সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আগের ও পরের জীবন বাইবেল যেভাবে এই ব্যক্তিকে পরিবর্তন করেছে

আগের ও পরের জীবন বাইবেল যেভাবে এই ব্যক্তিকে পরিবর্তন করেছে

“ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন”

আগের ও পরের জীবন বাইবেল যেভাবে এই ব্যক্তিকে পরিবর্তন করেছে

 গানবাজনাই ছিল রল্ফ মিখায়েলের জীবন। মাদকদ্রব্য ছিল তার মোহ। জার্মানির একজন যুবক হিসেবে তিনি প্রচুর পরিমাণে মদ খেতেন এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে এলএসডি, কোকেন, হাশিস ও মনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী অন্যান্য মাদকদ্রব্য সেবন করতেন।

আফ্রিকার একটা দেশে অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য চালান করতে চেষ্টা করার সময় রল্ফ মিখায়েল ধরা পড়েছিলেন এবং ১৩ মাস জেল খেটেছিলেন। জেলে থাকার সেই সময়কালে তিনি জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্বন্ধে চিন্তা করার সময় পেয়েছিলেন।

রল্ফ মিখায়েল এবং তার স্ত্রী উরসুলা মরিয়া হয়ে জীবনের অর্থ এবং সত্যের অনুসন্ধান করেছিলেন। নামধারী খ্রিস্টীয় গির্জাগুলোর কার্যক্রমে নেতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলো সত্ত্বেও, ঈশ্বর সম্বন্ধে জানার জন্য তাদের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু, তাদের অনেক প্রশ্ন ছিল আর বিভিন্ন ধর্মীয় দলের কাছ থেকে তারা কোনো সন্তোষজনক উত্তর পায়নি। এ ছাড়া, এই ধর্মগুলো তাদের জীবনকে পরিবর্তন করার জন্য কোনো জোরালো প্রেরণা দিতে পারেনি।

অবশেষে রল্ফ মিখায়েল ও উরসুলার যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে পরিচয় হয়। বাইবেল অধ্যয়ন আরম্ভ করার পর, রল্ফ মিখায়েল এই পরামর্শের দ্বারা গভীর প্রেরণা পান: “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।” (যাকোব ৪:৮) তিনি ‘তাহার পূর্ব্বকালীন আচরণ সম্বন্ধে সেই পুরাতন মনুষ্যকে [“ব্যক্তিত্বকে,” NW] ত্যাগ করিবার, এবং সেই নূতন মনুষ্যকে [“ব্যক্তিত্বকে,” NW] পরিধান করিবার’ সংকল্প নিয়েছিলেন, “যাহা ধার্ম্মিকতায় ও সাধুতায় ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট হইয়াছে।”—ইফিষীয় ৪:২২-২৪.

কীভাবে রল্ফ মিখায়েল নতুন ব্যক্তিত্ব পরিধান করতে পেরেছিলেন? তাকে বাইবেল থেকে দেখানো হয়েছিল যে, “তত্ত্বজ্ঞানের [“যথার্থ জ্ঞানের,” NW] নিমিত্ত” একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে ‘আপন সৃষ্টিকর্ত্তা’ যিহোবা ঈশ্বরের “প্রতিমূর্ত্তি অনুসারে নূতনীকৃত” করা যায়।—কলসীয় ৩:৯-১১

যথার্থ জ্ঞান নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রল্ফ মিখায়েল তার জীবন ঈশ্বরের বাক্যের নীতিগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চালানোর চেষ্টা করেন। (যোহন ১৭:৩) মাদকদ্রব্য সেবন বন্ধ করা খুবই কঠিন ছিল কিন্তু রল্ফ মিখায়েল প্রার্থনায় যিহোবার নিকটবর্তী হওয়ার এবং তাঁর সাহায্য লাভ করার মূল্যকে উপলব্ধি করেছিলেন। (১ যোহন ৫:১৪, ১৫) এ ছাড়া, যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করা এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা তাকে সাহায্য করেছিল।

