সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাখিরা আমাদের যা শিক্ষা দিতে পারে

পাখিরা আমাদের যা শিক্ষা দিতে পারে

পাখিরা আমাদের যা শিক্ষা দিতে পারে

 “আকাশের পক্ষীদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; তাহারা বুনেও না, কাটেও না, গোলাঘরে সঞ্চয়ও করে না, তথাপি তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তাহাদিগকে আহার দিয়া থাকেন; তোমরা কি তাহাদের হইতে অধিক শ্রেষ্ঠ নও?” (মথি ৬:২৬) গালীল সমুদ্রের ধারে এক পাহাড়ের ওপরে বিখ্যাত পর্বতে দত্ত উপদেশে যিশু খ্রিস্ট এই কথাগুলো বলেছিলেন। তাঁর শ্রোতাদের মধ্যে কেবল তাঁর অনুসারীরাই ছিল না। দেশের সমস্ত অঞ্চল থেকে সম্ভাব্য শিষ্যদের এক বিরাট জনতা সেখানে উপস্থিত ছিল। তাদের অনেকেই ছিল দরিদ্র, যারা অসুস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ করার জন্য যিশুর কাছে নিয়ে এসেছিল।—মথি ৪:২৩–৫:২; লূক ৬:১৭-২০.

সমস্ত অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করে যিশু আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক প্রয়োজনগুলোর প্রতি মনোযোগ দিয়েছিলেন। যে-সমস্ত শিক্ষা তিনি দিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে ওপরে উল্লেখিত বিষয়টাও ছিল।

দীর্ঘকাল ধরে আকাশের পাখিরা অস্তিত্বে রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু পাখি পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে, অন্যরা ফলমূল ও বিভিন্ন বীজ খেয়ে বেঁচে থাকে। ঈশ্বর যদি পাখিদের জন্য এরকম প্রচুর খাবার জোগান, তা হলে নিশ্চিতভাবে তাঁর মনুষ্য দাসদের রোজকার খাবার জোগাড় করতে সাহায্য করার ক্ষমতা তাঁর আছে। তিনি হয়তো চাকরি খুঁজে পেতে সাহায্য করে তা করতে পারেন, যাতে খাবারের জন্য তারা অর্থ উপার্জন করতে পারে। অথবা তিনি হয়তো তাদের নিজেদের খাদ্য উৎপাদনে সফলতা দেন। আর জরুরি সময়ে, ঈশ্বর সদয় প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবদের হৃদয়ে এই প্রেরণা দিতে পারেন, যাতে তারা তাদের যা আছে, তা অভাবীদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়।

মনোযোগ দিয়ে পাখির জীবন লক্ষ করে আমরা আরও অনেক কিছু শিখতে পারি। বাসা তৈরি করার জন্য অপূর্ব সহজাত বৈশিষ্ট্যগুলো দিয়ে ঈশ্বর পাখিদের সৃষ্টি করেছেন, যেখানে এরা এদের বাচ্চাদের বড় করে তুলতে পারে। দুধরনের বাসার বিষয় লক্ষ করুন। বাঁদিকের ছবিটা হল আফ্রিকান রক মার্টিন পাখির বাসা। এটা কোনো পাহাড় অথবা বাড়ির দেওয়ালের সামনের দিকে বাঁধা হয়েছে। এই ধরনের বাসাগুলোর ছাদ হল ঝুলে থাকা পাহাড় অথবা এই ছবিতে যেমন দেখানো হয়েছে, কোনো বিল্ডিংয়ের ছাদের প্রান্তভাগ। এই বাসার মেঝে একটা কাপের আকারের অল্প কাদার দলা জোড়া লাগিয়ে তৈরি করা হয়। কাদার দলা জোগাড় করতে পুরুষ ও স্ত্রী পাখি উভয়ই কঠোর পরিশ্রম করে আর এদের বাসা বানানো সম্পূর্ণ করতে হয়তো এক মাসেরও বেশি লেগে যায়। এরপর এরা ঘাস ও পালক দিয়ে এর ভিতরের তলটা ঢেকে দেয়। বাচ্চাদের খাওয়ানোয় উভয়ই অংশ নেয়। নিচে যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা হল এক পুরুষ মাস্কড্‌ ওয়েভার পাখির বাসা। আফ্রিকার এই পরিশ্রমী পাখিটি ঘাস অথবা অন্যান্য লতাপাতার খোসা ব্যবহার করে এর বাসা তৈরি করে। এটা একদিনেই একটা বাসা তৈরি করে ফেলতে পারে এবং এক মরশুমে ৩০টার বেশি বাসা তৈরি করতে পারে!

শিক্ষাটি কী? ঈশ্বর যদি পাখিদের এরকম দক্ষতা এবং বাসা তৈরির জন্য প্রচুর বস্তুসামগ্রী জোগাতে পারেন, তা হলে নিশ্চিতভাবে তিনি তাঁর মনুষ্য দাসদের প্রয়োজনীয় বাসস্থান পেতে সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু, যিশু দেখিয়েছিলেন যে, আমরা যদি চাই যে যিহোবা ঈশ্বর আমাদের বস্তুগত প্রয়োজনগুলো জোগাতে আমাদের সাহায্য করুন, তা হলে আরও কিছুর দরকার আছে। যিশু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, “কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে ঐ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে।” (মথি ৬:৩৩) আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, ‘প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করিবার মধ্যে’ কী জড়িত আছে? যিহোবার সাক্ষিরা যারা এই পত্রিকাটি বিতরণ করে, তারা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরে আনন্দিত হবে।