে ঘটে যায় না কিন্তু প্রেতাত্মার জগতে থাকা বিভিন্ন শক্তি এই ঘটনাগুলো ঘটায়। ওঝারা হয়তো দাবি করতে পারেন যে, মৃত পূর্বপুরুষ কোন কারণে অখুশি আছেন। অথবা আত্মিক মাধ্যমগুলো হয়তো বলতে পারে যে, বিরোধী ওঝার সাহায্যে কেউ ওই অসুস্থ ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছে আর এই কারণেই অসুস্থতা বা দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার রয়েছে এবং এগুলোর ব্যাপ্তি স্থানীয় লোককথা, পৌরাণিক কাহিনী ও পরিস্থিতিগুলোর ওপর নির্ভর করে। কিন্তু এর এক সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল এই বিশ্বাস যে, অদৃশ্য প্রেতজগতের কাউকে বা কোন কিছুকে সন্তুষ্ট করা প্রয়োজন।

অক্ষতিকর অথবা বিপদজনক?

বেশির ভাগ পরিবারের জন্য যমজ বাচ্চার জন্ম হল এক অসাধারণ ও রোমাঞ্চকর ঘটনা। কিন্তু কুসংস্কার মেনে চলা ব্যক্তি এটাকে একটা চিহ্ন হিসেবে মনে করতে পারে। পশ্চিম আফ্রিকার কিছু প্রদেশে এটাকে দেবতার জন্ম হিসেবে দেখা হয় এবং সেই যমজ বাচ্চাদের উপাসনা করা হয়। এই যমজ বাচ্চাদের একজন অথবা দুজনেই যদি মারা যায়, তা হলে এই যমজ বাচ্চাদের খোদাই করা ছোট্ট মূর্তিগুলো বানানো হয় এবং এই মূর্তিগুলোর কাছে ওই পরিবারের সদস্যদের খাবার দেওয়া উচিত। কোথাও কোথাও, লোকেরা যমজ বাচ্চাদের জন্মকে একটা অভিশাপ হিসেবে দেখে, এত বড় অভিশাপ যে, কিছু বাবামা সেই বাচ্চাদের অন্তত একজনকে এমনকি মেরেও ফেলেন। কেন? তারা বিশ্বাস করেন যে, যমজ বাচ্চাদের দুজনেই যদি বেঁচে থাকে, তা হলে একদিন তারা তাদের বাবামাকে হত্যা করবে।

এইধরনের উদাহরণগুলো দেখায় যে, যদিও কিছু কুসংস্কারকে আপাতদৃষ্টিতে মনোরম ও অক্ষতিকর বলে মনে হতে পারে কিন্তু অন্যগুলো বিপদজনক, এমনকি মারাত্মকও হতে পারে। এক অশুভ ব্যাখ্যা দিয়ে কোন অক্ষতিকর ঘটনাকে এক বিপদজনক বিষয়ে পরিণত করা যেতে পারে।

হ্যাঁ, বাস্তবে কুসংস্কার হল এক বিশ্বাস, একধরনের ধর্ম। কুসংস্কারের বিপদজনক দিকগুলো বিবেচনা করার পর এটা জিজ্ঞেস করা উপযুক্ত: কুসংস্কারপূর্ণ বিশ্বাস ও রীতিনীতির দ্বারা আসলে কে উপকৃত হচ্ছে?

কুসংস্কারগুলোর উৎস

প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, আজকে কিছু লোক শয়তান অথবা মন্দ আত্মাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে। কিন্তু যুদ্ধের সময়ে একজনের বিপদজনক শত্রুর অস্তিত্ব রয়েছে, তা অস্বীকার করা কেবল দুর্দশা ডেকে আনতে পারে। অতিমানবীয় আত্মিক প্রাণীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের ব্যাপারেও এটা সত্যি হতে পারে কারণ প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “দুষ্টতার আত্মাগণের সহিত আমাদের মল্লযুদ্ধ হইতেছে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—ইফিষীয় ৬:১২.

