সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

শুধুমাত্র কি একটাই ‘সত্য গির্জা’ আছে?

শুধুমাত্র কি একটাই ‘সত্য গির্জা’ আছে?

শুধুমাত্র কি একটাই ‘সত্য গির্জা’ আছে?

 “ঠিক যেমন খ্রিস্ট একজন, তেমনই খ্রিস্টের দেহ একটি, খ্রিস্টের কনেও একজনই: ‘একটি মাত্র ক্যাথলিক এবং অ্যাপোস্টলিক গির্জা।’”—দোমিনুস এসুস।

এভাবেই একজন রোমান ক্যাথলিক কার্ডিনাল, ইয়োজেফ রাটসিংজার তার গির্জার শিক্ষাকে ঘোষণা করেছিলেন যে, শুধুমাত্র একটাই সত্য গির্জা থাকতে পারে। তিনি বলেছিলেন, সেই গির্জা হল “খ্রিস্টের একমাত্র গির্জা আর সেটা হল ক্যাথলিক গির্জা।”

“প্রকৃত অর্থে গির্জা নয়”

যদিও পোপ জন পল ২য় দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন যে, দোমিনুস এসুস প্রমাণপত্রে “অন্য ধর্মগুলোর প্রতি কোনোরকম ঔদ্ধত্য মনোভাব বা অসম্মান” দেখানো হয়নি কিন্তু প্রটেস্টান্ট গির্জার নেতারা এর প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০০১ সালের জুন মাসে উত্তর আয়ার্ল্যান্ডের বেলফাস্টে প্রেসবিটারিয়ান জেনারেল এসেম্বলিতে একজন পাদরি বলেছিলেন যে, এই প্রমাণপত্রটা তৈরি করা হয়েছিল “রোমান ক্যাথলিক গির্জার এক ক্ষমতাবান দলের দ্বারা . . . যারা ভ্যাটিকান ২য়র পরিষদে উপস্থাপিত খোলাখুলি মনোভাব রাখার বিষয়টাতে ভয় পেয়েছিল।”

আয়ার্ল্যান্ড গির্জার প্রধান যাজক রবিন ইমস্‌ বলেছিলেন যে, তিনি “অত্যন্ত হতাশ” হবেন যদি প্রমাণপত্রটি “ভ্যাটিকান ২য়র পূর্বের চিন্তাধারার প্রত্যাবর্তন” হয়ে থাকে। ভ্যাটিকানের এই দাবি যে, যে-গির্জাগুলো নির্দিষ্ট কিছু ক্যাথলিক মতবাদ প্রত্যাখ্যান করেছে, সেগুলো “প্রকৃত অর্থে গির্জা নয়,” এই বিবৃতির ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে ইমস্‌ বলেছিলেন: “সেটা আমার কাছে অপমানজনক হতে পারে।”

কোন বিষয়টা দোমিনুস এসুস-কে অনুপ্রাণিত করেছিল? এটা স্পষ্টত প্রতীয়মান হয় যে, রোমান ক্যাথলিক ধর্মসভা কথিত ধর্মীয় সাপেক্ষবাদ দ্বারা বিঘ্নিত হয়েছিল। আইরিশ টাইমস অনুসারে, “বহুত্ববাদী ঈশ্বরতত্ত্ববিদ্যার উত্থান—যা মূলত বলে থাকে যে, একটা ধর্ম অন্যটার মতোই ভাল . . . ক্রমান্বয়ে কার্ডিনাল রাটসিংজারকে বিঘ্নিত করেছিল।” মনে হয় যে, এই দৃষ্টিভঙ্গিই একটা সত্য গির্জা সম্বন্ধে তার মন্তব্যে প্রকাশ পেয়েছিল।

আপনি কোন গির্জার, তাতে কি কিছু যায় আসে?

অবশ্য কারও কারও কাছে, সত্য গির্জা শুধু একটা থাকতে পারে, এই ধারণার চেয়ে “ধর্মীয় সাপেক্ষবাদ” বা “বহুত্ববাদী ঈশ্বরতত্ত্ববিদ্যা” আরও বেশি যুক্তিযুক্ত এবং আকর্ষণীয়। তাদের কাছে ধর্ম সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিগত পছন্দের একটা বিষয় হওয়া উচিত। ‘পরিশেষে’ তারা বলে, ‘আপনি কোন গির্জার, তাতে কিছু যায় আসে না।’

সেটাকে হয়তো অনেক সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি বলে মনে হতে পারে—যদিও এর একটি প্রভাব হল যে, ধর্ম অসংখ্য ভাগে বিভক্ত হয়েছে। ‘ধর্মের মধ্যে এইরকম বিভিন্নতা’ অনেকে বলে থাকে, ‘শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বাধীনতার এক যুক্তিযুক্ত অভিব্যক্তির চেয়ে আর বেশি কিছু নয়।’ কিন্তু, লেখক স্টিভ ব্রুসের মতানুসারে এই ধরনের “ধর্মীয় সহনশীলতা” বাস্তবে “ধর্মীয় উদাসীনতা” ছাড়া আর কিছুই নয়।—এক গৃহ বিভক্ত: প্রটেস্টান্টধর্ম, শিখধর্ম এবং জাগতিকীকরণ।

তা হলে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিটা কী? শুধুমাত্র কি একটাই সত্য গির্জা আছে? সেটা কি শুধুমাত্র রোমান ক্যাথলিক গির্জা? অন্যান্য গির্জাগুলোও কি ঈশ্বরের কাছে সমভাবে গ্রহণযোগ্য? যেহেতু এই প্রশ্নগুলোর সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জড়িত, তাই এই বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি জানা নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কীভাবে তা করতে পারি? ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য বাইবেল পরীক্ষা করার মাধ্যমে। (প্রেরিত ১৭:১১; ২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭) আসুন আমরা বিবেচনা করে দেখি যে, একটা সত্য গির্জার বিষয়ে এটির কী বলার আছে।