সত্য উপাসনা একটি পরিবারকে একতাবদ্ধ করে
সত্য উপাসনা একটি পরিবারকে একতাবদ্ধ করে
মারিয়ার বয়স ছিল ১৩ বছর যখন সে ও তার ছোট বোন লুসি তাদের এক আত্মীয়ের কাছ থেকে যিহোবার সম্বন্ধে শুনেছিল। তিনি তাদের কাছে পৃথিবীতে পরমদেশের আশা সম্বন্ধেও ব্যাখ্যা করেছিলেন। তার কথায় অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে তারা তার সঙ্গে যিহোবার সাক্ষিদের কিংডম হলে গিয়েছিল। সেখানে দেওয়া স্পষ্ট নির্দেশনা মারিয়ার মনে ছাপ ফেলেছিল। এটা গির্জা থেকে কত আলাদা ছিল, যেখানে তারা গান গাওয়া ছাড়া আর কিছু করত না! শীঘ্রই মেয়েরা যিহোবার সাক্ষিদের একজন বোনের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেছিল।
তাদের বড় দাদা ইউগো দর্শনবিদ্যা ও ক্রমবিবর্তনবাদের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি নিজেকে নাস্তিক মনে করতেন। কিন্তু সেনাবাহিনীতে কাজ করার সময় তিনি জীবন—কিভাবে তা এখানে এসেছে? ক্রমবিবর্তন অথবা সৃষ্টির মাধ্যমে? * (ইংরেজি) এই বইটি পড়েছিলেন। তিনি সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেয়েছিলেন, যা আর কোনো ধর্ম দিতে পারেনি। সেনাবাহিনীতে কাজ শেষ করার পর তিনি বাইবেল অধ্যয়ন করে ও তার বোনদের সঙ্গে সভাগুলোতে যোগ দিয়ে ঈশ্বরের ওপর তার নতুন বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে শুরু করেছিলেন। প্রথম সত্য শোনার দুবছর পর মারিয়া ও লুসি ১৯৯২ সালে এবং তাদের ভাই আরও দুবছর পর বাপ্তিস্ম নিয়েছিল।
ইতিমধ্যে তাদের বাবামা যারা ক্যাথলিক প্রথাগুলো পালন করত তারা সত্যের প্রতি সামান্যই আগ্রহ দেখিয়েছিল। তারা যিহোবার সাক্ষিদেরকে বিরক্তিকর বলে মনে করত, যদিও যে-অল্পবয়সী সাক্ষিদেরকে তাদের ছেলেমেয়েরা তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাত তাদের ভাল আচারব্যবহার ও মার্জিত পোশাকের তারা প্রশংসা করত। এ ছাড়া, ছেলেমেয়েরা সভাতে যে-বিষয়গুলো শিখেছিল সেগুলো নিয়ে যখন তারা খাবারের সময় আলোচনা করত, তখন তাদের বাবামার কৌতূহল জেগে উঠত।
কিন্তু, বাবামা দুজনেই ডাকিনীবিদ্যার প্রতি আগ্রহী ছিল। বাবা ছিলেন মাতাল যিনি মাকে মারধর করতেন। পরিবার প্রায় ভেঙে যাওয়ার মুখে ছিল। এরপর বাবা মাতলামি করার কারণে দুসপ্তাহ জেলে ছিলেন। জেলে থাকার সময় তিনি বাইবেল পড়া শুরু করেছিলেন। তিনি পড়তে গিয়ে শেষ কালের চিহ্ন সম্বন্ধে যিশুর কথাগুলো লক্ষ করেছিলেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বাবামা দুজনেই কিংডম হলে গিয়েছিল এবং গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছিল। সত্য শেখার পর তারা ডাকিনীবিদ্যা সম্বন্ধীয় তাদের সমস্ত বইপত্র নষ্ট করে ফেলেছিল এবং যিহোবার নামে ডেকে মন্দ দূতদের আক্রমণ থেকে স্বস্তি পেয়েছিল। তারা নিজেদের ব্যক্তিত্বে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল।
আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, ১৯৯৯ সালে বলিভিয়াতে একটা জেলা সম্মেলনে বাবামাকে ইউগোর দ্বারা বাপ্তাইজিত হতে দেখা মারিয়া ও লুসির জন্য কতই না রোমাঞ্চকর ছিল? মারিয়া ও লুসি যখন প্রথম যিহোবা ও তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো সম্বন্ধে শুনেছিল তখন থেকে প্রায় নয় বছর পেরিয়ে গিয়েছিল। ইউগোর সঙ্গে তারা এখন পূর্ণ-সময় পরিচর্যা করছে। তারা কতই না আনন্দিত যে, সত্য উপাসনা তাদের পরিবারকে একতাবদ্ধ করেছে!
[পাদটীকা]
^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।