যদিও আমরা তাদের দেখতে পাই না কিন্তু মন্দ আত্মিক প্রাণীদের অস্তিত্ব রয়েছে। বাইবেল বলে যে, একজন অদৃশ্য আত্মিক ব্যক্তি, প্রথম স্ত্রী হবার সঙ্গে কথোপকথন করার জন্য একটা সাপকে ব্যবহার করেছিল এবং তাকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিয়ে গিয়েছিল। (আদিপুস্তক ৩:১-৫) বাইবেল এই আত্মিক প্রাণীকে “পুরাতন সর্প” বলে শনাক্ত করে “যাহাকে দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ] বলা যায়, যে সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মায়।” (প্রকাশিত বাক্য ১২:৯) সেই শয়তান অন্যান্য দূতেদের বিদ্রোহ করার জন্য প্রণোদিত করতে সফল হয়েছিল। (যিহূদা ৬) এই মন্দ দূতেরা দৈত্য, ঈশ্বরের শত্রু হয়ে উঠেছিল।

যীশু লোকেদের মধ্যে থেকে মন্দ আত্মাদের বের করেছিলেন, যেমন তাঁর শিষ্যরাও করেছিলেন। (মার্ক ১:৩৪; প্রেরিত ১৬:১৮) এই আত্মারা মৃত পূর্বপুরুষ নয় কারণ মৃতেরা “কিছুই জানে না।” (উপদেশক ৯:৫) বরং তারা হল বিদ্রোহী দূত, যারা শয়তানের দ্বারা ভ্রান্ত হয়েছিল। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা অথবা তাদের প্রভাবের বশীভূত হওয়াকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয় কারণ তারাও তাদের নেতা শয়তান দিয়াবলের মতো আমাদের গ্রাস করতে চায়। (১ পিতর ৫:৮) তাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানবজাতির একমাত্র আশা—ঈশ্বরের রাজ্য—থেকে আমাদের সরিয়ে নেওয়া।

শয়তান ও তার মন্দ দূতেরা যে-মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে তার একটা বাইবেল প্রকাশ করে: “শয়তান আপনি দীপ্তিময় দূতের বেশ ধারণ করে।” (২ করিন্থীয় ১১:১৪) শয়তান আমাদের এটা বিশ্বাস করিয়ে প্রতারিত করতে চায় যে, সে আমাদের এক উত্তম জীবন দিতে পারে। তাই, মন্দ আত্মাদের মাধ্যমে ক্ষণকালের জন্য অল্প কিছু উপকার এসেছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু তারা স্থায়ী সমাধান দিতে পারে না। (২ পিতর ২:৪) তারা কাউকে কোনভাবে অনন্ত জীবন দিতে পারে না এবং তারা খুব শীঘ্রই ধ্বংস হবে। (রোমীয় ১৬:২০) আমাদের সৃষ্টিকর্তা হলেন অনন্ত জীবন ও প্রকৃত সুখের একমাত্র উৎস এবং মন্দ আত্মিক শক্তিদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সুরক্ষা।—যাকোব ৪:৭.

প্রেতচর্চার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়াকে ঈশ্বর নিন্দা করেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২; ২ রাজাবলি ২১:৬) এটা হল শত্রুর সঙ্গে প্রেমের ভান করা, ঈশ্বরের বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন! কোষ্ঠীবিচার করা, কোন গোষ্ঠীর ওঝার খোঁজ করা অথবা কুসংস্কারগত কাজগুলোতে সামান্যভাবে জড়িত হওয়ারও অর্থ হবে, আপনি নিজের জীবনে যে-সিদ্ধান্তগুলো নেন সেগুলোকে মন্দ আত্মাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে সুযোগ দেওয়া। এটা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্রোহে যোগ দেওয়ার সমান।

মন্দতা থেকে সুরক্ষা—তা কি সম্ভব?

