সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অপরাধ স্বীকার করা কেন এত কঠিন?

অপরাধ স্বীকার করা কেন এত কঠিন?

অপরাধ স্বীকার করা কেন এত কঠিন?

 দুহাজার সালের জুলাই মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাষ্ট্রের আইনসভা দায়বদ্ধ ব্যক্তিদের নিষ্কৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যদি তারা সেই ব্যক্তিবিশেষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করতে চায়, যিনি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আর যে-দুর্ঘটনার সঙ্গে তারা নিজেরা জড়িত ছিল। কেন এই আইন প্রণয়ন? লক্ষ করা গেছে যে, যখন কোন দুর্ঘটনার কারণে কেউ আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন প্রায়ই লোকেরা ক্ষমা চাইতে ইতস্তত বোধ করে এই ভয়ে যে, এটা হয়তো আদালতে অপরাধের স্বীকারোক্তি হিসেবে গণ্য করা হবে। আবার অন্যদিকে, যারা আশা করে যে, তাদের কাছে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চাওয়া উচিত তারা হয়তো খুবই আশাহত হয় আর একটা ছোট্ট দুর্ঘটনা হয়তো বিরাট সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে।

অবশ্যই, যে-দুর্ঘটনায় আপনার কোন দোষ নেই সেটার জন্য অপরাধ স্বীকার করার প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া, এমন অনেক পরিস্থিতিও আসতে পারে, যেখানে আপনি কী বলছেন সেই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করাটাই হবে বিজ্ঞতার কাজ। একটি প্রাচীন প্রবাদ বলে: “বাক্যের বাহুল্যে অধর্ম্মের অভাব নাই; কিন্তু যে ওষ্ঠ দমন করে, সে বুদ্ধিমান।” (হিতোপদেশ ১০:১৯; ২৭:১২) তবুও, আপনি ভদ্রতা ও সাহায্য করার মনোভাব দেখাতে পারেন।

এটা কি সত্যি নয় যে, অনেক লোক অপরাধ স্বীকার করা বন্ধ করে দিয়েছে, এমনকি যখন এর সঙ্গে কোন মামলামকদ্দমার ব্যাপার জড়িত থাকে না? বাড়িতে হয়তো একজন স্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলতে পারেন, ‘আমার স্বামী কখনও কোন কিছুর জন্য অপরাধ স্বীকার করে না।’ কর্মক্ষেত্রে একজন প্রধান কর্মকর্তা হয়তো অভিযোগ করতে পারেন, ‘আমার লোকেরা তাদের নিজেদের দোষ স্বীকার করে না, তারা কদাচিৎ বলে যে, তারা দুঃখিত।’ স্কুলে কোন শিক্ষক হয়তো মন্তব্য করেন, ‘ছেলেমেয়েদের এই কথাটা বলতে শেখানো হয়নি যে, আমাকে ক্ষমা করুন।’

কেন একজন ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করতে ইতস্তত বোধ করেন, এর একটা কারণ হতে পারে উপেক্ষিত হওয়ার ভয়। তাকে অবজ্ঞা করা হবে, এই দুশ্চিন্তার দ্বারা তাড়িত হয়ে তিনি হয়তো তার আসল মনোভাবকে প্রকাশ করতে পারবেন না। বস্তুত, যে-ব্যক্তি আঘাত পেয়েছেন তিনি হয়তো অপরাধীকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে পারেন আর এর ফলে আবার বন্ধুত্ব করা হয়তো খুব মুশকিল হয়ে পড়ে।

অন্য লোকেদের অনুভূতির প্রতি চিন্তা না দেখানো হয়তো আরেকটা কারণ, যার দরুন কিছু ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করতে ইতস্তত বোধ করে। তারা হয়তো যুক্তি দেখাতে পারে, ‘যে-ক্ষতি আমি ইতিমধ্যেই করে ফেলেছি, অপরাধ স্বীকার করে তা তো আর সংশোধন করা যাবে না।’ এ ছাড়া, এমন অনেকে আছে যারা সম্ভাব্য পরিণামের কথা ভেবে ক্ষমা চাইতে ইতস্তত বোধ করে। তারা চিন্তা করে, ‘আমাকে কি এর জন্য দায়ী করা হবে আর ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হবে?’ কিন্তু, দোষ স্বীকার করার ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় বাধা হল দম্ভ। “আমি দুঃখিত,” এটা বলতে যে-ব্যক্তির অহংকারে বাধে, সে আসলে এটাই চিন্তা করে যে, ‘দোষ স্বীকার করে আমি আমার আত্মসম্মানকে হারাতে চাই না। এটা আমার পদমর্যাদাকে দুর্বল করে দেবে।’

যেকোন কারণই থাকুক না কেন, অনেকের পক্ষেই অপরাধ স্বীকার করার শব্দগুলো উচ্চারণ করা কঠিন। কিন্তু, অপরাধ স্বীকার করা কি সত্যিই প্রয়োজন? অপরাধ স্বীকার করার মধ্যে কী কী উপকার রয়েছে?

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

“ছেলেমেয়েদের এই কথাটা বলতে শেখানো হয়নি যে, আমাকে ক্ষমা করুন”

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

“আমার লোকেরা তাদের নিজেদের দোষ স্বীকার করে না”

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

“আমার স্বামী কখনও কোন কিছুর জন্য অপরাধ স্বীকার করে না”