জগৎ বয়ে যাচ্ছে এবং যারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে তারা অনন্তকাল থাকবে, এই জ্ঞানও রল্ফ মিখায়েলকে সাহায্য করেছিল। এটা তাকে জগতের ক্ষণস্থায়ী ভালবাসা নয় বরং প্রেমময় ঈশ্বর যিহোবার সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের চিরকালীন আশীর্বাদকে বেছে নিতে সাহায্য করেছিল। (১ যোহন ২:১৫-১৭) হিতোপদেশ ২৭:১১ পদের কথাগুলো রল্ফ মিখায়েলকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছিল: “বৎস, জ্ঞানবান হও; আমার চিত্তকে আনন্দিত কর; তাহাতে যে আমাকে টিট্‌কারি দেয়, তাহাকে উত্তর দিতে পারিব।” তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে বলেন: “এই পদ যিহোবার ভালবাসার গভীরতা দেখায়, কারণ তিনি তাঁর চিত্তকে আনন্দিত করার সুযোগ মানুষকে দেন।”

রল্ফ মিখায়েল, তার স্ত্রী এবং তাদের তিনটে ছেলেমেয়ের মতো লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি বাইবেলের নীতিগুলো পালন করে উপকৃত হয়েছে। এই ব্যক্তিদের সারা পৃথিবীতে যিহোবার সাক্ষিদের কিংডম হলগুলোতে পাওয়া যেতে পারে। এটা দুঃখজনক যে, কিছু দেশে সাক্ষিদের বিপদজনক সম্প্রদায় বলে মিথ্যা দোষারোপ করা হয়েছে, যারা পরিবারগুলো ভেঙে দেয়। কিন্তু রল্ফ মিখায়েলের অভিজ্ঞতা ভিন্ন কিছু প্রমাণ করে।—ইব্রীয় ৪:১২.

রল্ফ মিখায়েল বলেন যে মথি ৬:৩৩ পদ, যেটা আমাদের আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে পরামর্শ দেয়, সেটা তার পরিবারের “দিকদর্শী,” তাদেরকে সঠিক পথে চালিত করে। খ্রিস্টান হিসেবে তারা যে সুখী পারিবারিক জীবন উপভোগ করছে এর জন্য যিহোবার প্রতি তিনি ও তার পরিবার গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তারা গীতরচকের অনুভূতি প্রকাশ করে, যিনি গেয়েছিলেন: “আমি সদাপ্রভু হইতে যে সকল মঙ্গল পাইয়াছি, তাহার পরিবর্ত্তে তাঁহাকে কি ফিরাইয়া দিব?”—গীতসংহিতা ১১৬:১২.

[৯ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

ঈশ্বর তাঁর চিত্তকে আনন্দিত করার সুযোগ মানুষকে দেন

[৯ পৃষ্ঠার বাক্স]

বাইবেলের নীতিগুলো কার্যরত

বাইবেলের নীতিগুলোর মধ্যে যেগুলো অনেককে মারাত্মক আসক্তিগুলো ত্যাগ করতে প্রেরণা দিয়েছে, সেগুলো নিচে দেওয়া হল:

“হে সদাপ্রভু-প্রেমিকগণ, দুষ্টতাকে ঘৃণা কর।” (গীতসংহিতা ৯৭:১০) মারাত্মক অভ্যাসগুলোর খারাপ দিক সম্বন্ধে নিশ্চিতভাবে জানার এবং সেগুলোর প্রতি প্রকৃত ঘৃণা গড়ে তোলার পর, একজন ব্যক্তি ঈশ্বরকে খুশি করার মতো কাজগুলো করাকে সহজ মনে করেন।

“জ্ঞানীদের সহচর হও, জ্ঞানী হইবে; কিন্তু যে হীনবুদ্ধিদের বন্ধু, সে ভগ্ন হইবে।” (হিতোপদেশ ১৩:২০) মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য আসক্তির ক্ষেত্রে না বলার জন্য একজন ব্যক্তির তার সঙ্গীসাথি নির্বাচনে সতর্ক হওয়া দরকার। যারা তার সংকল্পকে সমর্থন করবে এমন খ্রিস্টানদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা সত্যিই উপকারজনক।

“কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না, কিন্তু সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।” (ফিলিপীয় ৪:৬, ৭) হৃদয় ও মনের এই ধরনের শান্তি অন্য আর কোনোকিছুতে পাওয়া যাবে না। ঈশ্বরের ওপর প্রার্থনাপূর্ণ ভরসা একজনকে মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তি ছাড়াই জীবনের সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।