এডা * নামে নাইজারের একজন ব্যক্তি যিহোবার সাক্ষিদের একজন পূর্ণ-সময়ের প্রচারকের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করছিলেন। এডা ব্যাখ্যা করেন যে, কেন তার দোকানে এক কবচ ঝুলানো ছিল: “অনেক শত্রু রয়েছে।” এডার বাইবেল শিক্ষক তাকে দেখিয়েছিলেন যে, প্রকৃত সুরক্ষা পাওয়ার জন্য একমাত্র যিহোবার ওপর ভরসা রাখা যেতে পারে। তিনি এডাকে গীতসংহিতা ৩৪:৭ পদ পড়ে শোনান যেখানে বলা হয়েছে: “সদাপ্রভুর দূত, যাহারা তাঁহাকে ভয় করে, তাহাদের চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন, আর তাহাদিগকে উদ্ধার করেন।” শেষে এডা বলেন: “যিহোবা যদি আমাকে সত্যিই সুরক্ষা দিতে পারেন, তা হলে আমি এই কবচ সরিয়ে দেব।” বেশ অনেক বছর পর, এখন তিনি একজন প্রাচীন ও পূর্ণ-সময়ের পরিচারক হিসেবে সেবা করছেন। তার শত্রুদের একজনও তার ক্ষতি করেনি।

বাইবেল দেখায় যে, আমাদের সকলের প্রতি কাল ও দৈব ঘটে, তা আমরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন হই বা না হই। (উপদেশক ৯:১১) কিন্তু, যিহোবা কখনও মন্দ বিষয় দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করেন না। (যাকোব ১:১৩) মৃত্যু ও অসিদ্ধতা আদম থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পাপের ফল। (রোমীয় ৫:১২) এই কারণে সময়ে সময়ে, সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে ও সেইসঙ্গে ভুল করে, যা দুর্দশাপূর্ণ পরিণতি নিয়ে আসে। তাই, সমস্ত রোগ অথবা জীবনের সমস্যাগুলো মন্দ আত্মাদের কর্ম বলে দোষ দেওয়া ভুল হবে। এইধরনের বিশ্বাস শুধু এই আত্মাদের কোন না কোনভাবে খুশি করার চেষ্টা করতে আমাদের প্রলোভিত করবে। * আমরা যখন অসুস্থ হই, তখন আমাদের সঠিক চিকিৎসা নেওয়ার চেষ্টা করা দরকার, “মিথ্যাবাদী ও তাহার পিতা” শয়তান দিয়াবলের পরামর্শ নেওয়া উচিত নয়। (যোহন ৮:৪৪) পরিসংখ্যান দেখায়, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আসা কুসংস্কারাচ্ছন্ন দেশগুলোতে যে-লোকেরা বাস করে তারা অন্যান্য দেশগুলোর লোকেদের চেয়ে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকে না বা উত্তম জীবনযাপন করে না। তাই এটা স্পষ্ট যে, কুসংস্কারগুলো স্বাস্থ্যের কোন উপকার আনে না।

ঈশ্বর যেকোন মন্দ আত্মা থেকে বেশি শক্তিশালী এবং তিনি আমাদের মঙ্গল চান। “ধার্ম্মিকগণের প্রতি প্রভুর [“যিহোবার,” NW] চক্ষু আছে; তাহাদের বিনতির প্রতি তাঁহার কর্ণ আছে।” (১ পিতর ৩:১২) সুরক্ষা ও প্রজ্ঞা পাওয়ার জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করুন। (হিতোপদেশ ১৫:২৯; ১৮:১০) তাঁর পবিত্র বাক্য বাইবেলকে বোঝার চেষ্টা করুন। বাইবেল সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান হল সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সুরক্ষা, যা আমরা পেতে পারি। এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, কেন মন্দ বিষয়গুলো ঘটে এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অনুমোদন কীভাবে পাওয়া যায়।

