তারা ব্রাজিলে রাজ্যের বার্তা “শুনছে”
রাজ্য ঘোষণাকারীরা বিবৃতি দেয়
তারা ব্রাজিলে রাজ্যের বার্তা “শুনছে”
বধির এলাকায় রাজ্যের সুসমাচার ঘোষণা করার জন্য ব্রাজিলের অনেক যিহোবার সাক্ষি সেই দেশের সাংকেতিক ভাষা শেখার কঠিন কাজকে গ্রহণ করেছে। তাদের প্রচেষ্টা চমৎকার ফল নিয়ে এসেছে, যেমন নিচের অভিজ্ঞতাগুলো থেকে দেখা যায়।
সাও পাওলোতে ইভা * নামে এক বধির মহিলা এবং তার তিন ছেলেমেয়ে এক বধির লোকের সঙ্গে থাকতে শুরু করার পর সাংকেতিক ভাষা শিখতে আরম্ভ করে। শপিংমলে ইভা এবং তার ছেলেবন্ধুর সঙ্গে একদল বধির যিহোবার সাক্ষির সাক্ষাৎ হয় এবং তাদের কিংডম হলের সভাতে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা আমন্ত্রণ গ্রহণ করে, এই মনে করে যে, সেটা বুঝি সামাজিক কোনো অনুষ্ঠান।
সাংকেতিক ভাষা সম্বন্ধে ইভার সীমিত জ্ঞান থাকায় সভাতে যা বলা হয়েছিল, সেগুলো তিনি খুব সামান্যই বুঝতে পেরেছিলেন। পরে কিছু যিহোবার সাক্ষি তাদের বাড়িতে সামান্য জলখাবারের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানায়। পৃথিবীতে অনন্তজীবন উপভোগ করুন! ব্রোশারের ছবি ব্যবহার করে তারা ভবিষ্যৎ পার্থিব পরমদেশ সম্বন্ধে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার বিষয় ব্যাখ্যা করে। ইভা যা শিখেছিলেন, সেগুলো তার ভাল লাগে এবং নিয়মিত সভাগুলোতে আসতে শুরু করেন।
এর কিছু কাল পরই, ইভা বাইবেলের মানগুলো অনুসারে জীবনযাপন করার জন্য তার ছেলেবন্ধুকে ছেড়ে দেন। পরিবার থেকে আসা প্রচণ্ড বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি আধ্যাত্মিক উন্নতি করে চলেন এবং ১৯৯৫ সালে বাপ্তিস্ম নেন। ছয় মাস পরে ইভা অগ্রগামী বা পূর্ণ-সময়ের রাজ্য ঘোষণাকারী পরিচর্যায় নাম লেখান। সেই সময় থেকে তিনি চারজন বধির ব্যক্তিকে উৎসর্গ করতে এবং বাপ্তিস্ম নিতে সাহায্য করেন।
কার্লোস জন্ম থেকেই বধির ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি মাদকদ্রব্য, অনৈতিকতা এবং চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী দুর্বৃত্ত দলের ভয়ে তিনি সাও পাওলোতে পালিয়ে যান এবং কিছু সময়ের জন্য জোয়াওয়ের সঙ্গে থাকেন। কার্লোসের মতো জোয়াও বধির ছিলেন এবং অনৈতিক জীবনযাপন করতেন।
কয়েক বছর পর কার্লোস রাজ্যের বার্তা সম্বন্ধে শেখেন, তার জীবনকে শুদ্ধ করেন এবং বিবাহ বৈধ করেন। শাস্ত্রীয় চাহিদা পূরণ করার পর কার্লোস যিহোবার কাছে তার উৎসর্গীকরণের চিহ্ন হিসেবে বাপ্তিস্ম নেন। ইতিমধ্যে, কার্লোসের অজান্তে জোয়াওও সুসমাচার সম্বন্ধে জেনেছিলেন এবং তিনিও জীবনে বিরাট পরিবর্তন এনেছিলেন। যিহোবা যে মূর্তির ব্যবহার অনুমোদন করেন না, সেটা জানার পর জোয়াও তার সংগৃহীত “সাধুদের” মূর্তি ফেলে দেন। পূর্বের জীবনধারা ছেড়ে দেওয়ার পর জোয়াওও বাপ্তিস্ম নেন।
কার্লোস এবং জোয়াও কত আনন্দিতই না হয়েছিল যখন কিংডম হলে তাদের দেখা হয় এবং তারা দেখতে পায় যে, ব্যক্তিগতভাবে তারা নিজেদের জীবন কতটা পরিবর্তন করেছে! দুজনেই এখন পরিবারের দায়িত্ববান মস্তক এবং উদ্যোগী রাজ্যের ঘোষক হিসেবে সেবা করছে।
ব্রাজিলে বর্তমানে ২,৫০০-রও বেশি প্রকাশক সহ সাংকেতিক ভাষার ৩০টা মণ্ডলী এবং ১৫৪টা দল রয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ১,৫০০ জন বধির। ব্রাজিলে বধিরদের জন্য ২০০১ সালের “ঈশ্বরের বাক্যের শিক্ষকেরা” জেলা সম্মেলনগুলোতে ৩,০০০রেরও বেশি জন উপস্থিত হয়েছিল এবং ৩৬ জন বাপ্তিস্ম নিয়েছিল। যিহোবার আশীর্বাদে, আশা করা হয় যে আরও অনেক বধির ব্যক্তি রাজ্যের বার্তা গ্রহণ করবে।
[পাদটীকা]
^ নামগুলো পালটে দেওয়া হয়েছে।