ঈশ্বরের জ্ঞানের উপকারগুলো

অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের বিপরীতে প্রকৃত সুরক্ষা পাওয়ার চাবি হল, যিহোবা ও তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান। এই বিষয়টা বেনিনের একজন ব্যক্তি জিনের ঘটনা থেকে দেখা যায়। জিনের পরিবারে কুসংস্কারগুলো গভীর শিকড় গেড়েছিল। কুসংস্কারাচ্ছন্ন রীতিনীতি অনুযায়ী, সবেমাত্র এক ছেলে প্রসব করেছে এমন একজন মহিলাকে নয় দিনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা একটা ঝুপড়ির ঘরে থাকতে হতো। যদি তিনি এক মেয়ের জন্ম দেন, তা হলে তাকে সেই ঝুপড়িতে সাত দিন থাকতে হতো।

১৯৭৫ সালে, জিনের স্ত্রী একটা সুন্দর ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন, যার নাম তারা মার্ক রেখেছিলেন। বাইবেল থেকে পাওয়া জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে জিন ও তার স্ত্রী মন্দ আত্মাদের সঙ্গে জড়িত হতে চাননি। কিন্তু তারা কি ভয় পাবেন ও মাকে ঝুপড়িতে রাখার কুসংস্কারের চাপের প্রতি কি নতি স্বীকার করবেন? না—তারা সেই উপজাতীয় কুসংস্কারকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।—রোমীয় ৬:১৬; ২ করিন্থীয় ৬:১৪, ১৫.

জিনের পরিবারের কি কোন ক্ষতি হয়েছিল? অনেক বছর পেরিয়ে গেছে আর মার্ক এখন যিহোবার সাক্ষিদের স্থানীয় মণ্ডলীতে একজন পরিচারক দাস হিসেবে কাজ করছেন। পুরো পরিবার খুশি যে, তারা নিজেদের জীবনকে কুসংস্কারের দ্বারা প্রভাবিত হতে এবং তাদের আধ্যাত্মিক মঙ্গলকে বিপন্ন হতে সুযোগ দেননি।—১ করিন্থীয় ১০:২১, ২২.

সত্য খ্রীষ্টানরা তাদের জীবন থেকে কুসংস্কারের মন্দ কাজগুলোকে দূরে রাখবেন আর সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্ট যে-আধ্যাত্মিক দীপ্তি প্রদান করছেন তা গ্রহণ করবেন। এভাবে তারা এটা জেনে মনের শান্তি উপভোগ করতে পারেন যে, তারা যা করছেন তা ঈশ্বরের চোখে সঠিক।—যোহন ৮:৩২.

[পাদটীকাগুলো]

^ নাম পালটে দেওয়া হয়েছে।

^ ১৯৯৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বরের প্রহরীদুর্গ এর “দিয়াবল কি আমাদের অসুস্থ করে?” প্রবন্ধটা দেখুন।

[৫ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

সারা পৃথিবীতে কয়েকটা প্রচলিত কুসংস্কার

• একটা ভাতের বোলে চপস্টিকস্‌ সোজা করে রাখা হল মৃত্যুর চিহ্ন

• দিনের বেলা পেঁচা দেখা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে

• কোন অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে মোমবাতি নিভে যাওয়ার অর্থ হল, মন্দ আত্মারা আশেপাশে রয়েছে

• মেঝেতে ছাতা পড়ে যাওয়ার অর্থ বাড়িতে কোন খুন হবে

• বিছানায় টুপি রাখা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে

• ঘন্টার আওয়াজ মন্দ আত্মাদের তাড়িয়ে দেয়

• জন্মদিনের কেকে লাগানো সমস্ত মোমবাতি প্রথম চেষ্টায় ফুঁ দিয়ে নিভাতে পারা দেখায় যে, ব্যক্তির ইচ্ছা পূরণ হবে

• বিছানার পাশে ঝাড়ু রাখলে, সেটা ঝাড়ুতে থাকা মন্দ আত্মাদেরকে বিছানায় জাদুমন্ত্র করার সুযোগ দেয়

• আপনার সামনে দিয়ে কালো বিড়াল যাওয়ার অর্থ দুর্ভাগ্য

• কাটাচামচ পড়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে বাড়িতে কোন পুরুষ আসছে

• হাতির ছবি সৌভাগ্য ডেকে আনে, যদি সেটা দরজার দিকে মুখ করে রাখা থাকে

• বাড়ির প্রবেশদ্বারে ঘোড়ার খুরের নাল সৌভাগ্য ডেকে আনে

• বাড়িতে চিরহরিৎ লতা (আইভি) লাগানো খারাপ কিছু থেকে সুরক্ষা করে

• মইয়ের নিচ দিয়ে হাঁটা হল দুর্ভাগ্য

• আয়না ভেঙে যাওয়ার অর্থ সাত বছরের জন্য দুর্ভাগ্য

• গোলমরিচ পড়ে যাওয়ার অর্থ যে, সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে আপনার ঝগড়া হবে

• লবণ পড়ে যাওয়া দুর্ভাগ্য ডেকে আনে যতক্ষণ না এক চিমটে লবণ বাম কাঁধের ওপর ছিটিয়ে দেওয়া হয়

• দুলতে থাকা খালি চেয়ারকে দুলতে দিলে ভূতপ্রেতদের সেটাতে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়

• জুতো উলটে থাকা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে

• কেউ মারা গেল পর আত্মা বেরিয়ে যাওয়ার জন্য জানালাগুলো খুলে দেওয়া উচিত

[৬ পৃষ্ঠার বাক্স]

কুসংস্কারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত

যিহোবার সাক্ষিরা দক্ষিণ আফ্রিকার একটা জায়গায় প্রচার করছিলেন। দরজায় কড়া নাড়ার পর যখন তা খোলা হয়, তখন সাক্ষিরা একজন মহিলার মুখোমুখি হন যিনি শাংগোমা (ওঝার) পোশাক পরে ছিলেন। তারা চলে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেই মহিলা জোর করেন যে, তারা যেন তাদের সংবাদ শুনিয়ে যান। সাক্ষিদের একজন তাকে প্রেতচর্চা সম্বন্ধে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখাতে দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২ পদ পড়েন। সেই ওঝা মহিলা সংবাদটা গ্রহণ করেন এবং বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হন। তিনি বলেছিলেন যে, বাইবেল অধ্যয়নের মাধ্যমে তিনি যদি নিশ্চিত হন যে, শাংগোমা-র কাজ করা যিহোবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, তা হলে তিনি তা করা বন্ধ করে দেবেন।

বাইবেলের সাহায্যে আপনি পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তকাল বেঁচে থাকতে পারেন এই বইয়ের ১০ অধ্যায়টা অধ্যয়ন করার পর তিনি ডাকিনীবিদ্যার সঙ্গে জড়িত তার সমস্ত বস্তু পুড়িয়ে ফেলেন এবং কিংডম হলে সভাগুলোতে যোগ দিতে শুরু করেন। এ ছাড়া, তিনি তার বিবাহকে বৈধ করেন যদিও তিনি ১৭ বছর ধরে তার স্বামীর থেকে আলাদা ছিলেন। এখন তারা উভয়ই যিহোবার প্রতি উৎসর্গীকৃত বাপ্তাইজিত সাক্ষি।

[৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

একজন “শাংগোমা” রোগীর সমস্যাগুলোর কারণ সম্বন্ধে তন্ত্রমন্ত্র করে জানার জন্য হাড় ছুড়ছেন

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

ঈশ্বর সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান প্রকৃত সুরক্ষা ও সুখ নিয়ে আসে